বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০৩ অপরাহ্ন
উত্তর : এক্ষেত্রে ফিদইয়াহ দেয়া যাবে না। কারণ যদি কোন নারী গর্ভবতী হওয়ার কারণে অথবা দুধপান করানোর সময় নিজের ও সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা করে ছিয়াম ভঙ্গ করেন, সেক্ষেত্রে তাকে পরবর্তীতে ক্বাযা আদায় করতে হবে’ (ফাৎহুল ক্বাদীর, ২/৩৫৫; আল-মাজমূঊ, ৬/২৬৭; আল-মুগনী, ৩/১৪৯ পৃ.)।

ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাসান বাছরী, ‘আত্বা ইবনু আবী রাবাহ, যাহ্হাক, নাখঈ, আবূ উবাইদ, আবূ ছাওর, ইবনুল মুনযির সহ সালাফে ছালিহীনের একটি জামা‘আত একই মত পেশ করেছেন (তাফসীরুল কুরতুবী, ২/২৮৯ পৃ.)। শায়খ উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আলিমদের প্রসিদ্ধ মতানুযায়ী এক রামাযানের ক্বাযা ছিয়াম পালনে পরবর্তী রামাযান পর্যন্ত বিলম্ব করা জায়েয নয়। কেননা আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেছেন, আমার উপর রামাযানের যে ক্বাযা ছিয়াম থাকতো তা পরবর্তী শা‘বান মাস ব্যতীত আমি আদায় করার সুযোগ পেতাম না’ (ছহীহ বুখারী, হা/১৯৫০; ছহীহ মুসলিম, হা/১১৪৬)। এটি প্রমাণ করে যে, দ্বিতীয় রামাযানের পরে পালন করার কোন ছাড় নেই। যদি কোন ওজর ছাড়া এমনটি করে তাহলে সে গুনাহগার হবে এবং তার উপর ওয়াজিব হল দ্বিতীয় রামাযানের পর অবিলম্বে ক্বাযা ছিয়াম পালন করা। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অসুস্থ থাকবে অথবা সফরে থাকবে সে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূর্ণ করবে’ (সূরা আল-বাক্বারাহ: ১৮৫)। আল্লাহ তা‘আলা এখানে ক্বাযা পালন ছাড়া অন্য কিছু ওয়াজিব করেনি (মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল ইবনে উছাইমীন, ১৯/প্রশ্ন নং-৩৫৭)। তাঁকে আবারো জিজ্ঞাসা করা হয় যে, এক নারী গত বছর রামাযান মাসে কিছু ছিয়াম ভেঙ্গেছে। অতঃপর শা‘বান মাসের শেষদিকে ছিয়ামগুলোর ক্বাযা পালন শুরু করেছে। এর মধ্যে তার হায়িয শুরু হয়ে গেছে এবং এ বছরের রামাযান মাসও শুরু হয়ে গেছে। অথচ তার একটি ছিয়াম ক্বাযা পালন রয়ে গেছে। এক্ষেত্রে তার উপর কী কর্তব্য? উত্তরে তিনি বলেন, সে নারী এ বছরের রামাযানের আগে যে ছিয়ামটির ক্বাযা পালন করতে পারেনি তার ওপর সে ছিয়ামটির ক্বাযা পালন করা ওয়াজিব। এ বছরের রামাযান মাস শেষ হলে গত বছরের যে ছিয়াম তার ছুটে গেছে সেটার ক্বাযা পালন করবে (মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল ইবনে উছাইমীন, ১৯/প্রশ্ন নং-৩৫৮)। তাঁকে আবারো জিজ্ঞাসা করা হয় যে, এক নারী নিফাসের কারণে রামাযানের ছিয়াম ভেঙ্গেছে এবং দুধ পান করানোর কারণে ক্বাযাও পালন করতে পারেনি। এর মধ্যে দ্বিতীয় রামাযান শুরু হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় তার উপর কী ওয়াজিব? উত্তরে তিনি বলেন, এ নারীর ওপর ওয়াজিব হল যে দিনগুলোতে সে ছিয়াম ভেঙ্গেছে সেগুলোর বদলে ছিয়াম রাখা। এমনকি সেটা যদি দ্বিতীয় রামাযানের পরে হয় তবুও। কেননা সে বিশেষ ওজরের কারণে প্রথম রামাযান ও দ্বিতীয় রামাযানের মাঝে ক্বাযা পালন করতে পারেনি। কিন্তু যদি শীতকালে ক্বাযা পালন করা তার জন্য কষ্টকর না হয়, সেটা একদিন বাদ দিয়ে একদিন হলেও তাহলে সেটাই তার উপর অনিবার্য। এমনকি সে যদি দুধ পান করায় তবুও। তার উচিত রামাযানের যে ছিয়ামগুলো ছুটে গেছে দ্বিতীয় রামাযান আসার আগেই সেগুলোর ক্বাযা পালন করা। যদি সে না পারে তাহলে দ্বিতীয় রামাযান পর্যন্ত বিলম্ব করলেও কোন অসুবিধা নেই (মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল ইবনে উছাইমীন, ১৯/প্রশ্ন নং-৩৬০)। সারকথা হল, এ দিনগুলোর ছিয়ামের ক্বাযা পালন করা ঐ নারীর দায়িত্বে থাকা ঋণ। যখনই তার সক্ষমতা হবে তখনই সেগুলোর ক্বাযা পালন করা অনিবার্য।

