উত্তর : উক্ত পাত্রীকে বিবাহ করা যাবে না। কারণ আদর্শ পাত্র-পাত্রীর যোগ্যতার মাপকাঠি তার দ্বীনদারিতা ও উত্তম চরিত্র। বিবাহের ক্ষেত্রে আল্লাহভীরুতা, ন্যায়পরায়ণতা ও ধার্মিকতাই মূখ্য বিষয়। ধনসম্পদ, বংশ পরিচয়, বংশ মর্যাদা, শিক্ষাগত যোগ্যতা এগুলো গৌণ বিষয়। যেমনটি শায়খ উছায়মীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন (লিক্বা আশ-শাহরী, লিক্বা নং-৪৬)। শায়খ ইবনে বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘পাপিষ্ঠ, অধর্মচারী ও কাবীরা গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তি বিবাহের প্রস্তাব পাঠালে, তাওবাহ না করা পর্যন্ত তাকে বর্জন করতে হবে’ (মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ২১/৪৮ পৃ.)। সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটি বলেন, ‘অভিভাবকের উচিত দ্বীনদার ছেলেকে চয়ন করা। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট অধিক মর্যাদাসম্পন্ন, যে অধিক আল্লাহ-ভীরু। আল্লাহ সবকিছু জানেন, সব কিছুর খবর রাখেন’ (সূরা আল-হুজুরাত : ১৩)।
দ্বীন, আমানাতদারী ও চরিত্রের ব্যাপারে সন্তুষ্ট না হলে তার সঙ্গে বিবাহ দেয়া জায়েয হবে না। প্রয়োজনে তাহাজ্জুদ ও ইস্তিখারার ছালাতের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করবে (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ১৮/২৯৮, ১৮/১৯১, ১৮/৪৬-৪৭, ১৮/১৮৫-১৮৮ পৃ.; ফাতাওয়া নূরুন আলাদ দারব ইবনে বায, ২০/১৫১ ও ২০/৪২৩-৪২৪ পৃ.)। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘তোমরা যে লোকের দ্বীনদারী ও নৈতিক চরিত্র দ্বারা সন্তুষ্ট আছ, তোমাদের নিকট যদি সেই ব্যক্তি বিবাহের প্রস্তাব দেয়, তবে তার সাথে (তোমাদের পাত্রীর) বিবাহ দিয়ে দাও। অন্যথা পৃথিবীতে ফিতনা-ফাসাদ, বিশৃঙ্খলা ও বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়বে। ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! তার মাঝে কিছু থাকলেও কি? (অর্থাৎ সে যদি অভাবগ্রস্থ ও দরিদ্র হয়?) তিনি বললেন, তোমরা যে লোকের দ্বীনদারী ও নৈতিক চরিত্র দ্বারা সন্তুষ্ট আছ, তোমাদের নিকট যদি সেই ব্যক্তি বিবাহের প্রস্তাব দেয়, তবে তার সাথে (তোমাদের পাত্রীর) বিবাহ দিয়ে দাও। রাবী বলেন, এ কথা তিনি তিনবার বললেন’ (তিরমিযী, হা/১০৮৪-১০৮৫; ইবনু মাজাহ, হা/১৯৬৭; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১০২২; ইরওয়াউল গালীল, ৬/২৬৭ পৃ.)। অতএব বিবাহের ক্ষেত্রে পাত্রপক্ষ ও পাত্রীপক্ষ উভয়কেই দ্বীনদারীকে প্রাধান্য দিতে হবে (সূরা আল-হুজুরাত : ১৩; ছহীহ বুখারী, হা/৫০৯০; ছহীহ মুসলিম, হা/১৪৬৬)।
সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটি, শায়খ ইবনে বায (রাহিমাহুল্লাহ) ও জমহূর আলেমের মতানুযায়ী শিরককারী, ছালাত ত্যাগকারী, সূদখোর বা অন্য কোন কাবীরা গুনাহে লিপ্ত পুরুষ বা নারীর সঙ্গে তাওবাহের পূর্বে বিবাহ করা নাজায়েয (মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ২০/১৪৯-১৫১, ১৫৪-১৫৭, ১৫৯-১৬০, ২০৯-২১১, ৩৮২-৩৮৪; ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ১৮/১২৫-১২৬ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : আল-আমীন, রাজশাহী।