মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৬:০২ অপরাহ্ন

ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ

-ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন*


(১০ম কিস্তি)
 

পরবর্তী নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা সৃষ্টি  

একটি সুদূরপ্রসারী, গতিশীল ও সুদৃঢ় সমাজ-জামা‘আত-সংগঠনের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের বিশেষ বিচক্ষণতাপূর্ণ গুণ ও যোগ্যতার বহিঃপ্রকাশ হল- পরবর্তী নেতৃতের ধারাবাহিকতা সৃষ্টি করা; যাতে একজনের অনুপস্থিতিতে আরেকজন বা বাকি যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে কেউ না কেউ জামা‘আতকে যথাযথভাবে দক্ষতার সাথে নেতৃত্ব দিয়ে কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে পারেন ও লক্ষ্য পানে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হন। একটি সংগঠন যেমন আমীর ছাড়া চলে না, ঠিক তেমন কোনো অনভিজ্ঞ লোক হঠাৎ এসে এ ধরনের গুরুদায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে সক্ষম হবেন না- এটাই স্বাভাবিক। সঙ্কট ও বিপাকের সময় হঠাৎ ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব তৈরি করা, হন্যে হয়ে উচ্চতর দায়িত্বশীল খোঁজাখুজি করা, অতঃপর নির্বাচনী বা নির্ধারণী প্রক্রিয়া চালানো ইত্যাদি করতে করতেই সংগঠন কিছুটা হলেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে বা তার গতিবিধি বিঘ্নিত হবে। কখনো বা ভুল ব্যক্তির উপর দায়িত্ব পড়বে কিংবা এ গুরুভার নিয়ে দায়সারা গোছের কিছু একটা করা হবে, অথবা নিরুপায়ত্বের অজুহাত দাঁড় করিয়ে জী-হুজুর মার্কা, ধামাধরা মোছাহেবদের সমর্থনে পরিপুষ্ট করে স্বীয় পরিবারের কাউকে বিশেষ করে কোনো অযোগ্য, অনভিজ্ঞ, অপরীক্ষিত ছাহেবযাদহ্কে অকস্মাৎ গদ্দিনশীন করে তেলেসমাতি কায়দায় বাজিমাত করা হবে। সত্যি কথা হল, ও দিয়ে আর যাই হোক, সংগঠনের কোন উন্নতি কামনা বা অবনতি রোধের আশা করা যায় না। কেননা ইসলামী জামা‘আত-সংগঠন তো হলো দ্বীন-শরী‘আত, দেশ-জাতি-সমাজ সকল কিছুকে সামনে নিয়ে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের পানে সুযোগ্য আমীরের নেতৃত্বে ও যথাযোগ্য সচেতন শূরা’র পরামর্শের ভিত্তিতে, সার্বিক পরিবেশের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলো সুস্থভাবে বিবেচনা করে, নিয়মতান্ত্রিকভাবে ধারাবাহিকতার সাথে সম্মুখপানে এগিয়ে যাওয়ার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টার নাম। সেখানে নেতৃত্বের জন্য অতিরঞ্জিত জয়ধ্বনির ও আমীরের প্রতি মাত্রাতিরিক্ত স্তুতি পেশ করার অবকাশ কোথায়? তবে তাঁর হক্ ও যথাযথ প্রাপ্য সম্মানতো তাকে দিতেই হবে- এতে কোনো ধরনের দ্বিমত দ্বিধা নেই।

