মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৩:১৪ অপরাহ্ন

হজ্জ ও ওমরার সঠিক পদ্ধতি

-ড. মুযাফফর বিন মুহসিন


(২য় কিস্তি)

রুকনে ইয়ামানী ও হাজারে আসওয়াদের ফযীলত

ত্বাওয়াফকারী ত্বাওয়াফের সময় ‘হাজারে আসওয়াদ’ এবং ‘রুকনে ইয়ামানী’ স্পর্শ করবে। রাসূল (ﷺ) বলেন, إِنَّ مَسْحَهُمَا يَحُطَّانِ الْخَطِيْئَةَ ‘এই কোণাদ্বয় স্পর্শ করলে পাপ ঝরিয়ে দেয়’।[১] অন্য বর্ণনায় এসেছে, إِنَّ مَسْحَهُمَا كَفَّارَةٌ لِلْخَطَايَا ‘এই কোণাদ্বয় স্পর্শ করলে যাবতীয় পাপের কাফফারা হয়ে যায়’।[২] অন্য হাদীছে হাজারে আসওয়াদ সম্পর্কে এসেছে,

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ فِى الْحَجَرِ وَاللهِ لَيَبْعَثَنَّهُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لَهُ عَيْنَانِ يُبْصِرُ بِهِمَا وَلِسَانٌ يَنْطِقُ بِهِ يَشْهَدُ عَلَى مَنِ اسْتَلَمَهُ بِحَقٍّ

ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, রাসূল (ﷺ) হাজারে আসওয়াদ সম্পর্কে বলেন, আল্লাহ্র কসম! ক্বিয়ামতের দিন যখন আল্লাহ্ তাকে উঠাবেন, তখন তার দু’টি চোখ থাকবে, যা দ্বারা সে দেখবে এবং তার একটি জিহ্বা হবে, যা দ্বারা সে কথা বলবে এবং যে তাকে ঈমানের সাথে চুম্বন করেছে তার পক্ষে সাক্ষ্য দিবে।[৩]

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ نَزَلَ الْحَجَرُ الْأَسْوَدُ مِنَ الْجَنَّةِ وَهُوَ أَشَدُّ بَيَاضًا مِنَ اللَّبَنِ فَسَوَّدَتْهُ خَطَايَا بَنِىْ آدَمَ

ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘হাজারে আসওয়াদ যখন জান্নাত থেকে অবতীর্ণ হয়, তখন দুধ অপেক্ষা অধিক সাদা ছিল। পরে আদম সন্তানের পাপ তাকে কাল করে দিয়েছে’।[৪]

রাসূল (ﷺ)-এর সুন্নাতের অনুসরণের উদ্দেশ্যে পাথরকে চুম্বন করতে হবে। এই বিশ্বাস রাখতে হবে যে উক্ত পাথর উপকার বা ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখে না। যেমনটি ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেছিলেন,

إِنِّي أَعْلَمُ أَنَّكَ حَجَرٌ لاَ تَضُرُّ وَلاَ تَنْفَعُ وَلَوْلاَ أَنِّي رَأَيْتُ النَّبِيَّ ﷺ يُقَبِّلُكَ مَا قَبَّلْتُكَ

‘নিশ্চয় আমি অবগত আছি যে, তুমি একখানা পাথর মাত্র। তুমি ক্ষতিও করতে পার না, আবার উপকারও করতে পার না, যদি আমি রাসূল (ﷺ)-কে না দেখতাম যে, তিনি তোমাকে চুম্বন করছেন, তাহলে আমিও তোমাকে চুম্বন করতাম না’।[৫]

যমযমের ফযীলত :

যমযমের পানির ফযীলত সম্পর্কে ছহীহ মুসলিমে একটি দীর্ঘ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। উক্ত হাদীছে রাসূল (ﷺ) বলেন, إِنَّهَا مُبَارَكَةٌ إِنَّهَا طَعَامُ طُعْمٍ ‘এটি বরকতময়। এটি খাদ্যগুণ সমৃদ্ধ’।[৬] আবুদাঊদ ত্বয়ালাসী (রাহিমাহুল্লাহ) উক্ত হাদীছের সাথে নিম্নোক্ত বাক্যটি উল্লেখ করেন, وَشِفَاءُ سُقْمٍ ‘আর এটি রোগ-ব্যাধি নিরাময়কারী’।[৭] অন্য হাদীছে এসেছে,

عَنِ ابْنِ عَبَّاسِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ خَيْرُ مَاءٍ عَلَى وَجْهِ الْأَرْضِ مَاءُ زَمْزَمَ فِيْهِ طَعَامٌ مِنَ الطُّعْمِ وشِفَاءٌ مِنَ السُّقْمِ

ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘ভূপৃষ্ঠের সেরা পানি হল যমযমের পানি। এর মধ্যে রয়েছে পুষ্টিকর খাদ্য এবং রোগ হতে আরোগ্য’।[৮] অন্য হাদীছে রাসূল (ﷺ) বলেন, مَاءُ زَمْزَمَ لِمَا شُرِبَ لَهُ ‘যমযমের পানি যে উদ্দেশ্যে পান করা হবে, সে উদ্দেশ্যই পূরণ হবে’।[৯]

হজ্জ ও ওমরাহ পালনকারী ব্যক্তি যমযমের পানি নিজের জন্য এবং অন্যকে উপহার দেওয়ার জন্য বেশী করে সঙ্গে নিয়ে আসতে পারেন। এই পানি সবচেয়ে মূল্যবান উপহার। আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) যমযমের পানি সঙ্গে নিয়ে আসতেন এবং বলতেন, রাসূল (ﷺ)ও এই পানি সঙ্গে আনতেন।[১০] যমযমের পানি রাসূল (ﷺ) দাঁড়িয়ে পান করতেন।[১১] উল্লেখ্য, ক্বিবলামুখী হয়ে পান করার কোন ছহীহ দলীল নেই। এ মর্মে বর্ণিত হাদীছ যঈফ।[১২] অনুরূপ উক্ত পানি পানের যে দু‘আ বর্ণিত হয়েছে, সে হাদীছও যঈফ।[১৩]

আরাফার গুরুত্ব ও ফযীলত :

রাসূল (ﷺ) আরাফার মাঠের অত্যধিক গুরুত্ব বর্ণনা করেছেন। নিম্নের হাদীছগুলো লক্ষণীয়-

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ  مَا مِنْ يَوْمٍ أَكْثَرَ مِنْ أَنْ يُعْتِقَ اللهُ فِيْهِ عَبْدًا مِنَ النَّارِ مِنْ يَوْمِ عَرَفَةَ وَإِنَّهُ لَيَدْنُو ثُمَّ يُبَاهِىْ بِهِمُ الْمَلاَئِكَةَ فَيَقُوْلُ مَا أَرَادَ هَؤُلاَءِ

আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা আরাফার দিন ব্যতীত আর কোন দিনে এত মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন না। তিনি তাদের অতি নিকটবর্তী হন এবং তাদের নিয়ে ফেরেশতাদের নিকট গর্ব প্রকাশ করেন এবং বলেন, তারা কী চাচ্ছে? [১৪] অন্য হাদীছে এসেছে,

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ أَنَّ النَّبِىَّ ﷺ كَانَ يَقُوْلُ إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ يُبَاهِىْ مَلاَئِكَتَهُ عَشِيَّةَ عَرَفَةَ بِأَهْلِ عَرَفَةَ فَيَقُوْلُ انْظُرُوْا إِلَى عِبَادِىْ أَتَوْنِىْ شُعْثاً غُبْراً

আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনুল ‘আছ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (ﷺ) বলতেন, নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা আরাফার দিন বিকালে আরাফায় অবস্থানকারী ব্যক্তিদের নিয়ে ফেরেশতাদের নিকট গর্ববোধ করেন। অতঃপর বলেন, তোমরা আমার বান্দাদের দিকে লক্ষ্য কর, তারা আমার কাছে এসেছে মাথায় এলোমেলো চুল নিয়ে ধুলায় মলিন হয়ে।[১৫] অন্য বর্ণনায় এসেছে, তিনি নিম্ন আকাশে নেমে আসেন ও ফেরেশতাদের বলেন, اِشْهَدُوْا أَنِّيْ قَدْ غَفَرْتُ لَهُمْ ذُنُوْبَهُمْ وَإِنْ كَانَ عَدَدَ قَطْرِ السَّمَاءِ وَرَمْلِ عَاِلجٍ ‘তোমরা সাক্ষী থাক, আমি তাদের যাবতীয় পাপ ক্ষমা করে দিলাম, যদিও তা আকাশের বৃষ্টির ফোটা সমতুল্য হয় এবং তরঙ্গের বালিকোণার মতও হয়’।[১৬] তাছাড়া আরাফার মাঠ হল দু‘আ কবুলের সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান। রাসূল (ﷺ) বলেন, خَيْرُ الدُّعَاءِ دُعَاءُ يَوْمِ عَرَفَةَ ‘উত্তম দু‘আ হল আরাফার দিনের দু‘আ’।[১৭] অন্যত্র এসেছে,

عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ الْغَازِىْ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ وَالْحَاجُّ وَالْمُعْتَمِرُ وَفْدُ اللهِ دَعَاهُمْ فَأَجَابُوْهُ وَسَأَلُوْهُ فَأَعْطَاهُمْ

ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহ্র রাস্তার গাযী, হাজী এবং ওমরাকারী ব্যক্তি আল্লাহ্র মেহমান। আল্লাহ তাদের আহ্বান করেন আর তারা আল্লাহ্র ডাকে সাড়া দেন। তারা আল্লাহ্র কাছে যা চান, তিনি তাদেরকে তাই দান করেন।[১৮]

মসজিদে কুবার ফযীলত :

عَنْ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ  مَنْ تَطَهَّرَ فِىْ بَيْتِهِ ثُمَّ أَتَى مَسْجِدَ قُبَاءٍ فَصَلَّى فِيْهِ صَلاَةً كَانَ لَهُ كَأَجْرِ عُمْرَةٍ.

সাহল ইবনু হুনাইফ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার বাড়ীতে ওযূ করবে অতঃপর মসজিদে কুবাতে এসে কোন ছালাত আদায় করবে, তার জন্য ঐ ছালাত একটি ওমরার সমপরিমাণ হবে’।[১৯] অন্য বর্ণনায় এসেছে, মসজিদে কুবার যেকোন ছালাত একটি ওমরার সমান।[২০]

হজ্জ ও ওমরার হুকুম :

৯ম বা ১০ হিজরীতে হজ্জ ফরয হয়।[২১] শাওয়াল, যিলক্বদ ও যিলহজ্জ এ তিনটি হজ্জের মাস (বাক্বারাহ ১৯৭)। অর্থাৎ শাওয়াল মাস থেকেই হজ্জের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যেতে পারে। হজ্জ ফরয হওয়ার শর্তসমূহ যার মধ্যে রয়েছে, তার উপর হজ্জ ওয়াজিব। শর্তগুলো হল, মুসলিম হওয়া (তওবাহ ২৮), জ্ঞানসম্পন্ন হওয়া,[২২] প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া, স্বাধীন হওয়া,[২৩] সামর্থ্যবান হওয়া (আলে ইমরান ৯৭), মহিলাদের জন্য সাথে মাহরাম থাকা।[২৪] এ ব্যাপারে সকলে একমত।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ لِلّٰہِ عَلَی النَّاسِ حِجُّ الۡبَیۡتِ مَنِ اسۡتَطَاعَ اِلَیۡہِ سَبِیۡلًا ‘মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, তাকে আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে ঐ গৃহে হজ্জ করা অবশ্যই কর্তব্য’ (আলে ইমরান ৯৭)।  আবু হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ) একদা আমাদের উদ্দেশ্যে বলেন, أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ فُرِضَ عَلَيْكُمُ الْحَجُّ فَحُجُّوْا ‘হে মানবমণ্ডলী! তোমাদের উপর হজ্জ ফরয করা হয়েছে। তাই তোমরা হজ্জ কর’। জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল (ﷺ)! প্রত্যেক বছরই কি হজ্জ করা ফরয? তিনি চুপ থাকলেন। লোকটি তিনবার একই কথা জিজ্ঞেস করল। অতঃপর তিনি বললেন, لَوْ قُلْتُ نَعَمْ لَوَجَبَتْ وَلَمَا اسْتَطَعْتُمْ ‘আমি যদি হ্যাঁ বলতাম, তাহলে প্রত্যেক বছরই হজ্জ করা ফরয হয়ে যেত এবং তোমরা তা পালন করতে সক্ষম হতে না’।[২৫] এ জন্য যার উপর হজ্জ ফরয, তার দায়িত্ব হল তাড়াতাড়ি সম্পাদন করা।[২৬]

হজ্জের ন্যায় সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপর ওমরাও ওয়াজিব। যেমন-

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ هَلْ عَلَى النِّسَاءِ مِنْ جِهَادٍ؟ قَالَ نَعَمْ عَلَيْهِنَّ جِهَادٌ لَا قِتَالَ فِيْهِ الْحَجُّ وَالْعُمْرَةُ

আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, আমি একদা রাসূল (ﷺ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল (ﷺ)! ‘নারীদের উপর কি জিহাদের বিধান রয়েছে? তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ তাদের উপর জিহাদের বিধান রয়েছে; তবে তাতে লড়াই নেই। আর তা হচ্ছে, হজ্জ এবং ওমরাহ’।[২৭] অনুরূপ হাদীছে জিবরীলের মধ্যে রাসূল (ﷺ) বলেন,

اَلْإِسْلاَمُ أَنْ تَشْهَدَ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُوْلُ اللهِ وَأَنْ تُقِيْمَ الصَّلاَةَ وَتُؤْتِيَ الزَّكَاةَ وَتَحُجَّ وَتَعْتَمِرَ وَتَغْتَسِلَ مِنَ الْجَنَابَةِ وَأَنْ تُتِمَّ الْوُضُوْءَ وَتَصُوْمَ رَمَضَانَ

