উত্তর : মাসজিদে প্রবেশ করার সময় পঠিত দু‘আর মত সংক্ষিপ্ত দু‘আ আযানের জবাবের ফাঁকে পাঠ করা বৈধ। কিছু হাদীছ প্রমাণ করে যে, আযানের পর দু‘আ করা অনুমোদিত’ (ছহীহ মুসলিম, হা/৩৮৪; আবূ দাঊদ, হা/৫২১, ৫২৪)। শায়খ উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আযানের অনুকরণে জবাব দেয়া দু‘আ করার তুলনায় অধিক উত্তম। আযানের জবাব দেয়া দু‘আ করা এবং কুরআনুল কারীম তিলাওয়াত করার চাইতে অধিক উত্তম। কেননা এটি একটি বিশেষ যিকির, যার সময় পেরিয়ে গেলে সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়। সেই জন্য আগে আযানের জবাব দিন, অতঃপর আযান শেষের দু‘আ পাঠ করুন। তার পর নিজের ইচ্ছানুযায়ী আল্লাহর কাছে দু‘আ করুন। কারণ আযান ও ইক্বামতের মধ্যবর্তী দু‘আ দু‘আ আল্লাহ তা‘আলা ফিরিয়ে দেন না’ (ফাতাওয়া নূরুন ‘আলাদ র্দাব ইবনে উছাইমীন, ২/২৪ পৃ.)। আবার কিছু হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, আযান চলাকালীন দু‘আ করলে সেই দু‘আ ফিরিয়ে দেয়া হয় না (আবূ দাঊদ, হা/২৫৪০; ছহীহুল জামি‘, হা/৮০৩; ছহীহ আদাবিল মুফরাদ, হা/৬৬১)। এই হাদীছের আলোকে কিছু আলেম বলেন যে, ‘আযানের সময় দু’আ ক্ববুল হয়’ (মির‘আতুল মাফাতিহ, ২/৫৭০; আল-ফাতুহাতুর রাব্বানিয়্যাহ, ২/১৩৮; আত-তামহীদ, ২১/১৪০; কাশ্শাফুল ক্বিনা‘, ১/৩৬৯ পৃ.)। কিছু আলেম আরো স্পষ্ট করে অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন ‘আযানের সময় দু‘আ করা মুস্তাহাব’ নামে (আল-আওসাত্ব, ৩/১৭১; তাওযীহুল আহকাম মিন বুলূগিল মারাম, ৭/৫৫৬ পৃ.)।
সুতরাং বুঝা যাচ্ছে যে, আযানের মধ্যে ও পরে উভয়াবস্থাতেই দু‘আ করা জায়েয। যদিও আযানের পর দু‘আ করারহাদীছ গুলো অধিক স্পষ্ট, অধিক ছহীহ এবং সংখ্যায় বেশি। কেউ আযান চলাকালীন দু‘আ করলেও যেন জবাব দেয়া থেকে বঞ্চিত না হয়। বরং আযানের জবাবের ফাঁকে ফাঁকে দু‘আ করবে। কারোর পক্ষে দুটো কাজ একসঙ্গে তালমিলিয়ে করা সম্ভবপর না হলে, আগে জবাব দেবে। কেননা এর সময় খুবই সংক্ষিপ্ত এবং নির্ধারিত। অতঃপর আযান শেষে ধীরস্থিরতার সাথে দু‘আ করবে (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-২৯০২২৬)।
প্রশ্নকারী : মু‘তাসিম বিল্লাহ, কুড়িগ্রাম।