জঙ্গিবাদ বনাম ইসলাম (শেষ কিস্তি)
-আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম*
(শেষ কিস্তি)
চরমপন্থী ও জঙ্গি চেনার উপায়
ঐতিহাসিকভাবে চরমপন্থা ও জঙ্গি কর্মকাণ্ড মূলত দু’শ্রেণীর মানুষের দ্বারাই সংঘটিত হয়েছে এবং হচ্ছে। কুরআন এবং ছহীহ হাদীছে এ দু’শ্রেণীর মানুষের কথাই ব্যক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া ইতিহাসের পাতা অন্বেষণ করলেও এ দু’শ্রেণীর মানুষের কর্মকাণ্ড স্পষ্ট হয় ঐতিহাসিকদের নিকট। তারমধ্যে একদল হল ইহুদী-খ্রিষ্টান আর অন্য দল মুসলিম নামধারী মুনাফিক্ব। আর তাদের এজেন্ট বাস্তবায়নকারী ছিল যুল-খুওয়াইছির, আবু লু’লু, আব্দুল্লাহ বিন সাবা, আব্দুল্লাহ ইবনুল কুউওয়া এবং তাদের অনুসারীরা। যা চরমপন্থার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশে আলোচিত হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَ کَذٰلِکَ جَعَلۡنٰکُمۡ اُمَّۃً وَّسَطًا لِّتَکُوۡنُوۡا شُہَدَآءَ عَلَی النَّاسِ وَ یَکُوۡنَ الرَّسُوۡلُ عَلَیۡکُمۡ شَہِیۡدًا
‘এভাবে আমরা তোমাদেরকে এক মধ্যমপন্থী জাতিরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছি, যাতে তোমরা মানবজাতির জন্য সাক্ষী স্বরূপ হও এবং রাসূলও যেন তোমাদের সাক্ষী স্বরূপ হন’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৪৩)। ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন,
لَمَّا كَانَ الْوَسَطُ مُجَانِبًا لِلْغَلْقِ وَالتَّقْصِيْرِ كاَنَ مَحْمُوْدًا أَىْ هَذِهِ الْأُمَّةُ لَمْ تَغُلْ غُلُوَّ النَّصَارَى فِىْ أَنْبِيَائِهِمْ وَلَا قَصَرُوْا تَقْصِيْرَ الْيُهُوْدِ فِىْ أَنْبِيَائِهِمْ
‘মধ্যমপন্থা যখন বাড়াবাড়ি এবং শৈথিল্য উভয়েরই পার্শ্বস্থল (বা মধ্যস্থল), তখন তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। অর্থাৎ এই উম্মত (উম্মতে মুহাম্মাদী) কোন বাড়াবাড়ি করেনি, যেমন খ্রিষ্টানরা তাদের নবীগণের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করেছে। অনুরূপ তারা শৈথিল্যও প্রদর্শন করেনি, যেমন ইহুদীরা তাদের নবীগণের ব্যাপারে শৈথিল্য প্রদর্শন করেছে’।[১]
দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট যে, গোঁড়ামী, চরমপন্থা ও বাড়াবাড়ি খ্রিষ্টানদের স্বভাব আর শৈথিল্য ও আলস্য প্রদর্শন ইহুদীদের স্বভাব। ইহুদী-খ্রিষ্টানরা এই পন্থা অবলম্বনের জন্যই পথভ্রষ্ট হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
قُلۡ یٰۤاَہۡلَ الۡکِتٰبِ لَاتَغۡلُوۡا فِیۡ دِیۡنِکُمۡ غَیۡرَ الۡحَقِّ وَلَا تَتَّبِعُوۡۤا اَہۡوَآءَ قَوۡمٍ قَدۡ ضَلُّوۡا مِنۡ قَبۡلُ وَ اَضَلُّوۡا کَثِیۡرًا وَّ ضَلُّوۡا عَنۡ سَوَآءِ السَّبِیۡلِ
