উত্তর : ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা, যাতে জীবনের সকল ক্ষেত্রে প্রতিটি বিষয়ের দিক নির্দেশনা মওজুদ রয়েছে। অর্থনীতির উপরেও রয়েছে মৌলনীতি। যেমন,
(১) পৃথিবীর সকল সম্পত্তির মালিক হলেন স্বয়ং আল্লাহ। তিনি ইচ্ছামত তাঁর বান্দাদের মধ্যে তা বণ্টন করেন (সূরা আশ-শূরা : ১২)।
(২) প্রাপ্ত সম্পদের ব্যাপারে জবাবদিহিতা থাকা (সূরা আল-আন‘আম : ১৬৫)।
(৩) জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকল মানুষের কল্যাণ সাধন করা (সূরা আল-ক্বাছাছ : ৭৭; ছহীহ বুখারী, হা/৫৯৯৭, ৬০১৩)।
(৪) সুবিচার ও ইনছাফ প্রতিষ্ঠা করা (সূরা আন-নিসা : ৫৮; সূরা আন-নাহল : ৯০)।
(৫) যাবতীয় যুল্ম ও নিবর্তনমূলক সকল পন্থা ও প্রক্রিয়া নিষিদ্ধ (সূরা আল-ক্বাছাছ : ৫-৯)।
(৬) সুনীতি প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতির উৎখাত করা (সূরা আল-হজ্জ : ৪১)।
(৭) জনগণের সহজ জীবন নিশ্চিত করা (সূরা আল-আ‘রাফ : ১৫৭)।
(৮) কৃপণতা, পূঞ্জীভূত করণ এবং অনুদপাদনশীল সঞ্চয় নিষিদ্ধ। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, لَا يَحْتَكِرُ إِلَّا خَاطِئٌ ‘পাপিষ্ঠ ব্যক্তি ছাড়া কেউ মওজুদ করে না’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১৬০৫; তিরমিযী, হা/১২৬৭; ইবনু মাজাহ, হা/২১৫৪)।
(৯) সম্পদের অপব্যবহার, অপব্যয় এবং অপচয় নিষিদ্ধ (সূরা বানী ইসরাঈল : ২৬-২৭; সূরা আল-আ‘রাফ : ৩১)।
(১০) ব্যয়ের ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন করা (সূরা আল-ফুরক্বান : ৬৭)।
(১১) বৈধ-অবৈধ সীমারেখা অনুসরণ করে অর্থ উপার্জন করা (সূরা আন-নিসা : ২৯)। যেমন ইসলামী শরী‘আত অর্থ উপার্জনের নিম্নোক্ত পদ্ধতিগুলোকে হারাম করেছে। ঘুষ দেয়া-নেয়া (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৮৮), চুরি-ডাকাতি (সূরা আল-মায়িদাহ : ৩৮), সম্পদ আত্মসাৎ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৮৩; সূরা আলে ‘ইমরান : ১৬১), ইয়াতীমের অর্থ ভক্ষণ করা (সূরা আন-নিসা : ১০), ওযনে কম করা (সূরা আল-মুতাফ্ফিফীন : ৩), চারিত্রিক নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী উপকরণ সমূহের ব্যবসা (সূরা আন-নূর : ১৯), বেশ্যাবৃত্তি ও দেহ বিক্রয় লব্ধ অর্থ (সূরা আন-নূর : ২ ও ৩৩), মদের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যবসা (সূরা আল-মায়িদাহ : ৯), জুয়া-লটারি, ভাগ্য গণনা ও জ্যোতিষীর ব্যবসা (সূরা আল-মায়িদাহ : ৯০), সূদ খাওয়া (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৭৫, ২৭৮-২৮০; সূরা আলে ‘ইমরান : ১৩০) ইত্যাদি।
(১২) ব্যক্তির সম্পদে সমাজের অধিকার স্বীকৃতি (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৭১)।
(১৩) যাকাত ও দান-ছাদাক্বাহ (সূরা আত-তাওবাহ : ৬০, ১০৩)। (১৪) সম্পদের যথাযথ বণ্টন (সূরা আল-হাশর : ৭)। (১৫) ব্যক্তি মালিকানার অধিকার স্বীকৃত (সূরা আন-নিসা : ৩২)।
(১৬) উত্তরাধিকার বিধান সমুন্নত রাখা (সূরা আন-নিসা : ১১-১৪)।
(১৭) কল্যাণকর দ্রব্যের সর্বাধিক উৎপাদন (সূরা আল-আ‘রাফ : ১৫৭)।
প্রশ্নকারী : যিয়াউর রহমান, সাতক্ষীরা।