বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০২:১৩ পূর্বাহ্ন

ইমাম মাহদী, দাজ্জাল ও ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর আগমন সংশয় নিরসন

-হাসিবুর রহমান বুখারী*


(১৬তম কিস্তি)

আল-মালাহিমুল কাবীরাহ বা মহাযুদ্ধ

ভূমিকা

মালহামাহ বা মহাযুদ্ধ সম্পর্কে জনৈক গণক বক্তা অসংখ্য ভিত্তিহীন উদ্ভট কথা বলেছেন। যেমন, ‘রাসুল (ﷺ) না-কি বলেছেন যে, এই যুদ্ধের নেতৃত্ব দেবে ইমামুল মাহদী এবং তাঁর নেতৃত্বে একটা মালহামা হতে যাচ্ছে। রাসূল (ﷺ) হাদীছে বলেছেন, যখন মদীনার গুরুত্ব কমে যাবে, তখন জেরুজালেমের গুরুত্ব বেড়ে যাবে। যেটা এখন হয়েছে। ঠিক তখনই দেখা দেবে মালহামা, অর্থাৎ মহাযুদ্ধ। এটা এমন একটা যুদ্ধ, যে বিষয়ে বিশ্ববাসীর কোন কল্পনাই নেই, এটা কত বড় যুদ্ধ হতে পারে"! ইত্যাদি ইত্যাদি। গণক বক্তা তার আরেক বক্তব্যে বলেছেন, ‘এবং নাবীজি বলেছেন, তাদের সাথে, ওই যে ওদের কথা বলছি। ওদের সাথে মুসলিমদের বিশাল যুদ্ধ হবে, বিশাল ব্যাটল। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কোন যুদ্ধ মানুষ কখনো দেখে নাই, এতবড়ো যুদ্ধ হতে যাচ্ছে। আল্লাহর রাসূল বলেছেন, এই যুদ্ধে মুসলিমদের হাল ধরবেন একজন ইমাম, তাঁর নাম ইমাম মাহদী। এটা কি আমি নতুন বলছি, না হাদীছের মধ্যেই আছে?’। বক্তা তার আরেক বক্তব্যে একেবারে স্ববিরোধী বক্তব্য দিয়ে বলেছেন, ‘শোনেন! যতক্ষণ পর্যন্ত এ বিশ্বে একটা বিশাল মালহামা না হচ্ছে মালহামা মানে মহাযুদ্ধ, পারমাণবিক যুদ্ধ; ততক্ষণ পর্যন্ত ইমামুল মাহদী আসবেন না। এটাই কনক্লুশন। পুরো কুরআন-হাদীছের আখিরুজ জামান সাবজেক্ট স্টাডি করে এই রেজাল্টটা আমি বলছি’।

প্রথমোক্ত বক্তব্য দু’টিতে দেখা যাচ্ছে, বক্তা হাদীছের নামে জালিয়াতি করে এবং নবী (ﷺ)-এর প্রতি মিথ্যারোপ করে বলেছেন, মহাযুদ্ধের নেতৃত্ব দেবেন ইমাম মাহদী। আর শেষোক্ত বক্তব্যে দেখা যাচ্ছে, বক্তা বলছেন, মহাযুদ্ধ না হওয়ার আগে ইমাম মাহদী আসবেন না! দু’টি বক্তব্যে স্পষ্ট স্ববিরোধিতা রয়েছে। স্ববিরোধী বক্তব্যদ্বয়ের মধ্যে কোন্টি সঠিক সেটি আমরা সংক্ষেপে আলোকপাত করব ইনশাআল্লাহ।

