মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৬:৩৭ অপরাহ্ন
মাদক : সুশীল সমাজ ধ্বংসের অন্যতম হাতিয়ার
-ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর

ভূমিকা
মাদকদ্রব্য হচ্ছে সকল অকল্যাণ ও অমঙ্গলের প্রধান উৎস। মাদকের নীল নেশায় ক্ষয়ে যাচ্ছে আমাদের তারুণ্য। মাদকতার গহীন প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে সমাজ। মাদক সেবনকারীরা মানবরূপী নরপশুতে পরিণত হচ্ছে। মাদকদ্রব্য সেবন করে তার মোহিনী নেশায় বিভোর হয়ে কলঙ্কের প্রতীক হয়ে তারা নির্দ্বিধায় দিনাতিপাত করছে। বর্তমানে মাদক সেবন যেন একটি সামাজিক রীতি-নীতিতে এমনকি আধুনিকতায় রূপ নিয়েছে।

আবালবৃদ্ধবনিতা সকলেই মাদকতার বিষাক্ত প্রেমে আসক্ত। মাদক সেবীরা এটাকে সভ্যতা বলে জ্ঞান করছে। মাদকদ্রব্য সেবন করে মাতলামির শেষ প্রান্তে পৌঁছে স্বীয় কাণ্ডজ্ঞান, বিবেক-বুদ্ধিকে খুইয়ে তারা মাতা-পিতা, আত্মীয়-স্বজনদের সাথে প্রতিনিয়ত অশালীন আচরণ করছে। তাদের বিষাক্ত নিঃশ্বাস এবং ধূমপায়ীদের কৃষ্ণ ধোঁয়া সর্বদা ধরিত্রীর পবনকে দূষিত করে চলেছে। এ সমস্ত মানবরূপী দানবরা স্বীয় গৌরব ও কৃষ্টি-কালচারকে ভুলতে বসেছে। সভ্য নামের এই নোংরামি অসভ্যতা আজ মানব সমাজকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে।

মাদকদ্রব্য কী?
আভিধানিক বিশ্লেষণ : ‘মদ’ এর শাব্দিক অর্থ বর্ণনায় ‘সংসদ বাংলা অভিধান’-এ বলা হয়েছে, ষড় রিপুর অন্যতম, নিজের উপর অলীক শ্রেষ্ঠত্বের আরোপ, দম্ভ (ধনজনযৌবন-মদে মত্ত), প্রমত্ততা, সম্মোহ; আনন্দজনিত মত্ততার আবেশ।[১] মদের ইংরেজী প্রতিশব্দ হল- Wine, the fermented juice of grapes, or any liquor made from other fruits. অর্থাৎ ‘দ্রাক্ষাসব বা অন্য যে কোন ফল হতে প্রস্তুত মদ্য’।[২] মদের আরবী প্রতিশব্দ হল, الخمر যার আভিধানিক অর্থ আচ্ছন্ন করা, আবৃত করা, ঢেকে ফেলা। خمار শব্দটি خمر ধাতু থেকে নির্গত। এ শব্দটি خمار المرأة থেকে মুশতাক হয়েছে। কেননা ওড়না যেভাবে মাথা ও বুক ঢেকে ফেলে অনুরূপ মদও জ্ঞানকে ঢেকে ফেলে। এজন্য মদকে ‘খামর’ خمر বলা হয়। যেমন-কবি বলেন,

أَلَا يَا زَيْدُ وَالضَّحَّاكُ سِيرَا … فَقَدْ جَاوَزْتُمَا خَمْرَ الطَّرِيقِ

অর্থাৎ ‘হুঁশিয়ার হে যায়েদ ও যাহ্হাক! তোমরা মদে আচ্ছন্ন সমতল নিম্ন ভূমি পার হচ্ছ’।[৩]

পারিভাষিক বিশ্লেষণ : মদের সংজ্ঞায় আল্লামা শাওকানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

الْخَمْرُ: مَاءُ الْعِنَبِ الَّذِي غَلَا وَاشْتَدَّ وَقَذَفَ بِالزَّبَدِ وَمَا خَامَرَ الْعَقْلَ مِنْ غَيْرِهِ فَهُوَ خَمْرٌ

অর্থাৎ ‘খামর হচ্ছে আঙ্গুরের রস, যা পানির উপর জয়ী হয় এবং ফেনা প্রকাশ পায় এবং আঙ্গুরের রস ছাড়াও অন্য যা কিছু মস্তিষ্ককে আচ্ছন্ন করে, তাই খামর’।[৪]

