উত্তর : পরিবার রেখে জীবিকার জন্য প্রবাসে থাকা খুব একটা কল্যাণকর কাজ নয়। তবে এটি জায়েয। যেমন ইমাম ইবনু কুদামা (রাহিমাহুল্লাহ), শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) ও সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটির আলেমগণ বলেন, যদি আপনি কাজের উদ্দেশ্যে এবং জীবিকা অন্বেষণের উদ্দেশ্যে সফর করতে চান, তাহলে আপনার উপর মুসলিম দেশগুলোতে সফর করা অপরিহার্য। আলহামদুলিল্লাহ সে দেশগুলো কাফিরদের দেশগুলোর চেয়ে অধিক ধনী। কারণ, কাফির দেশে সফর করলে আক্বীদা ঈমান, দ্বীন ও আখলাক্ব বিনষ্টের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে (আল-মুগনী, ৮/৪৫৭; মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল লিইবনি উছাইমীন, ৬/১৩২; ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমা, ১২/৫৮ পৃ.)।
জীবিকা অন্বেষণের উদ্দেশ্যে নিজ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রবাসে কতদিন পর্যন্ত থাকা যায়? এর উত্তরে শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ), সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটির আলেমগণ, ‘সমাজের মানুষ এটি ভালো করেই জানে যে, কোন ব্যক্তির জন্য তার স্ত্রী থেকে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকা উচিত নয়। কেননা স্বামীর যেমন স্ত্রীর দ্বারা আনন্দিত ও উপকৃত হওয়া এবং সহবাস উপভোগ করার অধিকার রয়েছে, ঠিক তেমনি স্ত্রীর তার স্বামীর দ্বারা আনন্দিত ও উপকৃত হওয়া এবং সহবাস উপভোগ করার অধিকার রয়েছে। তবে স্ত্রীর সম্মতিতে সুবিধামত সময় পর্যন্ত অনুপস্থিত থাকতে পারে। যদি স্ত্রী তার দীর্ঘদিনের অনুপস্থিতি মেনে নেয়। কেননা এটি তার অধিকারের অন্তর্ভুক্ত এবং স্বামীও স্ত্রীর পক্ষ থেকে কোনরূপ খিয়ানত ও ক্ষতির আশঙ্কা করবে না। সেক্ষেত্রে এই শর্তে অনুপস্থিত থাকা জায়েয হবে যে, স্বামী স্ত্রীকে এমন নিরাপদ স্থানে রেখে যাবে যেখানে তার জন্য কোনরূপ ভয় ও আশঙ্কা থাকবে না। পক্ষান্তরে স্ত্রীর অসম্মতিতে যে মেয়াদ পর্যন্ত তার কাছ থেকে অনুপস্থিত থাকা জায়েয, তা হল ‘৪ মাস থেকে ৬ মাস পর্যন্ত’। আর এটিকেই ইসলামী পরিভাষায় ঈলা‘ অর্থাৎ বিচ্ছিন্নের সময় বলা হয়। স্ত্রীর সম্মতি ব্যতীত এর থেকে বেশি সময় থাকা হারাম। এক্ষেত্রে স্ত্রী বিষয়টি ইসলামী বিচারকের কাছে উপস্থাপন করতে পারে এবং ত্বালাক্বের আবেদন করতে পারে (মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল লিইবনি উছাইমীন, ১০/৩০৭; ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ১৯/৪৬৯;, ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ, ৩/২১২ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১০২৩১১)।
প্রশ্নকারী : আরিফ, বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জ।