মালহামা পরিচিতি

শায়খ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, মালাহিম (مَلَاحِم) শব্দটি মালহামাহ (مَلْحَمَة) শব্দের বহুবচন। ‘মালহামাহ’ শব্দের অর্থ হল হত্যাকাণ্ড, তীব্র লড়াই, মাংসঘর, কসাইখানা, যব্হখানা ইত্যাদি। এর মূল উৎস অথবা ক্রিয়ামূল বা ক্রিয়াবিশেষ্য হল লাহমুন (لَحْمٌ) অর্থাৎ মাংস। মাল‌হামাহ বলতে বুঝায়: যুদ্ধক্ষেত্রে ঘটিত বিরাট ঘটনাকে। লাহমুনের নামে এর নামকরণ করার কারণ হল: এই যুদ্ধে বিপুল সংখ্যক হত্যাকৃত লাশ বা মাংস একত্রিত হবে। নবী (ﷺ)-এর অনেকগুলো উপনামের মধ্যে একটি নাম হল ‘নাবীয়্যুল মালহামাহ’। কেননা তাঁকে জিহাদ ও ক্বিতাল দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় প্রেরণ করা হয়েছে। নবী (ﷺ) সংবাদ দিয়েছেন যে, এই উম্মাতের বৈশিষ্ট্য হল, আল্লাহ তা‘আলা কখনো এই উম্মাতের উপর দু’টি তলোয়ার একত্রিত করবেন না। একটি শত্রু পক্ষের তলোয়ার আর একটি তাদের তলোয়ার। আওফ ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, لَنْ يَجْمَعَ اللهُ عَلَى هَذِهِ الْأُمَّةِ سَيْفَيْنِ، سَيْفًا مِنْهَا، وَسَيْفًا مِنْ عَدُوِّهَا ‘এই উম্মতের তরবারি আর এর শত্রুর তরবারি দু’টিকে আল্লাহ তা‘আলা কখনো এ উম্মতের উপর একত্র করবেন না’।[১]

অর্থাৎ মালহামাহ এবং ফিতনার সময় এই উম্মাতের কিছু লোক একে অপরের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হবে, তবে সে সময় কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা কোন কাফির সম্প্রদায়কে মুসলিমদের উপর চাপিয়ে দেবেন না। হয় সে সময় মুসলিমদের উপর কাফিরদের পক্ষ থেকে ফিতনাহ আসবে, আর না হয় মুসলিমরা আপোসের মধ্যে গৃহযুদ্ধে লিপ্ত হবে। দু’টি একই সঙ্গে সংঘটিত হবে না। নবী (ﷺ) ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে, আখিরী যামানায় উম্মাতে মুহাম্মাদীর উপর মালহামাহ নামক এক ধ্বংসাত্মক বিপদ আপতিত হবে। যা সংঘটিত হবে মুসলিম সম্প্রদায় এবং ইয়াহুদী-খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে। অন্যান্য জাতিরাও এই মহাযুদ্ধে শামিল হবে। প্রথমে মুসলিম ও খ্রিষ্টানরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে। অতঃপর মুসলিম এবং খ্রিষ্টানদের মধ্যে মালহামাহ্ সংঘটিত হবে। কিন্তু মালহামাহ সম্পর্কিত হাদীছের আলোকে জানতে পারা যায় যে, শেষ যামানায় মূল মালহামাহ সংঘটিত আমাদের মধ্যে এবং ইয়াহুদী-খ্রিষ্টানদের মধ্যে। এটিই হলো আসল মালহামাহ।

খ্রিষ্টানদের সঙ্গে মালহামাহ

খ্রিষ্টানদের সঙ্গে মালহামাহ সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলা অহীর মাধ্যমে সংবাদ দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ لَنۡ تَرۡضٰی عَنۡکَ الۡیَہُوۡدُ وَ لَا النَّصٰرٰی حَتّٰی تَتَّبِعَ مِلَّتَہُمۡ ‘আর ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানরা আপনার প্রতি কখনও সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না আপনি তাদের ধর্মাদর্শের অনুসরণ করেন’ (সূরা আল-বাক্বারাহ: ১২০)। অন্যত্র তিনি বলেন,

