বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১৭ অপরাহ্ন
উত্তর : ইউটিউবে আপলোড করা ভিডিওর বিষয়বস্তু যদি হারাম হয়, তাহলে নিশ্চিতভাবে এর উপার্জন হারাম হবে। আর যদি কন্টেন্ট হালালও হয়, তবুও এর উপার্জন করা হারাম। আমাদের জানতে হবে, ইউটিউব-এর মাধ্যমে যে অর্থোপার্জন করা হয় তার মূল উৎস কী? কেন গুগল টাকা দিচ্ছে? মূলত গুগলের একটি বিশেষ সার্ভিসের নাম হল : ‘গুগল এডসেন্স’। এর মাধ্যমে তারা বিভিন্ন কোম্পানির নোংরা, অশ্লীল ও হারাম পণ্যের বিজ্ঞাপন বিপুল অর্থের বিনিময়ে ইউটিউবসহ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে সম্প্রচার করে। আর ঐ খাত থেকে অর্জিত লভ্যাংশের একটা অংশ ইউটিউবারদের দিয়ে থাকে।

তাদের বিজ্ঞাপনগুলোর ৯৯.৯% অশ্লীল ও হারাম পণ্যের। তাই এর থেকে প্রাপ্ত অর্থ হালাল হবে না। বরং তা হারাম হওয়ার পাশাপাশি হারামের প্রচার ও সহযোগিতা করার পাপও হবে। সাম্প্রতিককালে নীতি-নৈতিকতা ভুলে অর্থের লোভে এবং ভিউয়ার্স বৃদ্ধির লালসায় অসংখ্য অশ্লীল ও নগ্ন দৃশ্য আপলোড করছে। একজন বিবেকসম্পন্ন মানুষ কখনো এসব অশ্লীলতা মেনে নিতে পারে না। তাই এগুলোর বিরুদ্ধে প্রশাসনিকভাবে আইনী ব্যবস্থা নেয়া আবশ্যক। আল্লাহ তা‘আলা এদের শাস্তি সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন করে বলেন,

اِنَّ الَّذِیۡنَ یُحِبُّوۡنَ اَنۡ تَشِیۡعَ الۡفَاحِشَۃُ فِی الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ۙ فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ ؕ وَ اللّٰہُ  یَعۡلَمُ  وَ  اَنۡتُمۡ  لَا  تَعۡلَمُوۡنَ

‘নিশ্চয় যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে, তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আর আল্লাহ জানেন, তোমরা জানো না’ (সূরা আন-নূর : ১৯)। মহান আল্লাহ আরো বলেন, ‘বলুন, আমার প্রতিপালক নিষিদ্ধ করেছেন প্রকাশ্য ও গোপন অশ্লীলতাকে, পাপাচারকে ও অসংগত বিদ্রোহকে’ (সূরা আল-আ‘রাফ : ৩৩)।

শায়খ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, হারাম ও অশ্লীল বিজ্ঞাপন প্রচার করা এবং তা প্রচার করে অর্থ উপার্জন করা উভয়-ই হারাম। কেননা তা অন্যায়, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা ও পাপাচারে সহযোগিতা করার অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সৎকর্ম ও তাক্বওয়ায় পরস্পরকে সহযোগিতা কর। এবং মন্দকর্ম ও সীমালঙ্ঘনে একে অন্যের সহযোগিতা কর না। আর আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি প্রদানে অত্যধিক কঠোর’ (সূরা আল-মায়িদাহ : ২; মুসলিম, হা/২৬৭৪, ৬৬৯৭, ইসলাম সাওয়াল জাওয়াব, ফাতাওয়া নং-২৬৭১৭৩)।

উপরিউক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনে কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এখানে আল্লাহ তা‘আলা মুমিন ব্যক্তিদেরকে ভালো কাজে সহযোগিতা করতে আদেশ করেছেন এবং অন্যায়, অসৎ ও হারাম কাজে সাহায্য, সহযোগিতা করতে নিষেধ করেছেন’ (তাফসীর ইবনে কাছীর, ২য় খণ্ড, পৃ. ১২; তাফসীরে কুরতুবী, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৪৬-৪৭)।

‘ইসলাম ওয়েব’-এর আলেমগণ বলেন, ‘হারাম ও নিষিদ্ধ বিজ্ঞাপন সম্প্রচারিত করে অর্থোপার্জন করা জায়েয নয়। সুতরাং আপনার উপর অপরিহার্য হল নিজেকে এর থেকে মুক্ত করা’ (ইসলাম ওয়েব, ফাতাওয়া নং-২৬৫১০২, ১৩২১৩৯)।

তৃতীয়তঃ ইসলামী শরী‘আতের স্থিরীকৃত নীতিমালা সমূহের মধ্যে রয়েছে, إذا اجتَمَع الحلالُ والحرامُ غُلِّبَ الحرامُ ‘যখন কোন বিষয়ে হালাল ও হারামের মাসআলা একত্রিত হয়, তখন হারামের মাসআলা প্রাধান্য পায়’ (অর্থাৎ সেটাকে হারাম বলে গণ্য করতে হবে)। হাদীছেও এমন বক্তব্য এসেছে (বুখারী, হা/৫২; মুসলিম, হা/৩৯৮৬)। অন্য হাদীছে নবী (ﷺ) বলেন,

دَعْ مَا يَرِيْبُكَ إِلَى مَا لَا يَرِيْبُكَ فَإِنَّ الصِّدْقَ طُمَأْنِيْنَةٌ وَإِنَّ الْكَذِبَ رِيْبَةٌ

