বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৫ অপরাহ্ন
উত্তর : ছালাত আদায় না করলে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাবে। তাছাড়া শিরককারী, ছালাত ত্যাগকারী, সূদী কারবারের সাথে যুক্ত বা কাবীরা গুনাহে লিপ্ত পুরুষ বা নারীর সঙ্গে তাওবাহের পূর্বে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া বৈধ নয় (মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ২০/১৪৯-১৫১, ১৫৪-১৫৭, ১৫৯-১৬০, ২০৯-২১১, ৩৮২-৩৮৪; ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমা, ১৮/১২৫-১২৬ পৃ.)। কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর আলোকে আদর্শ পাত্র-পাত্রীর যোগ্যতার মাপকাঠি তার দ্বীনদারিতা ও উত্তম চরিত্র। বিবাহের ক্ষেত্রে আল্লাহভীরুতা, ন্যায়পরায়ণতা ও ধার্মিকতাই মূখ্য বিষয়। বাকী ধনসম্পদ, বংশ পরিচয়, বংশ মর্যাদা, শিক্ষাগত যোগ্যতা এগুলো গৌণ বিষয়’ (লিক্বা আশ-শাহরী, লিক্বা নং-৪৬)। সুতরাং দ্বীন, ধর্ম, আমানাতদারী ও চরিত্রের ব্যাপারে সন্তুষ্ট না হলে তার সঙ্গে বিবাহ দেয়া জায়েয হবে না। প্রয়োজনে তাহাজ্জুদ ও ইস্তিখারার ছালাতের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করবেন (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ১৮/২৯৮;  ফাতাওয়া নূরুন আলাদ দারব ইবনে বায, ২০/১৫১, ২০/৪২৩-৪২৪ পৃ.)।

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘তোমরা যে লোকের দ্বীনদারী ও নৈতিক চরিত্র দ্বারা সন্তুষ্ট আছ, তোমাদের নিকট যদি সেই ব্যক্তি বিবাহের প্রস্তাব দেয়, তবে তার সাথে (তোমাদের পাত্রীর) বিবাহ দিয়ে দাও। অন্যথা পৃথিবীতে ফিতনা-ফ্যাসাদ, বিশৃঙ্খলা ও বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়বে। ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! তার মাঝে কিছু থাকলেও কি? (অর্থাৎ সে যদি অভাবগ্রস্থ ও দরিদ্র হয়?) তিনি বললেন, ‘তোমরা যে লোকের দ্বীনদারী ও নৈতিক চরিত্র দ্বারা সন্তুষ্ট আছ, তোমাদের নিকট যদি সেই ব্যক্তি বিবাহের প্রস্তাব দেয়, তবে তার সাথে (তোমাদের পাত্রীর) বিবাহ দিয়ে দাও। রাবী বলেন, এ কথা তিনি তিনবার বললেন’ (তিরমিযী, হা/১০৮৪-১০৮৫; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১০২২; ইরওয়াউল গালীল ৬/২৬৭ পৃ.)। অতএব বিবাহের ক্ষেত্রে পাত্রপক্ষ ও পাত্রীপক্ষ উভয়কেই দ্বীনদারীকে প্রাধান্য দিতে হবে (সূরা আল-হুজুরাত: ১৩; ছহীহ বুখারী, হা/৫০৯০; ছহীহ মুসলিম, হা/১৪৬৬)।

শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ছালাত আদায় করে না সে বিচ্ছেদের যোগ্য। তাকে পরিত্যাগ করা উচিত, উপদেশ দেওয়া উচিত, তাকে কল্যাণের দিকে আহ্বান করা এবং আল্লাহর আনুগত্য করার নির্দেশ দেয়া উচিত। এর পরেও যদি সে ছালাত আদায় না করে পূর্বের অবস্থায় অটল থাকে তবে তাকে পরিত্যাগ করতে হবে। কেননা সে পরিত্যক্ত হওয়ারই যোগ্য। সে একটি বিশাল বড় আদেশ অমান্য করেছে এবং একটি বিশাল বড় ফরয ত্যাগ করেছে। নিঃসন্দেহে ছালাত হল দ্বীনের খুঁটি। যা মসজিদে জামা‘আতের সঙ্গে আদায় করা অপরিহার্য। যদি সে এই ব্যাপারে অলসতা করে, তবে তাকে সম্পূর্ণরূপে বহিষ্কার করা উচিত। আর যদি ছালাত ত্যাগ করে, তাহলে সে তো নিশ্চিতরূপে কাফির (ফাতাওয়া নূরুন আলাদ দারব ইবনে বায, ৬/২৫৬-২৫৭ পৃ.)।