‘আপনি বলুন, হে কিতাবধারীগণ! তোমরা তোমাদের দ্বীন সম্পর্কে অন্যায় বাড়াবাড়ি কর না এবং যে সম্প্রদায় ইতিপূর্বে পথভ্রষ্ট হয়েছে, অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে এবং যারা সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে, তোমরা তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করো না’ (সূরা আল-মায়েদাহ : ৭৭)।
দ্বিতীয় শ্রেণী অর্থাৎ মুনাফিক্বদের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَ اِذَا تَوَلّٰی سَعٰی فِی الۡاَرۡضِ لِیُفۡسِدَ فِیۡہَا وَ یُہۡلِکَ الۡحَرۡثَ وَ النَّسۡلَ وَ اللّٰہُ لَا یُحِبُّ الۡفَسَادَ
‘যখন সে (মুনাফিক) প্রস্থান করে তখন সে পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টির এবং শস্যক্ষেত্র ও জীব-জন্তুর বংশ নিপাতের চেষ্টা করে, কিন্তু আল্লাহ ফাসাদ বা বিপর্যয় পসন্দ করেন না’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২০৫)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَ اِذَا قِیۡلَ لَہُمۡ لَا تُفۡسِدُوۡا فِی الۡاَرۡضِ قَالُوۡۤا اِنَّمَا نَحۡنُ مُصۡلِحُوۡنَ - اَلَاۤ اِنَّہُمۡ ہُمُ الۡمُفۡسِدُوۡنَ وَ لٰکِنۡ لَّا یَشۡعُرُوۡنَ
‘এবং যখন তাদেরকে বলা হয়, তোমরা পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করো না তখন তারা বলে আমরা তো শুধু সংশোধনকারী। সাবধান! তারাই অশান্তি বা বিপর্যয় সৃষ্টিকারী; কিন্তু তারা বুঝে না’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১১-১২)।
তাছাড়া রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং সালাফে ছলেহীন ঐ সকল চরমপন্থা এবং জঙ্গিবাদের মদদদাতা ইহুদী-খ্রিষ্টান এবং মুনাফিক্বকে চেনার কিছু বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন এবং ঐতিহাসিকভাবে নির্দিষ্ট কিছু আলামতও বর্ণিত হয়েছে। যা নি¤œরূপ-
১). রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমানতদার মনে না করা
চরমপন্থীরা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমানতদার মনে করে না। তারা মনে করে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইনছাফকারী বা ন্যায়পরায়ণ নন। এ চরমপন্থীরাই সর্বপ্রথম রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইনছাফ ও ন্যায়পরায়ণতার ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল।
হাদীছে এসেছে, আবূ সাঈদ খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম এবং তিনি কিছু জিনিস বন্টন করছিলেন। এমন সময় বানী তামীম গোত্রের ‘যুল-খুওয়াইছির’ নামক এক ব্যক্তি এসে বলল, يَا رَسُولَ اللهِ اعْدِلْ ‘হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! ইনছাফ করুন’। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, وَيْلَكَ مَنْ يَعْدِلُ إِذَا لَمْ أَعْدِلْ ‘তোমার ধ্বংস হোক! আমি যদি ইনছাফ না করি, তাহলে কে ইনছাফ করবে?’।[২]