‘ইসলাম হল, আল্লাহ ছাড়া কোন হক্ব মা‘বূদ নেই ও মুহাম্মাদ আল্লাহ্‌র রাসূল মর্মে সাক্ষ্য প্রদান করা, ছালাত ক্বায়েম করা, যাকাত আদায় করা, হজ্জ ও ওমরাহ করা, বীর্যপাত অথবা সহবাস জনিত কারণে অপবিত্র হলে গোসল করা, পূর্ণরূপে ওযূ করা এবং রামাযান মাসে ছিয়াম পালন করা’।[২৮] তাছাড়া আবূ রাযীন উক্বায়লী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) একদা রাসূল (ﷺ)-এর নিকটে এসে বললেন,

إِنَّ أَبِىْ شَيْخٌ كَبِيْرٌ لَا يَسْتَطِيْعُ الْحَجَّ وَلَا الْعُمْرَةَ وَلَا الظَّعْنَ قَالَ حُجَّ عَنْ أَبِيْكَ وَاعْتَمِر

আমার পিতা খুবই বৃদ্ধ। তিনি হজ্জ, ওমরাহ এবং সফর কোনটিই করতে সক্ষম নন’। রাসূল (ﷺ) বললেন, ‘তুমি তোমার পিতার পক্ষ থেকে হজ্জ এবং ওমরাহ কর’।[২৯]

হজ্জের প্রকার :

হজ্জ তিন প্রকার। (ক) হজ্জে তামাত্তু‘ (খ) হজ্জে ক্বিরান ও (গ) হজ্জে ইফরাদ।

(ক) হজ্জে তামাত্তু‘ : হজ্জের উদ্দেশ্যে বের হয়ে প্রথমে মীক্বাত থেকে ওমরার ইহরাম বেঁধে কার্যক্রম শুরু করা।[৩০] অতঃপর হাজীগণ ত্বাওয়াফ এবং সাঈ সম্পন্ন করে মাথা মু-ন বা চুল ছেটে পূর্ণ হালাল হয়ে যাবেন। তারপর যিলহজ্জ মাসের ৮ তারিখে হজ্জের ইহরাম বাঁধবেন এবং পর্যায়ক্রমে হজ্জের কার্যাবলী সম্পন্ন করবেন। তামাত্তু‘ হজ্জ পালনকারী কুরবানী করবেন। আমরা এই বইয়ে হজ্জে তামাত্তু‘ সম্পর্কেই বিস্তারিত আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ। কারণ তিন প্রকার হজ্জের মধ্যে তামাত্তু‘ হজ্জই উত্তম।[৩১]

(খ) হজ্জে ক্বিরান : মীক্বাত থেকে একই সঙ্গে হজ্জ ও ওমরার ইহরাম বেঁধে হজ্জের কাজ আরম্ভ করা। অতঃপর হাজীগণ মক্কায় পৌঁছে ত্বাওয়াফে কুদূম বা আগমনী ত্বাওয়াফ করবেন এবং ছাফা-মারওয়ায় সাঈ করবেন।[৩২] অতঃপর কুরবানীর দিন পর্যন্ত ইহরাম অবস্থায় থাকবেন। কুরবানীর দিন জামরাতুল আক্বাবায় কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন এবং কুরবানী করে মাথা মু-ন বা চুল ছেটে হালাল হয়ে যাবেন।[৩৩]

(গ) হজ্জে ইফরাদ : মীক্বাত থেকে শুধু হজ্জের ইহরাম বেঁধে হজ্জের কাজ শুরু করা। ক্বিরান হজ্জ পালনকারীর মত তিনি সব কাজ সম্পন্ন করবেন।[৩৪] তবে ইফরাদ হজ্জ পালনকারীর উপর কুরবানী নেই। 

মীক্বাত সমূহ :

হজ্জের জন্য মীক্বাতের স্থান পাঁচটি। যথা : (১) যুল হুলায়ফা (২) জুহফা (৩) ইয়ালামলাম (৪) ক্বারণে মানাযিল।[৩৫] (৫) যাতু ইরাক।[৩৬] উল্লেখ্য, বাংলাদেশী হাজীগণ বিমান পথে যাওয়ার কারণে বর্তমানে তাদের মীক্বাত হবে ‘ক্বারণে মানাযিল’। তবে পূর্বে পানি পথে যাওয়ার কারণে মীক্বাত ছিল ইয়ালামলাম।[৩৭]

জ্ঞাতব্য : যারা হারামের বাইরে এবং মীক্বাতের অভ্যন্তরে অর্থাৎ মক্কার নিকটবর্তী অধিবাসী, তারা নিজ অবস্থান হতেই হজ্জ ও ওমরার ইহরাম বাঁধবেন। আর যারা হারাম এলাকার মাঝে অবস্থান করেন, তারা নিজ অবস্থান থেকেই শুধু হজ্জের ইহরাম বাঁধতে পারবেন।[৩৮] তবে ওমরার জন্য তাদের হারামের বাইরে গিয়ে ইহরাম বাঁধতে হবে।[৩৯]

হজ্জ ও ওমরার রুকন :

হজ্জের রুকন চারটি। (ক) ইহরাম বাঁধা।[৪০] (খ) আরাফায় অবস্থান করা।[৪১] (গ) ত্বাওয়াফে ইফাযা করা।[৪২] (ঘ) ছাফা-মারওয়া সাঈ করা।[৪৩] আর ওমরার রুকন তিনটি। (ক) ইহরাম বাঁধা।[৪৪] (খ) ত্বাওয়াফ করা।[৪৫] (গ) সাঈ করা।[৪৬] উক্ত রুকনগুলোর কোন একটি ছাড়া পড়লে হজ্জ ও ওমরাহ শুদ্ধ হবে না।

হজ্জ ও ওমরার ওয়াজিব সমূহ :

হজ্জের ওয়াজিব সাতটি। (ক) মীক্বাত হতে ইহরাম বাঁধা।[৪৭] (খ) যিলহজ্জের নয় তারিখে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফায় অবস্থান করা।[৪৮] (গ) ঈদের রাত্রিতে ফজর পর্যন্ত মুযদালিফায় অবস্থান করা।[৪৯] (ঘ) কুরবানীর দিন সূর্য ঢলে যাওয়ার পূর্বে বা পরে জামরায়ে আক্বাবায় কঙ্কর নিক্ষেপ করা এবং ১১, ১২, এবং ১৩ তারিখে সূর্য ঢলে যাওয়ার পর তিন জামারায় কঙ্কর নিক্ষেপ করা।[৫০] (ঙ) মাথার চুল কর্তন অথবা খাটো করা।[৫১] (চ) মিনাতে দুই রাত অবস্থান করা।[৫২] (ছ) বিদায়ী ত্বাওয়াফ করা।[৫৩]