মাদকতার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে আমেরিকার National Council on Alcoholism মন্তব্য করে যে, Alcoholism is an addiction to alcohol that entails several harmful consequences including damage to the brain, liver or other organs as well destructive effects on the alcoholic’s own life and that of alcoholic’s family. অর্থাৎ ‘মাদকাসক্তি হচ্ছে এ্যালকোহল জাতীয় পানীয় সেবনের প্রতি অভ্যাস, যা মস্তিষ্ক, যকৃত সহ মানব দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে মারাত্মকভাবে বিধ্বস্ত করে দেয়। শুধু তাই নয় মাদকাসক্ত ব্যক্তি তার নিজ জীবন ও তার পরিবারের জীবনও বিপন্ন করে দেয়’।[৫] হাদীছ শাস্ত্রে মদ বলতে প্রত্যেক নেশা সৃষ্টিকারী জিনিসকেই বুঝায় আর প্রত্যেক নেশা সৃষ্টিকারী জিনিসই হারাম।[৬]

যে সব মাদকদ্রব্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে
‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’ মাদকদ্রব্যের এক আন্তর্জাতিক শ্রেণী বিভাজন করেছে এভাবে-
০১. স্নায়ু নিস্তেজক মাদক : (ক) নারকোটিক জাতীয়, যেমন- হেরোইন, মরফিম, আফিম, পেথিড্রিন, কোডিন (ফেনসিডিল), মেথাডন। (খ) বারবিচুরেট জাতীয়, যেমন- গার্ডিনাল, ফেনোবারবিটন, সেনোরিল, পেনটোবার বিটন। (গ) প্রশান্তিদায়ক ওষুধ, যেমন- ডায়াজিপাম, নাইট্রোজিপাম, ক্লোবাজাম ইত্যাদি। (ঘ) মদ জাতীয়, যেমন- বিয়ার, ব্রান্ডি, হুইসকি, ভদকা, রাম, বাংলামদ, জিন, রেকটিফাইড স্পিরিট, ৫%-এর অধিক এ্যালকোহল যুক্ত কোন তরল পদার্থ।
০২. স্নায়ু উত্তেজক মাদক : (ক) ক্যানাবিস জাতীয়, যেমন- গাঁজা, মারিজুয়ানা, ভাং, হাশিস, চরস, সিদ্ধি। (খ) এমফিটামিন জাতীয়, যেমন- রিটালিন, ডেকসোড্রিন, মেথিডিন। (গ) কোকেইন জাতীয়, যেমন- কোকেইন বড়ি, নস্যি বা পেস্ট।
০৩. মায়া বিভ্রম উৎপাদনকারী মাদক : যেমন- এল এস ডি, মেসকোলিন।
০৪. বিবিধ মাদকদ্রব্য : (ক) তামাক জাতীয়, যেমন- বিড়ি, সিগারেট, চুরুট, হুক্কা, জর্দা, সাদাপাতা, খৈনী, দাঁতের গুল, নস্যি ইত্যাদি। (খ) পেট্রোলিয়াম জাতীয়, যেমন- পেট্রোল শোঁকা, জুতা পালিশ শোঁকা, অ্যারোলস, গ্যাস, তেল, নিক্স, ভিক্স ইত্যাদি।[৭]

সর্বগ্রাসী ধূমপানের অন্ধমোহে মানুষ উন্মাদ :
ধূমপান মাদকদ্রবেরই অংশবিশেষ। ধূমপানের কবলে পড়ে আজ মানব সমাজ অধঃপতনের অতল তলে তলিয়ে যাচ্ছে। এই সুন্দর সুশীল সমাজে যেন শান্তির কবর রচিত হচ্ছে। বর্তমানে পৃথিবীর ১.১ লক্ষ কোটি ধূমপায়ী প্রতিবছর ৬০০০ মিলিয়ন (৬০০ কোটি) সিগারেট খাচ্ছে। যার মধ্যে ৮০০ মিলিয়ন বা ৮০ কোটি ধূমপায়ী আমাদের মত গরীব উন্নয়নশীল দেশের। ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র হিসাব অনুযায়ী সারা বিশ্বে শতকরা ৪৭ ভাগ পুরুষ ও শতকরা ১২ ভাগ মহিলা ধূমপায়ী রয়েছে।[৮] হিসাব করে দেখা যায় যে, ধূমপানের বর্তমান ধারা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ২০২০ দশকে প্রতিবছর ১ কোটি লোক ধূমপানের কারণে মারা যাবে। যার মধ্যে ৭০ লাখ মারা যাবে আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে।[৯]

‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র সর্বশেষ প্রকাশনায় দেখা যায় যে, বাংলাদেশের শতকরা ৬০ ভাগ পুরুষ ও ১৫ ভাগ মহিলা ধূমপায়ী এবং নারী-পুরুষ নির্বিশেষে মোট জনসংখ্যার ৩৭ ভাগ ধূমপায়ী। ১৯৯৭ সালের একটি গবেষণা থেকে দেখা যায় যে, বাংলাদেশের প্রায় দু’কোটি মানুষ ধূমপান করে।[১০] ১৫ থেকে ২০ বছরের তরুণদের মধ্যে ধূমপায়ীর সংখ্যা শতকরা ২৩.৩ ভাগ।[১১] বাংলাদেশে প্রতি বছর ধূমপানে ব্যয় হয় ৩৫০ কোটি টাকা।[১২] IDCP -এর পরিসংখ্যান মতে, বাংলাদেশে ৪ লাখ ৪০ হাজার শিক্ষিত মানুষ মাদকদ্রব্য সেবন করে। তার মধ্যে ১ লাখ ৪৬ হাজার ছাত্র-ছাত্রী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর নযরুল ইসলাম এ বিষয়ে গবেষণা চালিয়ে মন্তব্য করেন, “It is a major threat to us that more one-third of the educated people are taking drugs which can cripple the nation” অর্থাৎ ‘এটা আমাদের জন্য বিরাট হুমকি যে, শিক্ষিতদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ মাদকদ্রব্য সেবন করছে। যা জাতিকে পঙ্গু বানিয়ে দিতে পারে’।[১৩]

বৈজ্ঞানিক মতে পরীক্ষিত ও প্রমাণিত যে, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ধূমপান ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রধান কারণ।[১৪] পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, সিগারেটে প্রায় ১২ হাজার রকমের পদার্থ আছে, যার কোনটিই আমাদের জন্য উপকারী নয়। বরং সব ক’টি ক্ষতিকর।[১৫]

উল্লেখ্য যে, চীনে প্রতিদিন ২৫০০ জন ধূমপানের কারণে মৃত্যুবরণ করছে।[১৬] উপস্থাপিত আলোচনায় বুঝা যাচ্ছে যে, ধূমপানের বিষক্রিয়া কত জটিল। আজ ভাবতে ভাবতে হৃদয় স্পন্দন থমকে দাঁড়ায় যে, কিভাবে উচ্চ ডিগ্রীধারী লোকগুলো ধূমপানে ব্যস্ত? এর গূঢ় রহস্যই বা কোথায়? যদিও মূর্খ বা সাধারণ ব্যক্তিদের বেলায় দোষটা স্বতন্ত্র ধরে নেয়া হয়। মূলত উচ্চ ডিগ্রীধারীর মুখের সিগারেটটিই সাধারণ মানুষের অক্ষি কাড়ে। সাধারণত প্রতিটি সিগারেটের প্যাকেটে সুন্দরভাবে লিখা আছে ‘সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ : ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’। বাহ! কী চমৎকার। আজব দেশের আজব লীলা।

সুতরাং সকলকে সামাজিক দায়িত্ব ভেবে ধূমপান মুক্ত জীবন গড়ার প্রচেষ্টা নিয়ে সমাজ হতে ধূমপান উৎখাত করতে হবে। তাহলেই কাঙ্ক্ষিত সুশীল সমাজ ফিরে পাব ইনশাআল্লাহ। নচেৎ হৃদয়াভিলাষ ফলপ্রসূ হবে না। সুতরাং প্রতিপাদ্য বিষয় হওয়া উচিত- ‘Leate the pack belind’ অর্থাৎ ‘আর নয় ধূমপান’।

পবিত্র আল-কুরআনের দৃষ্টিতে মাদকদ্রব্য
চিরাচরিত প্রথানুযায়ী ইসলামের প্রথম যুগেও মদ্য পান স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল। সাধারণত মানুষ এর বাহ্যিক উপকারিতার প্রতি লক্ষ্য করেই তা পান করত। কিন্তু এর অন্তর্নিহিত অকল্যাণ সম্পর্কে তাদের কোন ধারণা ছিল না। রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হিজরতের পর এটিকে একেবারেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পবিত্র কুরআনে ক্রমান্বয়ে মদকে হারাম করা হয়। যা নিম্নরূপ-

প্রথম পদক্ষেপ : পবিত্র কুরআনে মদ সম্পর্কে বিঘোষিত বাণী সর্বপ্রথম মক্কায় অবতীর্ণ হয়। আর তা হল এই, এরশাদ হচ্ছে- ‘আর খেজুর ও আঙ্গুর দ্বারা তোমরা নেশাকর দ্রব্য ও উত্তম আহার্য প্রস্তুত করে থাক; নিশ্চয় এতে বুদ্ধিমান ব্যক্তিদের জন্য বড় প্রমাণ রয়েছে’ (সূরা আন-নাহল : ৬৭)। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর পূর্ণ কুদরতের মাধ্যমে মানুষকে খেজুর ও আঙ্গুর দান করেছেন এবং তা দ্বারা নিজেদের খাদ্য তৈরির কিছুটা অধিকারও তিনি মানুষকে প্রদান করেছেন। এখন তাদের অভিপ্রায় ও ইচ্ছা তারা কি প্রস্তুত করবে। নেশাজাত দ্রব্য প্রস্তুত করে নিজেদের বুদ্ধি বিকল করবে, না উৎকৃষ্ট খাদ্য প্রস্তুত করে শক্তি অর্জন করবে। উপরিউক্ত আয়াতে শুধু খারাপ খাদ্যের পরিচয় দেয়া হয়েছে। হারাম বা নিষিদ্ধ করা হয়নি। এর দ্বারা মানুষের অবগতির জন্য ভালো-মন্দের পরিচয় দেয়া হল মাত্র।

