উত্তর : উক্ত ছেলের সাথে দুধ ভাই হিসাবে কথা বলা বা দেখা করতে পারবে না। কারণ দুধমাতা সাব্যস্ত হওয়ার জন্য পৃথক পৃথকভাবে কমপক্ষে পাঁচবার দুধপান করাতে হবে এবং দুই বছরের মধ্যে পান করাতে হবে। ইমাম ইবনু কুদামা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা), ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা), ইবনু যুবাইর, ‘আত্বা, ত্বাউস প্রমুখ থেকে এরকমই বর্ণিত হয়েছে (আল-মুগনী, ৮/১৭১-১৭৩ পৃ.)। ইবনু হাযম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘পাঁচবারের কমে দুধের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হবে না এবং একটি অপরটি থেকে পৃথক হতে হবে বা পাঁচবার পৃথক পৃথকভাবে পান করাতে হবে’ (আল-মুহাল্লা, ১০/১৮৯ পৃ.)। শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যদি কোন বাচ্চা দু’বছর বয়সের মধ্যে কোন মহিলার স্তন থেকে পাঁচবার স্তন্যপান করে, তবেই ঐ মহিলা তার দুধমাতা হিসাবে সাব্যস্ত হবে (ফাতাওয়া আল-কুবরা, ৩/১৫৯-১৬৩; মাজমূঊল ফাতাওয়া ইবনু তাইমিয়্যাহ, ৩৪/৫৭ পৃ.)।
ইমাম শাওকানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ছহীহ বুখারী, মুয়াত্তা মালিক ও মুসনাদে আহমাদ এ পাঁচবারের কথাই বর্ণিত হয়েছে। অতএব পাঁচবারের কমে দুধের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হবে না’ (নাইলুল আওত্বার, ৬/৩৬৭-৩৭৩ পৃ.; মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ২২/২৩৭-২৭৩ পৃ.)। আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, কুরআনে এ আয়াতটি নাযিল হয়েছিল عَشْرُ رَضَعَاتٍ مَعْلُوْمَاتٍ ‘দশবার স্তন্যপানে হারাম সাব্যস্ত হয়’। অতঃপর তা মানসূখ বা রহিত হয়ে যায় خَمْسٍ مَعْلُوْمَاتٍ এর দ্বারা অর্থাৎ ‘পাঁচবার পান দ্বারা হারাম সাব্যস্ত হয়’। অতঃপর রাসূল (ﷺ) ইন্তিকাল করেন অথচ ঐ আয়াতটি কুরআনের আয়াত হিসাবে তিলাওয়াত করা হত’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১৪৫২; আবূ দাঊদ, হা/২০৬২)। শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম শাওকানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, উপরিউক্ত হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, দুধের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য স্পষ্টাকারে পৃথক পৃথকভাবে পাঁচবার দুধপান করা অপরিহার্য (মাজমূঊল ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়্যাহ, ৩৪/৩৫; নাইলুল আওত্বার, ৬/৩৬৯ পৃ.)।
নির্দিষ্টভাবে পাঁচবার দুধপান করানোর বিষয়টি একজন ন্যায়পরায়ণ নারী অথবা পুরুষের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে। যদি সে মহিলা সৎ হয় এবং দুই বছরের মধ্যে পান করানোর কথা স্বীকার করে, তবে তার সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য। পাঁচবার দুধপান করানো ও দুই বছরের মধ্যে সংঘটিত হওয়ার বিষয়টি পরিস্ফুটিত হওয়া অপরিহার্য’ (ছহীহ বুখারী, হা/৮৮; আবূ দাঊদ, হা/৩৬০৩; ফাতাওয়া আল-লাজনাহ আদ-দায়িমাহ, ২১/৫৬; মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনু বায, ২২/২৪০)।
প্রশ্নকারী : ইসমাঈল, নারায়ণগঞ্জ।