আর ওমরাহ্র ওয়াজিব দু’টি। যথা : (ক) মীক্বাত হতে ইহরাম বাঁধা।[৫৪] (খ) মাথার চুল কর্তন করা বা খাটো করা।[৫৫]

ওমরার সঠিক পদ্ধতি :

হাজীগণ সাধারণত হজ্জে তামাত্তু‘ করেন। আর হজ্জে তামাত্তু‘ করলে আগে ওমরার ইহরাম বাঁধতে হয় এবং ওমরা শেষ করে হালাল হতে হয়। তাই ওমরার আলোচনা আগে নিয়ে আসা হল।

ইহরামের প্রস্তুতি : ওমরার উদ্দেশ্যে সফরের দু‘আ পড়ে বাড়ী থেকে বেরিয়ে যাবে। ইহরামের কাপড় পরার পূর্বে গোসল করা সুন্নাত।[৫৬] বিমান বন্দরে বা হজ্জ ক্যাম্পে কিংবা সুবিধামত জায়গায় ইহরামের কাপড় পরে নিবে। আর নিকটস্থ বাড়ী বা হোটেল থেকে বের হলে ইহরামের কাপড় পরে বেরিয়ে যাবে। ইহরাম বাঁধা বা নিয়ত করার পূর্বে শরীরে ও দাড়িতে সুগন্ধি ব্যবহার করা সুন্নাত।[৫৭]

ইহরাম : মীক্বাত পর্যন্ত পৌঁছলে বা বিমানের মধ্যে মীক্বাতে পৌঁছার ঘোষণা দিলে لَبَّيْكَ عُمْرَةً (লাব্বায়কা উমরাতান) ‘হে আল্লাহ! আমি ওমরার জন্য হাযির’[৫৮] বলে ওমরার ইহরাম বাঁধবে বা নিয়ত করে তালবিয়া পাঠ করা শুরু করবে।[৫৯] তালবিয়া হল-

لَبَّيْكَ اللّٰہُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لَا شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ لَا شَرِيْكَ لَكَ

উচ্চারণ : লাব্বায়কা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বায়কা লা শারীকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান-নি‘মাতা লাকা ওয়াল-মুলক, লা শারীকা লাক।
অর্থ : ‘আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি, হে আল্লাহ! আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি। আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি, আপনার কোন শরীক নেই, আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি। নিশ্চয় সমস্ত প্রশংসা, নে‘মত এবং সাম্রাজ্য আপনারই। আপনার কোন শরীক নেই’।[৬০] তালবিয়ার সাথে সাথে অন্যান্য দু‘আ, যিকির, তাসবীহ, তাহলীলও করা যাবে।[৬১] উল্লেখ্য যে, ‘নাওয়াইতুল উমরাতা’ বা নাওয়াইতু হাজ্জা’ বলে প্রচলিত নিয়ত পড়া বিদ‘আত। কারণ এগুলো রাসূল (ﷺ) থেকে প্রমাণিত নয়।[৬২]

জ্ঞাতব্য : বাড়ী থেকে বা বিমানবন্দর থেকে তালবিয়া পাঠ করা যাবে না। এটা বিদ‘আতী কাজ। মীক্বাতে পৌঁছার পর তালবিয়া পাঠ করতে হবে। অনুরূপ ইহরাম বাঁধার সময় কোন ছালাত নেই। দুই রাক‘আত ছালাত পড়ার যে নিয়ম চালু আছে, শরী‘আতে তার কোন ভিত্তি নেই। তবে কোন ছালাতের সময় হলে ছালাতের পর ইহরাম বাঁধবে।[৬৩]

উল্লেখ্য, পুরুষরা উচ্চৈঃস্বরে তালবিয়া পাঠ করবে।[৬৪] তবে মহিলারা নিম্নস্বরে পাঠ করবে।[৬৫] ওমরাহ পালনকারী ব্যক্তি ত্বাওয়াফ শুরু করার সময় তালবিয়া পাঠ করা বন্ধ করবে।[৬৬]

ইহরামের পর নিষিদ্ধ কাজ :

ইহরামের পরে নিষিদ্ধ কাজগুলো হল- স্ত্রী সহবাস করা[৬৭], মাথা এবং শরীরের কোন অংশ কেটে ফেলা[৬৮], সুগন্ধি ব্যবহার করা[৬৯], স্থলভাগের প্রাণী শিকার করা ও যবেহ করা[৭০], ইচ্ছাকৃতভাবে পুরুষের মাথা ঢাকা[৭১], বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া[৭২], যৌন কামনার সাথে স্ত্রীকে চুম্বন করা, স্পর্শ করা কিংবা জড়িয়ে ধরা।[৭৩] উল্লেখ্য যে, শুধু স্ত্রী সহবাসের কারণে হজ্জ বিনষ্ট হয়ে যায়।[৭৪] কিন্তু অন্য কারণগুলোতে হজ্জ নষ্ট হয় না; বরং ফিদইয়া ওয়াজিব হয়।[৭৫] মহিলারা নেক্বাব পরতে পারবে না।[৭৬] চাইলে মুখের উপর কাপড় ঝুলিয়ে দিবে।[৭৭] তবে অপরিচিত লোকের সামনে মুখ ঢেকে রাখবে।[৭৮]

উল্লেখ্য যে, অনেক মুরব্বী বিমানবন্দরে সেন্ডেল খুলার জন্য পিড়াপিড়ি করেন আর বলেন, সেলাই করা সেন্ডেল পরা যাবে না। উক্ত দাবী ঠিক নয়। কারণ হাদীছে পরিধেয় বস্ত্র সেলাই বিহীন হতে হবে।[৭৯] তাছাড়া ইহরাম অবস্থায় গোসল করতে পারে।[৮০]

হারামে প্রবেশ : মসজিদে হারামে প্রবেশের সময় ডান পা আগে দিয়ে প্রবেশ করবে।[৮১] মসজিদে প্রবেশ এবং বের হওয়ার সময় বলবে- بِسْمِ ا للّٰہِ اَللّٰہُمَّ  صَلِّ عَلٰی مُحَمَّدٍ ‘বিসমিল্লা-হি আল্ল-হুম্মা ছাল্লি আলা মুহাম্মাদ’। অর্থ : আল্লাহর নামে প্রবেশ করছি। হে আল্লাহ আপনি রাসূল (ﷺ)-এর উপর দুরূদ বর্ষণ করুন’।[৮২] অথবা বলবে- اَللّٰہُمَّ  صَلِّ عَلٰی مُحَمَّدٍ وَسَلِّمْ اَللّٰہُمَّ  افْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ   উচ্চারণ : আল্ল-হুম্মা ছাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদ ওয়া সাল্লিম। আল্লাহুম্মাফতাহ্ লী আবওয়া-বা রহমাতিকা। অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি রাসূল (ﷺ)-এর উপর ছালাত ও সালাম বর্ষণ করুন। হে আল্লাহ! আপনি আমার জন্য আপনার রহমতের দুয়ারসমূহ খুলে দিন’।[৮৩] অথবা প্রবেশের সময় বলবে-