দ্বিতীয় পদক্ষেপ : রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মদীনায় হিজরতের পর কতিপয় ছাহাবী মদের অকল্যাণ অনুভব করলেন। মদীনায় ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) সহ বেশ কয়েকজন ছাহাবী রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললেন, মদ ও জুয়া মানুষের বুদ্ধি-বিবেককে বিলুপ্ত করে ফেলে এবং ধন-সম্পদও ধ্বংস করে দেয়। এ সম্পর্কে আপনার নির্দেশ কী? এ প্রশ্নের উত্তরেই নিম্নের আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তারা আপনাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলুন, এতদুভয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ। আর মানুষের জন্য উপকারিতাও রয়েছে, তবে এগুলোর পাপ উপকারিতা অপেক্ষা অনেক বড়’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২১৯)।

আলোচ্য আয়াতে শুধু মদের অপকারিতার কথা বলা হয়েছে। সেই সাথে কিছু উপকারিতারও। তবে পরিষ্কারভাবে হারাম বলা হয়নি। যেন মদ পরিত্যাগের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বিধায় অনেক ছাহাবী এর পর মদ পান ছেড়ে দিলেন এবং অনেকে ভাবলেন হারাম তো বলা হয়নি। তাই সেবন করতে থাকলেন। তবে আয়াতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে উপকার অপেক্ষা অপকারটাই বেশী।

তৃতীয় পদক্ষেপ : তৃতীয় পর্যায়ে শুধু ছালাতের সময় মদপান করতে নিষেধ করা হয়েছে। একদিন আব্দুর রহমান বিন আওফ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ছাহাবীগণের মধ্য হতে তাঁর কয়েকজন বন্ধুকে নিমন্ত্রণ করেন। আহারাদির পর যথারীতি মদ্যপানের ব্যবস্থা করা হল এবং সবাই মদপান করলেন। এমতাবস্থায় মাগরিবের ছালাতের সময় হলে সবাই ছালাতে দাঁড়ালেন এবং একজনকে ইমামতি করতে এগিয়ে দিলেন। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তিনি قُلۡ یٰۤاَیُّہَا الۡکٰفِرُوۡنَ সূরাটি ভুল পড়তে লাগলেন।[১৭] অতঃপর ছালাত অবস্থায় মদ্যপান পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে আয়াত অবতীর্ণ হয়- ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন নেশাগ্রস্ত থাক, তখন ছালাতের ধারে কাছেও যেও না’ (সূরা আন-নিসা : ৪৩)।

অত্র আয়াতে ছালাতের সময় মদ্যপান হারাম করা হয়েছে। তবে অন্যান্য সময় তা পান করার অনুমতি তখন পর্যন্ত বহাল রয়ে গেল। অনেক ছাহাবী এই আয়াতে নাযিল হওয়ার পরই মদ্যপান সম্পূর্ণভাবে বর্জন করেছিলেন। ভেবেছিলেন, যে বস্তু মানুষকে ছালাত থেকে বিরত রাখে, তাতে কোন কল্যাণই থাকতে পারে না। যখন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছালাত আদায় করতে নিষেধ করা হয়েছে, তখন এমন বস্তুর ধারে কাছে যাওয়া উচিত নয়, যা মানুষকে ছালাত থেকে বিরত রাখে। মোটকথা তখন মদ্যপায়ীদের সংখ্যা খুবই হ্রাস পেয়ে গেল।

চতুর্থ পদক্ষেপ : যেহেতু ছালাতের সময় ব্যতীত অন্যান্য সময়ের জন্য মদ্যপানকে পরিষ্কারভাবে নিষেধ করা হয়নি, সেহেতু কেউ কেউ ছালাতের সময় ব্যতীত অন্যান্য সময়ে মদ্যপান করতে থাকেন। ইতিমধ্যে আরো একটি ঘটনা সংঘটিত হয়ে যায়। আতবান ইবনু মালিক কয়েকজন ছাহাবীকে নিমন্ত্রণ করেন। যাদের মধ্যে সা‘দ ইবনু আবী ওয়াক্কাছ (রাযিয়াল্লাহু আনহু)ও ছিলেন। খাওয়া দাওয়ার পর মদ্যপানের প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেল। আরবদের প্রথানুযায়ী নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কবিতা প্রতিযোগিতা এবং নিজেদের বংশ এবং পূর্ব পুরুষদের অহংকারমূলক বর্ণনা আরম্ভ হল।

