উত্তর : শরী‘আতের দৃষ্টিতে অবাধ্য স্ত্রীকে নিম্নোক্ত পদ্ধতিতে সংশোধন করার চেষ্টা করতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর যখন তোমরা তাদের অবাধ্যতার আশঙ্কা কর, তখন তাদেরকে সদুপদেশ দাও, বিছানায় তাদেরকে ত্যাগ কর এবং তাদেরকে (মৃদ) প্রহার কর। এরপর যদি তারা তোমাদের আনুগত্য করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমুন্নত মহান’ (সূরা আন-নিসা : ৩৪)। উক্ত আয়াতের وَ اضۡرِبُوۡہُنَّ ‘এবং তাদেরকে প্রহার করবে’ এর ব্যাখ্যায় ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যদি উপদেশ প্রদান ও আলাদা রাখার পরও কোন কাজ না হয়, স্ত্রী সংশোধনের পথে ফিরে না আসে, তবে হালকা করে তাদেরকে প্রহার করবে’ (তাফসীরুল কুরআনিল ‘আযীম, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৯৫)।
বিদায় হজ্জের ঐতিহাসিক ভাষণে নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমরা স্ত্রীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর। কেননা আল্লাহর আমানতে তোমরা তাদেরকে গ্রহণ করেছ। আল্লাহর বাণী সাক্ষী রেখে তোমরা তাদের সাথে সহবাস করা বৈধ করেছ। তাদের উপর তোমাদের অধিকার হচ্ছে, তারা তোমাদের গৃহে এমন লোককে প্রবেশ করতে দিবে না, যাকে তোমরা পসন্দ কর না। কিন্তু তারা যদি নির্দেশ লঙ্ঘন করে এরূপ করে ফেলে তবে, তাদেরকে প্রহার কর। কিন্তু প্রহার যেন কঠিন ও কষ্টদায়ক না হয়। তোমাদের উপর তাদের অধিকার হচ্ছে, তোমরা সঠিকভাবে নিয়ম মাফিক তাদের খানা-পিনা ও কাপড়ের ব্যবস্থা করবে (ছহীহ মুসলিম, হা/১২১৮; ইবনু মাজাহ, হা/৩০৭৪; মিশকাত, হা/২৫৫৫)। উক্ত হাদীছের فَاضْرِبُوْهُنَّ ضَرْبًا غَيْرَ مُبَرِّحٍ-এর ব্যাখ্যায় আলেমগণ বলেছেন যে, উক্ত প্রহার এমন হালকা হবে যেন কঠিন ও কষ্টদায়ক না হয়, শরীরের কোন স্থানে দাগ না লাগে। যাতে করে সে শিষ্টাচার শিখতে পারে (শারহুন নববী আলা ছহীহ মুসলিম, ৮ম খণ্ড, পৃ. ১৮৩; উছায়মীন, মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল, ২৪তম খণ্ড, পৃ. ৪৮৩)। তবে মেসওয়াক বা অনুরূপ বস্তু দ্বারা প্রহার হতে হবে কথাটি সঠিক, যা ইবনু ‘আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেছেন (আল-জামি‘ঊ লি আহকামিল কুরআন, ৫ম খণ্ড, পৃ. ১৭৩; তাফসীরুল কুরআনিল ‘আযীম, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৯৫)।
প্রশ্নকারী : মামুন, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাগঞ্জ।