উত্তর : পিতা-মাতার জন্য এ বিষয়ে ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠা করা অপরিহার্য। হিবা বা উপহার দেয়ার সময় কোন সন্তানকে তার নির্ধারিত অংশ থেকে বিন্দুমাত্র কম দেয়াটাও যুল্ম হিসাবে বিবেচিত হবে। সন্তানদের কিছু হিবা বা দান করতে চাইলে দু’টি বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। (১) শারঈ উত্তরাধিকার আইন অনুপাতে হিবা বা দান করতে হবে। (২) হিবা বা দান করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সমতার বিধান পালন করতে হবে। অর্থাৎ পুরুষ নারীর দ্বিগুণ পাবে। নু‘মান বিন বাশীর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ‘আমার পিতা আমাকে কিছু জিনিস দান করেছিলেন। তখন আমরাহ বিনতে রাওয়াহাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহা) (অর্থাৎ আমার মাতা) বলেন, এ বিষয়ে রাসূল (ﷺ)-কে সাক্ষী রাখা ব্যতীত আমি সম্মত নই। তখন তিনি রাসূল (ﷺ)-এর নিকট এসে বললেন, আমি আমার ও আমরাহ বিনতে রাওয়াহার গর্ভজাত পুত্রকে কিছু দান করেছি। হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আপনাকে সাক্ষী রাখার জন্য সে আমাকে বলেছে। তখন নবী (ﷺ) আমাকে জিজ্ঞেস করে বললেন, তোমার সব ছেলেকেই কি এ রকম দান করেছ? তিনি বললেন, না। (তখন তিনি বললেন, তাহলে আমাকে সাক্ষী রেখো না। কারণ, আমি যুল্মের ব্যাপারে সাক্ষী থাকি না)। অতঃপর রাসূল (ﷺ) বললেন, فَاتَّقُوْا اللهَ وَاعْدِلُوْا بَيْنَ أَوْلَادِكُمْ ‘তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আপন সন্তানদের মাঝে সমতা রক্ষা কর’। নু‘মান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, অতঃপর তিনি ফিরে গেলেন এবং তাঁর দান ফিরিয়ে নিলেন (ছহীহ বুখারী, হা/২৫৮৬-২৫৮৭; ছহীহ মুসলিম, হা/১৬২৩-১৬২৪)। উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, সন্তানদের মধ্যে হিবা করার সময় সকলকেই সমানভাবে তাদের নির্ধারিত অংশ দিতে হবে। কাউকে প্রাধান্য দিয়ে অপরকে বঞ্চিত করা যাবে না (শারহুন নববী, ১১/৬৬ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : মুহাম্মাদ জামিল, নওদাপাড়া, রাজশাহী।