সা‘দ ইবনু আবী ওয়াক্কাছ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) একটি কবিতা আবৃত্তি করলেন, যাতে আনছারদের দোষারোপ করে নিজেদের প্রশংসা কীর্তন করা হয়। ফলে একজন আনছার রাগান্বিত হয়ে উটের গণ্ড দেশের একটি হাড় সা‘দ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) -এর মাথায় ছুড়ে মারলেন। এতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে সা‘দ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে উক্ত যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু‘আ করলেন, اَللَّهُمَّ بَيِّنْ لَنَا فِى الْخَمْرِ بَيَانًا شَافِيًا ‘হে আল্লাহ! মদ সম্পর্কে আমাদেরকে একটি পরিষ্কার বর্ণনা ও বিধান দিন’।[১৮]

তখনই সূরা মায়িদার উদ্ধৃত মদ্যপানের বিধান সম্পর্কিত বিস্তারিত আয়াত অবতীর্ণ হয়। তাতে মদকে সম্পূর্ণরূপে হারাম করা হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ কিছু নয়। অতএব এগুলো থেকে সম্পূর্ণ বেঁচে থাক, যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও। শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে এবং আল্লাহ্র স্মরণ ও ছালাত থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে। অতএব তোমরা কি এখনো নিবৃত হবে না’ (সূরা আল-মায়িদাহ : ৯০-৯১)।

এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার মাধ্যমে মদ সম্পূর্ণভাবে হারাম বলে ঘোষিত হল। যা অদ্যাবধি অপরিবর্তণীয় আছে এবং শেষ দিবস তথা ক্বিয়ামত পর্যন্ত থাকবে।[১৯]

হাদীছের আলোকে মাদকদ্রব্য
মানবতার মুক্তির দিশারী নবীকুল শিরোমণি মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বহু বাণী দ্বারা সূর্যালোকের ন্যায় স্পষ্ট যে, মাদকদ্রব্য সেবন করা হারাম। এ মর্মে তাঁর একাধিক বাণী বিধৃত হয়েছে। যেমন- জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে বস্তুর অধিক পরিমাণ ব্যবহারে নেশা আনয়ন করে, ঐ বস্তুর অল্প পরিমাণ ব্যবহার করাও হারাম’।[২০] অপর এক হাদীছে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে জিনিস এক ফারাক্ব পরিমাণ ব্যবহার করলে নেশা সৃষ্টি হয়, উহা হাতের অঞ্জলি পরিমাণ ব্যবহারও হারাম’।[২১] এক ব্যক্তি ইয়ামান হতে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসলেন এবং ‘মিযর’ নামে এক মদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাতে কি নেশা হয়? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, নেশা সৃষ্টিকারী এমন প্রত্যেক জিনিসই হারাম। আর নেশা সৃষ্টিকারী আল্লাহ ‘তীনাতুল খাবাল’ অর্থাৎ জাহান্নামীদের গায়ের ঘাম অথবা রক্ত ও পূঁজ পান করাবেন।[২২]

আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি আবু ত্বালহার ঘরে লোকদেরকে মদ পান করাচ্ছিলাম, তখনই মদের নিষেধাজ্ঞার আয়াত নাযিল হয়। রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একজন ঘোষককে তা প্রচারের নির্দেশ দিলেন। এরপর ঘোষণা দিল। আবু তালহা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, (আনাস)! বেরিয়ে দেখ তো কিসের শব্দ? আমি বের হলাম এবং বললাম যে, একজন ঘোষক ঘোষণা দিচ্ছে যে, জেনে রাখ! মদ হারাম করে দেয়া হয়েছে। এরপর তিনি আমাকে বললেন, যাও এগুলো সব ঢেলে দাও। আনাস বলেন, সেদিন মদীনার রাস্তায় রাস্তায় মদের স্রোত প্রবাহিত হয়েছিল।[২৩]

পৃথিবীতে বহু ধরনের পাপ রয়েছে যার উৎসমূলে হচ্ছে মাদকদ্রব্য। কোন তালাবদ্ধ ঘরে ঢুকতে গেলে যেমন চাবি ছাড়া প্রবেশ করা যায় না, তেমনি এ মাদকদ্রব্য সকল পাপের দরজার চাবির ভূমিকা পালন করে। রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, لَا تَشْرَبِ الْخَمْرَ فَإِنَّهَا مِفْتَاحُ كُلِّ شَرٍّ ‘মাদকদ্রব্য পান কর না। কেননা তা সকল পাপের উৎস’।[২৪]

