রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ০৭:৪৪ অপরাহ্ন

জঙ্গিবাদ বনাম ইসলাম

–আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম*


(২য় কিস্তি)

জিহাদের পরিচয়

‘জিহাদ’ অর্থ আল্লাহর পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করা, আল্লাহর পথে কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করা। জিহাদ (جِهَادٌ) শব্দটি আরবী। এটি جهد মূলধাতু থেকে উৎপত্তি। অর্থ নিম্নরূপ-

(১) (جِهَادٌ) অর্থ- কষ্ট, ক্লেশ। যেমন বলা হয়,جَهَدْتُ جِهَادًا أى بَلَغْتُ مُشَقَّةً ‘আমি অতি কষ্ট স্বীকার করেছি’।[১] আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ الَّذِیۡنَ لَا یَجِدُوۡنَ اِلَّا جُہۡدَہُمۡ ‘আর তাদের প্রতি যাদের কিছুই নেই শুধু নিজের পরিশ্রম লব্ধ বস্তু ছাড়া’ (সূরা আত-তাওবাহ : ৭৯)। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, تَعَوَّذُوْا بِاللهِ مِنْ جَهْدِ الْبَلَاءِ ‘তোমরা বিপদের কষ্ট হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাও’।[২] রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরোও বলেছেন, সর্বোত্তম ছাদাক্বাহ হল,جُهْدُ الْمُقِلِّ ‘নিজের কষ্ট সত্বেও অন্যকে দানের চেষ্টা করা।[৩]
(২) (جِهَادٌ) অর্থ- শক্তি-সামর্থ্য প্রয়োগ করা ও প্রচেষ্টা চালানো। যেমন বলা হয়- جاهد يجاهد جهادًا إذ بالغ في قتل العدو وغيره ‘অর্থাৎ সে শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ও তাকে প্রতিহত করতে শক্তি-সামর্থ্য ব্যয় করেছে।[৪]
(৩) (جِهَادٌ) অর্থ- اَلْقِتَالُ مَعَ العَدُوِّ ‘শত্রুর সাথে যুদ্ধ করা’।[৫] আল্লাহ তা‘আলা বলেন, اَمۡ حَسِبۡتُمۡ اَنۡ تُتۡرَکُوۡا وَ لَمَّا یَعۡلَمِ اللّٰہُ الَّذِیۡنَ جٰہَدُوۡا مِنۡکُمۡ ‘তোমরা কি ধারণা করেছো যে, তোমাদেরকে এভাবেই ছেড়ে দেয়া হবে? অথচ আল্লাহ তো এখনও সেই সব লোককে (প্রকাশ্যভাবে) প্রকাশ করেননি, যারা তোমাদের মধ্য হতে জিহাদ করেছে’ (সূরা আত-তাওবা : ১৬)।
শরী‘আতের পরিভাষায় জিহাদ হল- কাফিরদের সাথে যুদ্ধে কষ্ট বা প্রচেষ্টা ব্যয় করা। এছাড়াও এটা নফসের জিহাদ, শয়তান ও পাপাচারের বিরুদ্ধে জিহাদ করা অর্থেও প্রয়োগ হয়। নফসের জিহাদ হল- দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করা এবং সে অনুযায়ী আমল করা। অতঃপর (অন্যকে) তা শিক্ষা দেয়া। শয়তানের বিরুদ্ধে জিহাদ হল- সন্দেহ ও সংশয়যুক্ত জিনিস এবং প্রবৃত্তি যা সুন্দর করে তা থেকে প্রস্থান করা। কাফির বা অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে জিহাদ হল- তাদের সাথে হাত, মাল, জিহ্বা এবং অন্তর দ্বারা যুদ্ধ করা। অন্যায় বা পাপের বিরুদ্ধে জিহাদ হল- হাত, জিহ্বা অতঃপর অন্তর দ্বারা পাপ কাজকে প্রতিহত করা।[৬] শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়াহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,بَذْلُ الْوُسْعِ وَهُوَ الْقُدْرَةُ فِيْ حُصُوْلِ مَحْبُوْبِ الْحَقِّ وَدَفْعِ مَا يَكْرَهُهُ الْحَقُّ ‘আল্লাহর ভালবাসা অর্জনের প্রচেষ্টা এবং তাঁর অপছন্দনীয় বস্তু প্রতিরোধে শক্তি-সামর্থ্য ব্যয় করা’।[৭] ইবনু হাজার আসক্বালানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, بَذْلُ الْجُهْدِ فِيْ قِتَالِ الْكُفَّارِ ‘জিহাদ হল কাফিরদের সাথে যুদ্ধে প্রচেষ্টা ব্যয় করা’।[৮]

