উত্তর : পবিত্র কুরআন আল্লাহ প্রেরিত সর্বশ্রেষ্ঠ মহা পবিত্র মর্যাদাপূর্ণ গ্রন্থ। তাই ওযূ অবস্থায় স্পর্শ করা উচিত। আর এটাই উত্তম (আবুদাঊদ হা/১৭, সনদ ছহীহ; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৮৩৪)। যদিও এ বক্তব্যের পক্ষে-বিপক্ষে দীর্ঘ আলোচনা রয়েছে। শায়খ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ)-কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, অধিকাংশ বিদ্বানের মতে কোন মুসলিমের জন্য ওযূ ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা জায়েয নেই। কারণ একটি হাদীছে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইয়ামানবাসীকে লক্ষ্য করে লিখেছিলেন ‘ওযূ ছাড়া কেউ যেন কুরআন স্পর্শ না করে’ (ছহীহ আল-জামে‘, হা/৭৭৮০; মুওয়াত্ত্বা মালেক, হা/৬৮০)।
ইবনু হাজার আসকালানী (রাহিমাহুল্লাহ) হাদীছ সম্পর্কে বলেন, ‘সনদগত দিক থেকে এবং প্রসিদ্ধির দিক থেকে এ হাদীছকে অধিকাংশ ফক্বিহ ছহীহ বলেছেন’ (তালখীছ, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৫৮)। ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ওযূ বিহীন ছালাত, তাওয়াফ, কুরআন স্পর্শ করা, যে পাতায় কুরআনের আয়াত লিখা আছে তা, কুরআনের বক্স এবং বোর্ড স্পর্শ করা যাবে না’ (মানহাজ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৬)। ইসলামী ফিক্বহ বিশ্বকোষে বলা হয়েছে- যে মুসহাফ তাফসীর সংশ্লিষ্ট বা অনুবাদ সংশ্লিষ্ট তা স্পর্শ করাতে কোন সমস্যা নেই (ফিক্বহ বিশ্বকোষ, ১৩তম খণ্ড, পৃ. ৯৭)।
শায়খ ছালেহ আল-উছায়মীন (রাহিমাহুল্লাহ) ওযূ বিহীন কুরআন স্পর্শের ব্যাপারে একই মন্তব্য করেছেন। তবে তাফসীর বা ব্যাখ্যা আছে এমন কুরআন স্পর্শ করা যাবে (শারহুল মুমতি’, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৬৭)। সঊদী আরবের সর্বোচ্চ ফাতাওয়াবোর্ড ‘লাজনাহ আদ-দায়েমা’ থেকেও একই ফাতাওয়া দেয়া হয়েছে। যার নাম কুরআন নয়, আরবী ভাষা ছাড়া অন্য ভাষায় লিখা এমন কপি বিনা ওযূতে স্পর্শ করা যাবে (ফাতাওয়া লাজনাহ আদ-দায়েমাহ, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ১৩৬)। তবে অপবিত্র অবস্থায় কোনভাবেই পবিত্র কুরআন স্পর্শ করা যাবে না (সূরা আল-ওয়াক্বিয়া : ৭৯)।
প্রশ্নকারী : মুমিন, টাঙ্গাইল।