উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমরা যার দ্বীনদারী ও নৈতিক চরিত্র দ্বারা সন্তুষ্ট, তোমাদের নিকট যদি সেই ব্যক্তি বিবাহের প্রস্তাব দেয়, তবে তার সাথে (তোমাদের পাত্রীর) বিবাহ দিয়ে দাও। অন্যথা পৃথিবীতে ফিতনা-ফাসাদ, বিশৃঙ্খলা ও বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়বে। ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! তার মাঝে কিছু থাকলেও কি? (অর্থাৎ সে যদি অভাবগ্রস্ত ও দরিদ্র হয়?) তিনি বললেন, ‘তোমরা যে লোকের দ্বীনদারী ও নৈতিক চরিত্র দ্বারা সন্তুষ্ট আছ, তোমাদের নিকট যদি সেই ব্যক্তি বিবাহের প্রস্তাব দেয়, তবে তার সাথে (তোমাদের পাত্রীর) বিবাহ দিয়ে দাও’। রাবী বলেন, এ কথা তিনি তিনবার বললেন (তিরমিযী, হা/১০৮৪-১০৮৫; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১০২২; ইরওয়াউল গালীল, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ২৬৭)।
ইসলাম পাত্র-পাত্রী উভয় পক্ষকেই কিছু বিষয়ে বিবেচনা করার অধিকার দিয়েছে। পাত্রীর অভিভাবক যে সমস্ত বিষয়গুলো পরিদর্শন করতে পারেন সেগুলো হল- (১) পাত্র স্ত্রীর ভরণপোষণ বা অন্নবস্ত্র দিয়ে তত্ত্বাবধান করতে পারবে কি-না? যেমন, ফাতিমা বিনতু ক্বায়স (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, ‘...অতঃপর যখন আমার ইদ্দত পূর্ণ হল তখন আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জানালাম যে, মু‘আবিয়া ইবনু আবূ সুফিয়ান (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) ও আবূ জাহম (রাযিয়াল্লাহু আনহু) আমাকে বিবাহের প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আবূ জাহম এমন ব্যক্তি যে, তার কাঁধ থেকে লাঠি নামিয়ে রাখে না (অর্থাৎ স্ত্রীকে খুবই মারধর করে)। আর মু‘আবিয়া তো কপর্দকহীন দরিদ্র মানুষ। তুমি উসামা ইবনু যায়দের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হও। কিন্তু আমি তাঁকে পসন্দ করলাম না। পরে তিনি আবার বললেন, তুমি উসামাকে বিয়ে কর। তখন আমি তার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলাম। আল্লাহ এতে (তাঁর ঘরে) আমাকে বিরাট কল্যাণ দান করলেন। আর আমি ঈর্ষার পাত্রে পরিণত হলাম’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১৪৮০; আবূ দাঊদ, হা/২২৮৪)। (২) পাত্র স্ত্রীর জন্য বসবাস যোগ্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবে কি-না? কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যে স্থানে বাস কর, তাদেরকেও সে স্থানে বাস করতে দাও। আর সংকটে ফেলার উদ্দেশ্যে তাদেরকে উত্ত্যক্ত কর না’ (সূরা আত-ত্বালাক্ব : ৬)। তবে পাত্র-পাত্রী উভয় পক্ষকে দ্বীনদারীকেই প্রাধান্য দিতে হবে (সূরা আল-হুজুরাত : ১৩; ছহীহ বুখারী, হা/৫০৯০; ছহীহ মুসলিম, হা/১৪৬৬)।
প্রশ্নকারী : মাহমূদ, বিরল, দিনাজপুর।