উত্তর : উক্ত বক্তব্য সঠিক নয়। কারণ প্রচলিত মাযহাবের উৎপত্তি হয়েছে ইমামগণের মৃত্যুর অনেক পরে। তাছাড়া রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যুর পূর্বেই ইসলাম পূর্ণতা লাভ করেছে। তাহলে রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও ছাহাবায়ে কেরামের ছালাত কি অসম্পূর্ণ ছিল? আর বিদগ্ধ ইমাম ও মুহাদ্দিছগণ নির্দিষ্ট কোন মাযহাবের অনুসারী ছিলেন না। এমনকি চার ইমামের কেউই নির্দিষ্ট কোন মাযহাবের অনুসারী ছিলেন না। সুতরাং উক্ত দাবি উদ্ভট ও মূর্খতাপূর্ণ। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, صَلُّوْا كَمَا رَأَيْتُمُوْنِىْ أُصَلِّىْ ‘তোমরা ছালাত আদায় কর সেভাবেই যেভাবে তোমরা আমাকে দেখছ’ (ছহীহ বুখারী, হা/৬৩১)। এই হাদীছ ছালাত আদায়ের স্পষ্ট একটি নীতিমালা। আর এ মর্মে বিশ্বাস করতে হবে যে, কুরআন-সুন্নাহতেই সকল সমস্যার সমাধান মওজুদ আছে। এমতাবস্থায় মুক্তাদীরা তাকবীর নিঃশব্দেই দিবে। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অসুস্থতার সময় যখন জামা‘আতে গেলেন আবূ বকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তখন মুকাব্বির হলেন। অতঃপর বাকী ছাহাবীরা আবূ বকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর তাকবীর শুনে বিধানগুলো আদায় করেন (ছহীহ মুসলিম, হা/৪১৩)। যদি সবাই তাকবীর শব্দ করে বলত, তাহলে আবূ বকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর তাকবীরের কথা ভিন্নভাবে উল্লেখ করার প্রয়োজন ছিল না। আরো একটি বিষয় জানা প্রয়োজন যে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, أَمَا إِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا قَامَ فِى الصَّلَاةِ فَإِنَّهُ يُنَاجِىْ رَبَّهُ فَلْيَعْلَمْ أَحَدُكُمْ مَا يُنَاجِىْ رَبَّهُ وَلَا يَجْهَرْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَعْضٍ بِالْقِرَاءَةِ فِى الصَّلَاةِ ‘মুছল্লী যখন ছালাতে দাঁড়ায়, তখন আল্লাহর সাথে কথোপকথনে লিপ্ত হয়। সুতরাং তোমরা পরস্পরে কুরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে একজনের শব্দ আরেকজনের শব্দের সাথে মিলিয়ে দিও না’ (মুসনাদে আহমাদ, হা/৪৯২৮)। শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়া (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘সকল ইমামদের ঐকমত্যে জামা‘আতে ইমাম স্বশব্দে তাকবীর দেবে এবং মুক্তাদী নিঃশব্দে তাকবীর দেবে’ (মাজম্ঊূল ফাতাওয়া, ২৩ তম খণ্ড, পৃ. ৪০২)।
প্রশ্নকারী : আহমাদ বিন আক্কাছ, সিলেট।