أَعُوْذُ با للّٰہِ الْعَظِيْمِ وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيْمِ وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيْمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ

উচ্চারণ : আ‘ঊযুবিল্লা-হিল আযীম, ওয়া বিওয়াজ্‌হিহিল কারীম, ওয়া সুলত্ব-নিহিল ক্বদীম মিনাশ-শায়ত্ব-নির রজীম।
অর্থ : আমি মহান আল্লাহ, তাঁর সম্মানিত চেহারা ও সত্তা এবং অনাদি শক্তির অসীলায় বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি’।[৮৪] মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় বলবে-

اَللّٰہُمَّ  صَلِّ عَلٰی مُحَمَّدٍ وَسَلِّمْ اَللّٰہُمَّ  إِنِّى أَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ

উচ্চারণ : আল্ল-হুম্মা ছাল্লি আলা মুহাম্মাদ ওয়া সাল্লিম, আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা মিন ফাযলিকা।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনি রাসূল (ﷺ)-এর উপর ছালাত ও সালাম বর্ষণ করুন। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আপনার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি’।[৮৫] কা‘বা ঘর দেখে হাত তুলে দু‘আ করবে।[৮৬]

ত্বাওয়াফ ও সাঈ :

ত্বাওয়াফ অর্থ কা‘বা ঘর প্রদক্ষিণ করা। এর পদ্ধতি হল, ত্বাওয়াফের শুরুতে গায়ের চাদর ডান বগলের নীচ দিয়ে বাম কাঁধের উপরে উঠিয়ে দিয়ে ডান কাঁধ খালি রাখবে। সাত চক্করেই এই অবস্থায় থাকবে। একেই ‘ইযত্বিবা’ বলে।[৮৭] শুধু প্রথমবার ত্বাওয়াফ করার সময় ইযত্বিবা করতে হবে। এছাড়া ইহরাম বাঁধার পর থেকে সব অবস্থায় চাদর উভয় কাঁধের উপরে থাকবে।[৮৮] উল্লেখ্য যে, ছালাতের সময় উভয় কাঁধ ঢেকে রাখা আবশ্যক।[৮৯]

ত্বাওয়াফের সময় প্রথম তিন চক্করে রমল করবে বা একটু জোরে হাঁটবে এবং পরের চার চক্করে স্বাভাবিক হাঁটবে।[৯০] তবে মহিলারা সব সময় স্বাভাবিক গতিতে চলবে।[৯১] কা‘বা ঘরকে বাম পাশে রেখে হাজারে আসওয়াদ বরাবর কোণ থেকে (সবুজ বাতি বরাবর) ‘আল্লাহু আকবার’[৯২] অথবা ‘বিসমিল্লা-হি ওয়াল্লাহু আকবার’ বলে ত্বাওয়াফ শুরু করবে। প্রত্যেক চক্করেই এভাবে বলবে।[৯৩] উল্লেখ্য,  এর সাথে ‘ওয়া লিল্লা-হিল হামদ’ বলার কোন দলীল নেই। অনুরূপ ‘আল্লাহুম্মা ঈমানান বিকা ওয়া তাছদীক্বান বিকিতাবিকা ওয়া ইত্তিবা‘আন লিসুন্নাতি নাবিয়্যিকা’ বলার হাদীছ যঈফ।[৯৪]

ভীড় না থাকলে হাজারে আসওয়াদে চুম্বন করবে।[৯৫] সম্ভব না হলে হাত কিংবা হাতের লাঠি দ্বারা স্পর্শ করবে এবং হাতে বা লাঠিতে চুম্বন করবে।[৯৬] তাও সম্ভব না হলে কেবল হাত দ্বারা ইশারা করবে, কিন্তু হাতে চুম্বন করবে না।[৯৭] অপরকে কষ্ট দিয়ে হাজারে আসওয়াদে চুম্বন করা উচিত নয়।[৯৮]

হাজারে আসওয়াদ যে কোণে রয়েছে, তার আগের কোণ হল ‘রুকনে ইয়ামানী’। এটা স্পর্শ করা অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ। এই কোণ কেবল হাত দিয়ে স্পর্শ করবে।[৯৯] হাতে চুম্বন করবে না। স্পর্শ করতে না পারলে ইশারাও করা যাবে না। এখানে নির্দিষ্ট কোন দু‘আও পড়া যাবে না। উল্লেখ্য যে, রুকনে ইয়ামানী স্পর্শ করে চুম্বন করা ও গাল স্পর্শ করার ব্যাপারে যে বর্ণনা এসেছে তা যঈফ।[১০০] এই সময় ‘বিসমিল্লা-হি ওয়াল্লাহু আকবার’ বলার বর্ণনা জাল।[১০১]

রুকনে ইয়ামানী ও হাজারে আসওয়াদের মাঝে রাসূল (ﷺ) নিম্নের দু‘আ পাঠ করতেন : رَبَّنَا آتِنَا فِى الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِى الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ অর্থ : ‘হে আমাদের পালনকর্তা! আপনি দুনিয়াতে আমাদেরকে কল্যাণ দান করুন এবং আখেরাতেও কল্যাণ দান করুন। আর আপনি আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন’।[১০২]

ত্বাওয়াফের সময় নিজের জন্য, প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজনের জন্য দু‘আ করবে। আল্লাহর কাছে জান্নাত চাইবে এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাইবে। মৃত্যু ও আখেরাতকে স্মরণ করবে। ত্বাওয়াফ অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াতও করা যাবে। কুরআন ও ছহীহ হাদীছে বর্ণিত দু‘আগুলো পড়বে।[১০৩] তবে ভিত্তিহীন বা যঈফ ও জাল দু‘আ পড়া যাবে না। অনেকে বই দেখে দু‘আ পাঠ করে আর বাকীরা তার সাথে সাথে পড়ে। এটা উচিত নয়।

ত্বাওয়াফ শেষ করে মাক্বামে ইবরাহীমের পিছনে গিয়ে দুই রাক‘আত ছালাত আদায় করবে।[১০৪] প্রথম রাক‘আতে সূরা কাফেরূন এবং দ্বিতীয় রাক‘আতে সূরা ইখলাছ পড়বে।[১০৫] সম্ভব না হলে হারামের যেকোন স্থানে ছালাত পড়ে নিবে।[১০৬] অতঃপর যমযমের পানি পান করবে এবং মাথায় কিছু দিবে।[১০৭]

সাঈ : ত্বাওয়াফ শেষ করে ছাফা পাহাড়ের দিকে যাবে এবং ছাফা হতে মারওয়া সাতবার সাঈ করবে। ছাফা থেকে শুরু হবে এবং মারওয়াতে গিয়ে শেষ হবে। ছাফা থেকে মারওয়া পর্যন্ত এক চক্কর এবং মারওয়া থেকে ছাফা পর্যন্ত এক চক্কর। তবে সবুজ বাতির যে রেখা দেয়া আছে সে জায়গা একটু জোরে চলবে। কিন্তু মহিলারা স্বাভাবিক গতিতে চলবে।[১০৮] সাঈ সম্পাদনকারী ছাফা এবং মারওয়ার উপরে ক্বিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে হাত তুলে আল্লাহ্‌র একত্ব ও বড়ত্ব বর্ণনা করে বলবে,

