উত্তর : মিহরাব (مِحْرَابٌ) অর্থ যুদ্ধাস্ত্র রাখার জায়গা বা অস্ত্রাগার। শারঈ অর্থে ইমামের ছালাত আদায় করার নির্দিষ্ট জায়গাকে মিহরাব বলে। প্রথমতঃ মসজিদের অংশ হিসাবে ‘মিহরাব’ নির্মাণ করা যাবে কি-না? এ ব্যাপারে আলেমদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। তবে অধিকাংশ আলিম জায়েয বলেছেন। এ প্রসঙ্গে সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটি বলেন, ‘মুসলিম উম্মাহ সার্বিক সুবিধার্থে এবং ক্বিবলাহ নির্ধারণ ও মসজিদের স্থান স্পষ্ট করার উদ্দেশ্যে স্বর্ণযুগের পর থেকেই মুসলিমরা মসজিদে মিহরাব নির্মাণ শুরু করে’ (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ২৫২-২৫৩)।
শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এ ব্যাপারে প্রশস্ততা রয়েছে। প্রয়োজনে মসজিদে মিহরাব নির্মাণ করা বৈধ। নির্মাণ করাটাও দোষনীয় নয়, আবার না করাটাও দোষনীয় নয়’ (ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ)-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট)। শায়খ উছায়মীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এ ব্যাপারে আলেমদের মাঝে মতভেদ রয়েছে, তবে প্রসিদ্ধ মতানুযায়ী মসজিদে মিহরাব নির্মাণ করা জায়েয। কেননা এর মধ্যে বিবিধ কল্যাণ নিহিত রয়েছে। যেমন, ক্বিবলা নির্ধারণ করা ইত্যাদি’ (উছায়মীন, মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল, ১২তম খণ্ড, পৃ. ৩২৬-৩২৭)।
শায়খ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, ‘ইমামের ছালাত আদায় করার জায়গা মিহরাব রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে এবং প্রথম শতাব্দীতেও বিদ্যমান ছিল না। দ্বিতীয় শতাব্দীতে বিবিধ কারণে মুসলিমরা তাদের মসজিদে মিহরাব নির্মাণের প্রচলন শুরু করেন’ (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৬৮৮২৭)।
দ্বিতীয়তঃ মসজিদের অবস্থান অনুযায়ী মিহরাবের ভিতরে বা বাইরে যে কোন স্থানে ইমাম দাঁড়াতে পারেন। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যে, পিছনের মুছল্লীগণ যেন ইমামকে দেখতে পায় (মাতালিবু উলিন নুহা, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৯৬, ৬৯৬; আশ-শারহুল মুমতি‘, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৭৫; ইসলাম ওয়েব, ফৎওয়া নং-৩২২৪৪)। বিশেষ করে মসজিদ যখন প্রশস্ত হবে, তখন ইমাম যেন মিহরাব থেকে এতটা পিছিয়ে দাঁড়ায়, যাতে মুছল্লীরা তাঁকে দেখতে পায় (ইসলাম ওয়েব, ফৎওয়া নং-২০৩১)।
প্রশ্নকারী : আবূ বকর ছিদ্দীক, রাজবাড়ী, রাজশাহী।