মোছাহেবমণ্ডলো ও বিদূষকশ্রেণি কর্তৃক তাদের ধর্মযাজকগণের অতিরঞ্জিত তা’রীফ-স্তুতি করে ও তাঁদের অপদার্থ আল-আওলাদের বেফাঁস সুখ্যাতি গেয়ে জাতে ওঠা এবং তাদের মাহফিলে, দস্তরখানে আসন লাভ করে পাকাপোক্তভাবে টিকে থাকার বিষয়টি শুধু ইয়াহুদী-নাছারাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং হিন্দুদের মধ্যে তা আরো গভীরে। পারিবারিকভাবে পুরোহিততন্ত্রের ঠাকুর পরিবারে রবীন্দ্রনাথের জন্ম; তদুপরি তিনি স্বয়ং গুরু তথা কবি-গুরু উপাধিতে ভূষিত। হিন্দু ধর্মের কুলীন অকুুলীন ও বর্ণভেদ প্রথার কথা তো সর্বত্র সুবিদিত। শিখদের মধ্যেও গুরুভক্তি ধর্মীয় মৌলিক বিধানের অন্তর্গত, তদুপরি সর্বস্থলে ‘জয়গুরু’ মন্ত্র আওড়ানোর দীক্ষা তাদের মধ্যে খুবই প্রবল। এক শিখ-সৈন্য নিজে স্বহস্তে স্বীয় পুত্রকে হত্যার নির্দেশ পালন করার সময় এবং তারপরে আবার তার নিজের নিহত হওয়ার কালে ‘গুরুজী’র’ জয়ধ্বনির মধ্যেই শান্তি খুঁজে পাচ্ছে- এ বিষয়ে ঠাকুর-গুরু রবীন্দ্রনাথ তার কবিতায় উল্লেখ করেছেন :

পঞ্চ নদীর তীরে
বেণী পাকাইয়া শিরে
দেখিতে দেখিতে গুরুর মন্ত্রে জাগিয়া উঠেছে শিখ-
নির্মম নির্ভিক
হাজার কন্ঠে ‘গুরুজী’র জয়’ ধ্বনিয়া তুলেছে দিক।
. . . .
বালকের মুখে চাহি
‘গুরুজী’র জয়’ কানে-কানে কয়, রে পুত্র ভয় নাহি
নবীন বদনে অভয়কিরণ জ্বলি উঠে উৎসাহি-
কিশোরকন্ঠে কাঁপে সভাতল, বালক উঠিল গাহি
‘গুরুজী’র জয়, কিছু নাহি ভয়’ বন্দার মুখ চাহি॥
বন্দা, তখন বামবাহুপাশ জড়াইল তার গলে,
দক্ষিণকরে ছেলের বক্ষে ছুরী বসাইল বলে-
‘গুরুজী’র জয়’, কহিয়া বালক লুটালো ধরণীতলে।[১]

গুরু-ঠাকুর মশাই ‘বন্দী বীর’ শিরোনামে শিখদের বীরত্ব ও গুরুভক্তিই কবিতাটির মূল উপজীব্য করেননি, বরং দিল্লীর মুসলিম বাদশাহ্ ও মুসলিম ক্বাযীর বদনামটাকেই সুনিপুণভাবে তুলে ধরেছেন। নাহলে পরাজিত ও ধৃত বন্দি বিদ্রোহী শিখের শুধু ‘জয়গুরু’ বলার মধ্যে কী বীরত্ব লুকিয়ে আছে- তা একেবারেই দুর্বোধ্য। আর মুসলিম ক্বাযী শিশু হত্যার নির্দেশ দিবেন তাও আবার পিতার হাতে তা কার্যকর করতে বাধ্য করবেন- এ যেন এক নযীরবিহীন অসত্যাচার। যুদ্ধের মাঠে সেনাসদস্য কর্তৃক বা বিভিন্ন স্থানে পরিবেশভেদে শাসক কর্তৃক নিষ্ঠুর ঘটনা অনেক ক্ষেত্রে ঘটে থাকে, কিন্তু মুসলিম ক্বাযী বা বিচারক ঠাণ্ডা মাথায় এ জাতীয় বিচারিক রায় দিবেন ও কার্যকর করাবেন- তা বাস্তবে না ঘটলেও রবীন্দ্রনাথের চিন্তা-চেতনায় ও কল্পনা জগতে ঘটেছে এবং কাব্যের গুরুগীরীর মাধ্যমে তা রটেছে এবং পাঠককে রীতিমত বেওকুফ বানানোর ক্ষেত্রে তাঁর অপরিসীম দক্ষতা ও সক্ষমতার পরিচয় সচেতন পাঠকের কাছে দিবালোকের মত ফুটে উঠেছে। 