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللّٰہُ  وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كَلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللّٰہُ وَحْدَهُ أَنْجَزَ وَعْدَهُ وَنَصَرَ عَبْدَهُ وَهَزَمَ الأَحْزَابَ وَحْدَهُ

‘এক আল্লাহ ছাড়া আর কোন হক্ব মা‘বূদ নেই, যার কোন শরীক নেই। তাঁরই সকল রাজত্ব এবং তাঁর জন্যই যাবতীয় প্রশংসা।

তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। এক আল্লাহ ছাড়া আর কোন হক্ব মা‘বূদ নেই। তিনি তাঁর অঙ্গীকার পূর্ণ করেছেন, তাঁর বান্দাকে বিজয়ী করেছেন এবং তিনি একাই শত্রু বাহিনীকে পরাস্ত করেছেন’। এভাবে যত ইচ্ছা দু‘আ করবে। এটা তিনবার করবে।[১০৯]

সাঈ শেষ করে মাথা মুণ্ডন করবে বা চুল ছোট করবে। মাথা মু-ন করাই উত্তম।[১১০] তবে যদি ওমরার পর পরই হজ্জের সময় চলে আসে এবং নতুন চুল গজানোর সময় না থাকে, তাহলে ওমরার পর চুল ছোট করা ভাল।[১১১] হজ্জের পর মুণ্ডন করবে। কিন্তু মহিলারা চুলের আগা থেকে আঙ্গুলের অগ্রভাগ পরিমাণ কেটে ফেলবে।[১১২] অতঃপর হালাল হয়ে যাবে।[১১৩]

