উত্তর: উল্লেখিত হাদীছটির কোন ভিত্তি আমরা নবী (ﷺ) থেকে জানি না। ইমাম গাযযালী (রাহিমাহুল্লাহ) ‘ইহইয়াউ উলূমুদ্দীন’ গ্রন্থে এ হাদীছকে আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর দিকে সম্বোন্ধিত করেছেন যে, তিনি বলেন, ‘কতক তেলাওয়াতকারীকে কুরআন লা‘নত করে’ (ইইইয়াউ উলূমুদ্দীন, ১/২৭৪ পৃ.)। সঊদী আরবের স্থায়ী কমিটি বলেন, ‘এটি মাইমূন ইবনু মিহরানের উক্তি। নবী (ﷺ)-এর হাদীছ নয়’ (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়েমাহ, ৩/২১৩ পৃ.)।
এর মর্ম হচ্ছে, এমন মুসলিমকে সতর্ক করা, যিনি কুরআন পড়েন; কিন্তু আমল করেন না। কারণ আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে এমন কিছু বান্দা রয়েছে যারা কুরআনের নিষেধাজ্ঞাগুলো অবগত হয়; যেমন সূদের নিষেধাজ্ঞা; এরপর সূদী কারবার করে। কিংবা যুলমের নিষেধাজ্ঞা; এরপর তারা যুলম করে কিংবা গীবত করার নিষেধাজ্ঞা; এরপর তারা গীবতে লিপ্ত হয়। এভাবে কুরআনে উদ্ধৃত আরও যে সব আদেশ ও নিষেধ রয়েছে সেগুলোর ক্ষেত্রেও। আল্লাহ্ই তাওফীকদাতা (ইসলাম সাওয়াল ওয়াল জাওয়াব, ফৎওয়া নং-২২৪০৩৫)।
শাইখ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ)-কে ‘কতক ক্বারীকে কুরআন লা‘নত করে’ এই হাদীছ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। কিভাবে কুরআন তার পাঠককে লা‘নত করে এবং কেন? তিনি জবাব দেন, ‘আমি নবী (ﷺ) থেকে এই হাদীছের সত্যতা জানি না। সুতরাং এর ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নেই। আর যদি ছহীহ সাব্যস্ত হয়, তাহলে অর্থ হবে- কুরআনে এমন কিছু রয়েছে যা পাঠকারীর নিন্দা করা ও লা‘নত করার দাবী করে। এ কারণে যে, সে কুরআন পড়ে কিন্তু কুরআনের নির্দেশগুলো লঙ্ঘন করে এবং নিষেধগুলোতে লিপ্ত হয়। আল্লাহর কিতাবে পড়ে; অথচ আল্লাহর কিতাবে এমন কিছু রয়েছে যা তাকে ও তার মত যারা রয়েছে তাদেরকে গালি দেয়ার দাবী করে। যেহেতু তারা আদেশগুলো লঙ্ঘন করে এবং নিষেধগুলোতে লিপ্ত হয়। এটাই এর নিকটতম মর্ম; যদি তা নবী (ﷺ) হতে ছহীহ সাব্যস্ত হয়। কিন্তু আমি নবী (ﷺ) থেকে এর সত্যতা জানি না’ (মাজমূঊ ফাতাওয়া বিন বায, ২৬/৬)।
প্রশ্নকারী : আনোয়ার, গোদাগাড়ী, রাজশাহী।