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَ جَاہِدُوۡا فِی اللّٰہِ حَقَّ جِہَادِہٖ ‘তোমরা আল্লাহর জন্য জিহাদ কর, যেমন জিহাদ করা উচিত’ (সূরা আল-হজ্জ : ৭৮)। অর্থাৎ তোমরা তোমাদের সম্পদ, মুখ এবং অন্তর দ্বারা আল্লাহর পথে প্রচেষ্টা কর।[৯]
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

مَا مِنْ نَبِىٍّ بَعَثَهُ اللهُ فِىْ أُمَّةٍ قَبْلِىْ إِلَّا كَانَ لَهُ فِىْ أُمَّتِهِ حَوَارِيُّوْنَ وَأَصْحَابٌ يَأْخُذُوْنَ بِسُنَّتِهِ وَيَقْتَدُوْنَ بِأَمْرِهِ ثُمَّ إِنَّهَا تَخْلُفُ مِنْ بَعْدِهِمْ خُلُوْفٌ يَقُوْلُوْنَ مَا لَا يَفْعَلُوْنَ وَيَفْعَلُوْنَ مَا لَا يُؤْمَرُوْنَ فَمَنْ جَاهَدَهُمْ بِيَدِهِ فَهُوَ مُؤْمِنٌ وَمَنْ جَاهَدَهُمْ بِلِسَانِهِ فَهُوَ مُؤْمِنٌ وَمَنْ جَاهَدَهُمْ بِقَلْبِهِ فَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلَيْسَ وَرَاءَ ذَلِكَ مِنَ الْإِيْمَانِ حَبَّةُ خَرْدَلٍ

‘আমার পূর্বে আল্লাহ এমন কোন নবীকে তাঁর উম্মতের মধ্যে প্রেরণ করেননি, যাদের মধ্যে তাঁর জন্য ‘হাওয়ারী’ এবং সাথীবৃন্দ ছিল না। তারা তাদের নবীর সুন্নাত গ্রহণ করত এবং তাঁর আদেশ-নিষেধের অনুসরণ করত। অতঃপর এমন সব লোক তাদের স্থলাভিষিক্ত হল, তারা এমন কথা বলত, যা নিজেরা করত না। নিজেরা এমন কাজ করত, যার নির্দেশ তাদের দেয়া হয়নি। অতএব যে ব্যক্তি তাদের বিরুদ্ধে নিজের হাত দ্বারা জিহাদ করবে, সে মুমিন। যে ব্যক্তি যবান দ্বারা জিহাদ করবে, সেও মুমিন এবং যে ব্যক্তি অন্তর দ্বারা জিহাদ করবে, সেও মুমিন। এরপর এক সরিষাদানা পরিমাণও ঈমান নেই’।[১০]

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,اَمۡ حَسِبۡتُمۡ اَنۡ تُتۡرَکُوۡا وَ لَمَّا یَعۡلَمِ اللّٰہُ الَّذِیۡنَ جٰہَدُوۡا مِنۡکُمۡ ‘তোমরা কি ধারণা করেছো যে, তোমাদেরকে এভাবেই ছেড়ে দেয়া হবে? অথচ আল্লাহ তো এখনও সেই সব লোককে (প্রকাশ্যভাবে) প্রকাশ করেননি, যারা তোমাদের মধ্য হতে জিহাদ করেছে’ (সূরা আত-তাওবা : ১৬)। অর্থাৎ ‘হে মুমিনগণ! (তোমরা কি ধারণা করেছো যে) আমরা তোমাদেরকে ছেড়ে দিব, অথচ তোমাদেরকে পরীক্ষা করবনা এবং দেখবনা যে, তোমাদের মধ্যে ঈমানের দাবীতে কে সত্যবাদী এবং কে মিথ্যাবাদী। সুতরাং ঈমানের দাবীতে সত্যবাদী ঐ ব্যক্তি, যে জিহাদে অগ্রগামী হয়ে অংশ নেয় এবং প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মঙ্গল কামনা করে ও তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতা করে’।[১১] নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,جَاهِدُوْا الْمُشْرِكِيْنَ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ وَأَلْسِنَتِكُمْ ‘তোমরা মুশরিকদের সাথে তোমাদের জান, মাল ও মুখ দ্বারা জিহাদ কর’।[১২]