তথ্যসূত্র :
[১]. নাসাঈ হা/২৯১৯, সনদ ছহীহ।            
[২]. তিরমিযী হা/৯৫৯, সনদ ছহীহ।              
[৩]. তিরমিযী হা/৯৬১, সনদ ছহীহ; মিশকাত হা/২৫৭৮।                
[৪]. তিরমিযী হা/৭৮৮, সনদ ছহীহ; মিশকাত হা/২৫৭৭।                 
[৫]. ছহীহ বুখারী হা/১৫৯৭; ছহীহ মুসলিম হা/১২৭০।
[৬]. ছহীহ মুসলিম হা/২৪৭৩।     
[৭]. আবুদাঊদ ত্বয়ালাসী হা/৪৫৯।      
[৮]. ত্বাবারাণী, কাবীর হা/১১১৬৭, সনদ হাসান; সিলসিলা ছহীহাহ হা/১০৫৬ ও ৩৫৮৫।      
[৯]. ইবনু মাজাহ হা/৩০৬২, পৃঃ ২২০; সনদ ছহীহ, ইরওয়াউল গালীল হা/১১২৩।    
[১০]. তিরমিযী হা/৯৬৩, সনদ হাসান।     
[১১]. ছহীহ বুখারী হা/১৬৩৭; ছহীহ মুসলিম হা/২০২৭; নাসাঈ হা/২৯৬৪; মিশকাত হা/৪২৬৮।      
[১২]. ইবনু মাজাহ হা/৩০৬১; হাকেম হা/১৭৩৮; ইরওয়া হা/১১২৪-এর আলোচনা দ্রঃ।     
[১৩]. মুস্তাদরাক হাকেম হা/১৭৩৯; দারাকুৎনী হা/২৭৭১; যঈফ তারগীব হা/৭৫০; ইরওয়া হা/১১২৬ দ্রঃ।     
[১৪]. ছহীহ মুসলিম হা/১৩৪৮, ১/৪৩৬ পৃঃ; মিশকাত হা/২৫৯৪; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/২৪৭৮, ৫ম খণ্ড, পৃঃ ২১৭।  
[১৫]. আহমাদ হা/৮০৩৩; সনদ ছহীহ, ছহীহ তারগীব হা/১১৩২।   
[১৬]. ছহীহ ইবনে হিব্বান, তাহক্বীক্ব আলাবানী হা/১৮৮৪, সনদ হাসান; ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/১১৫৫।
[১৭]. তিরমিযী হা/৩৫৮৫, ২/১৯৯ পৃঃ; মিশকাত হা/২৫৯৮; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/২৪৮২, ৫ম খণ্ড, পৃঃ ২১৮।   
[১৮]. ইবনু মাজাহ হা/২৮৯৩, পৃঃ ২০৮; সনদ ছহীহ, সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৮২০।  
[১৯]. ইবনু মাজাহ হা/১৪১২, পৃঃ ১০১।
[২০]. ইবনু মাজাহ হা/১৪১১, সনদ ছহীহ।
[২১]. ইবনু তায়মিয়াহ, শারহুল ঊমদাতি ফিল ফিক্বহ ২/২১৮ পৃঃ; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ১১/১০ পৃঃ; যাদুল মা‘আদ ৩/৫৯৫ পৃঃ।
[২২]. আবুদাঊদ হা/৪৪০৩; মিশকাত হা/৩২৮৭।
[২৩]. বায়হাক্বী, আস-সুনানুছ ছগীর হা/১১৭২; ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল আওসাত্ব হা/২৭৩১; ছহীহুল জামে‘ হা/২৭২৯, সনদ ছহীহ।
[২৪]. ছহীহ বুখারী হা/১০৩৮; ছহীহ মুসলিম হা/১৩৩৮; ছহীহ বুখারী হা/৩০০৬।
[২৫]. ছহীহ মুসলিম হা/১৩৩৭, ১/৪৩২ পৃঃ (ইফাবা হা/৩১২৩); মিশকাত হা/২৫০৫।
[২৬]. আবুদাঊদ হা/১৭৩২; মিশকাত হা/২৫২৩, সনদ হাসান। 
[২৭]. আহমাদ হা/২৫৩৬১; ইবনে মাজাহ হা/২৯০১, পৃঃ ২০৮, সনদ ছহীহ; মিশকাত হা/২৫৩৪।
[২৮]. ছহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/৩০৬৫, সনদ ছহীহ। 
[২৯]. তিরমিযী হা/৯৩০, ১/১৮৬ পৃঃ, হাসান-ছহীহ; মিশকাত হা/২৫২৮।  
[৩০]. ছহীহ বুখারী হা/১৫৫৬।    
[৩১]. ছহীহ বুখারী হা/৭২৩০, ১৬৫১ এবং ১৫৭২; ছহীহ মুসলিম হা/১২১৬; মিশকাত হা/২৫৫৯।
[৩২]. ছহীহ বুখারী হা/১৫৫৬; নাসাঈ হা/২৭৬৪।     
[৩৩]. ছহীহ বুখারী হা/১৫৬২ ও ১৫৫৬; ছহীহ মুসলিম হা/১২১১।    
[৩৪]. বুখারী হা/১৫৬৮।     
[৩৫]. বুখারী হা/১৫২৪; মিশকাত হা/২৫১৬।     
[৩৬]. ছহীহ মুসলিম হা/১১৮৩; মিশকাত হা/২৫১৭; ছহীহ বুখারী হা/১৫৩১।      
[৩৭]. শায়খ মতীউর রহমান মাদানী, হজ্জ, উমরাহ ও মদীনা যিয়ারত, পৃঃ ২৪-২৫।       
[৩৮]. বুখারী হা/১৫২৪; মুসলিম হা/১১৮১; মিশকাত হা/২৫১৬।
[৩৯]. বুখারী হা/১৫১৮।
[৪০]. ছহীহ বুখারী হা/১ ও ১৫৪১।    
[৪১]. বাক্বারাহ ১৯৮; ইবনু মাজাহ হা/৩০১৫।     
[৪২]. হজ্জ ২৯; বুখারী হা/১৭৩৩।
[৪৩]. বাক্বারাহ ১৫৮; দারাকুৎনী হা/২৬১৩; আহমাদ হা/২৭৪০৭, সনদ ছহীহ, ইরওয়া হা/১০৭২।
[৪৪]. ছহীহ বুখারী হা/১ ও ১৫৪১।    
[৪৫]. ছহীহ বুখারী হা/১৭৯৩; ছহীহ মুসলিম হা/১২৩৪।
[৪৬]. বাক্বারাহ ১৫৮; দারাকুৎনী হা/২৬১৩; আহমাদ হা/২৭৪০৭, সনদ ছহীহ, ইরওয়া হা/১০৭২।
[৪৭]. ছহীহ বুখারী হা/১৮৪৫; মিশকাত হা/২৫১৬।
[৪৮]. ছহীহ মুসলিম হা/১২১৮, ১২৯৭; মিশকাত হা/২৫৫৫, ২৬১৮।
[৪৯]. সূরা বাক্বারাহ ১৯৮; বুখারী হা/১৬৭৬; মুসলিম হা/১২৯৫।
[৫০]. ছহীহ মুসলিম হা/১২৯৯; বুখারী হা/১৭৪৬; নাসাঈ হা/৩০৬৯।
[৫১]. সূরা আল-ফাত্হ ২৭; বাক্বারাহ ১৯৬; ছহীহ বুখারী হা/১৭২৮; ছহীহ মুসলিম হা/১৩০৩।
[৫২]. সূরা বাক্বারাহ ২০৩; ছহীহ বুখারী হা/১৭৪৫, ১/২৩৫ পৃঃ, (ইফাবা হা/১৬৩৪, ৩য় খণ্ড, পৃঃ ১৬৭); মিশকাত হা/২৬৬২; আবুদাঊদ হা/১৯৪৯; তিরমিযী হা/৮৮৯; মিশকাত হা/২৭১৪।
[৫৩]. বুখারী হা/১৭৫৫; মুসলিম হা/১৩২৮; মিশকাত হা/২৬৬৮; মুসলিম হা/১৩২৭; বুখারী হা/১৭৩৩।
[৫৪]. বুখারী হা/১৮৪৫; মিশকাত হা/২৫১৬।
[৫৫]. সূরা আল-ফাত্হ ২৭; বাক্বারাহ ১৯৬; বুখারী হা/১৭২৮; মুসলিম হা/১৩০৩।
[৫৬]. তিরমিযী হা/৮৩০; ছহীহ ইবনু খুযায়মাহ হা/২৫৯৫; মিশকাত হা/২৫৪৭; ইরওয়াউল গালীল হা/১৪৯, সনদ হাসান; মুসলিম হা/১২০৯; আবুদাঊদ হা/১৭৪৩; ইবনু মাজাহ হা/২৯১১; দারেমী হা/১৮০৪; দারাকুৎনী হা/১৮৫৮।
[৫৭]. মুত্তাফাক্ব আলাহই, বুখারী হা/১৫৩৯; মুসলিম হা/১১৮৯ ও ১১৯১; মিশকাত হা/২৫৪০।
[৫৮]. ছহীহ মুসলিম হা/১২৩২ ও ১২৫১।
[৫৯]. ছহীহ বুখারী হা/১৫৫১।
[৬০]. ছহীহ বুখারী হা/১৫৪৯; ছহীহ মুসলিম, হা/২৮১১।
[৬১]. ছহীহ বুখারী হা/১৫৫১।
[৬২]. আলবানী, মানাসিকুল হজ্জ ওয়াল ওমরাহ, পৃঃ ১২; ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম, প্রশ্ন নং-৪৬৪।
[৬৩]. ছহীহ বুখারী হা/১৫৫১; মুসলিম হা/১১৮৪; মিশকাত হা/২৫৫১।
[৬৪]. নাসাঈ হা/২৭৫৩, সনদ ছহীহ।
[৬৫]. তিরমিযী হা/৯২৭-এর আলোচনা দ্রঃ।
[৬৬]. বায়হাক্বী, আস-সুনানুল কুবরা হা/৯২৯১, ৫/১০৪।
[৬৭]. সূরা বাক্বারাহ ১৯৭; বায়হাক্বী-সুনানুল কুবরা হা/৯৫৬৩; সনদ ছহীহ, ইরওয়াউল গালীল, ৪/২৩৪ পৃঃ।