‘তোমরা মাদকদ্রব্য থেকে বেঁচে থাক। কেননা তা সকল অশ্লীলতার মূল বা জননী। তোমাদের পূর্বের একজন লোক ছিল, যিনি ধার্মিক ব্যক্তি ছিলেন। এক মহিলা তার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে তাকে বিভ্রান্ত করল। মহিলাটি তার দাসীকে তার নিকট পাঠাল। দাসীটি তাকে বলল, তিনি আপনাকে সাক্ষ্যের জন্য আহ্বান করছেন। তখন আবেদ ব্যক্তিটি দাসীর সাথে তার নিকট গেলে মহিলাটি তার প্রবেশের সাথে সাথে ঘরের দরজাটি বন্ধ করে দেয়। ফলে উক্ত ঘরে মহিলাটিসহ একটি মদের পেয়ালা ও একটি ছেলে রয়েছে। মহিলাটি তাকে বলল, আমি আপনাকে সাক্ষ্যের জন্য আহ্বান করিনি। আমি আপনাকে আহ্বান করেছি যে, হয় আপনি আমার সঙ্গে যেনায় লিপ্ত হবেন নতুবা এ পেয়ালা থেকে মদ পান করবেন অথবা এ ছেলেটিকে হত্যা করবেন। তিনি তখন বললেন, মদ পান করাও। মহিলাটি তাকে পান করিয়ে দিলে তিনি তার সাথে যেনায় লিপ্ত হলেন এবং ছেলেটিকে হত্যা করে ফেললেন। কাজেই তোমরা মদ থেকে বেঁচে থাক। কেননা ঈমান ও মাদকতা একত্রিত হয় না।[২৫]

‘একদা বানী ইসরাঈলের জনৈক রাষ্ট্রপতি সে যুগের জনৈক বুযুর্গ ব্যক্তিকে চারটি কাজের যে কোন একটি করতে বাধ্য করে। কাজগুলো হল- মদপান, মানব হত্যা, ব্যভিচার ও শুকরের গোশত খাওয়া। এমনকি এর কোন না কোন একটি করতে অস্বীকার করলে তাকে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়। পরিশেষে উক্ত ব্যক্তি বাধ্য হয়ে মদ পানকেই সহজ মনে করে তা করতে রাজি হল। যখন সে মদ পান করে সম্পূর্ণ মাতাল হয়ে গেল, তখন উক্ত সকল কাজ করাই তার জন্য সহজ হয়ে গেল।[২৬]

রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘এ উম্মতের মাঝে ভূমিধস, মানুষের আকৃতি-বিকৃতি এবং আকাশ থেকে আল্লাহর গযব পতিত হবে। তখন জনৈক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! সেটা কখন? তিনি বললেন, যখন গায়ক-গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্রের প্রকাশ্য প্রচলন ঘটবে এবং মদ পান করা হবে।[২৭] তিনি আরো বলেন, ‘যখন আমার উম্মত পাঁচটি বস্তুকে হালাল মনে করবে, তখন তাদের ধ্বংস একেবারেই অনিবার্য। আর তা হচ্ছে, একে অপরকে যখন প্রকাশ্য লা‘নত করবে, মদ পান করবে, সিল্কের কাপড় পরিধান করবে, গায়িকাদেরকে সাদরে গ্রহণ করবে, পুরুষ পুরুষের জন্য এবং মহিলা মহিলার জন্য যথেষ্ট হবে।[২৮]

রাসূূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অন্যত্র বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (একবার) মদ্যপান করে, আল্লাহ তা‘আলা চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার ছালাত কবুল করেন না। অবশ্য সে যদি তওবা করে তবে আল্লাহ তা কবুল করেন। এভাবে তিনবার তার তওবা কবুল করা হয়। এরপর চতুর্থবার সে একই কাজ করলে তার তওবা আর কবুল করা হয় না। বরং আল্লাহ তা‘আলা তাকে নহরে খাবাল হতে পান করাবেন’।[২৯] আবু মূসা আশ‘আরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলতেন, আমার নিকট এ দু’টির মধ্যে কোন পার্থক্য নেই যে, আমি মদপান করব অথবা আল্লাহকে বাদ দিয়ে এই খুঁটির (দেবি মূর্তির) পূঁজা করব।[৩০] অপর এক হাদীছে বর্ণিত হয়েছে, ‘নিত্য মদ্যপায়ী অবস্থায় যার মৃত্যু ঘটবে, সে (ক্বিয়ামত দিবসে) মূর্তি পূজকের ন্যায় আল্লাহর সম্মুখীন হবে’।[৩১]

রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘মদ পানে অভ্যস্ত ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না’।[৩২] আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট একদা জনৈক মদ্যপায়ীকে নিয়ে আসা হলে তিনি তাকে পাতা বিহীন দু’টি খেজুরের ডাল দিয়ে চল্লিশটি বেত্রাঘাত করেন। আবুবকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)ও তাঁর খিলাফত কালে তাই করেছিলেন। তবে ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) খলীফা হলে তিনি ছাহাবীদের সঙ্গে পরামর্শ করলেন। তখন আব্দুর রহমান বিন ‘আওফ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, সর্বনিম্ন দণ্ডবিধি হচ্ছে আশিটি বেত্রাঘাত। তখন ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তাই বাস্তবায়নের আদেশ করলেন।[৩৩] আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চল্লিশটি বেত্রাঘাত করেন। আবুবকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)ও চল্লিশটি বেত্রাঘাত করেন। কিন্তু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) আশিটি বেত্রাঘাত করেন। তবে চল্লিশটি বেত্রাঘাতই আমার নিকট বেশী পসন্দনীয়।[৩৪]

