শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১৭ পূর্বাহ্ন
উত্তর: প্রথমতঃ আহলে ইলম তথা বিদ্বানগণের ঐকমত্য অনুযায়ী তাফসীর, হাদীছ, ফিক্বহ বা অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থ ক্রয়-বিক্রয় করা জায়েয। কেননা এখানে বিক্রয় বস্তু হচ্ছে কাগজ, কালি এবং বইয়ের আবরণ (কভার)। জ্ঞান কখনো বিক্রয় করা যায় না (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৩২১৬৬৪)। ইমাম ইবনু হাযম (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ইমাম আবু হানীফা, ইমাম মালিক, ইমাম শাফিঈ ও আবূ সুলাইমান (রাহিমাহুমুল্লাহ) বলেছেন, ‘মুছহাফ (مُصْحَف) অর্থাৎ কুরআনের মূল অনুলিপি ক্রয়-বিক্রয় করা জায়েয। অনুরূপভাবে আরবী এবং অনারবী ভাষায় লিখিত অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থও বিক্রয় করা জায়েয। কেননা এখানে যা বিক্রয় করা হচ্ছে তা হল- কাগজ, কাগজের পাতা, লেখার কালি, চামড়ার কভার, ভূষণ ইত্যাদি। পক্ষান্তরে ইলম্ বা জ্ঞান বিক্রয় করা যায় না, কেননা তা দেহহীন’ (আল-মুহাল্লা, ৭/৪৪৪ পৃ.; আল-মাজমূঊ, ৯/২৫৩ পৃ.)।

দ্বিতীয়তঃ দুনিয়া উপার্জনের মাধ্যম হিসাবে যাকে ক্রয়-বিক্রয় করা ও অপবিত্র অবস্থায় স্পর্শ করা নিষেধ, তা হল- মুছহাফ বা মূল আরবী কুরআন (মাজমূঊল ফাতাওয়া ইবনি তাইমিয়্যাহ, ২১/৪৬০; মুগনী শারহুল কাবীর, ২/৭৫ পৃ.)। বিশুদ্ধ মতানুযায়ী মুছহাফ বা মূল আরবী কুরআন ব্যতীত অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থ‌‌‌ ক্রয়-বিক্রয় ও অপবিত্র অবস্থায় স্পর্শ করা নিষিদ্ধ নয়। সুতরাং কুরআনের আয়াত ও অনুবাদ সম্বলিত অন্যান্য ইসলামী গ্রন্থ, হাদীছের গ্রন্থ, তাফসীরের গ্রন্থ, সাধারণ যিকির-আযকার ও দু‘আ, দরূদের বই-পুস্তকসমূহ কিন্তু মুছহাফের অন্তর্ভুক্ত নয় (আয-যাখিরাহ, ১/৩৭৯; আল-ক্বাওয়ানিনুল ফিক্বহিয়্যাহ, পৃ. ২৫; আল-মাহাল্লা, ১/৯৪; আল-মাজমূঊ, ২/৩৫৬-৩৫৭; রাওযাতুত্ব ত্বালিবীন, ১/৮৬; মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়্যাহ, ২১/৪৬০ ও ২৬/১৭৯, ১৯১; আল-ইনছাফ, ১/২৪৯; ই’লামুল মুওয়াক্কিঈন, ৩/২৫; মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ৬/৩৬০; ফাতাওয়া নূরুন আলাদ্ দারব্ ইবনি উছাইমীন, ২১/১২৩; ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৪/২৩২ পৃ.)।

সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনার ভিত্তিতে আমরা বলতে পারি যে, যথাযোগ্য মর্যাদা ও সম্মান বজায় রেখে আল্লাহ তা‘আলার নাম, কুরআনের আয়াত বা অন্যান্য ধর্মীয় পাঠ্যপুস্তক ওজনে বিক্রি করা দোষনীয় নয়। কেননা এগুলো মুছহাফের অন্তর্ভুক্ত নয়। অনুরূপভাবে যদি কেউ এর দায়বদ্ধতা, যথাযোগ্য মর্যাদা ও সম্মান রক্ষা না করে বিক্রয় করে, তবুও সে কাফির হয়ে যাবে না। এর জন্য সে গুনাহগার হতে পারে। তবে যেহেতু এর দায়বদ্ধতা অনেক বেশি তাই পুরাতন ধর্মীয় গ্রন্থসমূহ বিক্রয় না করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া-ই উত্তম হবে। লক্ষণীয় বিষয় হল- আল্লাহর প্রতি ও তাঁর কিতাবের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা প্রত্যেকের উপর অপরিহার্য। 