[৬৮]. সূরা বাক্বারাহ ১৯৬; তাফসীরে সা‘আদী, পৃঃ ৯০।
[৬৯]. বুখারী হ/১২৬৬ ও ১৮৫০; মুসলিম হা/১২০৬।
[৭০]. সূরা মায়েদা ৯৫-৯৬; বুখারী হা/১৮২৫ ও ২৫৭৩; মুসলিম হা/১১৯৩; মিশকাত হা/২৬৯৬; বুখারী হা/১৮২৪; মুসলিম হা/১১৯৬; মিশকাত হা/২৬৯৭।
[৭১]. বুখারী হ/১২৬৬ ও ১৮৫০; মুসলিম হা/১২০৬ ও ১২৯৮; মুসনাদে আহমাদ হা/২৭৩০০; মিশকাত হা/২৬৮৭।
[৭২]. মুসলিম হা/১৪০৯; নাসাঈ হা/৩২৭৫-৭৬; মিশকাত হা/৫৬৮১।
[৭৩]. সূরা বাক্বারাহ ১৯৭।
[৭৪]. মুস্তাদরাক হাকেম হা/২৩৭৫; বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/১০০৬৫; সনদ ছহীহ, ইরওয়াউল গালীল হা/১০৪৩।
[৭৫]. সূরা বাক্বারাহ ১৯৬; বুখারী হা/৬৭০৮।
[৭৬]. বুখারী হা/১৮৩৮; তিরমিযী হা/৮৩৩; মিশকাত হা/২৬৭৮।
[৭৭]. বায়হাক্বী, আস-সুনানুল কুবরা হা/৯৩১৬; সনদ ছহীহ, ইরওয়াউল গালীল ৪/২১২ পৃঃ, হা/১০২৩-এর আলোচনা দ্র.।
[৭৮]. আবুদাঊদ হা/১৮৩৩; ইবনু মাজাহ হা/২৯৩৫, সনদ হাসান। উল্লেখ্য, শায়খ আলবানী (রহঃ) আবুদাঊদ ও ইবনু মাজার তাহক্বীক্বে হাদীছটিকে যঈফ বললে পরে হাসান বলেছেন। -ছহীহ মিশকাত হা/২০৭২; জিলবাবুল মারআতুল মুসলিমাহ, পৃঃ ১০৭।
[৭৯]. ছহীহ বুখারী হা/১৫৪২; ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম, প্রশ্ন নং-৪৭৮।
[৮০]. বুখারী হা/১৮৪০; মিশকাত হা/২৬৮৪। 
[৮১]. মুস্তাদরাক হাকেম হা/৭৯১; বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/৪৪৯৪; সনদ হাসান, সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৪৭৮।
[৮২]. ইবনুস সুন্নী, আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লায়লাহ হা/৮৮; সনদ হাসান, আলবানী, আছ-ছামারুল মুস্তাত্বাব, পৃঃ ৬০৪।
[৮৩]. আবুদাঊদ হা/৪৬৫; ইবনু মাজাহ হা/৭৭২ ও ৭৭৩, সনদ ছহীহ।  
[৮৪]. আবুদাঊদ হা/৪৬৬, সনদ ছহীহ; মিশকাত হা/৭৪৯।  
[৮৫]. আবুদাঊদ হা/৪৬৫; ৭৭২ ও ৭৭৩, সনদ ছহীহ।  
[৮৬]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ হা/২৪৬৫ ও ১৫৯৯২; মওকূফ হিসাবে ছহীহ, আলবানী, মানাসিকুল হাজ্জ ওয়াল উমরাহ, পৃঃ ১৮; মির‘আত ৯/১০৩ পৃঃ, হা/২৫৯৮।
[৮৭]. আবুদাঊদ হা/১৮৮৪, সনদ ছহীহ; তিরমিযী হা/৮৫৯, সনদ ছহীহ।
[৮৮]. ফাতাওয়া ইবনে বায ১৭/১০৯-১১০ পৃঃ।
[৮৯]. বুখারী হা/৩৫৯; মুসলিম হা/৫১৬।
[৯০]. ছহীহ বুখারী হা/১৬০৩-৪; মিশকাত হা/২৫৬৪ ও ২৫৬৫।
[৯১]. বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/৯৫৫৩-৯৫৫৪; মানাসিকুল হাজ্জ ওয়াল উমরাহ, পৃঃ ২৫। 
[৯২]. ছহীহ বুখারী হা/১৬১৩।
[৯৩]. বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/৯৫১৭; সুনানুছ ছাগীর হা/১২৭৭; সনদ ছহীহ, মানাসিকুল হাজ্জ ওয়াল উমরাহ, পৃঃ ১৯।
[৯৪]. বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/৯৫১৯; সিলসিলা ছহীহাহ হা/১০৪৯।
[৯৫]. ছহীহ বুখারী হা/১৬১১; মিশকাত হা/২৫৬৭।              
[৯৬]. ছহীহ মুসলিম হা/১২৭৫; মিশকাত হা/২৫৭১।
[৯৭]. ছহীহ বুখারী হা/১৬১২; মিশকাত হা/২৫৭০।
[৯৮]. মুসনাদে আহমাদ হা/১৯০, সনদ হাসান; মানাসিকুল হাজ্জ ওয়াল ওমরাহ, পৃঃ ২০।
[৯৯]. ছহীহ বুখারী হা/১৬০৯।
[১০০]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ হা/১৪৭৭৬ ও ১৫৬১৮-৯; সিলসিলা যঈফাহ হা/৪১৬৯।
[১০১]. যঈফ তারগীব হা/৭২৪; সিলসিলা যঈফাহ হা/৫৪৬৬। 
[১০২]. আবুদাঊদ হা/১৮৯২; মিশকাত হা/২৫৮১, সনদ হাসান।
[১০৩]. তিরমিযী হা/৯৬০, সনদ ছহীহ; মিশকাত হা/২৫৭৬।
[১০৪]. ছহীহ বুখারী হা/১৬২৭; ছহীহ মুসলিম হা/১২৩৪।
[১০৫]. ছহীহ মুসলিম হা/১২১৮।
[১০৬]. বুখারী হা/১৬২৬।
[১০৭]. আহমাদ হা/১৫২৮০; সনদ ছহীহ, ইরওয়াউল গালীল হা/১০১৭।
[১০৮]. বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/৯৫৫৩-৯৫৫৪; মানাসিকুল হাজ্জ ওয়াল উমরাহ, পৃঃ ২৫। 
[১০৯]. ছহীহ মুসলিম হা/১২১৮; আবুদাঊদ হা/১৮৭২; মিশকাত হা/২৫৭৫, সনদ ছহীহ।
[১১০]. ছহীহ বুখারী হা/১৭২৭ ও ৪৪১০; মিশকাত হা/২৬৪৮ ও ২৬৩৬।
[১১১]. ছহীহ মুসলিম হা/১২১৮ ও ১২১৬; মিশকাত হা/২৫৫৫।
[১১২]. আবুদাঊদ হা/১৯৮৪, ১/২৭২ পৃঃ; মিশকাত হা/২৬৫৪; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/২৫৩৬, ৫ম খণ্ড, পৃঃ ২৪১।
[১১৩]. সূরা আল-ফাত্হ ২৭; বুখারী হা/১৭২৮; মুসলিম হা/১৩০৩।





প্রসঙ্গসমূহ »: হজ্জ ও ওমরাহ
নফল ছালাত - আল-ইখলাছ ডেস্ক
অহংকার করা ও তার পরিণাম - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
ইসলামে পর্দার বিধান (২য় কিস্তি) - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
ইসলামী সংগঠন ও তরুণ-যুবক-ছাত্র (শেষ কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
গাযওয়াতুল হিন্দ : একটি তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ - হাসিবুর রহমান বুখারী
গোপন পাপ: ভয়াবহতা ও পরিত্রাণের উপায় অনুসন্ধান - ড. মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ
ইসলামী পুনর্জাগরণের মূলনীতি (৩য় কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
রামাযান : কুরআন নাযিলের মাস - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
মাহে রামাযানে শিশু-কিশোর প্রতিপালন - আব্দুর রশীদ
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (২০তম কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
সালাফী মানহাজের বৈশিষ্ট্য (শেষ কিস্তি) - হাসিবুর রহমান বুখারী
ছয়টি মূলনীতির ব্যাখ্যা (শেষ কিস্তি) - অনুবাদ : আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল ক্বাদির

ফেসবুক পেজ