সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০৪:০০ অপরাহ্ন
উত্তর : প্রথমতঃ আল-হাকাম ইবনু হাযন্ আল-কুলাফী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ‘আমরা একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট গিয়েছিলাম এবং বেশ কয়েকদিন (মদীনাতে) অবস্থান করেছিলাম। এ সময় আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সাথে জুমু‘আর ছালাতও আদায় করেছি। জুমু‘আর খুত্ববায় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একটি লাঠি অথবা ধনুকের উপর ভর দিয়ে কতক হালকা, পবিত্র ও বরকতপূর্ণ কথার মাধ্যমে আল্লাহর প্রশংসা করেন এবং তাঁর উত্তম ও পবিত্র গুণাবলী বর্ণনা করেন (আবূ দাঊদ, হা/১০৯৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৭৮৫৬; ইবনু খুযাইমাহ, হা/১৪৫২; ইরওয়াউল গালীল, হা/৬১৬, ৩/৭৮ পৃ.; বাইহাক্বী, হা/৫৯৬০, ৩/২০৬ পৃ. সনদ হাসান)। ইমাম সানা‘আনী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, উপরিউক্ত হাদীছ প্রমাণ করে যে, কোন কিছুর উপর ভর দিয়ে জুমু‘আর খুত্ববাহ প্রদান করা মুস্তাহাব (সুবুলুস সালাম, ২/৫৯ পৃ.)। শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আল-হাকাম ইবনু হাযন আল-কুলাফী (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত হাদীছ প্রমাণ করে যে, খুত্ববাহতে লাঠি অথবা ধনুকের উপর ভর দেয়া শরী‘আত সম্মত (আশ-শামিল ফী ফিক্বহিল খত্বীব ওয়াল খুত্ববাহ, পৃ. ১৫৫)।

দ্বিতীয়তঃ জমহূর আলেম, মালিকী মাযহাব, শাফিঈ মাযহাব, হাম্বালী মাযহাব ও হানাফী মাযহাবের কিছু আলেমের মতানুযায়ী লাঠি অথবা ধনুকের উপর ভর দিয়ে খুত্ববাহ প্রদান করা মুস্তাহাব (আল-মুগনী, ২/৭৮ পৃ.;, আর-রিসালাহ, পৃ. ৪৭; আশ-শারহুল কাবীর, ১/৩৮২ পৃ.; আল-মুদাউওয়ানাতুল কুবরা, ১/২৩২ ও ১/১৫১ পৃ.; আল-উম্মু, ১/২৭২ পৃ.; আল-মাজমূঊ, ৪/৪৪৭ পৃ; আল-মুহাযযাব, ১/১১২ পৃ.; হাশিয়াতু ইবনে আবিদীন, ২/১৬৩ পৃ.)। ইমাম মালিক (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ইবনু শিহাব বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) যখন মিম্বারের উপর দাঁড়াতেন, তখন লাঠির উপর ভর দিতেন। অতঃপর আবূ বরক ছিদ্দীক্ব, ওমর ফারুক, উছমান ও আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) এরূপই করতেন। সুতরাং এখান থেকে প্রমাণিত হয় যে, ইমামগণের জন্য লাঠির উপর ভর দিয়ে খুত্ববাহ প্রদান করা মুস্তাহাব। আমরা এরূপই করতে দেখেছি ও শুনেছি‌ (আল-মুদাউওয়ানাতুল কুবরা, ১/২৩২ ও ১/১৫১ পৃ.)। ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) আলেমদের ইজমা নকল করে বলেন, ‘খত্বীবের লাঠি অথবা ধনুকের উপর ভর দিয়ে খুত্ববা প্রদান করা ইজমা দ্বারা প্রমাণিত। লাঠি হাতে নেয়ার বিষয়টি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে’ (তাফসীরে কুরতুবী, ১১/১৮৮ পৃ.)।

