শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২৭ পূর্বাহ্ন
উত্তর : যালিমের জন্য বদ-দু‘আ করা জায়েয। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘মন্দ কথা প্রকাশ করাকে আল্লাহ তা‘আলা পসন্দ করেন না, তবে যার উপর যুলুম করা হয়েছে তার কথা স্বতন্ত্র (সূরা আন-নিসা: ১৪৮)। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, ‘কারোর জন্য বদ-দু‘আ করা আল্লাহ পসন্দ করেন না। তবে হ্যাঁ, মাযলূম ব্যক্তি যালিমের জন্য বদ-দু‘আ করতে পারে। এক্ষেত্রে আল্লাহ ছাড় দিয়েছেন, তবে ধৈর্যধারণ করা অধিক উত্তম’ (তাফসীর ইবনে কাছীর, ইসলাম ওয়েব, ফৎওয়া নং-২৪৮৪১৬)। পক্ষান্তরে সামাজিক কলহ, ঝগড়া ও মতবিরোধের কারণে কোন মুসলিম ভাইকে বদ-দু‘আ বা অভিশাপ দেয়া জায়েয নয়। সামুরাহ ইবনু জুনদুব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘তোমরা পরস্পর পরস্পরকে আল্লাহ তা‘আলার অভিসম্পাত, তাঁর গযব ও জাহান্নামের বদ-দু‘আ করো না’ (তিরমিযী, হা/১৯৭৬; সিলসিলা ছহীহাহ্ হা/৮৯৩)। তিনি আরো বলেন, ‘মুমিন কখনো দোষারোপকারী, নিন্দাকারী এবং অভিসম্পাতকারী হতে পারে না, আর অশ্লীল কাজ করে না এবং কটুভাষীও হয় না’ (তিরমিযী, হা/১৯৭৭)। আবূ হুরাইরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ)-কে বলা হলো, ‘হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আপনি মুশরিকদের উপর বদ-দু‘আ করুন’। তিনি বললেন, ‘আমি তো অভিশাপকারীরূপে প্রেরিত হইনি, বরং আমি রহমত স্বরূপ প্রেরিত হয়েছি’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৯৯)। অন্যত্র রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘একজন সত্যবাদীর জন্য অভিসম্পাতকারী হওয়া সমীচীন নয়’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৯৭)।

তাছাড়া কেউ যদি কারোর বিরুদ্ধে হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করে, অপবাদ আরোপ করে কিংবা ক্ষতি সাধনে প্রয়াসী হয়, তবে তাকে শাস্তি দেয়া দায়িত্ব আল্লাহ্ তা‘আলার, অবশ্যই তাকে জবাবদিহি করতে হবে এবং কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। তাহলে অভিশাপ দিয়ে কী লাভ? কারণ, রাসূল (ﷺ) বলেন, বান্দার দু‘আ সর্বদা গৃহীত হয়, কিন্তু যদি সে অন্যায় ও অবৈধ উদ্দেশ্যে অথবা আত্মীয়তার সম্পর্কচ্ছেদ করার জন্য অথবা দু‘আতে তাড়াহুড়া করে, তবে তার দু‘আ গৃহীত হয় না (ছহীহ মুসলিম, হা/২৭৩৫; ছহীহুল জামি‘, হা/৭৭০৫)। তাই এক মুসলিমের উচিত অপর মুসলিমের জন্য কল্যাণ ও হিদায়াতের দু‘আ করা।

আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) সামনে একজন লোক বাতাসকে অভিসম্পাত করছিল। তিনি বললেন, ‘বাতাসকে অভিশাপ প্রদান করো না। কারণ, সে তো হুকুমের গোলাম। যে ব্যক্তি কোন এমন জিনিসকে অভিসম্পাত করে যেটা তার উপযুক্ত নয়, তবে তা অভিশাপকারীর উপর ফিরে আসে’ (তিরমিযী, হা/১৯৭৮)। আবূ দারদা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘যখন কোন বান্দা কোন বস্তুকে অভিশাপ দেয় তখন ঐ অভিশাপ আকাশের দিকে অগ্রসর হয়। অতঃপর সেই অভিশাপ আকাশে উঠার পথকে বন্ধ করে দেয়া হয়। তখন তা পুনরায় দুনিয়ায় প্রত্যার্বতনের জন্য রওয়ানা হয়, কিন্তু দুনিয়াতে আসার পথও বন্ধ করে দেয়া হয়, ফলে সে ডানে বামে যাওযার চেষ্টা করে। অবশেষে অন্য কোনো পথ না পেয়ে যাকে অভিশাপ করা হয়েছে তার নিকট ফিরে আসে। তখন সেই বস্তু যদি ঐ অভিশাপের যোগ্য হয়, তাহলে তার উপর ঐ অভিশাপ পতিত হয়, অন্যথায় অভিশাপকারীর উপরই তা পতিত হয়’ (আবূ দাঊদ, হা/৪৯০৫, সনদ হাসান)। সুতরাং বুঝা যাচ্ছে যে, অভিশাপ দিলেই তা কার্যকর হয়ে যায় না। বরং যাকে অভিশাপ দেয়া হয়েছে সে এর যোগ্য না হলে, তা অভিশাপকারীর উপরেই আপতিত হয়। আবূ দারদা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ‘আমি রাসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি যে, অভিসম্পাতকারীরা ক্বিয়ামত দিবসে সাক্ষী ও সুপারিশকারী হতে পারবে না’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৯৮)। রাসূল (ﷺ) দু‘আতে বলতেন,