উল্লেখ্য, মানুষের যেমন ঔরষজাত সন্তান ও সহোদর ভাইবোন থাকে, তেমনই সাংগঠনিক সন্তান ও ভাইবোন থাকে; তাদেরকে নিয়ে একটি সুশৃঙ্খল জামা‘আতী পরিবার গঠিত হয়। পরবর্তী যোগ্য নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে পারা সচেতন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের জন্য তেমন শান্তি, স্বস্তি ও কৃতিত্বের বিষয়, যেমন যোগ্যতর সুসন্তান রেখে যেতে পারা সচেতন দায়িত্বশীল পিতার জন্য শান্তি, স্বস্তি ও কৃতিত্বের বিষয়।

রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অত্যন্ত সুচারুরূপে ধারাবাহিকভাবে এই নেতৃত্ব তৈরির কাজটি করে গিয়েছিলেন। তাই তাঁর ইন্তেকালের পরে মুসলিম জামা‘আত ও রাষ্ট্রের সার্বিক দায়িত্ব পালন করার মত সুযোগ্য লোকের অভাব হয়নি। সর্বকালেই চলমান সর্বোচ্চ নেতৃত্বের বিশেষ কর্তব্য হলো, তিনি প্রতিভাবান নেতৃত্ব গড়ে তুলতে ও তাদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে সব সময় তৎপর থাকবেন; যেন তাঁর অনুপস্থিতি বা মৃত্যুতে জামা‘আত-সংগঠন যথাযথ পরিচালকের অভাব অনুভব না করে আর সেখানে বিশৃঙ্খলা ও অনাচারের সৃষ্টি না হয়। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে বহু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়ে ও জনসমাজে উপস্থাপন করে নেতৃত্বের জন্য সুপ্রস্তুত ও সুপ্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। মৃত্যুকালীন অসুস্থতার সময় নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্ত্রী আয়েশাহ্ (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-কে ডেকে বললেন-

اُدْعِيْ لِيْ أَبَا بَكْرٍ أَبَاكِ وَأَخَاكِ حَتَّى أَكْتُبَ كِتَابًا فَإِنِّيْ أَخَافُ أَنْ يَتَمَنَّى مُتَمَنٍّ وَيَقُوْلُ قَائِلٌ أَنَا أَوْلَى وَيَأْبَى اللهُ وَالْمُؤْمِنُوْنَ إِلَّا أَبَا بَكْرٍ

“তুমি তোমার পিতা আবূ বাকর কে আমার কাছে ডেকে আন এবং তার সাথে তোমার ভাইকেও (আব্দুর  রহমান বিন আবূ বাকর), আমি  (পরবর্তী সর্বোচ্চ ইমারত প্রসঙ্গে) কাগজে লিপিবদ্ধ করে দিয়ে যাব। কেননা আমি শঙ্কিত যে, কোনো উচ্চাভিলাষী ব্যক্তি আবার (ইমারতের ব্যাপারে) কোনো ধরনের দুরাকাঙ্ক্ষা পোষণ করবে এবং বলে বসবে যে, আমিই এ দায়িত্বের জন্য অধিক যোগ্য। আর আল্লাহ তা‘আলা এবং মুমিনগণ আবূ বাকর কে ছাড়া আর কাউকেই (এ দায়িত্বের জন্য) গ্রহণ করবেন না’।[২]

