উত্তর : আল্লাহ তা‘আলা অমুসলিমদের দুই ভাগে বিভক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে না এবং তোমাদেরকে স্বভূমি হতে বহিষ্কার করার চেষ্টা করে না, তাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়পরায়ণদেরকে ভালোবাসেন। পক্ষান্তরে আল্লাহ শুধু তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন, যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের সাথে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে স্বদেশ থেকে বহিষ্কার করেছে এবং তোমাদের বহিষ্করণে সহযোগিতা করেছে। তাদের সাথে যারা বন্ধুত্ব করে, তারাই তো অত্যাচারী’ (সূরা আল-মুমতাহিনাহ : ৮-৯)। এখানে আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদের দু’টি অবস্থা বর্ণনা করেছেন। যথা:
১-এমন কাফির যারা দ্বীন ইসলামের কারণে মুসলিমদের সাথে শত্রুতা ও বিদ্বেষ রাখে না এবং এর ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে না। তারা তোমাদের সাথে এমন আচরণও করে না যে, তোমরা হিজরত করতে বাধ্য হয়ে যাও। তারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে অন্যান্য কাফিরদেরকে কোন প্রকার সাহায্য-সহযোগিতাও করে না, না পরামর্শ দিয়ে, আর না অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে। এই ধরনের কাফিরদের সাথে অনুগ্রহ প্রদর্শন এবং সুবিচারপূর্ণ আচরণ করা নিঃসন্দেহে জায়েয। তাদের সাথে পার্থিব লেনদেন ও আচার-ব্যবহার বিষয়ক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যেমন, আসমা বিনতে আবী বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)) তাঁর মুশরিক মায়ের সাথে সদ্ব্যবহার করা সম্পর্কে নবী (ﷺ)-কে জিজ্ঞাসা করলে, তিনি বললেন, صِلِىْ أُمَّكِ ‘তোমার মায়ের সাথে সদ্ব্যবহার কর’ (ছহীহ বুখারী, হা/২৬২০, ৩১৮৩, ৫৯৭৮, ৫৯৮৯; ছহীহ মুসলিম, হা/১০০৩; আবূ দাঊদ, হা/১৬৬৮)।
২- পক্ষান্তরে যে সমস্ত কাফিরের মধ্যে পূর্বোক্ত গুণাবলীগুলো থাকবে না, বরং যারা এর বিপরীত আচরণ করে, তাদের সঙ্গে সৌহার্দপূর্ণ আচরণ করা যাবে না এবং তাদের সঙ্গে আদান-প্রদান ও বন্ধুত্ব স্থাপনও করা যাবে না। যেমন আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে কেউ তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে সে তাদেরই একজন হিসাবে গণ্য হবে। নিশ্চয় আল্লাহ্ অত্যাচারী সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না’ (সূরা আল-মায়িদাহ : ৫১)। সুতরাং মুসলিম বিদ্বেষী ও সাম্প্রদায়িক অমুসলিমদের সঙ্গে আদান-প্রদান করা থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকতে হবে।
প্রশ্নকারী : মুবারক, চিরিরবন্দর, দিনাজপুর।