উত্তর : বিনা প্রয়োজনে কোন পরপুরুষের সঙ্গে নরম সুরে কথা বলা হারাম। কারণ এটি মুখের যিনা (ছহীহ মুসলিম, হা/২৬৫৭)। তবে হ্যাঁ, প্রয়োজনে শর্ত সাপেক্ষে কথা বলা জায়েয। যেমন কথা সংক্ষিপ্ত পরিসরে হবে (ছহীহ বুখারী, হা/৪১৪১)। হাসি-ঠাট্টা থেকে বিরত থাকবে, নয়নে নয়ন মিলাবে না, নরম ও মধুর সুরে কথা বলবে না (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১১৩৯৯৬)। পরপুরুষের সঙ্গে কথা বলার সময় নারীদের কথা বলার ধরণ কেমন হবে, সে সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
یٰنِسَآءَ النَّبِیِّ لَسۡتُنَّ کَاَحَدٍ مِّنَ النِّسَآءِ اِنِ اتَّقَیۡتُنَّ فَلَا تَخۡضَعۡنَ بِالۡقَوۡلِ فَیَطۡمَعَ الَّذِیۡ فِیۡ قَلۡبِہٖ مَرَضٌ وَّ قُلۡنَ قَوۡلًا مَّعۡرُوۡفًا
‘হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও, যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর তাহলে পর-পুরুষের সাথে কোমল কণ্ঠে এমনভাবে কথা বল না যাতে অন্তরে যার ব্যাধি রয়েছে সে প্রলুব্ধ হয় বরং তোমরা ন্যায়সঙ্গত কথা বলবে’ (সূরা আল-আহযাব: ৩২)। ইমাম ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘অর্থাৎ যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর তবে পরপুরুষের সাথে কোমল কণ্ঠে এমনভাবে কথা বল না, যাতে অন্তরে যার ব্যাধি আছে সে প্রলুব্ধ হয় এবং তোমরা ন্যায়সঙ্গত কথা বলবে। স্ত্রীলোকদের পরপুরুষের সাথে কোমল সুরে ও লোভনীয় ভঙ্গিতে কথা বলা নিষিদ্ধ। সুমিষ্ট ভাষায় ও নরম সুরে শুধু স্বামীর সাথে কথা বলা যেতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা যেরূপ নারী জাতির দেহ-বৈচিত্রে পুরুষের জন্য যৌন আকর্ষণ সৃষ্টি করেছেন, অনুরূপভাবে তিনি নারীদের কণ্ঠস্বরেও প্রকৃতিগতভাবে মন কেড়ে নেয়ার ক্ষমতা, কোমলতা ও মধুরতা রেখেছেন, যা পুরুষকে নিজের দিকে আকর্ষণ করতে থাকে। সুতরাং সেই কণ্ঠস্বর ব্যবহার করার ব্যাপারেও এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, পরপুরুষের সাথে বাক্যালাপের সময় ইচ্ছাপূর্বক এমন কণ্ঠ ব্যবহার করবে, যাতে কোমলতা ও মধুরতার পরিবর্তে সামান্য শক্ত ও কঠোরতা থাকে। যাতে ব্যাধিগ্রস্ত অন্তরবিশিষ্ট লোক কণ্ঠের কোমলতার কারণে তোমাদের দিকে আকৃষ্ট না হয়ে পড়ে এবং তাদের মনে কুবাসনার সঞ্চার না হয়। তবে এই কর্কশতা ও কঠোরতা শুধু কণ্ঠস্বরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে, অর্থাৎ মুখে এমন বাক্য আনবে না, যা অসঙ্গত ও সচ্চরিত্রতার পরিপন্থী (তাফসীরে ইবনে কাছীর, সূরা আল-আহযাবের ৩২ নং আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য)।
প্রশ্নকারী : রোদেলা, ঢাকা।