উত্তর : উক্ত কথা মিথ্যা। এর সত্যতা নেই। এমন কথা বলা বা বিশ্বাস করা যাবে না। তাছাড়া আল্লাহ তা‘আলার হস্ত বা অন্য যেকোন ছিফাতের সাথে কোন কিছুকে তুলনা করা হারাম। তাঁর ছিফাতকে ‘তাকয়ীফ’ (تَكْيِيف) অর্থাৎ রূপদান করা, আকৃতি প্রদান করা, সামঞ্জস্যবিধান করা অথবা ‘তামছীল’ (تَمْثِيل) অর্থাৎ উদাহরণ, দৃষ্টান্ত অথবা সাদৃশ্য স্থাপন করা নিষিদ্ধ। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, لَیۡسَ کَمِثۡلِہٖ شَیۡءٌ ۚ وَ ہُوَ السَّمِیۡعُ الۡبَصِیۡرُ ‘কোন কিছুই তাঁর সদৃশ নয়। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা’ (সূরা আশ-শূরা: ১১)। অন্যত্র তিনি বলেন, فَلَا تَضۡرِبُوۡا لِلّٰہِ الۡاَمۡثَالَ ‘সুতরাং তোমরা আল্লাহর সদৃশাবলী স্থির করো না’ (সূরা আন-নাহল: ৭৪)। এ সম্পর্কে ইমাম আবূ হানীফা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
وله يد ووجه و نفس ... فهو له صفات بلا كيف... وغضبه ورضاه صفتان من صفاته بلا كيف
‘আল্লাহ তা‘আলার হস্ত, মুখমণ্ডল ও আত্মা ... গুণাবলী রয়েছে, তবে এর ধরণ নির্ধারণ করা যাবে না। আর তাঁর গুনাবলী সমূহের মধ্যে দু’টি গুণাবলী হল- ক্রোধ এবং সন্তুষ্টি, তবে এগুলোর ধরণ ও প্রকৃতির কোন বর্ণনা দেয়া যাবে না’ (আল-ফিকহুল আকবার’ গ্রন্থের ব্যাখ্যা হিসাবে লিখিত মুল্লা আলী ক্বারী আল-হানাফী এর ‘শারহু কিতাবিল ফিক্বহিল আকবার, পৃ. ৫৮-৫৯)।
ইমাম মালিক (রাহিমাহুল্লাহ)-কে আল্লাহর বাণী- اَلرَّحۡمٰنُ عَلَی الۡعَرۡشِ اسۡتَوٰی ‘রহমান আরশের উপর ইসতাওয়া করেন। (আরোহণ করা, সমাসীন হওয়া, উপবেশন করা) এ আয়াতে বর্ণিত ‘ইসতাওয়া’ শব্দের অর্থ সম্পর্কে এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলে তিনি অপর কোন প্রতিশব্দ দিয়ে এ শব্দের ব্যাখ্যা না করে বলেন,
الاستواء معلوم والكيف مجهول، والإيمان به واجب، والسؤال عنه بدعة
‘ইসতাওয়ার অর্থ বোধগম্য, এর প্রকৃতি অজ্ঞাত, এর প্রতি ঈমান আনয়ন ওয়াজিব, এ সম্পর্কে প্রশ্ন করা বিদ‘আত’ (শারহুল আক্বীদাতিত ত্বাহাবিয়্যাহ, পৃ. ১২৮; তাফসীরুল খাযিন, ১/১০০ পৃ.)।
ইমাম শাফিঈ ও আহমাদ ইবনু হাম্বাল বলেন, ‘আল্লাহর গুণাবলী সমূহের প্রতি আমি ঈমান আনয়ন করি, এগুলো সত্য বলে বিশ্বাস করি। তবে এগুলোর আকৃতি-প্রকৃতি জানি না, এর কোন কিছুকে আমি প্রত্যাখ্যানও করি না’ (আব্দুল আযীয আল-মুহাম্মাদ আস-সালমান, পৃ. ২৪)।
প্রশ্নকারী : মুহাম্মাদ রনি ইসলাম, রাজশাহী।