এ হাদীছে যেমন আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর পক্ষে খিলাফতের বিষয়ে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দিক থেকে সুস্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে, তেমনই যারা (ইমাম ইবনু জারীর ত্বাবারী, ইমাম ইবনু হাযম প্রমুখ) বলেন যে, এর দ্বারা আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খলীফাহ্ হিসাবে চূড়ান্তভাবে সরাসরি নিয়োগ দিয়ে গেছেন- সেটিও পূর্ণাঙ্গ সঠিক নয়। কেননা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লিখার ইচ্ছা পোষণ করলেও তা থেকে আবার বিরত ছিলেন; মুমিনদের সুচিন্তিত মতামত আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর পক্ষেই যাবে এ দৃঢ় আস্থার উপর ভিত্তি করে। অনুরূপ রাফেযী-শী‘আরা যারা বলে যে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর পক্ষে খিলাফতের বন্দোবস্ত পাকাপোক্ত করে দিয়েছেন বা অছিয়ত করে গেছেন- তার অসারতা ও প্রকাশ্য প্রতিবাদ এ হাদীছে রয়েছে।[৩] 

নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হিজরতের সময় আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে স্বীয় সঙ্গী করে, নিজের জীবদ্দশায় তাঁকে দিয়ে ছালাতে ইমামতি করিয়ে, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ কাজে পাশে রেখে তাঁর পরামর্শ গ্রহণ করে এবং জনগণের সামনে তাঁর ত্যাগ ও অবদানের প্রকাশ্য স্বীকৃতি ও ঘোষণা দিয়ে পরবর্তী নেতৃত্বের জানান দিয়ে গিয়েছিলেন। যদিও শুধু তাঁর নামটি জনগণের সম্মুখে খলীফাহ্ হিসাবে মুখে উচ্চারণ করে ও লিপিবদ্ধ করে দিয়ে যাননি; বরং তার এখতিয়ার ছেড়ে দিয়েছিলেন উম্মতের উপর; নিজে থেকে তাদের উপর চাপিয়ে দেননি। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিদায় হজ্জের (দশম হিজরী) পূর্বেই নবম হিজরীতে আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে মুসলিম জাতির সর্ববৃহৎ দ্বীনি গণজমায়েত হজ্জের আমীর বানিয়ে ছিলেন।[৪] ছহীহ বুখারীতে বর্ণনা এসেছে,

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ، إِنَّ أَبَا بَكْرٍ الصِّدِّيقَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ بَعَثَهُ فِي الْحَجَّةِ الَّتِي أَمَّرَهُ عَلَيْهِ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَبْلَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ يَوْمَ النَّحْرِ فِيْ رَهْطٍ يُؤَذِّنُ فِي النَّاسِ أَلَا لَا يَحُجُّ بَعْدَ الْعَامِ مُشْرِكٌ وَلَا يَطُوْفُ بِالْبَيْتِ عُرْيَانٌ

আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেছেন যে, বিদায় হজ্জের পূর্বে (৯ম হি.) যে হজ্জে রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে হজ্জের আমীর করে পাঠিয়েছিলেন সে হজ্জে তাকে (আবূ হুরায়রাকে) তিনি (আবূ বাকর) একটি গ্রুপের সাথে পাঠিয়েছিলেন লোকদের মধ্যে এই ঘোষণা দেয়ার জন্য যে, এই বছরের পর আর কোন মুশরিক কোন অবস্থাতেই হজ্জ করতে পারবে না এবং উলঙ্গ অবস্থায় কেউ কা‘বাহ্ ঘরের ত্বাওয়াফ করতে পারবে না।”[৫]

ইমাম ইবনু কাইয়্যিম আল-জাউযিয়্যাহ্ এ বিষয়ে উল্লেখ করেছেন :

)قال الإمام ابن قيّم الجوزية:( "وولَّى أبا بكر إقامةَ الحجِّ سنة تِسع، وبعثَ في أثره عليّا يقرأ على الناس سورةَ براءة، قيل: لأنّ أوّلها نزل بَعد خروج أبي بكر إلى الحج، وقيل أرْدفَه به عوناً له ومساعداً، ولهذا قال له الصدِّيق:"أميرٌ أو مأمور؟ قال: بل مَأمور

“নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে নবম হিজরী সালে হজ্জ-এর নেতৃত্বের দায়িত্ব দেন। তাঁর পেছনে পেছনে ‘আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে পাঠিয়ে দেন সূরাহ্ আল-বারাআহ্ (আত্তাউওবাহ্-এর প্রথমাংশ) জনগণের মধ্যে পাঠ করে শুনানোর জন্য। কেননা এর প্রথম অংশ নাযিল হয় আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর হজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে যাওয়ার পর। এও বলা হয়ে থাকে যে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর সহযোগী ও সাহায্যকারী হিসাবে তাঁর পিছেপিছে পাঠিয়েছিলেন। এমত পরিস্থিতিতে আবূ বাকর ছিদ্দীক্ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আপনি ‘আমীর’ হিসাবে এসেছেন না ‘মা’মূর’ (আনুগত্যকারী) হিসাবে? তখন তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, “বরং ‘মামূর’ বা আনুগত্যকারী হিসাবে।”[৬] 

ইমাম নাসায়ী এ প্রসঙ্গে সুদীর্ঘ কাহিনী বর্ণনা করেছেন, তার মধ্যে রয়েছে :

"أَمِيْرٌ أَمْ رَسُوْلٌ؟ قَالَ: لَا، بَلْ رَسُوْلٌ، أَرْسَلَنِيْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِبَرَاءَةَ أَقْرَؤُهَا عَلَى النَّاسِ فِيْ مَوَاقِفِ الْحَجِّ"

“আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ‘আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে জিজ্ঞাস করলেন : আপনি ‘আমীর’ হিসাবে আসলেন না ‘দূত’ হিসাবে? তিনি বললেন, বরং দূত হিসাবে। রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে সূরাহ্ আল-বারাআহ্ (আত্তাউবাহ্) সহকারে পাঠিয়েছেন হজ্জের জমায়েত হওয়ার বিশেষ জায়গাসমূহে জনগণের মধ্যে সেটি পাঠ করে শুনানোর জন্য।[৭] ইমাম কুরতুবী ও ইমাম ইবনু কাছীরও অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।[৮]

হজ্জের মত মুসলিম জনগণের বৃহত্তর দ্বীনী জমায়েতে তখন সুনির্দিষ্ট আমীর বা ইমাম নির্ধারণ করা হয়েছিল, এ বিষয়টিও সাংগঠনিক ও জামা‘আতী জীবন-যাপনের এক সুস্পষ্ট বার্তা ও দিক-নির্দেশনা বহন করে। আর আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে জিজ্ঞাসা করেছেন তিনি ‘আমীর’ হিসাবে এসেছেন না ‘মা’মূর’ হিসাবে। অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পক্ষ থেকে নতুন আমীর হিসাবে এসে থাকলে তিনি ইমারত ছেড়ে দিবেন এবং মা’মূর হয়ে যাবেন এবং নব-নিযুক্ত আমীর ‘আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর ইতা‘আত করবেন। এখানে শী‘আদের একটি বিশেষ ভ্রান্তধারণার সুস্পষ্ট প্রতিবাদ রয়েছে আর তা হলো : আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবদ্দশাতেই আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর আনুগত্য নির্দ্বিধায়, স্বতঃস্ফূর্তভাবে, জনসম্মুখে, প্রকাশ্যে করেছেন এবং তিনি নিজে আমীর নিযুক্ত হননি-একথা সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। অন্যদিকে আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ পেলে নিজেও যে  কোনো মুহূর্তে ইমারত ছেড়ে দিতে প্রস্তুত ছিলেন। (যেমনটা এই মাত্র উল্লেখ করা হয়েছে)। সুতরাং আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর প্রথম খলীফাহ্ হওয়ার ব্যাপারে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অছিয়ত করেছেন বা আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) প্রথম খলীফাহ্ হওয়ার জন্য লালায়িত ছিলেন- এ জাতীয় কথাবার্তা নিতান্তই অবান্তর, মিথ্যাচার, ঐতিহাসিক গতিবিধির বিরোধী ও বাস্তবতার সাথে সম্পূর্ণ অসঙ্গতিপূর্ণ। তদুপরি ‘আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর উপর ছাফ-ছাফ অপবাদ আর আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর উপর খুল্লুমখোলা  তোহমত; অধিকন্তু বস্তাপচা কু-বক্তব্যের মাধ্যমে নিজেদের পথভ্রষ্টতার জানান দেয়া ও পূঁতিগন্ধময় অসাধু-লিখনীর মাধ্যমে প্রতারণার রসদ যোগানো এবং গীবতের আশ্রয় নিয়ে পাপচারিতা ও হারাম পথে নিকৃষ্ট স্বার্থ উদ্ধার ছাড়া আর কিছু নয়।

রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর জীবনের শেষ দিনগুলোতে অসুস্থতার সময় আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে দিয়ে ফরয ছালাতসমূহে (নামাযে) ইমামতি করিয়েছিলেন।[৯] (যার সংখ্যা ছিল ১৭ ওয়াক্ত)।[১০] শুধু এতটুকুই নয়, মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে জনসম্মুখে আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর অবদানের প্রকাশ্য ও  সুস্পষ্টভাবে স্বীকৃতি দিয়ে তাঁকে সর্বজনীন শ্রদ্ধার আসনে আরো পাকাপোক্ত করে দিয়েছিলেন। (আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত হাদীছে যার বিবরণ এসেছে।[১১] ইতঃপূর্বে ‘আত্মপ্রশংসা না করা ও অন্যের স্বীকৃতি দেয়া’- সংক্রান্ত আলোচনায় এ বিষয়ে কিছুটা উল্লেখ করা হয়েছে।)

আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর পর যে ‘উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) নেতৃত্বের অধিক যোগ্য ব্যক্তি ছিলেন, তাও রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবদ্দশাতেই বহুভাবে প্রমাণিত। তাই অসুস্থতার সময় নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন তাঁর স্ত্রী আয়েশাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-কে বললেন : مُرِي أَبَا بَكْرٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ “(তোমার বাবা) আবূ বাকরকে (আমার স্থানে) লোকদের ছালাতে (নামাযে) ইমামত করতে বলো!” তখন তিনি বললেন, আপনি ‘উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে ইমামত করার নির্দেশ দিন, কেননা আমার বাবা আবূ বাকর একজন নরম দিলের মানুষ, আপনার স্থানে ইমামতিতে দাঁড়িয়ে তিনি হয়তো স্থির থাকতে পারবেন না। এ কথা শুনে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আয়েশাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-কে কিছুটা তিরস্কার করেন এবং আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ছালাতে ইমামত করেন।”[১২] যেহেতু নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিজের কোনো পুত্র সন্তান জীবিত ছিলেন না, সুতরাং তিনি স্বীয় গোত্র বানি হাশেম থেকে কাউকে (যেমন চাচাত ভাই ও জামাতা আলী বিন আবি ত্বালিব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বা অপর চাচাত ভাই আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস) দিয়ে ইমামত শুরু করিয়ে দিয়ে জনগণের দৃষ্টি তাঁর দিকে আকর্ষণ করে যেতে পারতেন; কিন্তু না, তিনি তা করেননি বরং সকল দিক থেকে সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি আবূ বাকর তাইমী কুরাইশী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)- কেই সামনে পেশ করেছেন।

আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর পরই যে ‘উমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর স্থান তা ‘আয়েশাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর বুঝতে বাকি ছিল না, আর এ ধারণা ছাহাবীগণের সবারই ছিল। যেমনটা ছহীহুল বুখারীতে ইবনু ‘উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহু), ‘আলী বিন আবি ত্বালিব (রাযিয়াল্লাহু আনহু), ইবনু ‘আব্বাস সহ[১৩] আরো অনেক ছাহাবীর বর্ণনায় উল্লেখিত হয়েছে। এ দু’জনের পরেই ‘উছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ও ‘আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর স্থান।[১৪]

عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَال:"كُنَّا نُخَيِّرُ بَيْنَ النَّاسِ فِيْ زَمَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَنُخَيِّرُ أَبَا بَكْرٍ ثُمَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ ثُمَّ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ

আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, “আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে লোকদের মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ তা নিয়ে আলোচনা করতাম। তখন আমরা প্রাধান্য দিতাম আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে। অতঃপর ’উমর বিন খাত্তাব (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে। তারপর ’উছমান বিন আফ্ফান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে।”[১৫] 

উল্লেখ্য, আব্দুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) শ্রেষ্ঠত্বের তালিকায় তাঁর পিতা ’উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর নাম এক নাম্বারে উল্লেখ করেননি, বরং এক নাম্বারে উল্লেখ করেছেন আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর নাম। হাদীছে আরো এসেছে :

عَنْ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعَثَهُ عَلَى جَيْشِ ذَاتِ السُّلَاسِلِ فَأَتَيْتُهُ فَقُلْتُ: "أَيُّ النَّاسِ أَحَبُّ إِلَيْكَ؟ قَالَ عَائِشَةُ فَقُلْتُ: مِنْ الرِّجَالِ؟ فَقَالَ: أَبُوْهَا قُلْتُ: ثُمَّ مَنْ؟ قَالَ: ثُمَّ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ"، فَعَدَّ رِجَالًا

’আমর ইবনুল ’আছ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেন যে, রাসূলল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন আমাকে যাতুস্সালাসিল যুদ্ধে পাঠালেন তখন আমি তাঁর কাছে এসে জিজ্ঞাস করলাম, লোকেদের মধ্যে কে আপনার কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয়? তখন তিনি বললেন : “আয়েশাহ।” তখন আমি বললাম, পুরুষদের মধ্যে কে বেশি প্রিয়? তিনি বললেন : “তাঁর পিতা (আবূ বাকর)।” আমি বললাম, তারপর কে? তিনি বললেন : “উমর বিন খাত্ত্বাব, অতঃপর তিনি আরো কয়েক জনের নাম উল্লেখ করলেন।”[১৬]

(চলবে ইনশাআল্লাহ)