উপস্থাপিত হাদীছগুলো দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, নেশা সৃষ্টিকারী অল্প বা বেশী সব মাদকদ্রব্যই হারাম। আর সেগুলোকে পরিহার করা মানবকূলের জন্য একান্ত অপরিহার্য কর্তব্য।

সমাপনী
উপরিউক্ত বিষয়গুলো থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, বর্তমানে মাদক সেবন মানুষের শিরা-উপশিরার সাথে মিশে গেছে। মাদকতার গহীন অরণ্যে ক্ষয়ে গেছে স্বীয় স্বপ্নীল জীবন। প্রতি নিমিষে প্রতি পদে পদে মানুষকে আষ্টেপৃষ্ঠে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। কিন্তু সেদিকে তারা দৃকপাত করে না। তারা মায়া জালে বিভোর হয়ে স্বীয় জাতিসত্ত্বাকে ভুলতে বসেছে। ১২ বছরের তরুণ-তরুণী হতে শুরু করে অশীতিপর বুড়ো-বুড়িও মাদকতার প্রণয়ে লিপ্ত। এটা কি মনুষ্যত্ব না পশুত্ব? মাদকতার কালগ্রাসী বিষাক্ত ছোবলে মানুষ আক্রান্ত। যার ফলশ্রুতিতে আজ ধরণী অধঃপতনের অতল তলে তলিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং ধরা হতে মাদকতা সমূলে উচ্ছেদ করতে হলে সকল মানব মনে মাদকতার কুফল প্রোথিত করতে হবে। নচেৎ মাদকতা নিধনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ফলপ্রসূ হবে না। আল্লাহ আমাদের সকলকে মাদকতা পরিত্যাগ করত সুশীল সমাজ গড়ার তাওফীক্ব দিন। -আমীন !!

* শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আস-সালাফিয়্যাহ, ডাঙ্গীপাড়া, রাজশাহী।

