উত্তর : রাষ্ট্রীয় আইনে হুন্ডি ব্যবসা নিষিদ্ধ। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত সরকারী বিধিনিষেধ যুলম না হবে এবং শরী‘আতের মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক না হবে, ততক্ষণ উক্ত সরকারী আইন মেনে চলা কর্তব্য। নতুবা তা রাষ্ট্রের সাথে ধোঁকা হবে। লেনদেন, ক্রয়-বিক্রয় বা অন্য যে কোন বিষয়ে ধোঁকা দেয়া হারাম। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, مَنْ غَشَّ فَلَيْسَ مِنِّي ‘যে ব্যক্তি ধোঁকাবাজি ও প্রতারণা করে, সে আমার অন্তর্ভুক্ত নয়’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১০১-১০২)। প্রতারণা ও ধোঁকাবাজি খুবই জঘন্য অপরাধ, এবং হারাম’ (তিরমিযী, হা/১৩১৫)। শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) ও শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ব্যবসা-বাণিজ্যে ও অন্যান্য সব ক্ষেত্রেই প্রতারণা করা হারাম’ (মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনি বায, ৬/৩৯৭; ফাতাওয়া নূরুন আলাদ র্দাব, ২/২৪ পৃ.)।
আন্তর্জাতিক স্তরে আদান-প্রদান কৃত টাকার একটা অংশ সরকারি আয়কর বিভাগকে প্রদান করতে হয়। মূলত ঐ ট্যাক্স বা কর ফাঁকি দেয়ার উদ্দেশ্যেই হুন্ডি ব্যবস্থার উৎপত্তি হয়েছে। অথচ দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা উন্নয়নের এবং নানাবিধ কল্যাণসাধনের অভিপ্রায়ে হুন্ডি ব্যবস্থাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একজন আদর্শ মুসলিমের উচিত এই নিষেধাজ্ঞা মেনে চলা। তাই হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠানো উচিত নয়। তাছাড়া এটা পাপাচারে সহযোগিতা করার শামিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তোমরা সৎকর্ম ও তাক্বওয়ায় পরস্পরকে সহযোগিতা কর এবং মন্দকর্ম ও সীমালঙ্ঘনে একে অন্যের সহযোগিতা করো না। আর আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি প্রদানে অত্যধিক কঠোর’ (সূরা আল-মায়িদাহ: ২)। উপরিউক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এখানে আল্লাহ তা‘আলা মুমিন ব্যক্তিদেরকে ভালো কাজে সহযোগিতা করতে আদেশ করেছেন এবং অন্যায়, অসৎ ও হারাম কাজে সাহায্য, সহযোগিতা করতে নিষেধ করেছে’ (তাফসীর ইবনে কাছীর, ২/১২; তাফসীরে কুরতুবী, ৬/৪৬-৪৭ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : মুহাম্মাদ উকীল, কুয়েত।