সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০২:৪৬ অপরাহ্ন
উত্তর : যালিমের জন্য বদ-দু‘আ করা জায়েয। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘মন্দ কথা প্রকাশ করাকে আল্লাহ তা‘আলা পসন্দ করেন না, তবে যার উপর যুলুম করা হয়েছে তার কথা স্বতন্ত্র (সূরা আন-নিসা: ১৪৮)। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, ‘কারোর জন্য বদ-দু‘আ করা আল্লাহ পসন্দ করেন না। তবে হ্যাঁ, মাযলূম ব্যক্তি যালিমের জন্য বদ-দু‘আ করতে পারে। এক্ষেত্রে আল্লাহ ছাড় দিয়েছেন, তবে ধৈর্যধারণ করা অধিক উত্তম’ (তাফসীর ইবনে কাছীর, ইসলাম ওয়েব, ফৎওয়া নং-২৪৮৪১৬)। পক্ষান্তরে সামাজিক কলহ, ঝগড়া ও মতবিরোধের কারণে কোন মুসলিম ভাইকে বদ-দু‘আ বা অভিশাপ দেয়া জায়েয নয়। সামুরাহ ইবনু জুনদুব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘তোমরা পরস্পর পরস্পরকে আল্লাহ তা‘আলার অভিসম্পাত, তাঁর গযব ও জাহান্নামের বদ-দু‘আ করো না’ (তিরমিযী, হা/১৯৭৬; সিলসিলা ছহীহাহ্ হা/৮৯৩)। তিনি আরো বলেন, ‘মুমিন কখনো দোষারোপকারী, নিন্দাকারী এবং অভিসম্পাতকারী হতে পারে না, আর অশ্লীল কাজ করে না এবং কটুভাষীও হয় না’ (তিরমিযী, হা/১৯৭৭)। আবূ হুরাইরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ)-কে বলা হলো, ‘হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আপনি মুশরিকদের উপর বদ-দু‘আ করুন’। তিনি বললেন, ‘আমি তো অভিশাপকারীরূপে প্রেরিত হইনি, বরং আমি রহমত স্বরূপ প্রেরিত হয়েছি’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৯৯)। অন্যত্র রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘একজন সত্যবাদীর জন্য অভিসম্পাতকারী হওয়া সমীচীন নয়’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৯৭)।

তাছাড়া কেউ যদি কারোর বিরুদ্ধে হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করে, অপবাদ আরোপ করে কিংবা ক্ষতি সাধনে প্রয়াসী হয়, তবে তাকে শাস্তি দেয়া দায়িত্ব আল্লাহ্ তা‘আলার, অবশ্যই তাকে জবাবদিহি করতে হবে এবং কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। তাহলে অভিশাপ দিয়ে কী লাভ? কারণ, রাসূল (ﷺ) বলেন, বান্দার দু‘আ সর্বদা গৃহীত হয়, কিন্তু যদি সে অন্যায় ও অবৈধ উদ্দেশ্যে অথবা আত্মীয়তার সম্পর্কচ্ছেদ করার জন্য অথবা দু‘আতে তাড়াহুড়া করে, তবে তার দু‘আ গৃহীত হয় না (ছহীহ মুসলিম, হা/২৭৩৫; ছহীহুল জামি‘, হা/৭৭০৫)। তাই এক মুসলিমের উচিত অপর মুসলিমের জন্য কল্যাণ ও হিদায়াতের দু‘আ করা।

আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) সামনে একজন লোক বাতাসকে অভিসম্পাত করছিল। তিনি বললেন, ‘বাতাসকে অভিশাপ প্রদান করো না। কারণ, সে তো হুকুমের গোলাম। যে ব্যক্তি কোন এমন জিনিসকে অভিসম্পাত করে যেটা তার উপযুক্ত নয়, তবে তা অভিশাপকারীর উপর ফিরে আসে’ (তিরমিযী, হা/১৯৭৮)। আবূ দারদা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘যখন কোন বান্দা কোন বস্তুকে অভিশাপ দেয় তখন ঐ অভিশাপ আকাশের দিকে অগ্রসর হয়। অতঃপর সেই অভিশাপ আকাশে উঠার পথকে বন্ধ করে দেয়া হয়। তখন তা পুনরায় দুনিয়ায় প্রত্যার্বতনের জন্য রওয়ানা হয়, কিন্তু দুনিয়াতে আসার পথও বন্ধ করে দেয়া হয়, ফলে সে ডানে বামে যাওযার চেষ্টা করে। অবশেষে অন্য কোনো পথ না পেয়ে যাকে অভিশাপ করা হয়েছে তার নিকট ফিরে আসে। তখন সেই বস্তু যদি ঐ অভিশাপের যোগ্য হয়, তাহলে তার উপর ঐ অভিশাপ পতিত হয়, অন্যথায় অভিশাপকারীর উপরই তা পতিত হয়’ (আবূ দাঊদ, হা/৪৯০৫, সনদ হাসান)। সুতরাং বুঝা যাচ্ছে যে, অভিশাপ দিলেই তা কার্যকর হয়ে যায় না। বরং যাকে অভিশাপ দেয়া হয়েছে সে এর যোগ্য না হলে, তা অভিশাপকারীর উপরেই আপতিত হয়। আবূ দারদা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ‘আমি রাসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি যে, অভিসম্পাতকারীরা ক্বিয়ামত দিবসে সাক্ষী ও সুপারিশকারী হতে পারবে না’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৯৮)। রাসূল (ﷺ) দু‘আতে বলতেন,