অন্য বর্ণনায় এসেছে, কোটরাগত (ডাবা) চোখ, উচ্চ কপাল, বেশি দাড়ি, উচ্চ চোয়াল ও মুণ্ডানো মাথাওয়ালা এক লোক এসে বলল, يَا مُحَمَّدُ اِتَّقِ اللهَ ‘হে মুহাম্মাদ! আল্লাহকে ভয় কর। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তরে বলেন, مَنْ يُطِيْعِ اللهَ إِذَا عَصَيْتُهُ فَيَأْمَنِّى عَلَى أَهْلِ الأَرْضِ وَلاَ تَأْمَنُوْنِىْ ‘আমি যদি আল্লাহর নাফরমানী করি, তাহলে তাঁর আনুগত্য করবে কে? আল্লাহ আমাকে পৃথিবীবাসীর উপর আমানতদার করেছেন, আর তোমরা আমাকে আমানতদার মনে করছ না?’[৩]
অন্য বর্ণনায় এসেছে, أَلَا تَأْمَنُوْنِىْ وَأَنَا أَمِيْنُ مَنْ فِى السَّمَاءِ يَأْتِيْنِىْ خَبَرُ السَّمَاءِ صَبَاحًا وَمَسَاءً ‘তোমরা আমাকে আমানতদার মনে করছ না? অথচ যিনি আসমানে আছেন, আমি তাঁর পক্ষ থেকে আমানতদার। আমার কাছে সকাল-সন্ধ্যায় আসমানের খবর আসে’।[৪]
২). মুসলিমকে হত্যা করা এবং হত্যা করার ফাতাওয়া প্রদান
চরমপন্থীরা মুসলিম ব্যক্তিকে হত্যা করবে, হত্যা করার ফৎওয়া প্রদান করবে এবং মূর্তিপূজকদের ছেড়ে দিবে। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণী প্রদান করে বলেছেন, يَقْتُلُوْنَ أَهْلَ الْإِسْلَامِ وَيدَعُوْنَ أَهْلَ الْأَوْثَانِ ‘তারা মুসলিমদেরকে হত্যা করবে এবং মূর্তিপূজকদের ছেড়ে দিবে’।[৫]
চরমপন্থীরাই মর্যাদাসম্পন্ন ছাহাবীদেরকে কাফের ও হত্যাযোগ্য অপরাধী বলে ফৎওয়া প্রদান করেছিল এবং তাদেরকে হত্যার জন্য কসম করেছিল। যেমন তাদের অন্যতম নেতা ‘হুরকুছ বিন খুছাইর’ চতুর্থ খলীফা আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে বলেছিল, হে আলী! وَاللهِ لاَنُرِيْدُ بِقِتَالِكَ إِلاَّ وَجْهَ اللهِ وَالدَّارَ الْأَخِرَةَ ‘আল্লাহর কসম! আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আখেরাতের কল্যাণ ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে তোমার সাথে আমরা যুদ্ধ করছি না’। তারা আরো বলেছিল, لَنَفْعَلَنَّ بِكَ مِثْلَ مَافَعَلْنَا بِعُثْمَانَ ‘আমরা ওছমানের সঙ্গে যা করেছি, তোমার সঙ্গে তা-ই করব’।[৬] আর হত্যার ফাতাওয়ার মাধ্যমে তারা অনেক ছাহাবীকে হত্যাও করেছিল। মুসলিমকে হত্যা করার কারণ হল তারা মুসলিমের রক্ত হালাল মনে করে। এ ব্যাপারে আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর সাথে খারেজীদের যুদ্ধের ঘটনাই উৎকৃষ্ট উদাহরণ। আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) খারেজীদেরকে সমূলে ধ্বংস করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে যখন যুদ্ধ পরিচালনা করেন, তখন তিনি চরমপন্থী বা খারেজীদেরকে ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা গ্রহণ করে ফিরে আসার আহবান করেন এবং তাদেরকে বুঝানোর জন্য আবূ আইয়ূব আনছারী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে পাঠান, তখন তারা বলেছিল,كُلُّنَا قَتْلُ إِخْوَانِكُمْ وَنَحْنُ مُسْتَحِلُّوْنَ دِمَائَهُمْ وَدِمَائَكُم ‘আমরা তোমাদের ভাইদেরকে হত্যা করেছি। কারণ আমরা তাদের রক্ত এবং তোমাদের রক্ত হালাল মনে করি’।[৭]
৩). বয়সে হবে তরুণ এবং কথা হবে সর্বোত্তম
