বুধবার, ০৪ Jun ২০২৫, ১২:৩৩ অপরাহ্ন
উত্তর: প্রথমতঃ আহলে ইলম তথা বিদ্বানগণের ঐকমত্য অনুযায়ী তাফসীর, হাদীছ, ফিক্বহ বা অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থ ক্রয়-বিক্রয় করা জায়েয। কেননা এখানে বিক্রয় বস্তু হচ্ছে কাগজ, কালি এবং বইয়ের আবরণ (কভার)। জ্ঞান কখনো বিক্রয় করা যায় না (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৩২১৬৬৪)। ইমাম ইবনু হাযম (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ইমাম আবু হানীফা, ইমাম মালিক, ইমাম শাফিঈ ও আবূ সুলাইমান (রাহিমাহুমুল্লাহ) বলেছেন, ‘মুছহাফ (مُصْحَف) অর্থাৎ কুরআনের মূল অনুলিপি ক্রয়-বিক্রয় করা জায়েয। অনুরূপভাবে আরবী এবং অনারবী ভাষায় লিখিত অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থও বিক্রয় করা জায়েয। কেননা এখানে যা বিক্রয় করা হচ্ছে তা হল- কাগজ, কাগজের পাতা, লেখার কালি, চামড়ার কভার, ভূষণ ইত্যাদি। পক্ষান্তরে ইলম্ বা জ্ঞান বিক্রয় করা যায় না, কেননা তা দেহহীন’ (আল-মুহাল্লা, ৭/৪৪৪ পৃ.; আল-মাজমূঊ, ৯/২৫৩ পৃ.)।

দ্বিতীয়তঃ দুনিয়া উপার্জনের মাধ্যম হিসাবে যাকে ক্রয়-বিক্রয় করা ও অপবিত্র অবস্থায় স্পর্শ করা নিষেধ, তা হল- মুছহাফ বা মূল আরবী কুরআন (মাজমূঊল ফাতাওয়া ইবনি তাইমিয়্যাহ, ২১/৪৬০; মুগনী শারহুল কাবীর, ২/৭৫ পৃ.)। বিশুদ্ধ মতানুযায়ী মুছহাফ বা মূল আরবী কুরআন ব্যতীত অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থ‌‌‌ ক্রয়-বিক্রয় ও অপবিত্র অবস্থায় স্পর্শ করা নিষিদ্ধ নয়। সুতরাং কুরআনের আয়াত ও অনুবাদ সম্বলিত অন্যান্য ইসলামী গ্রন্থ, হাদীছের গ্রন্থ, তাফসীরের গ্রন্থ, সাধারণ যিকির-আযকার ও দু‘আ, দরূদের বই-পুস্তকসমূহ কিন্তু মুছহাফের অন্তর্ভুক্ত নয় (আয-যাখিরাহ, ১/৩৭৯; আল-ক্বাওয়ানিনুল ফিক্বহিয়্যাহ, পৃ. ২৫; আল-মাহাল্লা, ১/৯৪; আল-মাজমূঊ, ২/৩৫৬-৩৫৭; রাওযাতুত্ব ত্বালিবীন, ১/৮৬; মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়্যাহ, ২১/৪৬০ ও ২৬/১৭৯, ১৯১; আল-ইনছাফ, ১/২৪৯; ই’লামুল মুওয়াক্কিঈন, ৩/২৫; মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ৬/৩৬০; ফাতাওয়া নূরুন আলাদ্ দারব্ ইবনি উছাইমীন, ২১/১২৩; ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৪/২৩২ পৃ.)।

সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনার ভিত্তিতে আমরা বলতে পারি যে, যথাযোগ্য মর্যাদা ও সম্মান বজায় রেখে আল্লাহ তা‘আলার নাম, কুরআনের আয়াত বা অন্যান্য ধর্মীয় পাঠ্যপুস্তক ওজনে বিক্রি করা দোষনীয় নয়। কেননা এগুলো মুছহাফের অন্তর্ভুক্ত নয়। অনুরূপভাবে যদি কেউ এর দায়বদ্ধতা, যথাযোগ্য মর্যাদা ও সম্মান রক্ষা না করে বিক্রয় করে, তবুও সে কাফির হয়ে যাবে না। এর জন্য সে গুনাহগার হতে পারে। তবে যেহেতু এর দায়বদ্ধতা অনেক বেশি তাই পুরাতন ধর্মীয় গ্রন্থসমূহ বিক্রয় না করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া-ই উত্তম হবে। লক্ষণীয় বিষয় হল- আল্লাহর প্রতি ও তাঁর কিতাবের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা প্রত্যেকের উপর অপরিহার্য। 

