উত্তর : মুমিনদের সব কাজই ধর্মীয়। তারপরও নির্দিষ্ট কিছু কাজ রয়েছে যেগুলোর সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিগণ পারিশ্রমিক গ্রহণ করতে পারবেন। সেজন্য প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ বা কমিটি যথাযথ সম্মানীর ব্যবস্থা করবে। আবুবকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে বেতন প্রদান করা হত (ছহীহ বুখারী, হা/২০৭০)। যেমন কাউকে কুরআন শিক্ষা দেয়া, মসজিদে আযান দেয়া বা ইমামতি করা এবং অন্যের নিকট দ্বীন প্রচার করা ইত্যাদি। শায়খ উছায়মীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, মসজিদের পরিচ্ছন্নকর্মী, ইমাম, মুয়াযযিন, কুরআনের শিক্ষকদের চুক্তি ছাড়া কোন ফান্ড থেকে বেতন দেয়াতে কোন সমস্যা নেই। যদি সরকার অথবা কোন বায়তুল মাল ফান্ড থেকে দেয়া হয় তাতেও সমস্যা নেই। কারণ যে ব্যক্তি এ দায়িত্ব পালন করবে জনগণের উচিত তার প্রয়োজন মেটানো (মুহাম্মাদ ছালেহ আল-উছায়মীন, নূরুন ‘আলাদ দারব, ৪৮/১৮২ পৃ.)। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, إِنَّ أَحَقَّ مَا أَخَذْتُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا كِتَابُ اللَّهِ ‘যে সকল জিনিসের উপর তোমরা বিনিময় গ্রহণ করে থাক, তন্মধ্যে পারিশ্রমিক গ্রহণ করার সবচেয়ে বেশি হক রয়েছে আল্লাহর কিতাবের ক্ষেত্রে’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫৭৩৭)।
তবে শর্ত বা চুক্তি করা উচিত নয়। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ) এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, যে ব্যক্তি বলে আমি এত টাকা হলে ইমামতির চাকুরী করব, নয়লে করব না। তাহলে এমন ইমাম থেকে মুক্তি চাই। এমন ইমামের পেছনে কোন মুছল্লী কি ছালাত আদায় করবে? (মুহাম্মাদ বিন ইবরহীম, ইবাদতের দিকে ধাবিত হওয়ার আদব, পৃ. ১২৮)।
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওছমান ইবনু আবিল ‘আছ (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে বললেন, أَنْتَ إِمَامُهُمْ وَاقْتَدِ بِأَضْعَفِهِمْ وَاتَّخِذْ مُؤَذِّنًا لَا يَأْخُذُ عَلَى أَذَانِهِ أَجْرًا ‘যাও তোমাকে তাদের ইমাম নিযুক্ত করা হল। তবে দুর্বল মুক্তাদীদের প্রতি খেয়াল রাখবে এবং এমন একজন মুয়াযযিন নিয়োগ করবে, যে তার আযানের বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ করবে না’ (আবূ দাঊদ, হা/৫৩১; নাসাঈ, হা/৬৭২; মিশকাত, হা/৬৬৮, সনদ ছহীহ)। উক্ত হাদীছ উল্লেখ করে শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ঐ মুয়াযযিন উত্তম, যে আযানের বিনিময়ে কিছুই চায় না বা শর্ত করে না (শায়খ বিন বায, নূরুন ‘আলাদ দারাব, ‘আযান ও ইক্বামত’ অধ্যায়, ‘আযান দিয়ে বিনিময় গ্রহণ করার বিধান’ অনুচ্ছেদ)। আল্লাহই অধিক জানেন।
প্রশ্নকারী : মাহমূদ, রাজশাহী।