তৃতীয়তঃ অবশ্য কিছু আলেম মনে করেন যে, হাদীছে বর্ণিত ঘটনাটি মিম্বার তৈরির পূর্বের, পরবর্তীতে তিনি আর লাঠির উপর ভর দেননি। ওয়াল্লাহু আ’লাম (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৭/১০৯-১১০ পৃ.)। ইবনুল ক্বাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মিম্বার তৈরির পূর্বে লাঠির উপর ভর দিয়ে খুতবাহ প্রদান করতেন। মিম্বার তৈরির পর তিনি লাঠির উপর ভর দিয়েছেন মর্মে কোন তথ্য প্রমাণিত নয়’ (যাদুল মা‘আদ, ১/৪২৯ পৃ.)। শায়খ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) উপরিউক্ত বক্তব্যকে সমর্থন করে বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে খুত্ববাহ প্রদান কালে লাঠির উপর ভর দিয়েছেন মর্মে কোন স্পষ্ট হাদীছ প্রমাণিত নয়’ (সিলসিলা যঈফাহ, ২/৩৮০-৩৮৩ পৃ., হা/৯৬৪)। শায়খ উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) ইবনুল ক্বাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)-এর মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে বলেন, এর একটি সমাধান হল, ‘প্রয়োজনে লাঠির উপর ভর দেয়া জায়েয। যেমন যদি খত্বীব দুর্বল হয়। আর যদি প্রয়োজন না হয় সেক্ষেত্রে লাঠি নেয়ার দরকার নেই’ (আশ-শারহুল মুমতি’, ৫/৬২-৬৩ পৃ.)।

চতুর্থতঃ সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মতানুযায়ী মিম্বারের উপর দণ্ডায়মান অবস্থায় লাঠির উপর ভর দিয়ে খুত্ববাহ প্রদান করাটাই শরী‘আতসম্মত। কারণ (১) মিম্বার তৈরি হয়েছে ৫ম হিজরীতে আর আল-হাকাম ইবনু হায্ন (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ৮ম হিজরীতে ইসলাম গ্রহণ করে মদীনায় আগমন করেন এবং জুমু‘আর দিনে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে হাতে লাঠি নিয়ে খুতবাহ দিতে দেখেন (ইতহাফুল কিরাম শরহে বুলূগুল মারাম, পৃ. ১৩২)‌। (২) হাতে লাঠি নিয়ে খুতবাহ দেয়ার হাদীছটি ব্যাপক। আর এটি যে মিম্বার তৈরির পূর্বের ঘটনা এ মর্মে কোন স্পষ্ট দলীল নেই। (৩) মিম্বার তৈরির পর তিনি আর লাঠি নিয়ে খুতবাহ দেননি, এ কথার পক্ষে কোন দলীল নেই। (৪) খুলাফায়ে রাশিদীন ও অন্যান্য ছাহাবীও মিম্বারে দণ্ডায়মান অবস্থায় লাঠির উপর ভর দিয়ে খুত্ববাহ প্রদান করতেন (তারীখে বাগদাদ, ১৪/৩৮ পৃ.)।