‘জিহাদ’ শব্দ নিয়ে বিভ্রান্তি

জিহাদ শব্দ নিয়ে সমাজে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়। এক শ্রেণীর জ্ঞানপাপী ‘জিহাদ’-কে শুধুমাত্র জঙ্গিবাদ অর্থাৎ সমাজে ত্রাস সৃষ্টি, বিশৃংখলা তৈরি, বোমাবাজী, রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ, মানব হত্যা ইত্যাদি অর্থে গ্রহণ করেছে। বুলেটের মাধ্যমে হোক আর ব্যালটের মাধ্যমে হোক রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করাকেই জিহাদ মনে করে। আবার অমুসলিমরা জিহাদকে সন্ত্রাসের সমর্থক শব্দ হিসাবে ব্যবহার করছে। অথচ জিহাদ ও সন্ত্রাস দু’টি বিপরীতধর্মী বিষয়। জিহাদ হয় মানব কল্যাণের জন্য এবং সন্ত্রাস হয় শয়তানী অপকর্মের জন্য। জিহাদ হল ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এই ইবাদতকে শয়তান সবচেয়ে বেশি ভয় করে। সেকারণে শয়তান নানা কৌশলে মুসলিমের জিহাদী জাযবাকে ধ্বংস করতে বদ্ধ পরিকর। বর্তমান যুগে ইসলামী জিহাদকে ‘জঙ্গীবাদ’ হিসাবে চিহ্নিত করাটাও শয়তানী তৎপরতার একটি অংশ। একটি পরাশক্তি তার প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক পরাশক্তিকে আফগানিস্তান থেকে হটানোর জন্য অঢেল সম্পদ ব্যয় করে ও আধুনিক অস্ত্রের যোগান দিয়ে গত শতাব্দীর শেষদিকে জিহাদের নামে ‘তালেবান’ সৃষ্টি করে।
পরে উদ্দেশ্য হাছিল হয়ে গেলে তাদেরকে ‘সন্ত্রাসী জঙ্গীদল’ বলে আখ্যায়িত করে। একই পলিসি মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনুসৃত হচ্ছে। তাদের টার্গেটকৃত মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে ‘জঙ্গীরাষ্ট্র’ আখ্যা দিয়ে তাদের স্বার্থ বাস্তবায়নের কপট উদ্দেশ্য পরাশক্তিগুলো এসব অপকর্ম করছে।[১৩] তাদের চক্রান্তের অসহায় শিকার হচ্ছে বিভিন্ন মুসলিম দেশের স্বল্পবুদ্ধি তরুণ মুসলিম সমাজ। কোন কোন সময় বিদেশীরা তাদের স্বদেশীয় এজেন্টদের মাধ্যমে তাদেরকে ধর্মের নামে (জিহাদ ও ক্বিতালের অপব্য্যাখা করে) জিহাদ ও ক্বিতালে উসকে দিচ্ছে। অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে লালন করছে এবং প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তুলছে। তাদেরকে বিভিন্ন স্থাপনায় ভূয়া বোমাবাজিতে লিপ্ত করছে। অতঃপর তাদের গ্রেফতার করে কারাগারে নিক্ষেপ করছে। বিশ্বকে জানিয়ে দিচ্ছে যে, মুসলিম মানেই জঙ্গী। আসলে অদৃশ্য ইঙ্গিতে এরা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে এবং মিডিয়ার সংবাদ শিরোনামে পরিণত হয়। অতঃপর স্বদেশের সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে বিদেশী আধিপত্যবাদীরা তাদের অন্যায় স্বার্থ সম্পূর্ণ করছে।
অথচ জিহাদ হল ইসলামের সর্বোচ্চ চূড়া। পঞ্চস্তম্ভের মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠা পায়। কিন্তু চূড়া বা ছাদ না থাকলে তাকে পূর্ণাঙ্গ গৃহ বলা যায় না। চূড়াহীন গৃহের যে তুলনা, জিহাদবিহীন ইসলামের সেই তুলনা। জিহাদেই সম্মান, জিহাদেই জীবন ও জীহাদেই মর্যাদা। জিহাদবিহীন মুমিন মর্যাদাহীন ব্যক্তির ন্যায়। জিহাদের মাধ্যমেই ইসলাম প্রতিষ্ঠা পায়। আল্লাহর জন্য মুসলিমের প্রতিটি কর্ম যেমন ইবাদত, আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠায় মুসলিমের প্রতিটি সংগ্রামই তেমনি জিহাদ। ইসলামের বিজয় জিহাদের উপরই নির্ভরশীল। জিহাদ হল মুমিন, মুনাফিক্ব ও কাফিরের মধ্যে পার্থক্যের মানদ-। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

اَلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا یُقَاتِلُوۡنَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا یُقَاتِلُوۡنَ فِیۡ سَبِیۡلِ الطَّاغُوۡتِ فَقَاتِلُوۡۤا اَوۡلِیَآءَ الشَّیۡطٰنِ اِنَّ کَیۡدَ الشَّیۡطٰنِ کَانَ ضَعِیۡفًا

‘যারা ঈমানদার তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর পথে। আর যারা কাফির, তারা যুদ্ধ করে ত্বাগূতের পথে। অতএব তোমরা শয়তানের বন্ধুদের সাথে যুদ্ধ কর। নিশ্চয়ই শয়তানের কৌশল সদা দুর্বল (সূরা আন-নিসা : ৭৬)।

‘জিহাদ’ শব্দের শারঈ ব্যাখ্যা

‘জিহাদ’ শব্দ নিয়ে একদল শৈথিল্যবাদ এবং আরেকদল চরমপন্থার আশ্রয় গ্রহণ করেছে। নিজেদের মনগড়া কল্পিত ব্যাখ্যা করে জিহাদ পরিভাষাকে কলঙ্কিত করেছে। তারা মনে করে যে, জিহাদ অর্থই শুধু মানুষ হত্যা, গুপ্ত হত্যা, বোমাবাজি করা ইত্যাদি। অথচ শরী‘আতে জিহাদের পরিভাষায় এরকম কোন অর্থ বহন করে না। কুরআন ও হাদীছে জিহাদের দু’টি অর্থ পাওয়া যায়। ১. জিহাদ অর্থ-আল্লাহর পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো ২. জিহাদ (ক্বিতাল) অর্থ- আল্লাহর পথে কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করা। নিন্মে কুরআন, ছহীহ হাদীছ ও সালাফে ছলেহীনের ব্যাখ্যা পেশ করা হল-

(১). আল্লাহর পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো
ইসলামের জন্য সার্বিক প্রচেষ্টা ব্যয় করাই মূলত জিহাদ। সার্বিক জীবনে ইসলামকে পূর্ণাঙ্গরূপে প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাফিরদের সাথে ক্বিতাল ব্যতীত সকল পন্থা অবলম্বন করাই এ প্রকারের আওতাভুক্ত। তাছাড়া আল্লাহর আনুগত্য (প্রতিষ্ঠা করার জন্য) নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করা, অন্তরকে প্রবৃত্তি হতে নিবৃত্ত করা, শয়তানের বিরুদ্ধে তার কুমন্ত্রণাকে রদ করার জন্য; যুলুমের বিরুদ্ধে যুলুমকে রদ করার জন্য এবং কাফিরদের বিরুদ্ধে তাদের কুফুরীকে রদ করার জন্য জিহাদ করাও এ প্রকারের অন্তর্গত।[১৪] আল্লাহ তা‘আলা প্রবল সংগ্রাম (জিহাদ) চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ প্রদান করেছেন। কুরআন ও ছহীহ হাদীছে এ রকম অনেক নির্দেশনা রয়েছে। যেমন- আল্লাহ তা‘আলা বলেন, فَلَا تُطِعِ الۡکٰفِرِیۡنَ وَ جَاہِدۡہُمۡ بِہٖ جِہَادًا کَبِیۡرًا ‘সুতরাং আপনি কাফিরদের আনুগত্য করবেন না এবং আপনি কুরআনের সাহায্যে তাদের সাথে প্রবল সংগ্রাম চালিয়ে যান’ (সূরা আল-ফুরক্বান : ৫২)। এটি যুদ্ধের (ক্বিতালের) নির্দেশ দেয়ার পূর্বেই (মক্কায়) অবতীর্ণ হয়েছে।[১৫]