* সাবেক অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম।

তথ্যসূত্র : 
[১]. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কবিতা : ‘বন্দী বীর’।
[২]. ছহীহ মুসলিম, বিভাগ : ফযায়েলে ছাহাবাহ, অধ্যায় : ফাযায়েলে আবূ বাকর, হা/৬১৮১; ছহীহ বুখারী, (সমার্থক ভাষায়) বিভাগ : আল-আহকাম, অধ্যায় : আল-ইস্তিখ্লাফ, হা/৭২১৭; আল-আউয়াছিম মিনাল ক্বাউয়াছিম, পৃ. ১৮৯; মুসনাদ আহমাদের বরাতে, আয়েশাহ্ (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে।
[৩]. ফাৎহুল বারী শারহ্ ছহীহুল বুখারী, ১৩তম খণ্ড, পৃ. ২১৯, ২২০, ২২১।
[৪]. ছহীহ বুখারী, বিভাগ : মাগাযী, অধ্যায় : ৯ম হি. সালে হজ্জে আবূ বাকরের জনগণের নেতৃত্ব দান, হা/৪৩৬৩ ।
[৫]. ছহীহ বুখারী, বিভাগ : আল-হাজ্জ, হা/১৬২২, বিভাগ : তাফসীর, অধ্যায় : সূরাহ্ আল-বারাআহ্ (আত-তাউবাহ), হা/৪৬৫৭; বিস্তারিত বিবরণ : ফাৎহুল বারী শারহ ছহীহ আল-বুখারী দ্রষ্টব্য, ৮ম খণ্ড, পৃ. ১৭০-১৭১।
[৬]. যাদুল মা‘আদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ১২৬।
[৭]. নাসায়ী, বিভাগ : হজ্জ, অধ্যায় : তারভিয়ার দিনের পূর্বে খুৎবাহ্, হা/২৯৯৬।
[৮]. তাফসীর কুরতবী, সূরাহ্ আত্-তাউবাহ্, ৮ম খণ্ড, পৃ. ৬৫-৬৬, তাফসীর ইবনু কাছীর, সুরাহ্ আত্-তাউবাহ্, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩০৩।
[৯]. ছহীহ বুখারী, বিভাগ : আযান, অধ্যায় : ইমাম বানানো হয় তাঁকে অনুসরণ করার জন্য, হা/৬৮৭।
[১০]. আল্লামাহ্ সফিউর রহমান মুবারকপুরী, আর-রাহীকুল মাখতুম, পৃ. ৬১৫।
[১১]. ছহীহ বুখারী, বিভাগ : ফাযায়িল আছ্ছাহাবাহ, অধ্যায় : আবূ বাকরের ফযীলত, হা/৩৬৫৪।
[১২]. ছহীহ বুখারী, বিভাগ : আযান, অধ্যায় : ৪৬-৪৭, ৪৮, হা/৬৭৮-৬৮৪।
[১৩]. ছহীহ বুখারী, বিভাগ : মানাকিব, হা/৩৬৫৫, ৩৬৭৭, ৩৬৯৮।
[১৪]. আহলে সুন্নাহ  ওয়াল-জামা‘আতের ‘আকীদাহ’র উপর প্রতিটি  গ্রন্থেই এ ধারাবাহিকতার উল্লেখ রয়েছে। ইমাম বুখারী ছহীহ বুখারীতে মানাকিব বিভাগের ধারাবাহিকতাও এভাবে  করেছেন: আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু), উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহু), উছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) অতঃপর ’আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ।
[১৫]. ছহীহ বুখারী, বিভাগ : ফাযায়িলুছ্ছাহাবাহ্, অধ্যায় : ফাযলু আবী বাকর, হা/৩৬৫৫, ফাৎহুল বারী শরহ ছহীহ বুখারী, ৭ম খণ্ড, পৃ. ২০।
[১৬]. ছহীহ বুখারী, বিভাগ : ফাযায়িলুছ্ছাহাবাহ্, অধ্যায় : ফাযলু আবী বাকর, হা/৩৬৬২।




প্রসঙ্গসমূহ »: সংগঠন সমাজ-সংস্কার
কুরবানীর মাসায়েল - ইবাদুল্লাহ বিন আব্বাস
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (৭ম কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
ভ্রান্ত ফের্কাসমূহের ঈমান বনাম আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের ঈমান : একটি পর্যালোচনা - ড. আব্দুল্লাহিল কাফী বিন লুৎফর রহমান মাদানী
দলাদলির কুপ্রভাব : উত্তরণের উপায় (শেষ কিস্তি) - শায়খ মতিউর রহমান মাদানী
ইসলামী উত্তরাধিকার আইনের ধারণা: গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য - ড. মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ
ইসলামী পুনর্জাগরণের প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণের উপায় (৬ষ্ঠ কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
ইমাম মাহদী, দাজ্জাল ও ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর আগমন সংশয় নিরসন - হাসিবুর রহমান বুখারী
ইমাম মাহদী, দাজ্জাল ও ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর আগমন : সংশয় নিরসন (৩য় কিস্তি) - হাসিবুর রহমান বুখারী
মাযহাবী গোঁড়ামি ও তার কুপ্রভাব (২য় কিস্তি) - অনুবাদ : রিদওয়ান ওবাইদ
ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় যুবসমাজ - ড. মেসবাহুল ইসলাম
বিদ‘আত পরিচিতি (১০ম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
ছয়টি মূলনীতির ব্যাখ্যা - অনুবাদ : আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল ক্বাদির

ফেসবুক পেজ