উত্তর : কোন মুসলিম ব্যক্তি যদি মুসলিমদের বিরুদ্ধে এ ধরনের নিন্দাসূচক মন্তব্য করেন, তবে এটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে এ ধরনের বক্তব্যের শাস্তি ও এর ফলে ব্যক্তির ঈমানের অবস্থা নির্ভর করে তার মনোভাব, উদ্দেশ্য এবং কথার প্রকৃত অর্থের ওপর। যেমন: (ক) যদি উদ্দেশ্য হয় সমালোচনা এবং অন্যায় দূর করার ইচ্ছা: যদি কেউ মুসলিমদের দোষত্রুটি তুলে ধরে কেবল তাদের সংশোধন বা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে চান, তাহলে এটি গুনাহ নয়। বরং ইসলাম এমন সমালোচনাকে সমর্থন করে, যা অন্যায় থেকে মানুষকে দূরে রাখে (সূরা আলে ইমরান: ১০৪)। (খ) যদি মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা ও ঈমানের প্রতি বিরূপ মনোভাব প্রকাশ পায়: যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে এবং তাদের ধর্মীয় পরিচয়কে ছোট করার উদ্দেশ্যে এমন কথা বলেন, তবে এটি কুফর (অবিশ্বাস) হতে পারে (সূরা আল-বাক্বারাহ: ১৩৭)।
ঐ ব্যক্তি ইসলাম থেকে খারিজ হবে কি? যদি তিনি মুসলিমদের সমালোচনা করে ইসলামের প্রতি ঘৃণা বা উপহাস প্রকাশ করেন, তাহলে এটি তাকে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে।
وَ لَئِنۡ سَاَلۡتَہُمۡ لَیَقُوۡلُنَّ اِنَّمَا کُنَّا نَخُوۡضُ وَ نَلۡعَبُ ؕ قُلۡ اَ بِاللّٰہِ وَ اٰیٰتِہٖ وَ رَسُوۡلِہٖ کُنۡتُمۡ تَسۡتَہۡزِءُوۡنَ- لَا تَعۡتَذِرُوۡا قَدۡ کَفَرۡتُمۡ بَعۡدَ اِیۡمَانِکُمۡ
‘তারা যদি তোমাদের জিজ্ঞেস করে, আমরা তো শুধু মজা করছিলাম এবং খেলা করছিলাম। (হে নবী!) আপনি বলুন, আল্লাহ, তাঁর আয়াত এবং তাঁর রাসূলের সাথে তোমরা মজা করছো? তোমরা ওযর পেশ করো না, তোমরা অবশ্যই কাফির হয়েছো’ (সূরা আত-তাওবা: ৬৫-৬৬)। যদি কেউ মুসলিমদের মধ্যে বিদ্যমান অন্যায় বা দুর্নীতির সমালোচনা করেন, তবে এটি তাকে ইসলাম থেকে খারিজ করে না। তবে এমন মন্তব্য করা উচিত নয়, যা পুরো মুসলিম জাতির জন্য দোষের কারণ হয়ে যায় বা দোষারোপ করে। হাদীছে এসেছে, الْمُسْلِمُ مِرْآةُ أَخِيْهِ ‘মুসলিম আরেকজন মুসলিমের জন্য আয়না’ (তিরমিযী, হা/১৯২৮)।
এ ধরনের মন্তব্য করা অবশ্যই গুনাহ এবং এটি সংশোধনের জন্য তওবা ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া আবশ্যক।
প্রশ্নকারী: গোলাম রাব্বি, বরিশাল।