অন্যদিকে যদি স্ত্রীর মত স্বামীও ছালাত ত্যাগকারী হয় সেক্ষেত্রে তাদের বৈবাহিক সম্পর্কে কোন প্রভাব পড়বে না। যেহেতু তারা দু’জনেই কাফির। তাই অন্যান্য কাফির ও মুশরিক দম্পতির মত তারাও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ থাকতে পারবে। যেমন দু’জন ইয়াহুদী অথবা দু’জন খ্রিষ্টান অথবা দু’জন অগ্নিপূজক পতি-পত্নী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ আছে। কিন্তু যদি তাদের একজন ছালাত আদায় করে আর অপরজন না করে এমতাবস্থায় তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক অক্ষুণ্ন রাখা সঠিক হবে না। বরং তার স্ত্রীকে এক ত্বালাক্ব দিয়ে বৈবাহিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করা অপরিহার্য। অথবা কোন ইসলামিক বিচারকের মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদ করিয়ে নেবে। কেননা ছালাত ত্যাগকারী স্ত্রী কোন মুসলিম স্বামীর জন্য বৈধ নয়। কিন্তু যদি স্ত্রী তাওবাহ করে এবং ছালাত আদায় করতে আরম্ভ করে, সেক্ষেত্রে স্বামী তাকে নতুন বিবাহের মাধ্যমে ফিরিয়ে নিতে পারে। তবে তাওবাহ ছাড়া বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাবে (ফাতাওয়া নূরুন আলাদ দারব ইবনে বায, ২০/৩২৮-৩৩১, ২০/৩৪১ পৃ.; মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ২৮/১০৯ পৃ.)।

তৃতীয়তঃ চার মাযহাব, সালাফে ছালিহীন, জমহূর আছহাবে হাদীছ, শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ, ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম ও শায়খ উছাইমীন (রাহিমাহুমুল্লাহ)-এর মতানুযায়ী ‘ছালাত অস্বীকারকারী তো সন্দেহাতীতভাবে কাফির, বরং অবজ্ঞাবশত, অবহেলা করে বা অমনোযোগী হয়েও যে ব্যক্তি সম্পূর্ণরূপে ছালাত ত্যাগ করবে সেও নিশ্চিতরূপে কাফির ও মুশরিক এবং সে দ্বীন ইসলাম থেকে বহির্ভূত (আল-মাউসূ‘আতুল ফিক্বহিয়্যাহ বা ফিক্বাহ বিশ্বকোষ, ২৭/৫৩-৫৪; আল-ইনছাফ, ১/২৮৫-২৮৬; আল-মুগনী, ২/১৫৬ ও ৩২৯; আল-মাজমূঊ, ৩/১৪-১৬; মাজমূঊল ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়্যাহ, ২০/৯৭; আছ-ছালাতু ওয়া আহকামু তারিকীহা, পৃ. ৬৪;, মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল ইবনে উছাইমীন, ১২/৫১ পৃ.)।


প্রশ্নকারী : সাখাওয়াত, ঢাকা।





প্রশ্ন (২৯) : রিযিক বৃদ্ধির কোন আমল আছে কি? কী কী উপায়ে রিযিক বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৭) : দুই রাক‘আত বিশিষ্ট ছালাতের (ফজর, জুমু‘আহ বা ঈদ-এর ছালাত) শেষ বৈঠকে কিভাবে বসতে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২২) : ছোট বাচ্চাদের চোখে কাজল (কালো কালি) দেয়া, কোমরে ডোরা (কালো সুতা) বাঁধা অথবা কপালে কালো ফোঁটা দেয়া যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২১) : কুরবানী দেয়ার জন্য নিসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারী হতে হবে কি? আবার নিসাব পরিমাণ সম্পদ হলে কি কুরবানী ওয়াজিব হয়? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১) : ইহুদী-খ্রিষ্টান ও অন্য বিধর্মীরা কি উম্মতে মুহাম্মাদীর দলভুক্ত? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৬) : নকশাযুক্ত টাইলস্ বা এ জাতীয় কিছু মসজিদের ফ্লোরে লাগানো যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২) : জনৈক আলেম বলেন, রাতে ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার পর যে ব্যক্তি নিম্নের দু‘আটি পাঠ করবে, তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। যদি সে দু‘আ করে, তবে তার দু‘আ কবুল হবে। আর সে যদি উঠে ওযয় করে ছালাত আদায় করে, তাহলে তার ছালাত কবুল হবে। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১২) : ইচ্ছাকৃতভাবে সার্টিফিকেট-এ বয়স কমানো যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১২) : কুরবানীর পশুর গলায় লাল ফিতা বেঁধে দেয়া যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩) : মাঝে মাঝে অনেক হতাশা ও দুশ্চিন্তা চেপে বসে। করণীয় কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৪) : ছহীহ মুসলিমে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘তোমরা দুনিয়া ও নারী জাতি থেকে সাবধান থাক। কেননা বানী ইসরাঈলের উপর প্রথম যে দুর্ঘটনা ঘটেছিল, তা নারীদের মধ্য হতে ঘটেছিল’ (হা/২৭৪২)। বানী ইসরাঈলের সেই নারী কেন্দ্রিক ঘটনা কী ছিল? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৪০) : ‘তোমরা তিনটি কারণে আরবকে ভালবাসবে। প্রথমত, আমি হলাম আরবী, দ্বিতীয়ত, কুরআন মাজীদের ভাষা হল আরবী এবং তৃতীয়ত, জান্নাতীদের ভাষাও হবে আরবী। হাদীছটি কি ছহীহ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