তথ্যসূত্রঃ

[১]. সংসদ বাংলা অভিধান (কলিকাতা : সাহিত্য সংসদ, চতুর্থ সংস্করণ, ফেব্রুয়ারী-১৯৮৪ ইং), পৃ. ৫৫৫।
[২]. Sailenda Biswas, Samsad English-Bengala Dictionary (Calkata : Sahitya samsad, 32nd Impresson : August-1993), P-1313.
[৩]. ইমাম শাওকানী, ফাৎহুল ক্বাদীর, ১ম খণ্ড (মক্কা : মাকতাবাতুল ফায়ছালিয়া, তা.বি.), পৃ. ২১৯-২২০।
[৪]. প্রাগুক্ত, ১ম খণ্ড, পৃ. ২২০।
[৫]. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন, প্রবন্ধ : মাদকাসক্তি নিরোধে মহানবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শিক্ষা, মাসিক অগ্রপথিক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ১৪ বর্ষ, ১২ সংখ্যা, ডিসেম্বর ১৯৯৯ ইং, পৃ. ১৫০।
[৬]. ছহীহ মুসলিম, হা/২০০৩; আবু দাঊদ, হা/৩৬৭৯; তিরমিযী, হা/১৮৬১; নাসাঈ, হা/৫৫৮৫ ও ৫৬৯৯; মিশকাত, হা/৩৬৩৮।
[৭]. ডাঃ মাহবুব মোরশেদ, প্রবন্ধ : মাদক নির্ভরতার ক্ষতি : করণীয় এবং চিকিৎসা, সাপ্তাহিক অহরহ, ঢাকা, ২৫২ সংখ্যা, ২৫-৩১ আগস্ট-১৯৯৯ ইং, পৃ. ৪০।
[৮]. আব্দুল আওয়াল, প্রবন্ধ : ধূমপান এক বিধ্বংসী মরণাস্ত্র, মাসিক আত-তাহরীক, ২য় বর্ষ, ৫ম সংখ্যা ফেব্রুয়ারী ৯৯, পৃ. ২৯।
[৯]. দৈনিক বার্তা, রাজশাহী, ১৮ বর্ষ, ৩২৪ সংখ্যা, ২৬ ডিসেম্বর-১৯৯৯ ইং, পৃ. ৩, কলাম ৩।
[১০]. দৈনিক ইত্তেফাক, ২৯ শে অক্টোবর- ১৯৯৯ ইং, পৃ. ৩।
[১১]. প্রফেসরস কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, জুলাই-১৯৯৮ ইং, পৃ. ৫০।
[১২]. মাসিক আত-তাহরীক, ফেব্রুয়ারী-১৯৯৯ ইং, পৃ. ২৯।
[১৩]. মাসিক অগ্রপথিক, ডিসেম্বর-১৯৯৯ ইং, পৃ. ১৫৫-১৫৬।
[১৪]. দৈনিক বার্তা, ২৬ ডিসেম্বর- ১৯৯৯ ইং, পৃ. ৩।
[১৫]. ধূঁয়ার কবলে জীবন ক্ষয়, প্রকাশক : সারয়োর জাহান, প্রকাশকাল : ১৯৯২ ইং, পৃ. ৫।
[১৬]. সাপ্তাহিক অহরহ, ২৮৯ সংখ্যা, ১০-১৬ মে-২০০০ ইং পৃঃ. ২১।
[১৭]. মুস্তাদরাক হাকিম, হা/৭২২০, ইমাম যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) স্বীয় ‘তালখীছ’ গ্রন্থে ছহীহ বলেছেন।
[১৮]. নাসাঈ, হা/৫৫৪০; মুস্তাদরাক হাকিম, হা/৩১০১; আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) এর মতে, ছহীহ এবং ইমাম যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) স্বীয় ‘তালখীছ’ গ্রন্থে ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম মুসলিম (রাহিমাহুল্লাহ)-এর শর্তানুসারে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন।
[১৯]. মুফতী মোহাম্মাদ শফী (রহঃ), তফসীরে মা‘আরেফুল কোরআন, অনুবাদ : মাওলানা মহিউদ্দীন (ঢাকা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ২য় সংস্করণ : জুলাই- ১৯৮২ ইং), ১ম খ-, পৃ. ৬২৩-৬২৮; নাসাঈ হা/৫৫৪০।
[২০]. মুসনাদে আহমাদ, হা/৬৫৫৮; আবু দাঊদ, হা/৩৬৮১; তিরমিযী, হা/১৮৬৫; নাসাঈ, হা/৫৬০৭; ইবনু মাজাহ, হা/৩৩৯৩ ও ৩৩৯৪, সনদ হাসান ছহীহ।
[২১]. মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৪৬৮; আবু দাঊদ, হা/৩৬৮৭; তিরমিযী, হা/১৮৬৬; মিশকাত, হা/৩৬৪৬, সনদ ছহীহ।
[২২]. ছহীহ মুসলিম, হা/২০০২; আবু দাঊদ, হা/৩৬৮০; নাসাঈ, হা/৫৭০৯; মিশকাত, হা/৩৬৩৯।
[২৩]. ছহীহ বুখারী হা/৪৬২০।
[২৪]. ইবনু মাজাহ হা/৪০৩৪; মিশকাত হা/৫৮০।
[২৫]. নাসাঈ, হা/৫৬৬৬, সনদ ছহীহ; জামি‘ঊল উছূল ফী আহাদিছির রাসূল, ৫ম খণ্ড, পৃ. ১০৩, হা/৩১৩০।
[২৬]. আল-মু‘জামুল আওসাত্ব, হা/৩৬৩; সনদ ছহীহ, সিলসিলা ছহীহাহ, হা/২৬৯৫।
[২৭]. তিরমিযী, হা/২২১২, সনদ ছহীহ।
[২৮]. ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২৩৮৬।
[২৯]. মুসনাদে আহমাদ, হা/৪৯১৭; তিরমিযী, হা/১৮৬২, সনদ ছহীহ।
[৩০]. নাসাঈ, হা/৫৬৬৩; মিশকাত, হা/৩৬৬০, সনদ ছহীহ।
[৩১]. মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৫৩; মিশকাত, হা/৩৬৫৬; সনদ হাসান, সিলসিলা ছহীহাহ, হা/৬৭৭।
[৩২]. মুসনাদে আহমাদ, হা/৫৩৭২।
[৩৩]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৭৭৩; ছহীহ মুসলিম, হা/১৭০৬।
[৩৪]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৭০৭; আবু দাঊদ, হা/৪৪৮১।




বিদ‘আত পরিচিতি (১৬তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (১৫তম কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
শরী‘আত অনুসরণের মূলনীতি (৫ম কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (৭ম কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
বিদ‘আত পরিচিতি (৩২তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
ইসলামী পুনর্জাগরণের মূলনীতি - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
ইসরাঈলি বর্বরতায় রক্তাক্ত মানবতা - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
রামাযানের খুঁটিনাটি - আল-ইখলাছ ডেস্ক
ছালাতে একাগ্রতা অর্জনের ৩৩টি উপায় (শেষ কিস্তি) - আব্দুল হাকীম বিন আব্দুল হাফীজ
বাউল মতবাদ - গোলাম রহমান
ফাযায়েলে কুরআন (২য় কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
ইসলামী পুনর্জাগরণের প্রতিবন্ধকতা ও তার সমাধান (৪র্থ কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন

ফেসবুক পেজ