বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৮ অপরাহ্ন
উত্তর : উক্ত বিশ্বাস সঠিক নয়। খানকা ব্যবসায়ীরা উক্ত ভ্রান্ত আক্বীদা সমাজে চালু রেখেছে। তারা কতিপয় হাদীছের অপব্যাখ্যা করে থাকে। যেমন- রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘নবীগণ তাদের কবরে জীবিত থেকে ছালাত আদায় করছেন’ (মুসনাদে বাযযার, হা/৬৮৮৮; মুসনাদে আবী ইয়ালা, হা/৩৪২৫; বায়হাক্বী, হায়াতুল আম্বিয়া, পৃ. ৩; সনদ ছহীহ, সিলসিলা ছহীহাহ, হা/৬২১)। অন্য হাদীছে বলেন, ‘মি‘রাজের রাত্রে আমি যখন লাল টিলার নিকট দিয়ে মূসা (আলাইহিস সালাম)-কে অতিক্রম করছিলাম, তখন তিনি তাঁর কবরে দাঁড়িয়ে ছালাত আদায় করছিলেন’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৭৫, ‘মর্যাদা’ অধ্যায়, ‘মূসা (আলাইহিস সালাম)-এর ফযীলত’ অনুচ্ছেদ-৪২)। ‘নিশ্চয় মহান আল্লাহ যমীনের উপর নবীগণের শরীরকে হারাম করে দিয়েছেন’ (আবূ দাঊদ, হা/১০৪৭ ও ১৫৩১; মিশকাত, হা/১৩৬১ ও ১৩৬৬)।

মূলত রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মারা গেছেন এটিই সঠিক আক্বীদা। আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে লক্ষ্য করে বলেন,

اِنَّکَ مَیِّتٌ وَّ  اِنَّہُمۡ  مَّیِّتُوۡنَ  -ثُمَّ  اِنَّکُمۡ  یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ عِنۡدَ رَبِّکُمۡ تَخۡتَصِمُوۡنَ.

‘আপনিও মারা যাবেন এবং তারাও মারা যাবে। অতঃপর ক্বিয়ামত দিবসে তোমরা পরস্পর তোমাদের প্রতিপালকের সামনে বাক-বিতণ্ডা  করবে’ (সূরা আয-যুমার : ৩০-৩১)। এছাড়াও এ ব্যাপারে অনেক আয়াত ও হাদীছ বিদ্যমান রয়েছে।

তবে উপরে বর্ণিত হাদীছগুলোও ছহীহ। কিন্তু তা বারযাখী জীবনের বিষয় অর্থাৎ দুনিয়াবী জীবন ও পরকালীন জীবনের মাঝের জীবন। দুনিয়াবী জীবনের সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। দুনিয়ার মানুষের কথা শুনতে পান না, উপকার বা ক্ষতিও করতে পারেন না। তাই কুরআন ও ছহীহ হাদীছে যেভাবে বর্ণিত হয়েছে, ঠিক সেভাবেই বিশ্বাস করতে হবে। কারণ এগুলো গায়েবের বিষয়। যেমন- রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মূসা (আলাইহিস সালাম)-কে কবরে ছালাত আদায় করতে দেখলেন কিন্তু একটু পরে ৬ষ্ঠ আসমানে দেখা হল (ছহীহ বুখারী, হা/৩৮৮৭; ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৭৫, মিশকাত, হা/৫৮৬২)। এরপর যখন ফিরে আসলেন, তখন বায়তুল মাক্বদেছে সকল নবী-রাসূল তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করলেন এবং তাঁর ইমামতিতে ছালাত আদায় করলেন (ছহীহ মুসলিম, হা/১৭২, ‘ঈমান’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৭৭)। সুতরাং এগুলোর কোন কল্পিত ব্যাখ্যা করা যাবে না।

দ্বিতীয়তঃ কবরে ছালাত আদায়ের বিষয়টি কেবল নবীদের সাথেই খাছ। অন্যদের ব্যাপারে নয়। কারণ মৃত্যুর পর কোন ইবাদত নেই। তাছাড়া কবরস্থানে ছালাত আদায় করা নিষেধ (ছহীহ বুখারী, হা/১৩৩০; মিশকাত, হা/৭১২)। অথচ তাঁরা সেখানে ছালাত আদায় করছেন। তাই এগুলো দুনিয়াবী বিষয়ের সাথে মিলানো যাবে না।

তৃতীয়তঃ সাধারণ মানুষকে কবরে রাখার পর লোকেরা যখন চলে আসে, তখনও মৃত ব্যক্তি তাদের পায়ের জুতার শব্দ শুনতে পায় (ছহীহ বুখারী, হা/১৩৩৮, ‘জানাযা’ অনুচ্ছেদ-৬৭; মিশকাত, হা/১২৬)। কিন্তু কুরআন-হাদীছ থেকে এর বেশী কিছু জানা যায় না। তাই যেভাবে বর্ণিত হয়েছে, সেভাবেই বিশ্বাস করতে হবে।

