উত্তর : অবশ্যই তওবা করার সুযোগ আছে। আল্লাহ তা‘আলা খালিছ তওবার মাধ্যমে শিরকের মত ধ্বংসাত্মক, হত্যার মত মারাত্মক ও ব্যভিচারের মত জঘন্য গুনাহকেও ক্ষমা করার ঘোষণা করেছেন (সূরা আল-ফুরকান : ৬৮-৭০)। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, اَلتَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ كَمَنْ لَا ذَنْبَ لَهُ ‘গুনাহ থেকে তওবাহকারী নিষ্পাপ ব্যক্তিতুল্য’ (ইবনু মাজাহ, হা/৪২৫০, সনদ হাসান)। তওবাহ কবুলের জন্য তিনটি শর্ত রয়েছে। যেমন, (১) পাপকে সম্পূর্ণরূপে বর্জন করতে হবে, (২) কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত ও লজ্জিত হতে হবে এবং (৩) ঐ পাপ পুনরায় না করার দৃঢ় সংকল্প করতে হবে। সুতরাং যদি এর মধ্যে একটি শর্তও বিলুপ্ত হয়, তাহলে সেই তওবাহ বিশুদ্ধ হবে না। পক্ষান্তরে যদি সেই পাপ মানুষের অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত হয়, তাহলে তা কবুলের জন্য চারটি শর্ত আছে। উপরিউক্ত তিনটি এবং চতুর্থ শর্ত হল- অধিকারীর অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। যদি অবৈধ পন্থায় কারো মাল বা অন্য কিছু নিয়ে থাকে, সেটাও ফিরিয়ে দিতে হবে’ (রিয়াযুছ ছালিহীন, পৃ. ১৪-২২ ‘তওবাহ’ অনুচ্ছেদ)।
উল্লেখ্য যে, হত্যা যোগ্য পাপ যেমন কোন বিবাহিত পুরুষ ব্যভিচার করলে তার শাস্তি রজম বা মৃত্যুদণ্ড (ছহীহ বুখারী, হা/৫২৭০-৫২৭১), কোন অবিবাহিত পুরুষ ব্যভিচার করলে তার শাস্তি একশ’ বেত্রাঘাত এবং এক বছরের জন্য নির্বাসন (সূরা আন-নূর : ২; ছহীহ মুসলিম, হা/১৬৯০) এবং যারা মুরতাদ বা ধর্মত্যাগী, যারা আল্লাহদ্রোহী বা ইসলাম বিদ্বেষী তাদেরও শাস্তি মৃত্যুদণ্ড (ছহীহ বুখারী, হা/৬৯২২, ৬৯২৩)।
উক্ত গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তিদের ইসলামী শরী‘আহ অনুযায়ী মুসলিম শাসকের নির্দেশে হত্যা করা অনুমোদিত। কিন্তু ইসলামী শাসকের অনুমতি ব্যতীত কোন পাপের শাস্তি স্বরূপ কাউকে হত্যা করা নিষিদ্ধ (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৭-২২; তাফসীরে কুরতুবী, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৫৬)। যেহেতু আমাদের দেশে ইসলামী শাসক নেই। তাই হদ্দ (দণ্ড বা শাস্তি) প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভবপর নয়। এক্ষেত্রে গুনাহগার ব্যক্তি দুনিয়াবী তুচ্ছ শাস্তি থেকে পরিত্রাণ পেলেও কিন্তু পরকালের ভয়াবহ শাস্তি থেকে রক্ষা পাবে না। তাই পরকালের শাস্তি থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহ তা‘আলার নিকট একনিষ্ঠভাবে তওবাহ ও ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হবে।
প্রশ্নকারী : মাশরোফ শাহরিন, জামালপুর।