আর ফিদইয়া তখনই আদায় করা যাবে, যখন ক্বাযা আদায় করতে পারার ব্যাপারে নিরাশা দেখা দেবে। এই নিরাশা হতে পারে বার্ধক্যজনিত কারণে, যার ফলে ব্যক্তি ছিয়াম রাখতে ক্ষমতাবান হয় না। অথবা এমন কোন রোগের কারণে যে রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করা দুরূহ। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘আর যাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদইয়া স্বরূপ একজন দরিদ্রকে খাবার প্রদান করা’ (সূরা আল-বাক্বারাহ: ১৮৪)-এর অর্থ হচ্ছে- যাদের জন্য ছিয়াম পালন কষ্টসাধ্য (আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়্যাহ, ৫/১১৭ পৃ.)।


প্রশ্নকারী : মুহাম্মাদ মুজাহিদ, মীরপুর, ঢাকা।





প্রশ্ন (২০) : বিবাহের পূর্বে যদি কেউ বলে, আমি অমুক কাজ করলে বিবাহের পর আমার স্ত্রী ত্বালাক হয়ে যাবে। আমি যাকে বিবাহ করব সে ত্বালাক্ব। এগুলো বললে কি ত্বালাক্ব কার্যকর হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২২) : পাত্রীর পরিবারে কারো কারো সন্তান হচ্ছে না, বিয়ের প্রস্তাবকারী ছেলেকে এ কথা অবহিত করা কি আবশ্যক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩০) : নাপাক বা ওযূবিহীন অবস্থায় ইমামতি করলে ইমাম-মুক্তাদি উভয়কেই পুনরায় ছালাত আদায় করতে হবে? নাকি শুধু ইমাম আদায় করবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৮) : ছালাতের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পূর্বেই আযান দিলে আযান শুদ্ধ হবে কি? এক্ষেত্রে করণীয় কী?. - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১) : কোন্ সময় সত্য গোপন করা যায়? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৮) : সাতদিনের মধ্যে বাচ্চা মারা গেলে ‘আক্বীক্বা দিতে হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৯): ব্যাংকে সূদ নেয়া ব্যতীত টাকা রাখা বা সঞ্চয় করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৬) : ফাতেমা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-কে ‘মা’ বলা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৮) : জনৈক ব্যক্তি জর্জ কোর্টে মুহুরীর সহযোগী হিসাবে কাজ করে। মজুরী হিসাবে টাকাও পায়। কিন্তু যার সহযোগী হিসাবে কাজ করে সে মানুষের কাছ থেকে মিথ্যা/প্রতারণা করে টাকা নেয় এবং বিভিন্ন সময় তাকেও মিথ্যা কথা বলতে হয়। এ ধরনের চাকরী করা বৈধ হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১২) : বর্তমানে ছোট বাচ্চাদের খেলনা হিসাবে বিভিন্ন প্রাণীর আকৃতির পুতুল বানানো হচ্ছে। বাচ্চাদের এগুলো ক্রয় করে দেয়া যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৭) : রাসূল (ﷺ) কখনো কি একাই ফরয ছালাতের পর মুনাজাত করেছেন?       - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৯) : মৃত ব্যক্তির নামে ইফতার মাহফিল করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