দৈনন্দিন পঠিতব্য দু‘আ সমূহ
(২য় কিস্তি)
৭. আযান শেষে দু‘আ
আযানের পর দরূদে ইবরাহীম পড়বে। অতঃপর নিম্নের দু‘আ পড়বে (ছহীহ মুসলিম, হা/৮৭৫; মিশকাত হা/৬৫৭)।
اَللّٰهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلَاةِ الْقَائِمَةِ آتِ مُحَمَّدَنِ الْوَسِيْلَةَ وَالْفَضِيْلَةَ وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَّحْمُوْدَانِ الَّذِىْ وَعَدْتَهُ.
উচ্চারণ : আল্ল-হুম্মা রব্বা হা-যিহিদ্ দা‘ওয়াতিত তা-ম্মাহ, ওয়াছ ছলা-তিল ক্ব-য়িমাহ। আ-তি মুহাম্মাদানিল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাযীলাহ, ওয়াব্‘আছ্হু মাক্ব-মাম মাহমূদানিল্লাযি ওয়া‘আদতাহ।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! এই পরিপূর্ণ আহ্বান ও প্রতিষ্ঠিত ছালাতের প্রভু আপনিই! মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে অসীলা নামক স্থান ও মর্যাদা দান করুন। আপনি তাঁকে সেই প্রশংসিত স্থানে পৌঁছে দিন, যার ওয়াদা আপনি করেছেন’। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘যে ব্যক্তি উক্ত দু‘আ পড়বে ক্বিয়ামতের দিন তার জন্য আমার শাফা‘আত ওয়াজিব হয়ে যাবে’ (ছহীহ বুখারী, হা/৬১৪; মিশকাত হা/৬৫৯)। অতঃপর নিম্নের দু‘আ পড়বে
أَشْهَدُ أَنْ لَّا اِلهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ وَأنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ رَضِيْتُ بِاللهِ رَبًّا وَبِمُحَمَّدٍ رَسُوْلًا وَبِالْإسَلَامِ دِيْنًا
উচ্চারণ : আশ্হাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহূ লা- শারী-কালাহূ ওয়া আন্না মুহাম্মাদান ‘আব্দুহূ ওয়া রাসূলুহ, রযীতু বিল্লা-হি রব্বাও- ওয়া বিমুহাম্মাদির রাসূলা ওয়া বিল ইসলা-মি দ্বীনা।
অর্থ : ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত সত্য কোন মা‘বূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বান্দা ও রাসূল। আমি আল্লাহকে প্রতিপালক হিসাবে, মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রাসূল হিসাবে এবং ইসলামকে দ্বীন হিসাবে পেয়ে সন্তুষ্ট হয়েছি’।
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মুআযযিনের আযান শুনে উক্ত দু‘আ বলবে, তার পাপসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে’ (ছহীহ মুসলিম, হা/৩৮৬)।
উল্লেখ্য যে, আযানের দু‘আতে (১) وَالدَّرَجَةَ الرَّفِيْعَةَ (২) إنَّكَ لاَ تُخْلِفُ الْمِيْعَادَ বাক্য যোগ করার ছহীহ কোন ভিত্তি নেই (আলবানী, তাহক্বীক্ব মিশকাত, হা/৬৫৯ -এর টীকা নং ২; ইরওয়াউল গালীল, হা/২৪৩-এর আলোচনা দ্র., ১ম খণ্ড, পৃ. ২৬০-৬১)। অনুরূপ দু‘আ পড়ার সময় হাত তোলারও কোন দলীল নেই।
৮. খাওয়ার পরে দু‘আ
اَللّٰهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيْهِ وَأَطْعِمْنَا خَيْرًا مِنْهُ
(ক) উচ্চারণ : আল্ল-হুম্মা বা-রিক লানা ফীহি ওয়া আত্‘ইমনা খইরাম মিন্হু।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনি আমাদের এই খাদ্যে বরকত দিন এবং এর চেয়ে উত্তম খাবার খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিন’ (তিরমিযী, হা/৩৪৫৫, সনদ হাসান; ইবনু মাজাহ, হা/৩৩২২; মিশকাত, হা/৪২৮৩)। অথবা বলবে-
اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ حَمْدًا كَثِيْرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيْهِ غَيْرَ مَكْفِىٍّ وَلَا مُوَدَّعٍ وَلَا مُسْتَغْنًى عَنْهُ رَبَّنَا
(খ) উচ্চারণ : আল-হাম্দু লিল্লা-হি হাম্দান কাছীরাং ত্বইয়িবাম মুবা-রাকাং ফীহি। গইরা মাক্ফিইয়িন ওয়ালা মুওয়াদ্দা‘ইন ওয়ালা মুস্তাগনান ‘আনহু রব্বানা।
অর্থ : ‘পাক পবিত্র, বরকতময় আল্লাহ্র জন্য সমস্ত প্রশংসা। তাঁর নে‘মত হতে মুখ ফিরানো যায় না, তাঁর অন্বেষণ ত্যাগ করা যায় না এবং তাঁর প্রয়োজন থেকেও মুক্ত থাকা যায় না’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫৪৫৮; মিশকাত, হা/৪১৯৯)।
উল্লেখ্য যে,اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِىْ أَطْعَمَنَا وَسَقَنَا وَجَعَلَنَا الْمُسْلِمِيْنَ মর্মে বর্ণিত প্রচলিত দু‘আটি যঈফ (যঈফ আবূ দাঊদ, হা/৩৮৫০; তাহক্বীক্ব মিশকাত, হা/৪২০৪-এর টীকা দ্র.)।
৯. মেযবানের জন্য দু‘আ
اَللّٰهُمَّ بَارِكْ لَهُمْ فِيْمَا رَزَقْتَهُمْ وَاغْفِرْلَهُمْ وَارْحَمْهُمْ
উচ্চারণ : আল্ল-হুম্মা বা-রিক্ লাহুম, ফীমা রযাক্বতাহুম ওয়ার্গ্ফি লাহুম ওয়ারহামহুম।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনি তাদেরকে যে রিযিক দান করেছেন, তাতে বরকত দান করুন, তাদের ক্ষমা করুন এবং তাদের প্রতি রহম করুন’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২০৪২, মিশকাত, হা/২৪২৭)।
[চলবে ইনশাআল্লাহ]
প্রসঙ্গসমূহ »:
দু‘আ