উত্তর : সবকিছুতেই আল্লাহর উপস্থিতি বা আল্লাহর বিলীন হওয়াকে ‘ওয়াহদাতুল ওজূদ’ বলে। অর্থাৎ পৃথিবীর সবকিছুকেই আল্লাহর অংশ মনে করা (খালেদ ইবনু আব্দুল্লাহ, শারহুল আক্বীদাহ আত-ত্বাহাবিয়াহ, পৃঃ ৬)। তাই সবই আল্লাহ, আল্লাহ আরশে নন, বরং সর্বত্র ও সবকিছুতেই বিরাজমান। স্রষ্টা আর সৃষ্টি একই, কোন পার্থক্য নেই (নাঊযুবিল্লাহ)। এটা পরিষ্কার কুফরী আক্বীদা। পথভ্রষ্ট কথিত ছূফীরা উক্ত আক্বীদা পোষণ করে থাকে। বরং তারা মনে করে কেউ আল্লাহর মাঝে বিলীন হওয়ার মর্যাদা লাভ করলে, তাকে আর শরী‘আতের বিধি-বিধান পালন করতে হয় না (আল-ফিছাল ফিল মিলাল, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ১৪৩)।
দেওবন্দীদের আধ্যাত্মিক গুরু ইমদাদুল্লাহ (১৮১৪-১৮৯৬ খ্রি.) বলেন, ‘মা‘রেফতের অধিকারী ব্যক্তি সমগ্র পৃথিবীর উপর কর্তৃত্বশীল হয়। আল্লাহ তা‘আলার যে কোন রশ্মিকে নিজের জন্য ধরে নিতে পারে। আল্লাহর যে কোন গুণে ও ইচ্ছায় নিজেকে বিভূষিত করে তার প্রকাশ ঘটাতে পারে। যেহেতু তার মধ্যে আল্লাহর গুণাবলী বিদ্যমান এবং সে আল্লাহর চরিত্রে বিলীন’ (যিয়াউল কুলূব (উর্দূ), পৃ. ২৭-২৮; (বাংলা), পৃ. ৫১)। অন্য এক জায়গায় বলেন, ‘কোনরূপ আড়াল ছাড়াই সে আল্লাহকে দেখতে পাবে। আল্লাহকে সরাসরি প্রত্যক্ষ করার সে সুযোগ পাবে’ (যিয়াউল কুলূব (উর্দূ), পৃ. ৭ ও ২৫; (বাংলা), পৃ. ২০ ও ৪৪)। তিনি আরেক জায়গায় বলেন, ‘তাওহীদে জাতি হল এই যে, বিশ্বজগতের সবকিছুকে আল্লাহ বলে ধারণা করা’ (যিয়াউল কুলূব (উর্দূ), পৃ. ৩৫; (বাংলা), পৃ. ৬২)।
দেওবন্দী মতবাদে বিশ্বাসী ইলিয়াসী তাবলীগের লোকেরা উপমহাদেশে উক্ত আক্বীদা বেশী প্রচার করে থাকে। অথচ কেউ উক্ত কুফরী আক্বীদা পোষণ করলে তার ঈমান, আমল ও ইসলাম কিছুই থাকবে না (ফাতাওয়া লাজনাহ দায়েমাহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫১৬)। কারণ এর মাধ্যমে আল্লাহ্র মর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে এবং তাঁকে সৃষ্টির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অথচ আল্লাহ সবকিছুর স্রষ্টা। আল্লাহর বাণী, ‘আল্লাহ সবকিছুরই স্রষ্টা এবং তিনি সবকিছুর উপর কর্তৃত্বশীল’ (সূরা আয-যুমার : ৬২)। মূলত উক্ত বিশ্বাস হিন্দুদের সংস্কৃতি থেকে এসেছে। তারা সর্বেশ্বরবাদে বিশ্বাসী। অর্থাৎ তারা সবকিছুকেই ঈশ্বর মনে করে থাকে। আল্লাহ উক্ত আক্বীদা থেকে মুসলিম উম্মাহ্কে হেফাযত করুন-আমীন!!
প্রশ্নকারী : তাসনীম, বগুড়া।