চরমপন্থীকে চেনার অন্যতম উপায় হল তারা বয়সে হবে তরুণ এবং খুব সুন্দর সুন্দর কথা বলবে। যার কারণে মানুষ তাদের প্রতি সহজেই আকৃষ্ট হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের আলামত সম্পর্কে বলেছেন,
يَأْتِىْ فِىْ آخِرِ الزَّمَانِ قَوْمٌ حُدَثَاءُ الْأَسْنَانِ سُفَهَاءُ الْأَحْلَامِ يَقُوْلُوْنَ مِنْ خيْرِ قَوْلِ الْبَرِيَّةِ يَمْرُقُوْنَ مِنَ الْإِسْلَامِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ
‘শেষ যামানায় একদল অল্প বয়সী নির্বোধ তরুণের আবির্ভাব হবে, যারা পৃথিবীতে সর্বোত্তম কথা বলবে। তারা ইসলাম থেকে অনুরূপ দ্রুত গতিতে বেরিয়ে যাবে, যেমন শিকার ভেদ করে তীর বেরিয়ে যায়’।[৮]
৪). নিকৃষ্ট চরিত্রের অধিকারী
চরমপন্থীরা সৃষ্টি ও চরিত্রগত দিক থেকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের সম্পর্কে বলেছেন, هُمْ شَرُّ الْخَلْقِ وَالْخَلْقِيَّةِ ‘সৃষ্টি ও চরিত্রগত দিক দিয়ে তারা সবচেয়ে নিকৃষ্ট’।[৯]
৫). মুসলিমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা এবং সেটাকে সর্বশ্রেষ্ঠ জিহাদ বলে আখ্যায়িত করা
চরমপন্থী বা জঙ্গি ব্যক্তি মুসলিমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করাই সর্বশ্রেষ্ঠ জিহাদ হিসাবে গ্রহণ করবে। কারণ ইতিপূর্বে চরমপন্থীদের পূর্বপুরুষরা তাই করেছে। চরমপন্থী ‘আব্দুল্লাহ বিন সাবা’ এবং তার সাথীরা তৃতীয় খলীফা ওছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে হত্যা করাই সর্বশ্রেষ্ঠ জিহাদ বলে ঘোষণা করেছিল। চরমপন্থীরা মানুষকে যুদ্ধ এবং দ্বীনের বিজয়ের জন্য আহ্বান করেছিল এবং এটাকে (ওসমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে হত্যা করা) বড় জিহাদ বলে উল্লেখ করেছিল।[১০] অবশেষে তারা তাকে হত্যাও করেছিল এবং অতঃপর মহা উল্লাসে হত্যাকারী বলে উঠেছিল, مَارَأَيْتُ كَالْيَوْمِ وَجْهَ كَافِرِ أَحْسَنَ وَلَا مَضْجَعَ كَافِرِ أَكْرَمَ ‘আজকের দিনের ন্যায় কোন কাফেরের এত সুন্দর মুখমণ্ডল আমি দেখিনি এবং কোন কাফেরের অতি মর্যাদা সম্পন্ন এমন বাসস্থানও কোনদিন দেখিনি’ (নাঊযুবিল্লাহ)।[১১]
৬). অবৈধ হত্যাকারী এবং মানুষের সম্পদ হরণকারী
জঙ্গি বা চরমপন্থী ব্যক্তি অবৈধভাবে মানুষের রক্তপাত ঘটায়, সম্পদ নষ্ট করে এবং লুট করে। আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) চরমপন্থীদের কার্যক্রমের ব্যাপারে বলেছেন, فَإِنَّهُمْ قَدْ سَفَكُوْا الدَّمَ الْحَرَامَ وَأَغَارُوْا فِىْ سَرْحِ النَّاسِ ‘নিশ্চয় তারা অবৈধভাবে রক্তপাত ঘটিয়েছে এবং মানুষের গবাদি পশু লুট করেছে’।[১২]
৭). لَا حُكْمَ إِلَّا لِلهِ বা ‘আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো হুকুম নেই’ এ বাক্যটি তাদের মৌলিক পূঁজি
