শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২৫ পূর্বাহ্ন
উত্তর : পোশাকের ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য শরী‘আত যে শর্ত আরোপ করেছে, সেই শর্ত অনুযায়ী শাড়ি পরা উচিত নয়। শর্তগুলো হল, পোশাক যেন পুরো শরীরকে আবৃত করে, ঢিলেঢালা ও প্রশস্ত হয়, পাতলা-ফিনফিনে যেন না হয়, শরীরে যে অঙ্গগুলো ঢাকা আবশ্যক সেগুলো যেন প্রকাশিত না হয়, বিপরীত লিঙ্গ ও কাফিরদের ধর্মীয় পোশাকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ না হয় ইত্যাদি (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১২৩৪০৬)

শায়খ উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যে পোশাক শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও অবয়বকে আবৃত করতে পারে না সে পোশাক পরিধান করা হারাম। যেমন, কিছু পুরুষ এমন ফিনফিনে পোশাক পরিধান করে যে, চামড়ার রং পর্যন্ত দেখা যায়, বা এমন সংকীর্ণ বস্ত্র পরিধান করে যে, অন্তর্বাস পর্যন্ত দেখা যায়, নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত ফরয লজ্জাস্থানটাও পূর্ণাঙ্গ আবৃত হয় না। এই ধরনের পোশাক পরিধান করে ছালাত আদায় করা যাবে না। অনুরূপভাবে কিছু মহিলাও এমন ছোট ও সংকীর্ণ অথবা ফিনফিনে পোশাক পরিধান করে যে, তার শরীরের চামড়ার রং দৃশ্যমান হয় এবং দেহের উঁচু-নিচু স্থানগুলো প্রকাশিত হয়। মহিলাদের জন্য এ জাতীয় পোশাক পরিধান করা হারাম’ (ফাতাওয়া নূরুন ‘আলাদ দারব, ১১/৮৫-৯৮)। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘জাহান্নামবাসীদের মধ্যে দুই প্রকার মানুষ, যাদের আমি (এখনো পর্যন্ত) দেখিনি। একদল মানুষ, যাদের সঙ্গে গরুর লেজের মত চাবুক থাকবে, তা দ্বারা তারা লোকজনকে মারবে (অর্থাৎ মানুষের উপর অত্যাচার করবে) এবং একদল স্ত্রী লোক, যারা বস্ত্র পরিহিতা হয়েও বিবস্ত্রা বা উলঙ্গ হবে, যারা অন্যদের আকর্ষণকারিণী ও আকৃষ্টা হবে, আর তাদের মাথার চুলের অবস্থা উটের হেলে পড়া কুঁজের মত হবে। ওরা জান্নাতে যেতে পারবে না, এমনকি তার সুগন্ধিও পাবে না। অথচ এত এত দূর হতে তার সুগন্ধি পাওয়া যায়’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২১২৮)। ‘যারা বস্ত্র পরিহিতা হয়েও বিবস্ত্রা বা উলঙ্গ’ এই শব্দের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনু আব্দিল বার্র (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, فهن كاسيات بالإسم و عاريات في الحقيقة ‘তারা কিন্তু নামমাত্র বস্ত্র পরিহিতা, বাস্তবে কিন্তু তারা বিবস্ত্রা বা উলঙ্গ’ (আত-তামহীদ, ১৩/২০৪ পৃ.)।

শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই সংকীর্ণ বা আটোসাঁটো পোশাক পরিধান করা অপসন্দনীয়। মধ্যবর্তী পোশাক পরিধান করাই শরী‘আত সম্মত। এমন আটোসাঁটো বা সংকীর্ণও নয় যে, দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গোচরীভূত হয়, আবার এমন শিথিল বা ঢিলেঢালাও নয় যে, রক্ষণাবেক্ষণ করা দুষ্কর হয়ে যায়। বরং এই দু’য়ের মধ্যবর্তী পোশাক হতে হবে। মুমিন নারী-পুরুষের জন্য ফিনফিনে, অল্পায়তন, স্বল্পায়তন, সংকীর্ন ও আটোসাঁটো পোশাক পরিধান করা অশোভনীয়’ (মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনু বায, ২৯/২২৭ পৃ.)। সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটি বলেন, ‘দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গোচরীভূত হয় বা লজ্জাস্থান বিকশিত হয় এমন পোশাক পরিধান করা অবৈধ। যেমন কিছু ট্রাউজার, জিম বা সুইমিংয়ের পোশাক ইত্যাদি’ (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৩/৪৩০, ২৪/৪০ পৃ.)। শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এমন সংকীর্ণ পোশাক যে, সৃষ্টির অবয়ব প্রকাশিত হয় বা এমন ফিনফিনে পোশাক যে, চামড়া আবৃত হয় না তা পরিধান করা নিষেধ। কেননা মহিলাদেরকে এ জাতীয় পোশাক পরিধান করতে নিষেধ করা হয়েছে। অভিভাবকদের (বাবা ও স্বামী) উচিত তাদের এধরনের পোশাক পরতে নিষেধ করা’ (ফাতাওয়া আল-কুবরা, ৫/৩৫৩ পৃ.)। অন্যত্র শায়খ উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

والضيِّق لا يجوز لا عند المحارم ولا عند النساء إذا كان ضيِّقًا شديدًا يبيِّن مفاتن المرأة

‘যদি পোশাক এতটাই সংকীর্ণ বা আটোসাঁটো হয় যে, মহিলাদের আকর্ষণীয় বিষয়গুলো পরিস্ফুটিত হচ্ছে এবং তাদের রূপ যৌবন বিকশিত হচ্ছে, তাহলে এ জাতীয় পোশাক মাহরিম ও গাইর মাহরিম উভয়ের সামনেই পরিধান করা যাবে না’ ।

উক্ত আলোচনায় বুঝা যায় যে, মুসলিম মহিলাদের জন্য শাড়ি পরিধান করা জায়েয নয়। কারণ শাড়ি পরলে তাদের শরীরের অবয়ব প্রকাশিত হবে। তাই শাড়ি পরতে চাইলে তার উপর বোরকা পরিধান করা অপরিহার্য।


প্রশ্নকারী : জান্নাত, রাজারবাগ, ঢাকা।





প্রশ্ন (৭) : রামাযান মাসের ছিয়ামের ক্বাযা বাকি রেখে, শাওয়াল মাসের ছয়টি ছিয়াম পালন করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৮) : কাউকে বিদায় দেয়ার সময় কোন দু‘আ পড়তে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৪) : জান্নাতে কি রাত দিন হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৪০) : শুক্রবারে জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হয় এবং সেদিন কেউ মারা গেলে বিনা হিসাবে জান্নাতে চলে যায়। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৪) : মাইগ্রেন (Migraine) রোগের কারণে ছিয়াম ছেড়ে দেয়া যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৫) : অনেক সময় আমরা মসজিদে দুখূলুল মসজিদ বা অন্য কোন সুন্নাত ছালাত আরম্ভ করি এমতাবস্থায় ইক্বামত দিয়ে দেয়। তখন আমরা সুন্নাত ছেড়ে দিয়ে জামা‘আতে শামিল হয়ে যাই। ফরয ছালাতের পরে সেই ছুটে যাওয়া সুন্নাত কি আবার পড়তে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৯) : রাত্রে স্বপ্নদোষ হলে, বুঝতে না পেরে ফজরের ছালাত আদায় করে নিলে, জানতে পারার পর কি ছালাত ক্বাযা করতে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৬) : যে ব্যক্তি জুম‘আর দিনে সূরা কাহ্ফ পাঠ করবে, সে ৮ দিন পর্যন্ত সকল প্রকার অনিষ্ট থেকে মুক্ত থাকবে, যদিও তার মাঝে দাজ্জাল এসে যায়। হাদীছটি কি ছহীহ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৭) : এশার ছালাত কখন আদায় করা উত্তম? আউয়াল ওয়াক্তে, না-কি দেরিতে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২১) : রামাযানে যেকোন আমলে ৭০ গুণ ছাওয়াব হওয়ারা আশা করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২) : আরবী সফর মাসকে কেন্দ্র করে প্রচলিত কুসংস্কার ও বিদ‘আতগুলো কী কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৩) : স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে নগ্ন অবস্থায় ফরয গোসল করতে পারবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