‘যে বিষয়ে তোমার সন্দেহ হয়, তা ছেড়ে দিয়ে যাতে সন্দেহের সম্ভাবনা নেই তা গ্রহণ কর। যেহেতু সত্য হল শান্তি ও স্বস্তি এবং মিথ্যা হল দ্বিধা-সন্দেহ’ (তিরমিযী, হা/২৫১৮, সনদ ছহীহ)।

অতএব প্রত্যেক মুসলিমের উচিত সন্দেহমুক্ত, বৈধ ও উৎকৃষ্ট পন্থায় অর্থোপার্জন করার প্রচেষ্টা করা এবং পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন উপার্জনের পথ অন্বেষণ করা’ (ফাতাওয়া আল-লাজনাতুদ্ দায়িমাহ, ২৬তম খণ্ড, পৃ. ২৭৪-২৭৫ ও ১৪তম খণ্ড, পৃ. ৪২০)।


প্রশ্নকারী : মীকাঈল, সাতক্ষীরা।




প্রশ্ন (৯) : মাহরাম নয় এমন কোন মহিলাকে ব্যক্তিগতভাবে দ্বীনের দাওয়াত দেয়া কি বৈধ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৫) : ছালাত কি ব্যক্তিগত ইবাদত? কারণ অনেককে ছালাতের জন্য ডাকলে তারা বলে, নামাজ পড়া না পড়া আমার ব্যাপার। এ ধরনের কথা বলা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৭) : ইজমা ও ক্বিয়াসের হুকুম কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৭) : কোন ভবনের দ্বিতীয় তলায় মসজিদ। নিচতলায় রংয়ের গুদাম, মসজিদের টয়লেট এবং ওযূখানা। দ্বিতীয় তলায় মসজিদের মিম্বার বরাবর নিচ তলায় হাতের বায়ে দেয়াল ঘেষে একটি কবর। প্রশ্ন হল, উক্ত মসজিদে ছালাত আদায় করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩২) : প্রতিমাসে প্রাপ্য বেতনের যাকাত কীভাবে প্রদান করতে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৯) : নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখা হলে সে সূর্যকে অস্তমিত হতে দেখতে পায়। তখন সে উঠে বসে এবং তার চক্ষুদ্বয় মলতে মলতে বলে, আমাকে ছেড়ে দাও, আমি ছালাত আদায় করব (ইবনু মাজাহ, হা/৪২৭২)। অনেকেই উক্ত হাদীছের আলোকে বলে থাকে যে, মৃত ব্যক্তি কবরে ছালাত পড়ে। তাদের দাবি কি গ্রহণযোগ্য? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৬) : যে বিয়েতে ছবি তোলা, ভিডিও ও গান বাজনা করা হয় এবং নারী-পুরুষ একাকার হয়ে খানা খায় সেই বিয়েতে যাওয়া যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৭) : মক্কায় একদিনের ছিয়াম বাইরের এক লক্ষ ছিয়ামের সমতুল্য। সেখানে এক দেরহাম খরচ করলে এক লক্ষ দেরহামের সমান এবং একটি নেকী করলে এক লক্ষ নেকীর সমান ছওয়াব পাওয়া যায়। বিভিন্ন হাদীছে মসজিদে নববীর ছওয়াব সমজিদে আক্বছার চেয়ে অধিক এসেছে। অথচ এখানে উভয় মসজিদের ছওয়াব পঞ্চাশ হাজার বলা হয়েছে। এর অর্থ করা হয়েছে, প্রত্যেক মসজিদের ছওয়াব পূর্ববর্তী মসজিদ হিসাবে বলা হইয়াছে অর্থাৎ জামে মসজিদের ছওয়াব পাঁচশ’ ছালাত নয়, বরং মহল্লার মসজিদ হতে পাঁচশ’ গুণ বেশী। এই হিসাব মতে জামে মসজিদে বার হাজার পাঁচশ’ (১২৫০০) ছালাতের ছওয়াব। মসজিদে আকছার ছওয়াব বাষট্টি কোটি পঞ্চাশ লক্ষ (৬২৫০০০০০০), মদীনার মসজিদের ছওয়াব তিন নিল বার খর্ব পঞ্চাশ আরব (৩১২৫০০০০০০০০০০) এবং হারাম শরীফের ছওয়াব একত্রিশ শঙ্ঘ পঁচিশ পদ্ম, (৩১২৫০০০০০০০০০০০০০০০) (ফাযায়েলে হজ্জ, পৃ. ৯২)। তাবলীগী নিসাবের ‘ফাযায়েলে হজ্জ’ কিতাবে বর্ণিত উক্ত ফযীলত কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৭) : মৃত ব্যক্তিকে গালি-গালাজ করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৩) : তারাবীহর ছালাতে কুরআন খতম করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১০) : রাক‘আত ছালাতের শেষ বৈঠকে বসার সময় বাম পা ডান পায়ের ভিতর দিয়ে বসতে হয়। জামা‘আতে ১ বা ২ রাক‘আত পেলে ইমামের শেষ বৈঠকের সময় কিভাবে বসতে হবে? পরে মুছল্লী তার শেষ বৈঠকে কিভাবে বসবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৮) : জনৈক ব্যক্তি স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে প্রবাসে থাকে। প্রতি সপ্তাহে ২৪ ঘণ্টা কাজের অনুমতি থাকলেও রাত জেগে সে ২টা কাজ করে। এছাড়া হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠায়। প্রশ্ন হল- এইভাবে কাজ করা বা টাকা পাঠানো কি হারাম হচ্ছে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