তারা মনে করে ‘আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো বিধান জারি করার অধিকার নেই’। তাদের এ দাবী ঠিক, তবে তাদের এ দাবীর উদ্দেশ্য ভিন্ন। ছাহাবীদের যুগে এ দাবীর সমাধান হয়েছে। হাদীছে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুক্ত গোলাম ঊবাইদুল্লাহ ইবনু আবূ রাফি‘ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) যখন চরমপন্থীদের সাথে যুদ্ধ করেন, তখন চরমপন্থীরা বলেছিল, لَا حُكْمَ إِلَّا لِلهِ ‘আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো হুকুম দেয়ার অধিকার নেই’।[১৩] উপরিউক্ত কথাটি সত্য কিন্তু চরমপন্থীদের উদ্দেশ্য ভিন্ন। আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) যখন চরমপন্থী বা খারেজীদের সাথে যুদ্ধ করেছিলেন, তখন তারা এ কথাই বলেছিল। আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) প্রতিউত্তরে বলেছিলেন, كَلِمَةُ حَقٍّ أُرِيْدَ بِهَا بَاطِلٌ ‘এ কথাটি সত্য কিন্তু এর পিছনে তাদের বাতিল উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে’।[১৪]
৮). আত্মহত্যা করা
জঙ্গি বা চরমপন্থীর সর্বশেষ আলামত হল সে নিজের জন্য আত্মহত্যার পথ নির্ধারণ করে নেয়। ইতিহাসের পাতায় এবং দৈনন্দিন পত্র-পত্রিকার পাতা খুললেই যা লক্ষনীয়। এখানে আত্মহত্যার দু’টি কারণ লক্ষ্য করা যায়।
প্রথমতঃ ‘জঙ্গি’ তার পরিচয়টা অজ্ঞাত রাখতে চায়। কারণ আত্মহত্যার শিক্ষাটা মূলত জঙ্গি ইহুদীদের শিক্ষা। ইহুদী যীলটরা রোমান রাষ্ট্রের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের গুপ্ত হত্যা করত এবং নিজেদেরকে প্রতিপক্ষের হাতে ধরা দিত না। প্রয়োজনে আত্মহত্যা করত।[১৫] খলীফা ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কেও হত্যা করার পর হত্যাকারী জঙ্গি নিজের অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করেছিল।[১৬]
দ্বিতীয়তঃ আত্মহত্যাকারী মনে করে, এ কাজের বিনিময়ে তার জন্য জান্নাত নির্ধারিত হবে। আর এ কারণেই সে আত্মহত্যার পথ নির্ধারণ করে নেয়। অথচ ইসলামী শরী‘আতে আত্মহত্যার পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। আত্মহত্যাকারীর ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,اَلَّذِىْ يَخْنُقُ نَفْسَهُ يَخْنُقُهَا فِى النَّارِ وَالَّذِىْ يَطْعَنُ يَطْعَنُهَا فِى لنَّارِ. ‘যে ব্যক্তি ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামে (অনুরূপভাবে) ফাঁস লাগাতে থাকবে। আর যে ব্যক্তি বর্শার আঘাতে আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামে সে বর্শা বিদ্ধ হতে থাকবে’।[১৭] রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেন, مَنْ قَتَلَ نَفْسَهُ بِحَدِيْدَةٍ عُذِّبَ بِهِ فِىْ نَارِ جَهَنَّمَ ‘যে ব্যক্তি লোহার অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করবে জাহান্নামে তাকে সে অস্ত্র দ্বারাই শাস্তি দেয়া হবে’।[১৮]
জঙ্গি বা চরমপন্থীর পরিণাম