اللَّهُمَّ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ فَأَيُّمَا رَجُلٍ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ سَبَبْتُهُ أَوْ لَعَنْتُهُ أَوْ جَلَدْتُهُ فَاجْعَلْهَا لَهُ زَكَاةً وَرَحْمَةً.‏

‘হে আল্লাহ! আমি তো একজন মানুষ। সুতরাং আমি কোন মুসলিমকে গাল-মন্দ করলে কিংবা তাকে অভিশাপ করলে অথবা আঘাত করলে তুমি তার জন্য সেটা পবিত্রতা ও রহমত অর্জনের উপায় বানিয়ে দিয়ো’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২৬০০-২৬০২)।


প্রশ্নকারী : ইলিয়াস, পাবনা।





প্রশ্ন (১০) : খেলার মাঠে আল্লাহর শোকর আদায় করে খেলোয়াড়রা যে সিজদাহ করে সেটা কি জায়েয? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৮) : ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর কবর কোথায় হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৭) : জনৈক আলেম ফৎওয়া দিয়েছেন যে, হানাফী এলাকাতে আছরের ছালাত শেষ ওয়াক্তে হওয়ায় এবং সেই এলাকায় আহলেহাদীছ মসজিদ না থাকলে বাড়িতে ছালাত আদায় করা যাবে। প্রশ্ন হল, এটা কি শরী‘আতসম্মত? আওয়াল ওয়াক্তে একাকী ফরয ছালাত পড়া উত্তম হবে, না-কি শেষ ওয়াক্ত হলেও জামা‘আতে ছালাত আদায় করা উত্তম হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩১) : মানুষ মারা গেলে মাইকিং করে শোক সংবাদ প্রচার করা কি ঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৫) : কারো বিরুদ্ধে বদদু‘আ করা বৈধ কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩২) : ছালাতে সিজদা থেকে উঠে দাঁড়ানোর পর যদি সন্দেহ হয় একটা সিজদা হয়েছে না-কি দু’টি সিজদা হয়েছে? এক্ষেত্রে করণীয় কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩১) : যে ব্যক্তি ছালাতের সংরক্ষণ করবে ক্বিয়ামতের দিন তা তার জন্য জ্যোতি, প্রমাণ ও মুক্তির উপায় হবে। আর যে তার হেফাযত করবে না তার জন্য তা জ্যোতি, প্রমাণ ও মুক্তির উপায় হবে না। ক্বিয়ামতের দিন সে কারূণ, ফেরআঊন, হামান ও উবাই ইবনু খালাফের সাথী হবে (মুসনাদে আহমাদ, হা/৬৫৭৬; মিশকাত, হা/৫৭৮), বর্ণনাটি ছহীহ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩) : ধর্মীয় যে কোন কাজের বিনিময়ে অর্থ গ্রহণ করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৭) : মহিলারা কি হিল পরিধান করতে পারবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩০) : জনৈক ব্যক্তি আগে মিউজিসিয়ান ছিল। আল্লাহর রহমতে সেগুলো এখন সব বাদ দিয়েছে। কিন্তু আগের কিছু বাদ্যযন্ত্র রয়েছে। সেগুলো বিক্রয় করে প্রাপ্ত অর্থ কল্যাণকর কাজে লাগাতে পারবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৬) : মসজিদ, ওয়ায মাহফিলের সভাপতি ও প্রধান অতিথি হওয়ার শর্তে দান করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২১) : কাফির ও মুুশরিকের মধ্যে কোন পার্থক্য আছে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