দৈনন্দিন পঠিতব্য দু‘আসমূহ
সকালের দু‘আসমূহ
দু‘আ-৫ : রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সকালে ৩ বার বলতেন,
سُبْحَانَ اللّٰهِ وَبِحَمْدِهِ عَدَدَ خَلْقِهِ وَرِضَا نَفْسِهِ وَزِنَةَ عَرْشِهِ وَمِدَادَ كَلِمَاتِهِ
উচ্চারণ : ‘সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহাম্দিহী, ‘আদাদা খল্ক্বিহী, ওয়া রিযা নাফ্সিহী, ওয়া যিনাতা ‘র্আশিহী, ওয়া মিদা-দা কালেমা-তিহী’।
অর্থ : ‘আমি আল্লাহর মহত্ত্ব ও প্রশংসা জ্ঞাপন করছি- তাঁর সৃষ্টিকুলের সংখ্যার সমপরিমাণ, তাঁর সত্তার সন্তুষ্টির সমতুল্য এবং তাঁর আরশের ওযন ও কালেমা সমূহের ব্যাপ্তি সমপরিমাণ’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২৭২৬; মিশকাত, হা/২৩০১)।
ফযীলত : উম্মুল মুমিনীন জুওয়াইরিয়া (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, একদিন খুব সকালে নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর নিকট হতে বের হলেন, যখন তিনি ফজরের ছালাত আদায় করে ছালাতের স্বীয় স্থানে বসে ছিলেন। অতঃপর সূর্য খুব উপরে উঠার পর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যাবর্তন করেন, তখনো জুওয়াইরিয়া (রাযিয়াল্লাহু আনহা) সেখানেই বসেছিলেন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, আমি তোমার থেকে পৃথক হওয়া পর্যন্ত কি তুমি এ অবস্থায় আছ? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার পরে আমি মাত্র চারটি বাক্য তিনবার বলেছি, যদি এটাকে তুমি এ অবধি যা বলেছ তার সাথে ওযন দেয়া হয় তাহলে এ বাক্যগুলোর ওযনই বেশী হবে। বাক্যগুলো হচ্ছে, ‘সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহাম্দিহী, ‘আদাদা খল্ক্বিহী, ওয়া রিযা নাফ্সিহী, ওয়া যিনাতা ‘র্আশিহী, ওয়া মিদা-দা কালেমা-তিহী’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২৭২৬; মিশকাত, হা/২৩০১)।
সন্ধ্যার দু‘আসমূহ
দু‘আ-১ : আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সন্ধ্যায় বলতেন,
أَمْسَيْنَا وَأَمْسَى الْمُلْكُ لِلّٰهِ وَالْحَمْدُ لِلّٰهِ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا اللّٰهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرٍ اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَسْألُكَ مِنْ خَيْرِ هِذِهِ اللَّيْلَةِ وَخَيْرِ مَا فِيْهَا وَأَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِّمَا فِيْهَا، اَللّٰهُمَّ إِنِّى أَعُوْذُبِكَ مِنَ الْكَسَل وَالْهَرَمِ وَسُوْءِ الْكِبَرِ رَبِّ إِنِّىْ أَعُوْذُبِكَ مِنْ عَذَابٍ فِىْ النَّارِ وَعَذَابٍ فِىْ الْقَبْرِ
উচ্চারণ : ‘আমসায়না ওয়া আম্সাল্ মুল্কু লিল্লা-হি, ওয়াল-হামদু লিল্লা-হি। লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহ্দাহু লা-শারীকা লাহু, লাহুল মুল্কু ওয়া লাহুল হাম্দু ওয়া হুওয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িং ক্বদীর। আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা মিন খায়রি হা-যিহিল লাইলাতি ওয়া খইরি মা-ফীহা। ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন র্শারিহা ওয়া র্শারি মা ফীহা। আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল কাসালি ওয়াল হারামি ওয়া সূইল কিবার। রব্বি ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিন ‘আযা-বিং ফিন্না-রি ওয়া ‘আযা-বিং ফিল ক্ববর’।
অর্থ : ‘আমরা এবং সমগ্র জগৎ আল্লাহর উদ্দেশ্যে সন্ধ্যায় প্রবেশ করলাম। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। তিনি ব্যতীত ইবাদতের যোগ্য সত্য কোন মা‘বূদ নেই। তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব তাঁরই এবং প্রশংসা মাত্রই তাঁর। তিনি সকল বিষয়ে ক্ষমতাশালী। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট এ রাতের মঙ্গল চাই এবং এ রাতে যা আছে, তার মঙ্গল কামনা করি। আশ্রয় চাই এ রাতের অমঙ্গল হতে এবং এ রাতে যে অমঙ্গল রয়েছে তা হতে। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই অলসতা, বার্ধক্য ও বার্ধক্যের অপকারিতা হতে। হে আল্লাহ! আশ্রয় চাই জাহান্নামের আযাব ও কবরের শাস্তি হতে’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২৭২৩; ‘যিকর, দু‘আ, তাওবাহ ও ক্ষমা প্রার্থনা’ অধ্যায়; অনুচ্ছেদ-১৮; আবূ দাঊদ, হা/৫০৭১; তিরমিযী, হা/৩৩৯০; মিশকাত, হা/২৩৮১)।
দু‘আ-২ : আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে বলতেন,
اَللّٰهُمَّ بِكَ أَمْسَيْنَا وَبِكَ أَصْبَحْنَا وَبِكَ نَحْيَا وَبِكَ نَمُوْتُ وَإِلَيْكَ الْمَصِيْرُ
উচ্চারণ : ‘আল্ল-হুম্মা বিকা আমসায়না ওয়া বিকা আছ্বাহ্না ওয়া বিকা নাহ্ইয়া ওয়া বিকা নামূতু ওয়া ইলাইকাল মাছীর’।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনারই সাহায্যে আমরা সন্ধ্যায় উপনীত হই এবং আপনারই সাহায্যে সকালে উঠি; আপনারই নামে আমরা জীবিত হই এবং আপনারই নামে মৃত্যুবরণ করি, আপনারই দিকে আমাদের উত্থান’ (আবূ দাঊদ, হা/৫০৬৮; তিরমিযী, হা/৩৩৯১; ইবনু মাজাহ, হা/৩৮৬৮; সনদ ‘ছহীহ’; মিশকাত, হা/২৩৮৯)।
প্রসঙ্গসমূহ »:
দু‘আ