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَ جَاہِدُوۡا فِی اللّٰہِ حَقَّ جِہَادِہٖ ‘তোমরা আল্লাহর জন্য জিহাদ কর, যেমন জিহাদ করা উচিত’ (সূরা আল-হজ্জ : ৭৮)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,یٰۤاَیُّہَا النَّبِیُّ جَاہِدِ الۡکُفَّارَ وَ الۡمُنٰفِقِیۡنَ وَ اغۡلُظۡ عَلَیۡہِمۡ ‘হে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! কাফির ও মুনাফিক্বদের বিরুদ্ধে জিহাদ করুন এবং তাদের প্রতি কঠোর হন’ (সূরা আত-তাওবাহ : ৭৩; সূরা আত-তাহরীম : ৯)।

রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, اَلْمُجَاهِدُ مَنْ جَاهَدَ نَفْسَهُ ‘সে ব্যক্তিই প্রকৃত মুজাহিদ যে তার নফসের (প্রবৃত্তির) বিরুদ্ধে জিহাদ করে’।[১৬] রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,مَنْ جَاءَ مَسْجِدِيْ هَذَا لَمْ يَأْتِهِ إِلَّا لِخَيْرٍ يَتَعَلَّمُهُ أَوْ يُعَلِّمُهُ فَهُوَ بِمَنْزِلَةِ الْمُجَاهِدِ فِى سَبِيْلِ اللهِ ‘যে আমার এই মসজিদে আসে এবং কেবল ভাল কাজের জন্যই আসে, যা সে শেখে বা অন্যকে শিক্ষা দেয়, সে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীর ন্যায় মর্যাদা পাবে’।[১৭] আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে জিহাদে অংশগ্রহণ করার জন্য অনুমতি চাইল। তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমার পিতা-মাতা জীবিত আছে কি? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেন, فَفِيْهِمَا فَجَاهِدْ ‘যাও তাদের (সেবার) মধ্যে জিহাদ কর।[১৮] অন্য বর্ণনাতে আছে, فَارْجِعْ إِلَى وَالِدَيْكَ فَأَحْسِنْ صُحْبَتَهُمَا ‘তুমি তোমার পিতা-মাতার কাছে ফিরে যাও এবং তাঁদের সাথে সদাচরণ কর’।[১৯] রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, أَفْضَلُ الْجِهَادِ مَنْ قَالَ كَلِمَةَ حَقٍّ عِنْدَ سُلْطَانٍ جَائِرٍ ‘অত্যাচারী শাসকের সম্মুখে হক্ব কথা বলাই উত্তম জিহাদ’।[২০] রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,مَنْ جَهَّزَ غَازِيًا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ فَقَدْ غَزَا وَمَنْ خَلَفَ غَازِيًا فِيْ أَهْلِهِ فَقَدْ غَزَا ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে কোন মুজাহিদকে যুদ্ধ সরঞ্জাম সরবরাহ করে তাকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করে দেয়, সে নিজেই যেন জিহাদে অংশগ্রহণ করল। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর পথের কোন মুজাহিদের অনুপস্থিতিতে তার পরিবার পরিজনকে উত্তমরূপে দেখাশোনা করে, সেও যেন নিজেই জিহাদে অংশগ্রহণ করল।[২১]

