প্রশ্নকারী : মামুন বিন হাশমত, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া।
উত্তর : এই মেসেজগুলো দুই ধরণের হতে পারে। প্রথমতঃ এমন ইসলামী মেসেজ যেগুলোতে অভিনন্দন জানানো শরী‘আতসম্মত কিংবা মেসেজ পাঠানোর সময়ের সাথে সংশ্লিষ্ট বিশেষ কোন ইবাদত স্মরণ করিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে মেসেজ পাঠানো। যেমন রামাযানের ক্বিয়ামুল লাইল কিংবা রামাযানে কুরআন তেলাওয়াত কিংবা ফযীলতপূর্ণ দিনগুলোতে ছিয়াম রাখা ইত্যাদির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মেসেজ পাঠানো। এ ধরণের মেসেজ প্রেরণে কোন অসুবিধা নেই। তবে মেসেজের ভেতরের লেখা যেন সঠিক হয়, শরী‘আতের বিরোধী কোন কিছু যেন তাতে না থাকে সে ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে হবে। দ্বিতীয়তঃ বিভিন্ন বিদ‘আতী উৎসব কিংবা গায়রে-শরঈ উপলক্ষগুলোতে মেসেজ পাঠানো। যেমন মীলাদুন্নবী উপলক্ষে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠানো কিংবা রাসূলের ইসরা ও মি‘রাজ দিবস উপলক্ষে কিংবা ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে কিংবা ঐতিহ্যগত বাসন্তি উৎসব, কিংবা খ্রিস্ট নববর্ষের উৎসব উপলক্ষে মেসেজ পাঠানো ইত্যাদি। এ ধরণের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করা নিষিদ্ধ। কারণ এ প্রকারের শুভেচ্ছা হয় বিদ‘আতী উৎসব কিংবা বিধর্মীদের উৎসব। এ ধরণের শুভেচ্ছা জানানো নাজায়েয। এর প্রচার ও প্রসারে সহযোগিতা করাও নাজায়েয (ইসলাম সাওয়াল ও জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১৪৭৫৮৩)। আবু হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,
مَنْ دَعَا إِلَى هُدًى كَانَ لَهُ مِنَ الأَجْرِ مِثْلُ أُجُوْرِ مَنْ تَبِعَهُ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أُجُوْرِهِمْ شَيْئًا وَمَنْ دَعَا إِلَى ضَلَالَةٍ كَانَ عَلَيْهِ مِنَ الْإِثْمِ مِثْلُ آثَامِ مَنْ تَبِعَهُ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ آثَامِهِمْ شَيْئًا
‘যে ব্যক্তি হেদায়াতের দিকে আহ্বান করে সে ব্যক্তি যে যে তাকে অনুসরণ করবে তাদের ছওয়াবও পাবে। এতে করে তাদের ছওয়াব সামান্যটুকুও কম করা হবে না। আর যে ব্যক্তি কোন ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করে সে ব্যক্তি যে যে তার অনুসরণ করবে তাদের সকলের গুনাহ বহন করবে। এতে করে তাদের গুনাহতে কমতি করা হবে না’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২৬৭৪; আবূ দাঊদ, হা/৪৬০৯; মিশকাত, হা/১৫৮)। উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি হেদায়াতের দিকে আহ্বান করে সে ব্যক্তি তার অনুসারীদের সমপরিমাণ ছওয়াব পাবে। আর ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করলে সে ব্যক্তি তার অনুসারীদের সমপরিমাণ গুনাহ বহন করবে। হেদায়াত কিংবা ভ্রষ্টতা সে নিজেই এটাকে প্রথমবার শুরু করুক কিংবা আগে থেকেই চালু থাকুক– বিধান এক। অনুরূপভাবে এটা কোন জ্ঞান শিক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রে হোক কিংবা কোন ইবাদতের ক্ষেত্রে হোক কিংবা কোন শিষ্টাচারের ক্ষেত্রে হোক কিংবা অন্য কিছু হোক বিধান এক’ (ইমাম নববী, শারহু ছহীহ মুসলিম, ১৬/২২৭ পৃ.)।