উত্তর : কাফির ও বিধর্মীদের দাওয়াত ক্ববুল করা অপরিহার্য নয়। অপরিহার্যের বিষয়টি শুধু মুসলিমদের দাওয়াতের সঙ্গে সম্পৃক্ত’ (হাশিয়াতুদ দাসুক্বী আলাশ-শারহিল কাবীর, ২/৩৩৮; মানহুল জালীল, ৩/৫৩১)। আবূ হুরাইরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি যে, এক মুসলিমের প্রতি অপর মুসলিমের হক্ব পাঁচটি। যথা (১) সালামের জাওয়াব দেয়া (২) অসুস্থ ব্যক্তির খোঁজ-খবর নেয়া (৩) জানাযার পশ্চাদানুসরণ করা (৪) দাওয়াত ক্ববুল করা এবং (৫) হাঁচিদাতাকে জবাব দেয়া (অর্থাৎ আলহামদুলিল্লাহ-এর জবাবে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা) (ছহীহ বুখারী, হা/১২৪০; ছহীহ মুসলিম, হা/২১৬২)। এখানে ‘এক মুসলিমের প্রতি অপর মুসলিমের হক্ব’ শব্দ দ্বারা মুসলিম হওয়াকে শর্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ এই অধিকার শুধু মুসলিমদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। সুতরাং অমুসলিমরা এই হুকুমের আওতাধীন নয় (আত-তানবীর শারহুল জামিঈছ ছগীর, ৫/৩৬৩ পৃ.)। শায়খ উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যদি সে মুসলিম না হয়, তবে তার দাওয়াত ক্ববুল করা অপরিহার্য নয়। যদিও বিশেষ প্রয়োজনে ও ধর্মীয় স্বার্থে বিধর্মীদের দাওয়াত ক্ববুল করা জায়েয। যেমন, যদি কোন কাফির আপনাকে ওয়ালীমার দাওয়াত দেয়, সেক্ষেত্রে তার দাওয়াত ক্ববুল করা দোষনীয় নয়। বিশেষ করে ধর্মীয় স্বার্থে, যেমন তাকে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য’ (শারহু রিয়াযিছ ছালিহীন, ৩/১০৩ পৃ.)। আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ‘একজন ইয়াহুদী রাসূল (ﷺ)-কে দাওয়াত করেছিলেন, যবের রুটি ও পুরাতন চর্বির তেল দ্বারা তৈরিকৃত তরকারী খাওয়ার জন্য। তিনি তার দাওয়াত ক্ববুল করেছিলেন (মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩৮৬০; সনদ সহীহ, ইরওয়াউল গালীল, ১/৭১ পৃ.)। শায়খ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, ‘কখনোই কোন কাফির বা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ﷺ)-এর বিরোধিতাকারীদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ বন্ধুত্ব স্থাপন করা যাবে না’ (সূরা আল-মুজাদালাহ : ২২)। তবে মৌখিকভাবে ব্যবসায়িক আদান-প্রদান, হালাল খাদ্যের দাওয়াত ক্ববুল ও উপঢৌকন গ্রহণ করা জায়েয’ (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৮৭৯৮)।
প্রশ্নকারী : আবূ তাহের, নদীয়া, ভারত।