উপরিউক্ত কুরআনের আয়াত সমূহের ব্যাখ্যায় সালাফে ছলেহীনের বক্তব্য নিম্নরূপ-

(ক) আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, জিহাদ অর্থ হল- ‘কাফির মুনাফিক্বদের সাথে হাত দ্বারা জিহাদ করা, যদি তাতে সক্ষম না হয়, তবে মুখ দ্বারা। তাতেও যদি সক্ষম না হয়, তাহলে অন্তর দ্বারা জিহাদ করা’।[২২]
(খ) ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, জিহাদ অর্থ হল-‘কুরআন দ্বারা তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা’।[২৩] তিনি আরো বলেন, ‘আল্লাহর পথে জিহাদ করার জন্য তোমাদেরকে যেন কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কার পাকড়াও না করে’।[২৪] তিনি আরোও বলেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদের সাথে তলোয়ার দ্বারা এবং মুনাফিক্বদের সাথে মুখ দ্বারা যুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন’।[২৫]
(গ) যাহহাক (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, জিহাদ অর্থ হল- ‘হক্ব অনুযায়ী আমল করা’।[২৬] অর্থাৎ কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করাই জিহাদ। কেননা হক্ব বলতে অহীকে বুঝানো হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, اِنَّاۤ اَرۡسَلۡنٰکَ بِالۡحَقِّ بَشِیۡرًا وَّ نَذِیۡرًا ‘নিশ্চয় আমরা আপনাকে সত্যসহ সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শকরূপে (সতর্ককারীরূপে) প্রেরণ করেছি’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১১৯)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ اِنَّ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ لَیَعۡلَمُوۡنَ اَنَّہُ الۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّہِمۡ ‘নিশ্চয় যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তারা অবশ্যই অবগত আছে যে, নিশ্চয়ই এটা তাদের প্রতিপালকের নিকট হতে সত্য’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৪৪)।
(ঘ) মুহাম্মাদ ইবনু জারীর আত-ত্বাবারী (২২৪- ৩১০ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, জিহাদ অর্থ হল- ‘তাদের (কাফিরদের) বিরুদ্ধে কুরআন দ্বারা প্রবল সংগ্রাম করা। যাতে করে তারা আল্লাহ কুরআনে যা ফরয করেছেন, সেগুলোর স্বীকৃতি প্রদান করে তার প্রতি আত্মসমর্পণ করে; তাঁর প্রতি অনুগত হয় এবং ইচ্ছা-অনিচ্ছায় সকল আমলের জন্য বশীভূত হয়’।[২৭]
(ঙ) ইমাম কুরতুবী (৬০০- ৬৭১ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, জিহাদ অর্থ হল- ‘আল্লাহ তা‘আলার সকল নির্দেশের আনুগত্য করা এবং তিনি যা নিষেধ করেছেন তা বর্জন করা। অর্থাৎ আল্লাহর আনুগত্য (প্রতিষ্ঠা করার জন্য) নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করা এবং অন্তরকে প্রবৃত্তি হতে নিবৃত্ত করা। শয়তানের বিরুদ্ধে, তার কুমন্ত্রণাকে রদ করার জন্য; যুলুমের বিরুদ্ধে, যুলুমকে রদ করার জন্য এবং কাফিরদের বিরুদ্ধে তাদের কুফুরীকে রদ করার জন্য জিহাদ করা’।[২৮]
(চ) ইবনু কাছীর (৭০১-৭৭৪ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর জন্য জিহাদ কর অর্থাৎ তোমরা তোমাদের জান, মাল ও মুখ দ্বারা জিহাদ কর’।[২৯]
(ছ) মুহাম্মাদ শাওকানী (১১৭৩-১২৫৫ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, জিহাদ দ্বারা উদ্দেশ্য হল- ‘আল্লাহর আদেশ এবং নিষেধের আনুগত্য করা। আল্লাহর দ্বীন জীবিত করার জন্য সকল প্রচেষ্টা নিঃশেষ করা’।[৩০]
(জ) আব্দুর রহমান ইবনু নাছির আস-সা‘আদী (১৩০৭-১৩৭৬ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, জিহাদ অর্থ হল- ‘আল্লাহর আদেশ পূর্ণাঙ্গভাবে সম্পন্ন করা, ওয়াজ (উপদেশ), নিষেধকরণ, নৈতিকতা, শিক্ষা, নসিহত এবং যুদ্ধ ইত্যাদির মাধ্যমে আল্লাহর দাওয়াতকে প্রত্যেকটি দাওয়াতি পদ্ধতির মাধ্যমে তাঁর পথে পেীঁছে দেয়া’।[৩১] তিনি আরোও বলেন, ‘হাত, দলীল এবং মুখ দ্বারা জিহাদ করা। তাদের মধ্যে যারা মুখোমুখি যুদ্ধ করবে, তাদের সাথে হাত, মুখ, তলোয়ার এবং বয়ানের মাধ্যমে যুদ্ধ করা। আর যে ব্যক্তি ইসলামের সাথে চুক্তি বা অঙ্গিকারবদ্ধ, তার সাথে জিহাদ হল- দলীল ও প্রমাণ সহকারে এবং তার জন্য ইসলামের সৌন্দর্য এবং শিরক ও কুফুরের দোষক্রটিগুলো সুন্দরভাবে বর্ণনা করা’।[৩২]

