সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০৩:০২ অপরাহ্ন
উত্তর : প্রয়োজনে তাহাজ্জুদ বা তারাবীহর মত দীর্ঘ ক্বিরাআত বিশিষ্ট নফল ছালাতে দেখে কুরআনুল কারীম তিলাওয়াত করা জায়েয। যেমন, وَكَانَتْ عَائِشَةُ يَؤُمُّهَا عَبْدُهَا ذَكْوَانُ مِنَ الْمُصْحَفِ ‘আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর গোলাম যাক্ওয়ান কুরআনুল কারীম দেখে তিলাওয়াত করার মাধ্যমে আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর ইমামতি করতেন’ (তা‘লীক্ব, ছহীহ বুখারী, হা/৬৯২, অধ্যায়-১০, অনুচ্ছেদ-৫৪; মুছান্নাফু ইবনি আবী শাইবাহ, ২/৩৩৮ পৃ.)। ইবনু শিহাব ও ইমাম যুহরী  (রাহিমাহুল্লাহ)-কে এমন এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, রামাযান মাসে লোকদের ইমামতি করার সময় দেখে কুরআনুল কারীম তিলাওয়াত করা যাবে কি? উত্তরে তাঁরা বলেছিলেন, ‘ইসলামের প্রথম যুগ থেকেই এই ধারা চলে আসছে। আমাদের যুগের সর্বোত্তম লোকেরাও দেখে তিলাওয়াত করতেন। ইবরাহীম ইবনু সাঈদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমাকে আমার পিতা রামাযান মাসে নিজ পরিবারকে নিয়ে ক্বিয়ামুল লাইল আদায় করার আদেশ দিতেন এবং কুরআনুল কারীম থেকে দেখে দেখে তিলাওয়াত করারও নির্দেশ দিতেন। আইয়ূব (রাহিমাহুল্লাহ) মুহাম্মাদ (রাহিমাহুল্লাহ) থেকে বর্ণনা করে বলেন যে, তিনি নফল ছালাতে দেখে দেখে তিলাওয়াত করাকে দোষনীয় মনে করতেন না। ‘আত্বা (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ আল-আনছারী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, রামাযান মাসে তারাবীর ইমামতি করার সময় দেখে দেখে কুরআন পাঠ করা দোষনীয় নয়। ইবনু ওয়াহাব (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ইমাম মালিক (রাহিমাহুল্লাহ)-কে এমন একটি গ্রাম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়, যে গ্রামে কোন দক্ষ ক্বারী বা হাফিয নেই। সেক্ষেত্রে তাদের মধ্য হতে কেউ কি দেখে কুরআনুল কারীম তিলাওয়াত করার মাধ্যমে ইমামতি করতে পারবে? উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটি দোষনীয় নয়’। ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ক্বিয়ামুল লাইলের ইমামতি করার সময় দেখে কুরআনুল কারীম তিলাওয়াত করা দোষনীয় নয়’। ইমাম নববী, ইমাম ইবনু কুদামাহ, শায়খ আব্দুল্লাহ্ ইবনু বায (রাহিমাহুমুল্লাহ) এবং সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটিও একই ফৎওয়া দিয়েছেন (আল-মাজমূঊ, ৪/২৭ পৃ.; আল-মুগনী, ১/৩৩৫ পৃ.; শারহু মুনতাহাল ইরাদাত, ১/২০০ পৃ.; মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনু বায, ১১/১১৭-১১৮ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৬৫৯২৪; ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৭/২০৩-২০৬ পৃ.)

উল্লেখ্য যে, মুজাহিদ, ইবরাহীম, সুফিয়ান ও শায়খ ছালিহ আল-উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) রামাযান মাসে ক্বিয়ামুল লাইলে দেখে কুরআনুল কারীম তিলাওয়াত করাকে অপসন্দ করতেন। কেননা এর মধ্যে নানাবিধ সমস্যা রয়েছে। যেমন (১) হাতে কুরআন ধরার কারণে দাঁড়ানো অবস্থায় বুকের উপর দুই হাত রাখার বিধানের উপর আমল করা যায় না। (২) পৃষ্ঠা উল্টানোর সময় ও পকেটে রাখার সময় নড়াচড়া করতে হয়। (৩) ছালাত থেকে মুছল্লীর মনোযোগ বিচ্ছিন্ন করে এর মধ্যে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে। (৪) সাজদার জায়গায় দৃষ্টি নিক্ষেপ করা সম্ভবপর হয় না। (৫) অমনোযোগী হয়ে ছালাত আদায়কারী প্রায় ভুলেই যায় যে, সে ছালাতরত অবস্থায় আছে’ (মাজমূউ ফাতাওয়া ইবনু উছাইমীন, ১৪/২৩১-২৩৮ পৃ.; ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৭/২০৪-২০৬ পৃ.)


