যে কোন সময় (রাতে ও দিনে) পঠিতব্য দু‘আ ও যিকর
দু‘আ-৫ : জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, নবী (ﷺ) বলেন, যে ব্যক্তি বলবে,
سُبْحَانَ اللّٰهِ الْعَظِيْمِ
উচ্চারণ : সুবহা-নাল্ল-হিল ‘আযীম।
অর্থ : ‘আমি উচ্চ মর্যাদাশীল আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি’।
ফযীলত : তার জন্য জান্নাতে গাছ রোপন করা হবে (ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৮২৪; সনদ ছহীহ)।
দু‘আ-৬ : আল্লাহর নিকট সর্বাপেক্ষা প্রিয় বাক্যটি বলা। যা তিনি ফেরেশতা এবং তাঁর বান্দাদের জন্য নির্বাচন করেছেন। আর তাহল,
سُبْحَانَ اللّٰهِ وَبِحَمْدِهِ
উচ্চারণ : ‘সুবহা-নাল্ল-হি ওয়া বিহামদিহি’।
অর্থ : ‘আমি উচ্চ মর্যাদাশীল আল্লাহর প্রশংসা সহকারে পবিত্রতা বর্ণনা করছি’ (ছহীহ বুখারী, হা/৬৪০৫; ছহীহ মুসলিম, হা/২৬৯২)।
ফযীলত : রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, ১. যে ব্যক্তি দৈনিক একশ’ বার (সুবহা-নাল্ল-হি ওয়া বিহামদিহী) বলবে, তার সমস্ত গুনাহ মাফ করা হবে, যদিও সে গুনাহ সমুদ্রের ফেনার ন্যায় অধিক হয় (ছহীহ বুখারী, হা/৬৪০৫; ছহীহ মুসলিম, হা/২৬৯১)। ২. আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় কালাম এ দু‘আটি; যা তিনি ফেরেশতা ও তাঁর বান্দাদের জন্য নির্বাচন করেছেন (ছহীহ মুসলিম, হা/২৭৩১)। ৩. যে ব্যক্তি সৎকাজে ব্যয় করার মানসে মাল-সম্পদ গচ্ছিত রাখতে ও রাতে তাহাজ্জুদ ছালাত আদায়ের ফযীলত লাভ করতে চায়, সে যেন এ দু‘আটি পাঠ করে (মা‘রিফাতুছ ছাহাবা, হা/৩৬২৭; সনদ ছহীহ, ছহীহুল জামে‘, হা/৬৩৭৭)। ৪. যে ব্যক্তি রাত্রি জেগে ইবাদত করতে ক্লান্তিবোধ করে, সম্পদ ব্যয় করতে কৃপণতা আসে অথবা শত্রু কর্তৃক হত্যার ভয় পায়, সে যেন বেশি বেশি এ দু‘আটি পাঠ করে। কেননা তা আল্লাহর কাছে তাঁর রাস্তায় পাহাড়সম স্বর্ণ দান করার চেয়েও অধিক পসন্দনীয় (ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল কাবীর, হা/৭৮০০; সনদ ছহীহ লি গাইরিহী; আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১৫৪১)।
দু‘আ-৭ : আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, দুটি বাক্য এমন যা মুখে উচ্চারণ করা অতি সহজ, পাল্লায় অতি ভারী, আর আল্লাহর নিকট অতি প্রিয়। তাহল,
سُبْحَانَ اللّٰهِ وَبِحَمْدِهِ سُبْحَانَ اللّهِ الْعَظِيْمِ
উচ্চারণ : ‘সুবহা-নাল্ল-হি ওয়া বিহামদিহি সুবহা-নাল্ল-হিল ‘আযীম’।
অর্থ : আল্লাহর প্রশংসাসহ পবিত্রতা বর্ণনা করছি, (আমি) মহান আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি (ছহীহ বুখারী, হা/৬৪৬; ছহীহ মুসলিম, হা/২৬৯৪)।
দু‘আ-৮ : আল্লাহর পসন্দনীয় চারটি বাক্য বলা। বাক্যগুলো হল,
سُبْحَانَ اللّٰهِ والْحَمْدُ لِلّٰهِ وَلَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ واللّٰهُ اكْبَرُ
উচ্চারণ : সুবহা-নাল্লা-হি, ওয়ালহামদুলিল্লা-হি, ওয়া লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্ল-হু আকবার।
অর্থ : ‘আল্লাহ পবিত্র, যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন মা‘বূদ নেই এবং আল্লাহ মহান’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২১৩৭)।
ফযীলত : রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ১. ‘সুবহা-নাল্লা-হি’ পাঠ করা ওহুদ পাহাড়সম আমল করার চেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন। ‘আলহামদুলিল্লা-হি’ পাঠ করা ওহুদ পাহাড়সম আমল করার চেয়ে উত্তম। ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু’ পাঠ করা’ ওহুদ পাহাড়সম আমল করার চেয়ে উত্তম। ‘আল্ল-হু আকবার’ পাঠ করা ওহুদ পাহাড়সম আমল করার চেয়ে উত্তম (বায়হাক্বী, আস-সুনানুল কুবরা, হা/১৬৭২, সনদ ছহীহ)। ২. এ চারটি বাক্য জাহান্নাম থেকে বাঁচার ঢাল। এই কালেমাগুলো ক্বিয়ামতের দিন পাঠকারীর সামনে ও পিছন থেকে রক্ষাকারী হিসাবে উপস্থিত হবে (বায়হাক্বী, আস-সুনানুল কুবরা, হা/১০৬৮৪; সনদ ছহীহ, ছহীহুল জামে‘ হা/৩২১৪)। ৪. কেউ যদি এ চারটি বাক্য বলে, তবে তা তার গুনাহ সমূহ ঝরিয়ে দেয়, যেভাবে গাছের পাতাসমূহ ঝরে পড়ে (তিরমিযী, হা/৩৫৩৩; সনদ হাসান)। ৫. এ চারটি বাক্য প্রতিবার পাঠ করার বিনিময়ে পাঠকারীর জন্য জান্নাতে একটি করে গাছ রোপিত হবে (ইবনু মাজাহ, হা/৩৮০৭, সনদ ছহীহ)। ৫. এ বাক্য চারটি জান্নাতের গাছপালা (তিরমিযী, হা/৩৪৬২; সনদ হাসান)। ৬. এগুলোর মাধ্যমে আল্লাহর যে মহিমা বর্ণনা করা হয় তা মৌমাছির গুঞ্জনের ন্যায় শব্দ করে আরশের চারপাশে ঘুরতে থাকে। সেগুলো নিজ নিজ প্রেরকের (পাঠকারীর) কথা উল্লেখ করতে থাকে (ইবনু মাজাহ, হা/৩৮০৯; সনদ ছহীহ)।
প্রসঙ্গসমূহ »:
দু‘আ