(ইনশাআল্লাহ চলবে)


* পি-এইচ. ডি গবেষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

তথ্যসূত্র :
[১]. ইবনু হাজার আসক্বালানী, ফাৎহুল বারী, ৬ষ্ঠ খ- (বৈরূত : দারুল মা‘আরিফাহ, ১৩৭৯ হি.), পৃ. ৩; মুহাম্মাদ শামসুল হক্ব আযীমাবাদী, ‘আওনুল মা‘বূদ (বৈরূত : দারুল কুতুবিল ‘আলামিয়্যাহ, ২য় সংস্করণ, ১৪১৫ হি.), ৭ম খ-, পৃ. ১১১।
[২]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৬১৬; ছহীহ মুসলিম, হা/২৭০৭।
[৩]. নাসাঈ, হা/২৫২৬।
[৪]. আব্দুল্লাহ ইবনু ছলীহ আল-ফাওযান, হুছূলুল মা’মূল বি-শারহি ছালাছাতিল উছূল, পৃ. ১৭১; ইবরাহীম মুছত্বফা ও তার সাথীবৃন্দ, আল-মু‘জামুল ওসীত্ব, ১ম খ-, পৃ. ১৪২; ইবনু মানযূর, লিসানুল ‘আরাব (বৈরূত : দারু ছদর), ৩য় খ-, পৃ. ১৩৩।
[৫]. মুহাম্মাদ ইবনু ইয়া‘কূব আল-ফিরোযাবাদী, আল-ক্বমূসুল মুহীত, পৃ. ৩৫১; আল-মু‘জামুল ওসীত্ব, ১ম খ-, পৃ. ১৪২।
[৬]. ফাৎহুল বারী, ৬ষ্ঠ খ-, পৃ. ৩।
[৭]. ইবনু তাইমিয়াহ, মাজমূঊল ফাতাওয়া, ১০ম খ- (দারুল ওফা, ৩য় সংস্করণ, ১৪২৬ হি.), পৃ. ১৯২।
[৮]. ফাৎহুল বারী, ৬ষ্ঠ খ-, পৃ. ৩।
[৯]. আবুল ফিদা ইসমাঈল ইবনু কাছীর, তাফসীরুল কুরআনিল আযীম, ৫ম খ- (দারু ত্বায়্যেবা, ২য় সংস্করণ, ১৪২০ হি.), পৃ. ৪৫৫।
[১০]. ছহীহ মুসলিম, হা/৫০; মিশকাত, হা/১৫৭।
[১১]. তাফসীরুল কুরআনিল আযীম, ৪র্থ খ-, পৃ. ১১৮।
[১২]. আবূ দাঊদ, হা/২৫০৪; নাসাঈ, হা/৩০৯৬; দারেমী, হা/২৪৩১; মিশকাত, হা/৩৮২১।
[১৩]. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, জিহাদ ও ক্বিতাল (রাজশাহী : হাদীছ ফাউ-েশন বাংলাদেশ, ২য় সংস্করণ, ২০১৩ খ্রি.), পৃ. ৬।
[১৪]. আল-জামি‘ঊ লি আহকামিল কুরআন, ১২তম খ-, পৃ. ৯৯।
[১৫]. আল-জামি‘ঊ লি আহকামিল কুরআন, ১৩তম খ-, পৃ. ৫৮।
[১৬]. মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩৯৯৭, ২৪০১১; মুসতাদরাক হাকিম, হা/২৪; তিরমিযী, হা/১৬২১; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৪৬২৪।
[১৭]. ইবনু মাজাহ, হা/২২৭; বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/১৫৭৫; মিশকাত, হা/৭৪২।
