শুক্রবার, ০৭ মার্চ ২০২৫, ০৯:২২ পূর্বাহ্ন
উত্তর : এক্ষেত্রে ফিদইয়াহ দেয়া যাবে না। কারণ যদি কোন নারী গর্ভবতী হওয়ার কারণে অথবা দুধপান করানোর সময় নিজের ও সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা করে ছিয়াম ভঙ্গ করেন, সেক্ষেত্রে তাকে পরবর্তীতে ক্বাযা আদায় করতে হবে’ (ফাৎহুল ক্বাদীর, ২/৩৫৫; আল-মাজমূঊ, ৬/২৬৭; আল-মুগনী, ৩/১৪৯ পৃ.)।

ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাসান বাছরী, ‘আত্বা ইবনু আবী রাবাহ, যাহ্হাক, নাখঈ, আবূ উবাইদ, আবূ ছাওর, ইবনুল মুনযির সহ সালাফে ছালিহীনের একটি জামা‘আত একই মত পেশ করেছেন (তাফসীরুল কুরতুবী, ২/২৮৯ পৃ.)। শায়খ উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আলিমদের প্রসিদ্ধ মতানুযায়ী এক রামাযানের ক্বাযা ছিয়াম পালনে পরবর্তী রামাযান পর্যন্ত বিলম্ব করা জায়েয নয়। কেননা আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেছেন, আমার উপর রামাযানের যে ক্বাযা ছিয়াম থাকতো তা পরবর্তী শা‘বান মাস ব্যতীত আমি আদায় করার সুযোগ পেতাম না’ (ছহীহ বুখারী, হা/১৯৫০; ছহীহ মুসলিম, হা/১১৪৬)। এটি প্রমাণ করে যে, দ্বিতীয় রামাযানের পরে পালন করার কোন ছাড় নেই। যদি কোন ওজর ছাড়া এমনটি করে তাহলে সে গুনাহগার হবে এবং তার উপর ওয়াজিব হল দ্বিতীয় রামাযানের পর অবিলম্বে ক্বাযা ছিয়াম পালন করা। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অসুস্থ থাকবে অথবা সফরে থাকবে সে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূর্ণ করবে’ (সূরা আল-বাক্বারাহ: ১৮৫)। আল্লাহ তা‘আলা এখানে ক্বাযা পালন ছাড়া অন্য কিছু ওয়াজিব করেনি (মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল ইবনে উছাইমীন, ১৯/প্রশ্ন নং-৩৫৭)। তাঁকে আবারো জিজ্ঞাসা করা হয় যে, এক নারী গত বছর রামাযান মাসে কিছু ছিয়াম ভেঙ্গেছে। অতঃপর শা‘বান মাসের শেষদিকে ছিয়ামগুলোর ক্বাযা পালন শুরু করেছে। এর মধ্যে তার হায়িয শুরু হয়ে গেছে এবং এ বছরের রামাযান মাসও শুরু হয়ে গেছে। অথচ তার একটি ছিয়াম ক্বাযা পালন রয়ে গেছে। এক্ষেত্রে তার উপর কী কর্তব্য? উত্তরে তিনি বলেন, সে নারী এ বছরের রামাযানের আগে যে ছিয়ামটির ক্বাযা পালন করতে পারেনি তার ওপর সে ছিয়ামটির ক্বাযা পালন করা ওয়াজিব। এ বছরের রামাযান মাস শেষ হলে গত বছরের যে ছিয়াম তার ছুটে গেছে সেটার ক্বাযা পালন করবে (মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল ইবনে উছাইমীন, ১৯/প্রশ্ন নং-৩৫৮)। তাঁকে আবারো জিজ্ঞাসা করা হয় যে, এক নারী নিফাসের কারণে রামাযানের ছিয়াম ভেঙ্গেছে এবং দুধ পান করানোর কারণে ক্বাযাও পালন করতে পারেনি। এর মধ্যে দ্বিতীয় রামাযান শুরু হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় তার উপর কী ওয়াজিব? উত্তরে তিনি বলেন, এ নারীর ওপর ওয়াজিব হল যে দিনগুলোতে সে ছিয়াম ভেঙ্গেছে সেগুলোর বদলে ছিয়াম রাখা। এমনকি সেটা যদি দ্বিতীয় রামাযানের পরে হয় তবুও। কেননা সে বিশেষ ওজরের কারণে প্রথম রামাযান ও দ্বিতীয় রামাযানের মাঝে ক্বাযা পালন করতে পারেনি। কিন্তু যদি শীতকালে ক্বাযা পালন করা তার জন্য কষ্টকর না হয়, সেটা একদিন বাদ দিয়ে একদিন হলেও তাহলে সেটাই তার উপর অনিবার্য। এমনকি সে যদি দুধ পান করায় তবুও। তার উচিত রামাযানের যে ছিয়ামগুলো ছুটে গেছে দ্বিতীয় রামাযান আসার আগেই সেগুলোর ক্বাযা পালন করা। যদি সে না পারে তাহলে দ্বিতীয় রামাযান পর্যন্ত বিলম্ব করলেও কোন অসুবিধা নেই (মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল ইবনে উছাইমীন, ১৯/প্রশ্ন নং-৩৬০)। সারকথা হল, এ দিনগুলোর ছিয়ামের ক্বাযা পালন করা ঐ নারীর দায়িত্বে থাকা ঋণ। যখনই তার সক্ষমতা হবে তখনই সেগুলোর ক্বাযা পালন করা অনিবার্য।