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘কেউ আল্লাহর (দ্বীনের) প্রতীকসমূহের সম্মান করলে এটা তো তার হৃদয়ের সংযমশীলতারই বহিঃপ্রকাশ’ (সূরা আল-হাজ্জ: ৩২)। পক্ষান্তরে কেউ যদি দ্বীনকে নিয়ে উপহাস করে বা কুরআনকে নিয়ে বিদ্রুপ করে, তাহলে সে কাফির হয়ে যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আর আপনি তাদেরকে প্রশ্ন করলে অবশ্যই তারা বলবে, আমরা তো আলাপ-আলোচনা ও খেল-তামাশা করছিলাম। বলুন! তোমরা কি আল্লাহ, তাঁর আয়াতসমূহ ও তাঁর রাসূলকে বিদ্রুপ করছিলে?’ (সূরা আত-তাওবাহ: ৬৫)।


প্রশ্নকারী : বুশরা, ঢাকা।





প্রশ্ন (১০) : জনৈকা মহিলার বাসায় প্রত্যেক জুমু‘আর দিন ৭০ বছর বয়স্ক একজন মসজিদের ইমাম ছাহেব এসে কুরআনের আলোচনা পেশ করেন। এভাবে মহিলার ইমাম আলোচনা করতে পারবেন কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৫) : জায়গা সংকুলান না হলে একই ঈদগাহে একাধিক জামা‘আত করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৫) : ‘ছালাতুর রাগায়েব’ পড়া কি জায়েয? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১০) : এশার ছালাতের জামা‘আত চলাকালীন শেষের দুই রাক‘আতে জামা‘আতে শামিল হলে ইমামের সালাম ফিরানোর পর মাসবূক ব্যক্তি কি পরের বাকি দুই রাক‘আত ছালাতে সূরা ফাতিহার পর অন্য কোন সূরা যোগ করবে, না-কি শুধু সূরা ফাতিহা পড়বে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৫) : নিম্নের হাদীছটি কি ছহীহ? لَا تَقْرَأِ الحَائِضُ وَلَا الجُنُبُ مِنَ القُرْآنِ شَيْئًا ‘ঋতুবতী নারী ও জুনুবী ব্যক্তি (যার ওপর গোসল ফরয) কুরআনের কিছুই পাঠ করবে না’। - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৯) : হিন্দু ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণের পর তার পরিবারেই জীবন-যাপন করছে। সে কি তার পিতা-মাতাকে বাবা-মা বলে সম্বোধন করতে পারবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৫) : ফজরের ওয়াক্ত পুরো সময় বায়ু বের হয় এমনকি মাঝে মধ্যে ওযূতেও বায়ু বের হয়। অন্য ওয়াক্তে মাঝে মাঝে এমনটি হয়। এখন উক্ত ব্যক্তি কি মা‘যূর? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২০) : নবী (ﷺ) জনৈক ছাহাবীর দাফন শেষে ফিরে আসছিলেন। তখন উক্ত ‘মাইয়েতের স্ত্রী’ তাঁকে খাওয়ার দাওয়াত দিলেন এবং রাসূল (ﷺ) দাওয়াত গ্রহণপূর্বক উক্ত মহিলার বাড়িতে গিয়েছিলেন। অতঃপর খাবার উপস্থিত করা হলে তিনি এবং উপস্থিত অন্যান্য লোকজন খাবার গ্রহণ করলেন। এর আলোকেই মাইয়েতকে কেন্দ্র করে খাবারের আয়োজন করা হয়। তাই উক্ত বর্ণনাটি কি ছহীহ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৩) : তারাবীহর ছালাতে কুরআন খতম করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৬) : আশূরার দিনে সংঘটিত হওয়া কোন্ কোন্ ঘটনা ছহীহ ও প্রমাণিত? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৯) : পুরুষ চিকিৎসক দ্বারা মহিলাদের চিকিৎসা করালে পাপ হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩১) : আল্লাহর আরশ বহনকারী ফেরেশতাদের নাম কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