জঙ্গি বা চরমপন্থী ব্যক্তির পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। সে দুনিয়া এবং আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
الَّذِیۡنَ یَنۡقُضُوۡنَ عَہۡدَ اللّٰہِ مِنۡۢ بَعۡدِ مِیۡثَاقِہٖ وَ یَقۡطَعُوۡنَ مَاۤ اَمَرَ اللّٰہُ بِہٖۤ اَنۡ یُّوۡصَلَ وَ یُفۡسِدُوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡخٰسِرُوۡنَ
‘যারা আল্লাহর সাথে দৃঢ় অঙ্গীকারে আবদ্ধ হবার পর তা ভঙ্গ করে, যে সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ রাখতে আল্লাহ আদেশ করেছেন তা ছিন্ন করে এবং দুনিয়ায় ফাসাদ বা বিপর্যয় সৃষ্টি করে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৭)।
যারা ইসলামের নামে বা সমাজনীতি, রাজনীতি, রাষ্ট্রনীতি বা অর্থনীতির নামে চরমন্থা মনোভাব পোষণ করে সমাজে ত্রাস বা নৈরাজ্য সৃষ্টি করে, তাদের জন্য দু’ ধরনের শাস্তি রয়েছে। দুনিয়াবী শাস্তি এবং পরকালীন শাস্তি। যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং দুনিয়ায় ফাসাদ, ফেতনা এবং ধ্বংসাত্মক কাজ করে, তাদের দুনিয়াবী শাস্তি বর্ণনা করে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
اِنَّمَا جَزٰٓؤُا الَّذِیۡنَ یُحَارِبُوۡنَ اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ وَ یَسۡعَوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ فَسَادًا اَنۡ یُّقَتَّلُوۡۤا اَوۡ یُصَلَّبُوۡۤا اَوۡ تُقَطَّعَ اَیۡدِیۡہِمۡ وَ اَرۡجُلُہُمۡ مِّنۡ خِلَافٍ اَوۡ یُنۡفَوۡا مِنَ الۡاَرۡضِ ذٰلِکَ لَہُمۡ خِزۡیٌ فِی الدُّنۡیَا وَ لَہُمۡ فِی الۡاٰخِرَۃِ عَذَابٌ عَظِیۡمٌ
‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এবং দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক কাজ করে বেড়ায় তাদের শাস্তি এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলে চড়ানো হবে অথবা বিপরীত দিক থেকে তাদের হাত ও পা কেটে ফেলা হবে অথবা তাদেরকে দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে। দুনিয়ায় এটাই তাদের লাঞ্ছনা। পরকালে তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি’ (সূরা আল-মায়েদাহ : ৩৩)। পরকালের শাস্তি সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَ الَّذِیۡنَ لَا یَدۡعُوۡنَ مَعَ اللّٰہِ اِلٰـہًا اٰخَرَ وَ لَا یَقۡتُلُوۡنَ النَّفۡسَ الَّتِیۡ حَرَّمَ اللّٰہُ اِلَّا بِالۡحَقِّ وَ لَا یَزۡنُوۡنَ وَ مَنۡ یَّفۡعَلۡ ذٰلِکَ یَلۡقَ اَثَامًا - یُّضٰعَفۡ لَہُ الۡعَذَابُ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ وَ یَخۡلُدۡ فِیۡہٖ مُہَانًا
‘এবং তারা আল্লাহর সাথে কোন উপাস্যকে ডাকে না; আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন, যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে তারা হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না; যে এরূপ করবে সে শাস্তি ভোগ করবে। ক্বিয়ামতের দিন তার শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে এবং সেখানে সে অপমানজনক অবস্থায় স্থায়ীভাবে অবস্থান করবে’ (সূরা আল-ফুরক্বান : ৬৮-৬৯)। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