প্রশ্নকারী : বেলাল, ঢাকা।





প্রশ্ন (১৩) : আওয়াল ওয়াক্তে ছালাত আদায় না করলে ছালাত কবুল হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২২) : যে জিনিসগুলো সাদাক্বাহ করা হয় সেগুলো ব্যবহার করার হুকুম কী? মসজিদের জন্য কিছু আতর ও কিছু পানির বোতল দান করার পরে মাঝে মাঝে মসজিদের ঐ আতর ও পানি ব্যবহার করার শরী‘আতের বিধান কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৯) : তাজা মাছ কাটার সময় কি যব্হ করার দু‘আ বলতে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৪) : মানুষ বিপদে পতিত হলে হতাশা প্রকাশ করে চিন্তিত হয়ে পড়ে। অনেকেই অসন্তুষ্টি প্রকাশও করে। প্রশ্ন হল- বিপদে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করলে তার হুকুম কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৮) : মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ করা কি জায়েয? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১২) : আয়না দেখার প্রসিদ্ধ দু‘আটি কি ছহীহ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৭): আব্দুল্লাহ ইবনু উমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-কে প্রশ্ন করা হয়, রাসূল (ﷺ)-এর ছাহাবীগণ কি হাসতেন? তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ। তবে তাঁদের অন্তরে ঈমান ছিল পাহাড়ের চেয়ে বড়’ (আল-মাউসূ‘আতুল কুবরা, ৩১/১৯৩)। বর্ণনাটি কী ছহীহ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৮) : জনৈক বক্তা বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘আমি প্রত্যেক তাক্বওয়াশীল ব্যক্তির দাদা’। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৭) : বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক শিক্ষামূলক অনেক প্রোগ্রামের আয়োজন করে। প্রশ্ন হল- এমন সূদী ব্যাংক থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৭) : ‘রাহে বেলায়েত’ নামক বইয়ের ৮৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে যে, বেশি বেশি সুবহানাল্লাহ, আলহামদুল্লাহ, আল্লাহু আকবার পড়লে মুনাফিক হতে মুক্তি পাওয়া যায় (নাসাঈ ৬/২১০)। উক্ত বর্ণনা ছহীহ কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৫) : ইমাম মসজিদের মেহরাবের কোথায় দাঁড়াবে? মেহরাবের ভিতরে, না-কি বাইরে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৫): রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যখন আল্লাহ তা‘আলা যমীন সৃষ্টি করলেন তখন তা দুলতে লাগল। অতঃপর পাহাড়গুলো সৃষ্টি করে সেগুলো পৃথিবীর উপর স্থীর করেন। অতঃপর পৃথিবী স্থীর হয়ে গেল। ফেরেশতাগণ পাহাড়ের এ শক্তি দেখে আশ্চর্যান্বিত হলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ! আপনার সৃষ্টির মধ্যে পাহাড় অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী আর কোন সৃষ্টি আছে কি? আল্লাহ বললেন, হ্যাঁ; আর সেটা লোহা। অতঃপর তারা জিজ্ঞেস করল, হে প্রভু! আপনার সৃষ্টির মধ্যে লোহা অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী আর কোন সৃষ্টি আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আগুন। অতঃপর তারা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ! আপনার সৃষ্টির মধ্যে আগুন অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী আর কোন সৃষ্টি আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ; পানি। অতঃপর তারা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ! আপনার সৃষ্টির মধ্যে পানি অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী আর কোন সৃষ্টি আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ; বাতাস। অতঃপর তারা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ! আপনার সৃষ্টির মধ্যে বাতাস অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী আর কোন সৃষ্টি আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ; আদম সন্তান। যে তার ডান হাতে দান করে আর দানকে বাম হাত হতে গোপন রাখে। এ ঘটনাটি কি ছহীহ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