[১৮]. ছহীহ বুখারী, হা/৩০০৪, ৫৯৭২; ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৪৯; আদাবুল মুফরাদ, হা/২০; মুসনাদে আহমাদ, হা/৬৫৪৪; মুসতাদরাক হাকিম, হা/২৫০১; আবূ দাঊদ, হা/২৫২৯; তিরমিযী, হা/১৬৭১; নাসাঈ, হা/৩১০৩; মিশকাত, হা/৩৮১৭।
[১৯]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৪৯।
[২০]. তিরমিযী, হা/২১৭৪; আবু দাঊদ, হা/৪৩৪৪; ইবনু মাজাহ, হা/৪০১১; মিশকাত, হা/৩৭০৫।
[২১]. ছহীহ বুখারী, হা/২৮৪৩; ছহীহ মুসলিম, হা/১৮৯৫।
[২২]. তাফসীরুল কুরআনিল আযীম, ৪র্থ খ-, পৃ. ১৭৮।
[২৩]. জামি‘ঊল বায়ান ফী তা’বীলিল কুরআন, ১৮তম খ-, পৃ. ৬৮৮।
[২৪]. প্রাগুক্ত।
[২৫]. তাফসীরুল কুরআনিল আযীম, ৪র্থ খ-, পৃ. ১৭৮।
[২৬]. জামি‘ঊল বায়ান ফী তা’বীলিল কুরআন, ১৮তম খ-, পৃ. ৬৮৮।
[২৭]. জামি‘ঊল বায়ান ফী তা’বীলিল কুরআন, ১৯তম খ-, পৃ. ২৮১।
[২৮]. আল-জামি‘ঊ লি আহকামিল কুরআন, ১২তম খ-, পৃ. ৯৯।
[২৯]. তাফসীরুল কুরআনিল আযীম, ৫ম খ-, পৃ. ৪৫৫।
[৩০]. মুহাম্মাদ আশ-শাওকানী, ফাৎহুল ক্বাদীর, ৫ম খ-, পৃ. ১৪০।
[৩১]. তায়সীরুল কারীমির রহমান ফী তাফসীরিল কালামিল মান্নান, পৃ. ৫৪৬।
[৩২]. তদেব, পৃ. ৩৪৪।




সূদ-ঘুষ ও অবৈধ ব্যবসা (৪র্থ কিস্তি) - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
মুছীবতে ধৈর্যধারণ করার ফযীলত - শায়খ আখতারুল আমান বিন আব্দুস সালাম
দুর্নীতি হ্রাসে শিক্ষার ভূমিকা - মোঃ শফিকুল ইসলাম
আল-কুরআনের আলোকে দাওয়াতের মাধ্যম - আব্দুল গাফফার মাদানী
ইসলামী সংগঠন ও তরুণ-যুবক-ছাত্র (শেষ কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
জঙ্গিবাদ বনাম ইসলাম (৪র্থ কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
মীলাদুন্নবী ও আমাদের অবস্থান - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
ইমাম মাহদী, দাজ্জাল ও ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর আগমন সংশয় নিরসন (৫ম কিস্তি) - হাসিবুর রহমান বুখারী
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (৪র্থ কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
বিদ‘আত পরিচিতি (৩১তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
বিদ‘আত পরিচিতি (১৭তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ (২য় কিস্তি) - অনুবাদ : মুহাম্মদ ইমরান বিন ইদরিস

ফেসবুক পেজ