উত্তর : উক্ত মর্মে যে বর্ণনা এসেছে, তা জাল। শায়খ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, ‘এ সম্পর্কে বর্ণিত হাদীছের সনদগুলো ছহীহ নয়। আর এ কথা সর্বজনবিদিত যে, যঈফ হাদীছ দ্বারা শরী‘আতের কোন বিধান প্রতিষ্ঠিত হয় না। যেমন ইবনু আবী-‘আছীম তার কিতাব আস-সুন্নাহর ১/৩০৫-৩০৬ পৃষ্ঠায় একটি দীর্ঘ হাদীছ বর্ণনা করেছেন, যার শেষ অংশে বলা হয়েছে, উম্মতে মুহাম্মাদীর মর্যাদার কথা শুনে মূসা (আলাইহিস সালাম) আল্লাহ তা‘আলাকে বলেছিলেন,
إِلَهِي اجْعَلْنِي نَبِيَّ تِلْكَ الْأُمَّةِ. قَالَ: نَبِيُّهَا مِنْهُمْ. قَالَ: اجْعَلْنِي مِنْ أُمَّةِ ذَلِكَ النَّبِيِّ. قَالَ: اسْتَقْدَمْتَ وَاسْتَأْخَرُوا يَا مُوسَى، وَلَكِنْ يَا مُوسَى سَأَجْمَعُ بَيْنَكَ وَبَيْنَهُ فِي دَارِ الْجَلَالِ
‘হে আমার আল্লাহ! আমাকে ঐ উম্মতের নবী বানিয়ে দিন। আল্লাহ বলেন, তাঁদের নবী তাঁদের মধ্যে থেকেই হবে। তিনি বলেন, তাহলে আমাকে ঐ নবীর উম্মত বানিয়ে দিন। আল্লাহ বলেন, হে মূসা! তুমি তো অগ্রবর্তী হয়েছ, আর তারা তো পরবর্তী সময়ে আসবে। কিন্তু হে মূসা! আমি তোমাকে এবং তাঁকে সম্মানীত ঘরে একত্রিত করব’। এ হাদীছের সনদ নিতান্তই দুর্বল অথবা জাল বা বানোয়াট।
আল্লামা মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এর সনদ খুবই দুর্বল বরং এটি মাওযূঊ’ (তাখরীজু কিতাবিস সুন্নাহ, পৃ. ৬৯৬; যিলালুল জান্নাহ, ১/৩০৬ পৃ.)। আবূ নু‘আইম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, এর সনদে দুর্বলতা রয়েছে (দালাইলুন নুবুওয়াহ, পৃ. ৬৮-৬৯)। ইবনু আবী হাতীম তাঁর তাফসীর গ্রন্থের ৫/১৫৮৭ পৃষ্ঠায় বলেন, এই হাদীছের সনদে দুর্বলতা রয়েছে। হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এই হাদীছের বর্ণনাকারীগণ দুর্বল এবং সন্দেহযুক্ত’ (তাক্বরীবুত তাহযীব, পৃ. ২৩৩, ৪৫৭, ৪৯৩ ও ৫৪৭ পৃ.)। জারীর আত্ব-ত্বাবারী ও ইমাম ইবনু কাছীর, ক্বাতাদাহ (রাহিমাহুমুল্লাহ) উক্ত হাদীছ বর্ণনা করে বলেন, এই হাদীছের সনদ ছহীহ নয় (তাফসীরে ত্বাবারী, ১০/৪৫২; তাফসীরে ইবনে কাছীর, ৩/৪৭৭ পৃ.)। মোদ্দাকথা, এই হাদীছটিকে রাসূল (ﷺ)-এর পক্ষ থেকে প্রমাণিত নয়। কারণ এটি তাঁর উক্তি নয়। বরং প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে যে, এগুলো আহলে কিতাবদের মতবাদ বা তাদের মনগড়া কাহিনী (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-২৫৮৪৯৩)।
প্রশ্নকারী : তাইফ মোল্লা, গুলশান, ঢাকা।