আর ফিদইয়া তখনই আদায় করা যাবে, যখন ক্বাযা আদায় করতে পারার ব্যাপারে নিরাশা দেখা দেবে। এই নিরাশা হতে পারে বার্ধক্যজনিত কারণে, যার ফলে ব্যক্তি ছিয়াম রাখতে ক্ষমতাবান হয় না। অথবা এমন কোন রোগের কারণে যে রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করা দুরূহ। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘আর যাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদইয়া স্বরূপ একজন দরিদ্রকে খাবার প্রদান করা’ (সূরা আল-বাক্বারাহ: ১৮৪)-এর অর্থ হচ্ছে- যাদের জন্য ছিয়াম পালন কষ্টসাধ্য (আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়্যাহ, ৫/১১৭ পৃ.)।


প্রশ্নকারী : মুহাম্মাদ মুজাহিদ, মীরপুর, ঢাকা।





প্রশ্ন (৩০) : যে দেশে একাধিক ইসলামী সংগঠন এবং ধর্মীয় নেতা আছেন, কিন্তু তাদের প্রশাসনিক কোন কর্তৃত্ব নেই, তারা কি উক্ত সংগঠনের কর্মীদের থেকে বাই‘আত নিতে পারবেন? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৪০) : প্রচলিত আছে যে, বিলাল (রাযিয়াল্লাহু আনহু) আযান সঠিকভাবে দিতে না পারার জন্য তাকে বাদ দিয়ে নতুন মুয়াযিযন নিয়োগ দেয়। তখন বিলাল (রাযিয়াল্লাহু আনহু) আল্লাহর কাছে অভিযোগ করে আল্লাহ তুমি আমাকে তোতলা বানিয়েছ। এটার জন্য দায়ী তুমি। আর আমার মুয়াযিযন না থাকার দায়ী তুমি। নতুন মুয়াযিযন ফজরের আযান দিল, তখন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) এসে বলেন, আজ কি আযান হয়নি? তখন লোকজন বলল, হ্যাঁ, অনেক সুন্দর হয়েছে। তখন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) বলেন, বিলাল আযান না দিলে সকাল হবে না এবং সূর্যও উঠবে না। প্রশ্ন হল- উক্ত ঘটনার কি কোন দলীল আছে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২১) : ‘যে বিয়েতে খরচ যত কম, সে বিয়েতে বরকত তত বেশি’। হাদীছটি কি ছহীহ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৫) : রামাযান মাসে একই রাত্রিতে তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ পড়া যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৫) : কোন অসুস্থ ব্যক্তি দু‘আ চাইলে শুক্রবারে জুমু‘আর ছালাতের পর সম্মিলিত মুনাজাত করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৩) : জনৈক বক্তা বলেন, ‘যে অসুস্থ অবস্থায় মারা গেছে, সে শহীদ হয়ে মারা গেছে। তাকে কবরের আযাব দেয়া হবে না এবং সকাল-সন্ধ্যায় তাকে জান্নাতের রিযিক দেয়া হবে’। উক্ত বর্ণনা কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৪) : মাওলানা আবু তাহের বর্ধমানী রচিত ‘কাট হুজ্জতির জওবাব’ বইয়ের ২৫ পৃষ্ঠায় একটি হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। যেমন আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ক্বিয়ামতের দিন আহলেহাদীছগণ আমলনামাসহ উপস্থিত হবেন। তখন আল্লাহ বলবেন, তোমরা আহলেহাদীছ বেহেশতে প্রবেশ কর’ (ত্বাবারাণী, আল-ক্বাওলুল বাদী, পৃ. ১৮৯)। উক্ত হাদীছটি কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৪) : যালেম বা অত্যাচারী ব্যক্তির দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৪) : জনৈকা দ্বীনদার মহিলা স্বপ্নে কুরআন তিলাওয়াত করেন এবং এটাকে ভাল স্বপ্ন মনে করেন। স্বপ্নে তিলাওয়াতকৃত আয়াতের অর্থ পড়ে তিনি বলেন, আয়াতে বর্ণিত কাজটি আল্লাহ তাকে পালন করতে আদেশ করেছেন। তার উক্ত দাবী কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৭) : বিভিন্ন ভাষায় রচিত গল্প, নাটক, উপন্যাসের বই বিক্রি করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৯) : ঘরে সূরা আল-বাক্বারাহ তেলাওয়াত করলে শয়তান বিতাড়িত হয়। এ কথা কি ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমানিত? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৫) : জায়গা সংকুলান না হলে একই ঈদগাহে একাধিক জামা‘আত করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