উত্তর : এক্ষেত্রে স্ত্রীকে নির্ধারিত অংশ দেয়ার পর অবশিষ্ট অংশে ‘আছাবাহ’ সূত্রে ছেলে ও মেয়েরা অংশীদার হবে। স্ত্রীর অংশ: সন্তানের উপস্থিতিতে স্ত্রী পরিত্যক্ত সম্পত্তির এক-অষ্টমাংশ (১/৮) পাবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَ لَہُنَّ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَکۡتُمۡ اِنۡ لَّمۡ یَکُنۡ لَّکُمۡ وَلَدٌ ۚ فَاِنۡ کَانَ لَکُمۡ وَلَدٌ فَلَہُنَّ الثُّمُنُ مِمَّا تَرَکۡتُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ وَصِیَّۃٍ تُوۡصُوۡنَ بِہَاۤ اَوۡ دَیۡن
‘তোমাদের সন্তান না থাকলে তাদের (অর্থাৎ স্ত্রীদের) জন্য তোমাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির এক-চতুর্থাংশ, আর তোমাদের সন্তান থাকলে তাদের (অর্থাৎ স্ত্রীদের) জন্য তোমাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির এক-অষ্টমাংশ। তোমরা যা ওয়াছিয়্যাত কর তা কার্যকর ও ঋণ পরিশোধ করার পর’ (সূরা ভআন-নিসা: ১২)। অর্থাৎ যদি স্বামী মারা যায় এবং তার কোন সন্তান না থাকে, তবে ঋণ পরিশোধ ও ওয়াছিয়্যাত কার্যকর করার পর স্ত্রী মোট সম্পত্তির এক-চতুর্থাংশ পাবে। আর যদি মৃত স্বামীর সন্তান থাকে, এ স্ত্রীর গর্ভজাত হোক কিংবা অন্য স্ত্রীর, তবে ঋণ পরিশোধ ও ওয়াছিয়্যাত কার্যকর করার পর স্ত্রী এক-অষ্টমাংশ পাবে। স্ত্রী একাধিক হলেও উপরিউক্ত বিবরণ অনুযায়ী এক অংশ সকল স্ত্রীর মধ্যে সমহারে বণ্টন করা হবে। অর্থাৎ প্রত্যেক স্ত্রীই যে এক-চতুর্থাংশ কিংবা এক-অষ্টমাংশ পাবে তা নয়, বরং সবাই মিলে এক-চতুর্থাংশ কিংবা এক-অষ্টমাংশে অংশীদার হবে। স্ত্রীর অংশ দেওয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকবে, তা তাদের অন্যান্য ওয়ারিশদের মধ্যে বণ্টন করা হবে। অতএব স্ত্রী আট ভাগের এক ভাগ হিসাবে ২,৩৫,০০০ টাকা হতে ২৯,৩৭৫ টাকা পাবেন। একই নিয়মে ২০ শতাংশ বসতভিটার আড়াই শতাংশ (২.৫%) পাবেন। এবং ৫৪ শতাংশ আবাদি জমির ৬.৭৫% পাবেন।
ছেলে ও মেয়েদের অংশ: এখন স্ত্রীকে তার নির্ধারিত অংশ দেয়ার পর অবশিষ্ট সম্পত্তি ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে বন্টন করা হবে। যেমন আল্লাহ্ তা'আলা বলেছেন, یُوۡصِیۡکُمُ اللّٰہُ فِیۡۤ اَوۡلَادِکُمۡ ٭ لِلذَّکَرِ مِثۡلُ حَظِّ الۡاُنۡثَیَیۡنِ ‘আল্লাহ তোমাদের সন্তান-সন্ততি সম্বন্ধে নির্দেশ দিচ্ছেন, এক পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান’ (সূরা আন-নিসা: ১১)।
এখন ২,৩৫,০০০ টাকা থেকে স্ত্রীকে আট ভাগের এক ভাগ দেয়ার পর অবশিষ্ট থাকছে ২,০৫,৬২৫ টাকা। যদি দুই মেয়ের ভাগ এক ছেলের সমান হয়, তাহলে ৪ মেয়ের ভাগ ২ ছেলের সমান। সুতরাং আমরা মনে করতে পারি যে, ৫ ছেলে আর ৪ মেয়ের ভাগ সমান ৭ ছেলের ভাগ। তাহলে এখন অবশিষ্ট ২,০৫,৬২৫ টাকাকে ৭ দিয়ে ভাগ করলে ৫ ছেলে পাবে ২৯,৩৭৫ টাকা করে অর্থাৎ মোট ১,৪৬,৮৭৫ টাকা। আর অবশিষ্ট দুই ভাগ চার মেয়ের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করলে প্রত্যেক মেয়ে পাবে ১৪,৬৮৭.৫ টাকা করে অর্থাৎ মোট ৫৮,৭৫০ টাকা। একই নিয়মে ২০ শতাংশ বসতভিটার প্রত্যেক ছেলে পাবে আড়াই শতাংশ (২.৫%) করে, আর মেয়েরা পাবে ১.২৫% করে। এবং ৫৪ শতাংশ আবাদি জমির প্রত্যেক ছেলে পাবে ৬.৭৫% করে, আর মেয়েরা পাবে ৩.৩৮% করে।
প্রশ্নকারী : মুহাম্মাদ আব্দুল গফুর, শিবরামপুর, পাবনা।