উত্তর : এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে পড়ানো যাবে না। কারণ খ্রিস্টান মিশনারী স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করে লক্ষ লক্ষ মুসলিম তরুণ-তরুণী ঈমানহারা ও নাস্তিকে পরিণত হচ্ছে। আমাদের দেশে নাস্তিক্যবাদের আধিক্যের মুখ্য ও বুনিয়াদি কারণ-ই হল খ্রিস্টান মিশনারী স্কুল-কলেজ। যার উদাহরণ আমাদের সামনে-ই বিদ্যমান। সেই জন্য পিতা-মাতাদের উচিত সন্তানদের ভালো ইসলামিক প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নের ব্যবস্থা করা। যেখানে ঈমান ও দ্বীনের ক্ষতি হবে এমন কোন বিধর্মী ও অইসলামিক প্রতিষ্ঠানে ভর্তি না করা (ইসলাম ওয়েব, ফৎওয়া নং-১০৬৮১)।
শায়খ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এমন প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান যেখানে সন্তান ধর্মত্যাগী ও ঈমানহারা হতে পারে, সেখান থেকে সন্তান-সন্ততিদের বিরত রাখা প্রত্যেক পিতা-মাতার উপর অপরিহার্য কর্তব্য। কেননা ঈমান সবকিছুর-ই উপরে। সুশিক্ষার নামে ঈমান বিসর্জন কোন অবস্থাতেই জায়েয নয়’ (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১৪৫৩৫২)। আবূ হুরাইরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘প্রত্যেক নবজাতক শিশু ইসলামী ফিতরাতের (তাওহীদের) উপর জন্মগ্রহণ করে। অতঃপর তার পিতা-মাতা তাকে ইয়াহুদী এবং খ্রিষ্টান অথবা অগ্নিপূজারী রূপে গড়ে তোলে’ (ছহীহ বুখারী, হা/১৩৫৮, ১৩৫৯, ১৪৮৫, ৪৭৭৫, ৬৫৯৯; ছহীহ মুসলিম, হা/২৬৫৮; আবূ দাঊদ, হা/৪৭১৪; তিরমিযী, হা/২১৩৮)। তাই প্রাতিষ্ঠানিক ও পার্থিব জীবনের সফলতাকে তুচ্ছ করে আল্লাহভীতিতে সজাগ হতে হবে। পরকালে উত্তীর্ণ হওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করতে হবে।
তাছাড়া ক্রুশযুক্ত পোশাক পরিধান করা হারাম (আল-ইনসাফ, ১/৩৩৪ পৃ.; কাশ্শাফুল ক্বিনা‘, ১/২৮০ পৃ.)। ইমাম ইবনু হায্ম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘পোশাক-প্রসাধনী, অলংকার, সাজসজ্জার উপকরণ, সুশোভিতকরণ বা অন্যান্য কোন কিছুতেই ক্রুশ/ক্রসচিহ্ন অবশিষ্ট রাখা বৈধ নয়’ (আল-মুহাল্লা, ৭/৫১৬ পৃ.)। শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ছবিযুক্ত পোশাক ও অলংকার পরিধান করা জায়েয নয়। অনুরূপভাবে ক্রুশযুক্ত পোশাকও পরিধান করা নাজায়েয। কেননা এরমধ্যে খ্রিষ্টানদের সাদৃশ্য রয়েছে’ (ফাতাওয়া নূরুন আলাদ র্দাব ইবনে বায, ৭/২৮৮ পৃ.)।
শায়খ উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ছালাতের মধ্যে ও বাহিরে উভয়াবস্থাতেই ক্রুশযুক্ত পোশাক পরিধান করা হারাম’ (শারহু রিয়াযিছ ছালিহীন, ৪/৩০০ পৃ.)। আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ كَانَ لَا يَتْرُكُ فِيْ بَيْتِهِ شَيْئًا فِيْهِ تَصْلِيبٌ إِلَّا قَضَبَهُ ‘রাসূল (ﷺ) তাঁর ঘরে ক্রুশ চিহ্নযুক্ত কোন জিনিসই অবশিষ্ট রাখতেন না, বরং তিনি সেগুলোকে ছিঁড়ে বা ভেঙ্গে ফেলতেন’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫৯৫২; আবূ দাঊদ, হা/৪১৫১)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, لَمْ يَكُنْ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يَدَعُ فِيْ بَيْتِهِ ثَوْبًا فِيْهِ تَصْلِيْبٌ إِلَّا نَقَضَهُ ‘রাসূল (ﷺ) তাঁর ঘরে ক্রুশ চিহ্নযুক্ত কোন কাপড়ই রাখতেন না, বরং তিনি সেগুলোকে ছিঁড়ে ফেলতেন’ (আহমাদ, হা/২৪২৬১, ২৫৯৯৬, ২৬১৪২, সনদ ছহীহ)।
প্রশ্নকারী : গোলাম রাব্বী, বরিশাল।