উত্তর : ইসলাম ও মুসলিমের সঙ্গে শত্রুতায় লিপ্ত নয় এমন সেক্যুলারদের সঙ্গে স্বাভাবিক সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখার অনুমতি ইসলামী শরী‘আত দিয়েছে। যেমন, সুখে-দুঃখে তাদের পাশে থাকা, দুর্দিনে সহযোগিতা করা ইত্যাদি। আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, এক ইহুদি বালক নবী (ﷺ)-এর খিদমত করত। সে একবার অসুস্থ হয়ে পড়লে নবী (ﷺ) তাকে দেখতে এলেন। তিনি তার মাথার কাছে বসে তাকে বললেন, তুমি ইসলাম গ্রহণ করো। সে তখন তার পিতার দিকে তাকাল। তিনি তার নিকটেই ছিলেন। পিতা বললেন, আবুল কাসেমের কথা মেনে নাও। অতঃপর সে ইসলাম গ্রহণ করল। নবী (ﷺ) সেখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় বললেন, যাবতীয় প্রশংসা সে আল্লাহর, যিনি তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিলেন (ছহীহ বুখারী, হা/১৩৫৬)। উল্লিখিত হাদীছের আলোকে আলেমগণ বলেন, অমুসলিমদের সঙ্গে সামাজিক সম্পর্কের ভিত্তি দ্বীনি কল্যাণ হওয়া উত্তম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অমুসলিমদের সঙ্গে সামাজিক সম্পর্ক রক্ষা করেননি; বরং বহু ক্ষেত্রে তিনি ধৈর্য, শালীনতা ও সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। শরী‘আতের গণ্ডির মধ্যে থেকে অমুসলিমদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করার অনুমতিও দিয়েছে ইসলাম। আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একজন ইহুদীর কাছ থেকে বাকিতে খাবার কিনেছিলেন এবং লোহার বর্ম তার কাছে বন্ধক রেখেছিলেন’ (ছহীহ বুখারী, হা/২২৫১)।
রাসূল (ﷺ) স্বয়ং অমুসলিমদের সাথেও সম্পর্ক ভালো রেখেছেন। চলাফেরা, লেনদেন করেছেন। এমনকি ছাহাবায়ে কেরামও লেনদেন, চলাফেরা করেছেন। তবে তাদের সাথে সম্পর্ক রাখতে গিয়ে যদি দ্বীনের ক্ষতি হয়, তাহলে তাদের সাথে সম্পর্ক রাখা যাবে না। তাহলে মুসলিমদের সাথে মুসলিমকে তো অবশ্যই ভালো সম্পর্ক রাখতে হবে। মুসলিম দেশে থেকেও যে সমস্ত মুসলিমরা সেক্যুলার রাজনীতির সমর্থন করে, তাদের সাথে চলাফেরা করে- আহলুল হাদীছ মুসলিমগণ মুসলিম ভাই হিসাবে তাদের সাথে সাথে চলাফেরা করবে। রাসূল (ﷺ) বলেন, ‘একজন মুসলিম আরেকজন মুসলিমের ভাই’ (ছহীহ বুখারী, হা/২৪৪২; ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৮০)। সেই হিসাবে সেক্যুলার রাজনীতির সমর্থক বা তাদের সাথে চলাফেরা করে এমন মুসলিম ভাইদেরকে আমরা সঠিক বিষয়টি বুঝাবো। তাদেরকে দ্বীনের সঠিক বুঝটা তাবলীগ করবো। তাদের সাথে সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একজন মুসলিমের যতটুকু অধিকার থাকে ততটুকুই তাদেরকে দিতে হবে। যদি প্রতিবেশী হয় তাহলে প্রতিবেশীর যে হক আছে সেটা দিতে হবে। তাদের ভুলগুলো সংশোধনের নছীহত করতে হবে।
প্রশ্নকারী : সাপায়েত, মিরপুর-২, ঢাকা।