উত্তর : নিজ ভাষায় দু‘আ করা যাবে না। কারণ কেউ এটাকে হারাম বলেছেন, কেউ অপসন্দ করেছেন, আবার কেউ অপারগ ও অসমর্থদের জন্য জায়েয বলেছেন (আল-মাউসূ‘আতুল ফিক্বহিয়্যাহ, ১১/১৭২ পৃ.)। শায়খ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, ‘ছালাতের বাইরে ইংরেজি ভাষা অথবা অন্য যে কোন ভাষায় দু‘আ করা জায়েয। কিন্তু ছালাতের মধ্যে জমহূর আলেমের মতানুযায়ী আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় দু‘আ করা জায়েয নয়। বিশেষ করে যারা আরবী দু‘আ জানে তাদের জন্য আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় দু‘আ করা জায়েয নয়’ (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১১৫৮৮, ২৬২২৫৪, ২০৯৫৩)।
শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘মানুষের উচিত কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহতে বর্ণিত দু‘আর মাধ্যমে দু‘আ করা। কেননা এর গুরুত্ব, মাহাত্ম্য ও সৌন্দর্যের ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই এবং এটিই সরল পথ। আলিমগণ এবং ইমামগণ শরী‘আতসম্মত দু‘আর কথা উল্লেখ করেছেন এবং তাঁরা নতুন উদ্ভাবিত বিদ‘আতী দু‘আ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। সুতরাং এরই অনুসরণ করা উচিত (মাজমূঊল ফাতাওয়া ইবনু তাইমিয়্যাহ, ১/৩৪৬ ও ৩৪৮ পৃ.)। দ্বিতীয় খলীফা ওমর ফারূক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেছেন,
لَا تَعَلَّمُوْا رَطَانَةَ الْأَعَاجِمِ وَلَا تَدْخُلُوْا عَلَى الْمُشْرِكِيْنَ فِيْ كَنَائِسِهِمْ يَوْمَ عِيْدِهِمْ فَإِنَّ السَّخْطَةَ تَنْزِلُ عَلَيْهِمْ
‘তোমরা অনারবদের দুর্বোধ্য ও বিদেশী ভাষা শিখবে না এবং মুশরিকদের অনুষ্ঠানের দিনে তাদের গির্জা ঘরে প্রবেশ করবে না। কেননা সেই সময় তাদের উপর গযব নেমে আসে’ (মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক, হা/১৬০৯, ১/৪১১ পৃ.; মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ, হা/২৬২৮১; বাইহাক্বী, সুনানুল কুবরা, হা/১৮৮৬১; মাজমূঊল ফাতাওয়া ইবনু তাইমিয়্যাহ, ২৫/৩২৫)।
শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) ও শায়খ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, ‘বিতরের ছালাতে কুনূত পাঠ করা অপরিহার্য নয়, বরং তা সুন্নাত। সেই জন্য যদি কেউ দু‘আয়ে কুনূত নাও পড়ে তবুও তার ছালাত শুদ্ধ হবে’ (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ, ২/১৫৯ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৯০৬১)। অতএব বিতরের কুনূতে মাতৃভাষায় দু‘আ করা থেকে বিরত থাকায় সর্বাধিক নিরাপদ হবে। কারণ (১) যেহেতু দু‘আয়ে কুনূত ছাড়াও ছালাত শুদ্ধ হবে এবং (২) বাংলায় দু‘আ করার ব্যাপারে আলেমদের মধ্যে মতপার্থক্যও আছে।
প্রশ্নকারী : গোলাম রাব্বী, বরিশাল।