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘কেউ আল্লাহর (দ্বীনের) প্রতীকসমূহের সম্মান করলে এটা তো তার হৃদয়ের সংযমশীলতারই বহিঃপ্রকাশ’ (সূরা আল-হাজ্জ: ৩২)। পক্ষান্তরে কেউ যদি দ্বীনকে নিয়ে উপহাস করে বা কুরআনকে নিয়ে বিদ্রুপ করে, তাহলে সে কাফির হয়ে যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আর আপনি তাদেরকে প্রশ্ন করলে অবশ্যই তারা বলবে, আমরা তো আলাপ-আলোচনা ও খেল-তামাশা করছিলাম। বলুন! তোমরা কি আল্লাহ, তাঁর আয়াতসমূহ ও তাঁর রাসূলকে বিদ্রুপ করছিলে?’ (সূরা আত-তাওবাহ: ৬৫)।


প্রশ্নকারী : বুশরা, ঢাকা।





প্রশ্ন (১১) : রামাযানের ক্বাযা বা ছুটে যাওয়া ছিয়াম কখন আদায় করতে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩) : মুসলিম বিদ্বেষী ও সাম্প্রদায়িক অমুসলিমদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৪০) : ফরয ছালাত ব্যতীত অন্যান্য ছালাত তথা নফল ছালাত জামা‘আতের সাথে পড়া যায় কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩) : যোহরের ছালাতের আউয়াল ওয়াক্ত কখন শুরু হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৭) :  জনৈক ইমাম বলেন, ক্বিয়ামতের দিন পৃথিবীর সকল মুয়াযযিন বেলাল (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর অনুসরণ করবেন এবং বেলাল (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। উক্ত বক্তব্যের দলীল আছে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৩) : সমাজের একশ্রেণীর মানুষ মনে করে যে, তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ পৃথক ছালাত। তাহাজ্জুদ ৮ রাক‘আত, আর তারাবীহ ২০ রাক‘আত। উক্ত দাবী কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৭) : জনৈক আলেম বলেন, কুরবানী দিতে অক্ষম ব্যক্তিগণ কুরবানীর খালেছ নিয়তে যিলহজ্জ মাসের চাঁদ ওঠার পর নখ ও চুল না কাটলে সে আল্লাহর নিকটে তা পূর্ণাঙ্গ কুরবানী হিসাবে গৃহীত হবে। তিনি দলীল হিসাবে মিশকাত হা/১৪৭৯ পেশ করেছেন। সেই সাথে এটাও বলেছেন যে, শু‘আইব আরনাঊত্ব (রাহিমাহুল্লাহ) অত্র হাদীছটিকে হাসান বলেছেন। তবে শায়খ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) অত্র হাদীছটিকে যঈফ বলেছেন। এখন আমরা দুই শায়খের মধ্যে কার তাহক্বীক্বকে প্রাধান্য দিব? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৮) : সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য মহিলা চোখের ভ্রƒ উঠাতে ও কাটতে পারবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৮) : সূরা ইয়াসীন ও ত্বা-হা পাঠের ফযীলত বর্ণনায় বলা হয় যে, আল্লাহ তা‘আলা আসমান ও যমীন সৃষ্টির এক হাযার বছর পূর্বে সূরা ‘ত্বা-হা’ ও ‘ইয়াসীন’ পাঠ করলেন। তখন ফেরেশতারা শুনে বললেন, ধন্য সেই জাতি, যাদের উপর এটা নাযিল হবে, ধন্য সেই পেট যে সেটা ধারণ করবে এবং ধন্য সেই মুখ যে সেটা উচ্চারণ করবে (দারেমী, হা/৩৪১৪; মিশকাত, হা/২১৪৮; বঙ্গানুবাদ মিশকাত, হা/২০৪৫, ৫/১৮ পৃ.)। বর্ণনাটি কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১০) : মক্কার হারাম এলাকার সীমানা কতটুকু? গোটা মক্কা কি হারামের অন্তর্ভুক্ত? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১) : আরবী নতুন বছর বা মাস শুরু হলে কোনো দু‘আ পড়তে হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৫) : আযানের সময় ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্’-এর জবাবে ‘ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম’ বলা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