উত্তর : নিয়মতান্ত্রিকভাবে যেকোন সৎ আমল করলে তার সুফল অবশ্যই পাওয়া যাবে। হালাল রিযিক বৃদ্ধির আমলসমূহ হল,
১. ঈমান ও তাক্বওয়া : আল্লাহ তা‘আলার উপর পূর্ণাঙ্গ ঈমান ও দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা এবং আল্লাহভীতির পোশাক পরিধান করা। ফলস্বরূপ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর জন্য নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের বারাকাতের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করে দেবেন (সূরা আল-আ‘রাফ : ৯৬; সূরা আত-ত্বালাক্ব : ২-৩)।
২. অধিকহারে তওবাহ এবং ইস্তিগফার করা : তওবাহ অর্থ পাপ থেকে প্রত্যাবর্তন করা এবং গুনাহের কাজকে বর্জন করা। আর ইস্তিগফার অর্থ কৃত পাপের জন্য আল্লাহ তা‘আলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। ফলস্বরূপ আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে উত্তম জীবন সামগ্রী দান করবেন (সূরা হূদ : ৩ ও ৫২; সূরা নূহ : ১০-১২)।
৩. তাওয়াক্কুল ‘আলাল্লাহ : আল্লাহ তা‘আলার উপর পূর্ণাঙ্গ ভরসা ও আস্থা রাখা। কেননা একমাত্র তিনিই রুযির একচ্ছত্র মালিক সেমর্মে দৃঢ় বিশ্বাস রাখা। ফলস্বরূপ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রিযিকের দায়ভার গ্রহণ করবেন (সূরা আত-ত্বালাক্ব : ৩; তিরমিযী, হা/২৩৪৪; ইবনু মাজাহ, হা/৪১৬৪, সনদ ছহীহ)।
৪. বেশি বেশি আল্লাহ তা‘আলার যিকির-আযকার করা : ফলস্বরূপ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রুযিতে প্রশস্ততা দান করবেন (সূরা ত্বো-হা : ১২৪-১২৬)।
৫. আল্লাহ তা‘আলার শুকরিয়া আদায় করা বা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা : ফলস্বরূপ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রুযিতে বারাকাত দান করবেন (সূরা ইবরাহীম : ৭)।
৬. নিজের জীবনে, পরিবারে ও সমাজে দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করা এবং দ্বীনের উপর অটল থাকা : ফলস্বরূপ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর জন্য আসমান থেকে রুযি বর্ষণ করবেন (সূরা আল-মায়িদাহ : ৬৬; আল-জিন : ১৬; সূরা আল-ফুছছিলাত : ৩০-৩১)।
৭. বেশি বেশি হজ্জ ও ওমরাহ পালন করা : ফলস্বরূপ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর দারিদ্রতাকে দূরীভূত করবেন (তিরমিযী, হা/৮১০; ইবনু মাজাহ, হা/২৮৮৭, সনদ ছহীহ)।
৮. ইবাদতের জন্য সময় বের করা : ফলস্বরূপ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর অন্তরকে প্রাচুর্যে ভরে দেবেন এবং দারিদ্রতাকে প্রতিহত করবেন (তিরমিযী হা/২৪৬৬; ইবনু মাজাহ, হা/৪১০৭, সনদ ছহীহ)।
৯. কল্যাণ প্রাপ্তির জন্য বেশি বেশি দু‘আ করা : কেননা একমাত্র দু‘আই পারে ভাগ্যকে পরিবর্তন করতে (সূরা আল-গাফির : ৬০; সূরা আল-বাক্বারাহ : ১২৬; তিরমিযী, হা/২১৩৯, সনদ ছহীহ)।
১০. আল্লাহর রাস্তায় দান-ছাদাক্বাহ করা : ফলস্বরূপ আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে ও তাঁর সম্পদকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচিয়ে নেবেন (সূরা সাবা : ৩৯; সূরা আল-লাইল : ৫-১১; ছহীহ বুখারী, হা/৪৬৮৪, ৫৩৫২, ১৪৪২; ছহীহ মুসলিম হা/৯৯৩, ১০১০)।
১১. দুর্বল ও অসহায়ের প্রতি সহযোগিতা, সহানুভূতি, সমবেদনা ও সহমর্মিতা প্রদর্শন করা : কেননা দুর্বলদের ইখলাছ, ইবাদত ও দু‘আর কারণেই পৃথিবীবাসী এখনো রিযিকপ্রাপ্ত এবং সাহায্যপ্রাপ্ত হচ্ছে (সূরা আর-রহমান : ৬০; ছহীহ বুখারী, হা/২৮৯৬; নাসাঈ, হা/৩১৭৮)।
১২. আত্মীয়তার অধিকার রক্ষা করা এবং সুসম্পর্ক বজায় রাখা : ফলস্বরূপ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রুযিতে প্রশস্ততা দান করবেন (ছহীহ বুখারী, হা/২০৬৭, ৫৯৮৬; ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৫৭, তিরমিযী, হা/১৯৭৯)।
প্রশ্নকারী : রাহাত, মিরপুর-১০, ঢাকা।