وَ مَنۡ یَّقۡتُلۡ مُؤۡمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآؤُہٗ جَہَنَّمُ خٰلِدًا فِیۡہَا وَ غَضِبَ اللّٰہُ عَلَیۡہِ وَ لَعَنَہٗ وَ اَعَدَّ لَہٗ عَذَابًا عَظِیۡمًا
‘যে ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মুমিনকে হত্যা করবে তার শাস্তি জাহান্নাম। সেখানেই সে স্থায়ীভাবে অবস্থান করবে। আল্লাহ তার প্রতি রুষ্ট হবেন, তার উপর অভিসম্পাত করবেন এবং তার জন্য মহাশাস্তি প্রস্তুত করে রাখবেন’ (সূরা আন-নিসা : ৯৩)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ مَنۡ یَّفۡعَلۡ ذٰلِکَ عُدۡوَانًا وَّ ظُلۡمًا فَسَوۡفَ نُصۡلِیۡہِ نَارًا ‘যে কেউ সীমালংঘন ও যুলুম করে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করবে, আমি তাকে জাহান্নামে দগ্ধ করব’ (সূরা আন-নিসা : ৩০)।
হাদীছে এসেছে, আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
لَوْ أَنَّ أَهْلَ السَّمَاءِ وَأَهْلَ الأَرْضِ اجْتَمَعُوْا عَلَى قَتْلِ مُسْلِمٍ لَكَبَّهَمُ اللهُ جَمِيْعًا عَلَى وُجُوْهِهِمْ فِى النَّارِ
‘আসমান-যমীনের সমস্ত অধিবাসী একত্রিত হয়ে যদি কোন একজন মুসলিমকে হত্যা করে, তবুও আল্লাহ তা‘আলা সমস্ত অধিবাসীকেই মুখের উপর ভর করিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন’।[১৯]
সঊদী আরবের সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদের ফৎওয়ায় চরমপন্থী বা জঙ্গিদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘শারঈ দৃষ্টিকোণ থেকে যদি প্রমাণিত হয় যে, কেউ কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা এবং ব্যক্তিগত বা সরকারী সম্পত্তি যেমন বাসস্থান, মসজিদ, মাদরাসা, মেডিকেল, কারখানা, ব্রিজ-কালভার্ট, অস্ত্রাগার, পানি সংরক্ষণাগার, রাষ্ট্রীয় কোষাগারের আয়ের উৎস যেমন পেট্রোলের পাইপ, বিমান বিধ্বংস করা বা ছিনতাই করা ইত্যাকার নাশকতামূলক ও শান্তি বিঘ্নিতকারী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কোন কাজ করেছে, তবে তার শাস্তি হচ্ছে হত্যা’।[২০]
পরিশেষে বলা যায়, চরমপন্থা এবং জঙ্গিবাদ উগ্রতা প্রদর্শনপূূর্বক কোন বিষয়কে চরমত্বে আসীন করার মাধ্যমে হত্যা, বিশৃংঙ্খলা তৈরি করে মানব মনে ভিতি সঞ্চার করা। আর ইসলাম হল আত্মসমর্পণের মাধ্যমে মানুষের জীবনে শান্তি আনয়ন করা। অতএব সকলের উচিত জঙ্গিবাদ বা চরমপন্থার পথ পরিহার করে আল্লাহ এবং রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আত্মসমর্পণ করে ইসলামকে সার্বিক জীবনে বাস্তবায়ন করা। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সকল প্রকার চরমপন্থা হতে বেঁচে থাকার তাওফীক্ব দান করুন- আমীন!!
