উত্তর : রামাযান মাসের ক্বাযা ছিয়াম যত দ্রুত সম্ভব আদায় করে নেয়া উচিত। কেননা আল্লাহ্ তা‘আলা মুমিনদের বৈশিষ্ট্য আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, اُولٰٓئِکَ یُسٰرِعُوۡنَ فِی الۡخَیۡرٰتِ وَ ہُمۡ لَہَا سٰبِقُوۡنَ ‘তারাই কল্যাণকর কাজ দ্রুত সম্পাদন করে এবং তারাই তার প্রতি অগ্রগামী হয়’ (সূরা আল-মুমিনূন : ৬১)। তবে আগামী রামাযান আগমনের পূর্বেই অর্থাৎ শা‘বান মাস পর্যন্ত বছরের যে কোন দিনে করা জায়েয (আল-হিদায়াহ, ১/১২৭ পৃ.; বাদায়িউছ ছানায়ী, ২/১০৪; ফাৎহুল ক্বাদীর, ২/৩৫৫; আহকামুল কুরআন, ১/১৪৭; আল-মাজমূঊ, ৬/৩৬৫; আল-ইনছাফ, ৩/৩৩৪ পৃ.)।
ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) ছিয়াম অধ্যায়ে, (بَاب مَتَى يُقْضَى قَضَاءُ رَمَضَانَ) রামাযানের ক্বাযা কখন আদায় করতে হবে? নামে একটি অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন (৩০/৪০)। অতঃপর তিনি নিম্নোক্ত হাদীছটি বর্ণনা করেন। আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন,
كَانَ يَكُوْنُ عَلَيَّ الصَّوْمُ مِنْ رَمَضَانَ فَمَا أَسْتَطِيعُ أَنْ أَقْضِيَ إِلَّا فِيْ شَعْبَانَ قَالَ يَحْيَى الشُّغْلُ مِنْ النَّبِيِّ أَوْ بِالنَّبِيِّ ﷺ
‘আমার উপর রামাযানের যে ক্বাযা ছিয়াম থাকতো তা পরবর্তী শা‘বান ব্যতীত আমি আদায় করার সুযোগ পেতাম না। ইয়াহ্ইয়া (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, নবী (ﷺ)-এর ব্যস্ততার কারণে অথবা নবী (ﷺ)-এর সঙ্গে ব্যস্ত থাকার কারণে’। অন্য বর্ণনায় এসেছে, আমাদের কেউ (ঋতুস্রাব, প্রসবোত্তর স্রাব ইত্যাদি কারণে) রামাযান মাসের ছিয়াম পালন করতে পারত না, অতঃপর তার ঐ ক্বাযা আদায় করার সুযোগ পাওয়ার পূর্বেই শা‘বান মাস এসে যেত’ (ছহীহ বুখারী, হা/১৯৫০; ছহীহ মুসলিম, হা/১১৪৬; নাসাঈ, হা/২১৭৮, ২৩১৯; আবূ দাঊদ, হা/২৩৯৯; তিরমিযী, হা/৭৮৩; ইবনু মাজাহ, হা/১৬৬৯)।
শায়খ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এখানে আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর বাহ্যিক উক্তি থেকে এ কথাই পরিস্ফুটিত হয় যে, তাঁর ব্যস্ততা না থাকলে ছুটে যাওয়া ছিয়াম সত্বরই ক্বাযা করতেন। এ থেকে বুঝা যায় যে, যার কোন সমস্যা-অসুবিধা নেই, তার জন্য দেরী না করে তাড়াতাড়ি ক্বাযা আদায় করে নেয়াই অধিক উত্তম’ (তামামুল মিন্নাহ, পৃ. ৪২২)।
প্রশ্নকারী : আশরাফ, যশোর।