মূলত উক্ত বিষয়গুলো কোনটিই দুনিয়াবী জীবনের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। কারণ ছাহাবায়ে কেরাম উক্ত হাদীছগুলো জানা সত্ত্বেও কখনোই রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কবরের কাছে গিয়ে কোন কিছু চাননি কিংবা তাঁর কাছে কোন অভিযোগ করেননি এবং তাঁকে অসীলা মেনে দু‘আও করেননি। বরং দুর্ভিক্ষের কারণে তাঁরা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কবরের কাছে না গিয়ে তাঁর জীবিত চাচা আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর কাছে গিয়ে দু‘আ চেয়েছেন (ছহীহ বুখারী, হা/১০১০, ‘ইস্তিস্কা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৩)। কারণ কবরে যাওয়ার পর দুনিয়ার সাথে যেমন কোন সম্পর্ক থাকে না, তেমনি কারো কোন উপকার বা ক্ষতি করারও ক্ষমতা থাকে না।

তাই ‘হায়াতুন্নবী’ কথাটিও সঠিক নয়। বিনা পূঁজির ব্যবসা করার জন্য পীরপূজারী ও কবরপূজারীরা এই বাক্যটির  আমদানি করেছে। এছাড়া শিরকের ব্যবসাকে আরো জোরদার করার জন্য তথাকথিত পীর-ফকীর ও অলীরাও কবরে জীবিত আছে এবং মানুষের উপকার বা ক্ষতি করতে পারে বলে প্রচার করে থাকে। এগুলো সব ধর্মের নামে ভণ্ডামি। এ সমস্ত প্রতারণা থেকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।


প্রশ্নকারী : আব্দুল আযীয, বরিশাল।




প্রশ্ন (২৬) : শ্বশুর যদি কোন জিনিস ইচ্ছা করে দেয়, তাহলে সেটা নেয়া যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২০) : মানব সৃষ্টির ব্যাপারে আলোচনা করতে গিয়ে অনেকেই বলে থাকেন, আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করার পূর্বে জিন জাতিকে সমূলে ধ্বংস করেছেন। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২০) : রাসূলূল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সন্তান যদি তার পিতা-মাতার প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকায়, তখন আল্লাহ তা‘আলা তার প্রতিটি দৃষ্টির বিনিময়ে তার ‘আমল নামায় একটি কবুলযোগ্য হজ্জের ছওয়াব লিপিবদ্ধ করেন (বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৭৪৭৫; মিশকাত হা/৪৯৪৪; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৪৭২৭)। বর্ণনাটি কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২) : সূদি ব্যাংকে সকল প্রকার চাকুরী কি নিষিদ্ধ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৭) : একদিন মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে তার নাতি হুসাইন (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি বড় না আপনি বড়? তখন নবী (ﷺ) বললেন যে, ‘তিনি বড়’। তখন হুসাইন (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলল, ‘না, আমি বড়’। তখন নবী (ﷺ) জিজ্ঞেস করলেন, কীভাবে? তিনি বললেন, ‘আপনার পিতার নাম কী?’ নবী (ﷺ) বললেন, আব্দুল্লাহ। হোসাইন (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলল, ‘আমার বাবা আলী, যাকে আল্লাহর সিংহ বলা হয়েছে’। ...পরিশেষে নবী (ﷺ) বলেন, ‘হোসাইন তুমিই বড়’। উক্ত ঘটনাটি কি ছহীহ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২০) : ছালাতের মাঝে ভুলে এক পাশে সালাম দিলে, পরে মনে আসলে কী করণীয়? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৮) : জনৈক আলেম বলেন, রাসূল (ﷺ) ছালাতে যখন সিজদাহ থেকে দাঁড়াতেন তখনও হস্ত উত্তোলন করতেন। এমনকি প্রত্যেক উঠা বসায় তিনি এরূপ করতেন। তার দাবী কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৫) : ছিয়াম পালনকারীর শ্বাসকষ্ট উপশমকারী স্প্রে (ইনহেইলার বা পাফার) ব্যববারের বিধান কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২০) : অপবিত্র অবস্থায় অসুস্থতার কারণে তায়াম্মুম করে ছালাত আদায় করলে পরে গোসল করার সময় কি ফরয গোসলের নিয়ত করতে হবে? কনকনে ঠাণ্ডার কারণে ফরয গোসলে কষ্ট বোধ হলে শুধু ওযূ করে ছালাত আদায় করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৬) : মুনাজাতের পর মুখে হাত মাসাহ করা কি বৈধ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২০) : তিরমিযীতে একটি হাদীছ বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি কোন সন্তানহারা স্ত্রীলোককে সান্ত¡না দান করবে, তাকে জান্নাতে একটি ডোরা-কাটা কাপড় পরিধান করানো হবে’ (তিরমিযী, হা/১০৭৬)। হাদীছটি কি ছহীহ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৪) : ৪ রাকা‘আত ছালাতের ১ম বৈঠকে বসে আত্তাহিয়্যাতুর পর ভুল করে দরূদ পড়ার কারণে সহো সিজদা দিতে হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