*পি-এইচ. ডি গবেষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
তথ্যসূত্র :
[১]. আল-জামে’ লিআহকামিল কুরআন, ২য় খণ্ড, পৃ. ১৫৪।
[২]. ছহীহ বুখারী, হা/৬১৬৩, ‘আচার-ব্যবহার’ অধ্যায়, ‘কাউকে ‘ওয়াইলাকা’ বলা সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে’ অনুচ্ছেদ; ছহীহ মুসলিম, হা/১০৬৪, ‘যাকাত’ অধ্যায়, ‘খারেজী সম্প্রদায় ও তাদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা’ অনুচ্ছেদ।
[৩]. ছহীহ বুখারী, হা/৭৪৩২, ‘তাওহীদ’ অধ্যায়, ‘আল্লাহর বাণী : ফেরেশতা এবং রূহ আল্লাহর দিকে ঊর্ধ্বগামী হয় এবং আল্লাহর বাণী : তাঁরই দিকে পবিত্র বাণীসমূহ আরোহণ করে’ অনুচ্ছেদ।
[৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৪৩৫১, ‘মাগাযী’ অধ্যায়, ‘বিদায় হজ্জের পূর্বে আলী ইবনু আবূ ত্বালিব এবং খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে ইয়ামানে প্রেরণ’ অনুচ্ছেদ।
[৫]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৩৪৪, ‘নবীদের ঘটনাবলী’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৬; ছহীহ মুসলিম, হা/১০৬৪, ‘যাকাত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৪৮; মিশকাত, হা/৫৮৯৪।
[৬]. আব্দুল কারীম শাহরাসতানী, আল-মিলাল ওয়ান-নিহাল (বৈরূত : দারুল মা‘রেফা, ১৪০৪ হি.), ১ম খণ্ড, পৃ. ১১৩।
[৭]. আল-বিদায়াহ ওয়ান-নিহায়াহ, ৭ম খণ্ড, পৃ. ৩১৯।
[৮]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৬১১, ৬৯৩০, ‘মানাক্বিব’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২৫; ছহীহ মুসলিম, হা/১০৬৬, ‘যাকাত’ অধ্যায় , অনুচ্ছেদ-৪৮।
[৯]. ছহীহ মুসলিম, হা/১০৬৭, ‘যাকাত’ অধ্যায়, ‘সৃষ্টি ও চরিত্রগত দিক থেকে খারেজী সম্প্রদায় সবচেয়ে নিকৃষ্ট’ অনুচ্ছেদ।
[১০]. আল-বিদায়াহ ওয়ান-নিহায়াহ, ৭ম খণ্ড, পৃ. ১৯৪।
[১১]. আল-বিদায়াহ ওয়ান-নিহায়াহ,৭ম খণ্ড, পৃ. ২০৬; ভ্রান্তির বেড়াজালে ইক্বামতে দ্বীন, পৃ. ২২-২৩।
[১২]. ছহীহ মুসলিম, হা/১০৬৬, ‘যাকাত’ অধ্যায়, ‘খারেজী সম্প্রদায়কে হত্যা করতে উৎসাহ প্রদান প্রসঙ্গে’ অনুচ্ছেদ।
[১৩]. ছহীহ মুসলিম, হা/১০৬৬, ‘যাকাত’ অধ্যায়, ‘খারেজী সম্প্রদায়কে হত্যা করতে উৎসাহ প্রদান প্রসঙ্গে’ অনুচ্ছেদ।
[১৪]. ছহীহ মুসলিম, হা/১০৬৬, ‘যাকাত’ অধ্যায়, ‘খারেজী সম্প্রদায়কে হত্যা করতে উৎসাহ প্রদান প্রসঙ্গে’ অনুচ্ছেদ।
[১৫]. Encyclopaedia Britannica, Articles : Terrorism & article : Zealot, Microsoft Encarta 2007.1993-2006, Terrorism. সংগৃহীত : ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ, পৃ. ১৫।
[১৬]. আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ৭ম খণ্ড, পৃ. ১৫৫।
[১৭]. ছহীহ বুখারী, হা/১৩৬৫, ‘জানাযা’ অধ্যায়, ‘আত্মহত্যাকারী সম্পর্কে যা কিছু এসেছে’ অনুচ্ছেদ; মিশকাত, হা/৩৪৫৪।
[১৮]. ছহীহ বুখারী, হা/১৩৬৩, ‘জানাযা’ অধ্যায়, ‘আত্মহত্যাকারী সম্পর্কে যা কিছু এসেছে’ অনুচ্ছেদ;; ছহীহ মুসলিম, হা/১০৯।
[১৯]. ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুছ ছাগীর, হা/৫৬৫; সনদ ছহীহ, ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২৪৪৩।
[২০]. মুহাম্মাদ বিন হুসাইন বিন সাঈদ আলে সুফরান আল-ক্বাহতানী সংকলিত ও ড. ছালেহ আল-ফাওযান সম্পাদিত, ফাতাওয়াল আইম্মাহ ফিন-নাওয়াযিল আল-মুদলাহাম্মাহ (রিয়াদ : ১৪২৪ হি.), পৃ. ১৪।