اللَّهُمَّ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ فَأَيُّمَا رَجُلٍ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ سَبَبْتُهُ أَوْ لَعَنْتُهُ أَوْ جَلَدْتُهُ فَاجْعَلْهَا لَهُ زَكَاةً وَرَحْمَةً.‏

‘হে আল্লাহ! আমি তো একজন মানুষ। সুতরাং আমি কোন মুসলিমকে গাল-মন্দ করলে কিংবা তাকে অভিশাপ করলে অথবা আঘাত করলে তুমি তার জন্য সেটা পবিত্রতা ও রহমত অর্জনের উপায় বানিয়ে দিয়ো’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২৬০০-২৬০২)।


প্রশ্নকারী : ইলিয়াস, পাবনা।





প্রশ্ন (২) : ঋণ নিয়ে কুরবানী দেয়া যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৩) : কিছু মানুষ হারাম কাজে লিপ্ত। যেমন- দাড়ি মুণ্ডন করা, ধূমপান করা, হারামের সাথে জড়িত থাকা ইত্যাদি। যদি এগুলো বর্জন করতে বলা হয় তখন সে বলে, ঈমান ঠিক আছে। দাড়ি লম্বা করা, ধুমপান বর্জন করাই শুধু ঈমান নয়। এ ধরনের লোকের পরিণাম কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৯) : মাগরিবের সময় দরজা বন্ধ না রাখলে ঘরে জিন ও শয়তান প্রবেশ করে। এ কথা কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৪২) : শরীরের অবয়ব প্রকাশ পায় এমন পাতলা কাপড় পরিধান করে নারী-পুরুষ ছালাত আদায় করলে ছালাত হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৮) : নিকটাত্মীয়দের উপস্থিত হওয়ার জন্য মৃত ব্যক্তিকে দাফন করতে দেরী করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২) : একজন মুসলিম ব্যক্তি ছিয়ামের পরিবর্তে কখন ফিদইয়া দিবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৬) : ফী নিয়ে প্রতিযোগিতা আয়োজন করা বৈধ কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩২) : কোন মুসলিম যখন তার কোন অসুস্থ মুসলিম ভাইকে দেখতে যেতে থাকে, তখন সে জান্নাতের ফল আহরণ করতে থাকে। হাদীছটি কি ছহীহ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৫) : স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মীমাংসামূলক ছালাতের  বিশুদ্ধ আাছে কি? সেটা হচ্ছে: দুই রাক‘আত ছালাত পড়া। প্রত্যেক রাক‘আতে সূরা ফাতিহা পড়া এবং সাতবার ‘সম্ভবত আল্লাহ তোমাদের মধ্যে এবং তাদের মধ্য থেকে যাদের সাথে তোমাদের শত্রুতা আছে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব সৃষ্টি করে দেবেন। আল্লাহ সবকিছই করতে সক্ষম। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’ আয়াতটি পড়া। ছালাত শেষ করার পর এই দু‘আ করা, ‘হে আল্লাহ! অমুকের ছেলে অমুকের (স্বামীর নাম) অন্তর অমুকের মেয়ে অমুকের (স্ত্রীর নাম) উপর কোমল করে দিন; যেভাবে আপনি দাউদ (আলাইহিস সালাম)-এর জন্য লোহাকে কোমল করে দিয়েছেন। - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৫) : ফরয ছালাতের পর সম্মিলিত দু‘আ না করে কেউ যদি নির্ধারিত যিকির-আযকার মুখস্থ না থাকায় মোবাইল থেকে দেখে দেখে পাঠ করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৬) : জায়নামাজে বিভিন্ন ছবি থাকে যেমন কা‘বা ঘর, চাঁদ, তারা, গাছের ছবি ইত্যাদি। উক্ত জায়নামাজে ছালাত আদায় করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৫) : হাজারে আসওয়াদ একটি ফেরেশতা ছিল। আল্লাহ তাকে পাথর বানিয়ে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। উক্ত দাবী কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