প্রশ্নকারী : আব্দুল হালিম, নাটোর।





প্রশ্ন (১২) : আমি কোন ব্যক্তির নিকট থেকে টাকা নিব ব্যবসার জন্য। ব্যবসার শর্ত অনুযায়ী সে লাভ বা ক্ষতি মেনে নিবে। আমি সেই টাকা দিয়ে বিদেশ যাব চাকরি করতে। বিদেশে গিয়ে চাকুরী করে যদি বেতন উঠাতে পারি, তখন ব্যবসায়িক লাভ হিসাবে তার টাকার অনুপাতে তাকে পারসেন্ট দিব। যতদিন পর্যন্ত তার টাকা ফিরিয়ে না দিব ততদিন তার পারসেন্ট সক্রিয় থাকবে। আর যদি বিদেশ গিয়ে কোন কারণে চাকুরী কনফার্ম না হয় কিংবা যদি যেকোন ধরনের প্রতারণার স্বীকার হয়ে বিদেশ যাওয়া না হয়, অথবা অন্য কোন কারণে যদি বিদেশ যাওয়া না হয় যেমনঃ ভিসা রিজেক্ট, মেডিকেল আনফিট তাহলে যে টাকা ক্ষতি হবে তার ভার সে বহন করবে তার টাকার অনুপাতে। উক্ত চুক্তিটি কি বাইয়ে মুশারাকা বা মুযারাবা হিসাবে গণ্য হবে, না-কি সূদী কারবার হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৮) বিভিন্ন খারাপ কাজের সাথে জড়িত এমন ইমামের পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৩) : হাত তুলে দু‘আর শুরুতে হামদ ও দরূদ পাঠ করার কথা বলা হয়েছে। কোন্ বাক্য দ্বারা হামদ ও দরূদ পাঠ করতে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১০) : জনৈক খত্বীব বলেছেন যে, খিযির (আলাইহিস সালাম) পানিতে থাকেন। আর মূসা (আলাইহিস সালাম)-কে যখন তার মা সাগরে ফেলে দেন তখন খিযির (আলাইহিস সালাম) তাকে রক্ষা করেছেন। এটা কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২২) : জনৈক স্বামী প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে দ্বিতীয় বিবাহ করে। ফলে প্রথম স্ত্রী স্বামীকে ডির্ভোস দেয়। বর্তমানে প্রথম স্ত্রীকে পুনরায় স্বামী নিতে চায় ও প্রথম স্ত্রীও ফিরে আসতে চায়। এমতাবস্থায় করণীয় কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩০) : মূর্তি বা পুতুল তৈরির কারখানায় চাকরি করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১১) : স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ভালবাসা বৃদ্ধির জন্য তাবীয-কবয করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৪) : ‘আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) জিনের সাথে লড়াই করেছেন এবং তাদেরকে সাত যমীন পর্যন্ত পাঠিয়ে দিয়েছেন’ মর্মে বর্ণিত ঘটনা কি সত্য? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২১) : ইসলামী শরী‘আতের দৃষ্টিতে দেশে প্রচলিত ইসলমী ব্যাংকসমূহে আমানত রাখার বিধান কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২) : ফিতরার পরিমাণ হিসাবে কেউ বলছেন এক ছা‘ সমান আড়াই কেজি, কেউ পৌনে তিন কেজি, কেউ তিন কেজি বলছেন। সঠিক সমাধান কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৯) : ‘তোমরা রাতের বেলায় রাস্তার মধ্যভাগে অবস্থান নেয়া থেকে সাবধান থাক। কেননা উহা হল, সাপ ও হিংস্র প্রাণীদের আশ্রয়স্থল’ মর্মে বর্ণিত হাদীছ কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৮) : দীর্ঘ ৪/৫ বছর ধরে দুই বোনের মধ্যে কোন সম্পর্ক নেই। কারণ এক বোনের ছেলেরা তার মাকে তাদের খালার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে নিষেধ করেছিল। কিন্তু বর্তমানে তারা আবার সম্পর্ক রাখতে চায়। কিন্তু সমস্যা হল- অন্য বোনের মেয়েরা তার মাকে বলছে যে, খালা তার ছেলেদের কথায় আমাদের সাথে সম্পর্ক রাখেননি এখন তুমিও খালার সাথে সম্পর্ক রাখবে না। কিন্তু তিনি তার বোনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাচ্ছেন না। তখন তার মেয়েরা বলছে, হয় খালার সাথে সম্পর্ক রাখতে হবে, না হয় মেয়েদের সাথে। এই বলে মেয়েরা মায়ের উপর রাগ করে দীর্ঘদিন কথা বলে না। প্রশ্ন হল- মেয়েরা কী ধরনের গুনাহ করছে? এই ক্ষেত্রে মায়ের করণীয় কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