وَ لَا یَزَالُوۡنَ یُقَاتِلُوۡنَکُمۡ حَتّٰی یَرُدُّوۡکُمۡ عَنۡ دِیۡنِکُمۡ   اِنِ  اسۡتَطَاعُوۡا ؕ وَ مَنۡ یَّرۡتَدِدۡ مِنۡکُمۡ عَنۡ دِیۡنِہٖ فَیَمُتۡ وَ ہُوَ کَافِرٌ فَاُولٰٓئِکَ حَبِطَتۡ اَعۡمَالُہُمۡ  فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ ۚ وَ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ النَّارِ ۚ ہُمۡ   فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ

‘আর তারা সর্বদা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে, যে পর্যন্ত তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন থেকে ফিরিয়ে না দেয়, যদি তারা সক্ষম হয়। আর তোমাদের মধ্য থেকে যে কেউ নিজের দ্বীন থেকে ফিরে যাবে এবং কাফির হয়ে মারা যাবে, দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের আমলসমূহ নিস্ফল হয়ে যাবে। আর এরাই আগুনের অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে’ (সূরা আল-বাক্বারাহ: ২১৭)।

খ্রিষ্টানরা অনেক পূর্ব থেকেই মুসলিমদের সাথে যুদ্ধ করে আসছে। গোপনে রাতের অন্ধকারে ধোঁকা ও প্রতারণা দিয়ে অসংখ্য মুসলিমকে হত্যা করেছে। যেমন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার কারণে ফারওয়াহ ইবনে আমর আল-খুযামীকে হত্যা করা হয়েছিল। অনুরূপভাবে ৮ম হিজরী মোতাবেক ৬২৯ খ্রিষ্টাব্দে মুতার যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মাদীনার নিরাপত্তা ও শাম অঞ্চলে মুসলিমদের উপর খ্রিষ্টান শাসকদের অব্যাহত অত্যাচার দমনের উদ্দেশ্যে রাসূল (ﷺ) এই অভিযান প্রেরণ করেন। এটিই ছিল খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম যুদ্ধাভিযান।[২] যায়িদ বিন হারিছার নেতৃত্বে ৩০০০ সৈন্যের অত্র বাহিনী প্রেরিত হয়। পক্ষান্তরে বিরোধী রোমক গভর্ণর শুরাহবীল বিন আমর আল-গাসসানীর ছিল প্রায় ২ লাখ খ্রিষ্টান সৈন্যের এক বিশাল বাহিনী।[৩] বাইতুল মাকদিসের নিকটবর্তী মু‘তাহ নামক স্থানে সংঘটিত এই যুদ্ধে সেনাপতি যায়িদ বিন হারিছাহ্, অতঃপর জা‘ফর বিন আবু ত্বালিব, অতঃপর আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা পরপর তিনজন সেনাপতি শহীদ হলে সকলের পরামর্শে খালিদ বিন অলীদ সেনাপতি হন। অতঃপর তাঁর হাতে বিজয় অর্জিত হয়। তৎকালীন বিশ্বের সেরা পরাশক্তির বিরুদ্ধে স্বল্পসংখ্যক মুসলিম বাহিনীর এই বীরত্বপূর্ণ মুকাবিলায় পরাজিত হয়ে খ্রিষ্টান বিশ্ব যেমন ভয়ে চুপসে যায়, তেমনি আরব বিশ্ব হতচকিত হয়ে পড়ে। অনেকগুলো গোত্র ইসলাম ক্ববুল করে। অন্যদিকে রোম সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন আরব অঞ্চলে ও দূরবর্তী অঞ্চল সমূহে মুসলিম বিজয়ের সূচনা হয়।

অনুরূপভাবে ইয়ারমুকের যুদ্ধে মুসলিম বাহিনী খ্রিষ্টানদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল। ১৩ হিজরী মোতাবেক ৬৩৪ খ্রিষ্টাব্দে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী ইয়ারমুকের ময়দানে মুসলিম ও খ্রিষ্টান বাহিনীর মধ্যে ছয় দিনের এক সিদ্ধান্তকারী যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। যাতে মুসলিম বাহিনী ঐতিহাসিক বিজয় লাভ করে। ফলস্বরূপ এতদঞ্চল থেকে রোমক শাসনের পরিসমাপ্তি ঘটে এবং ইসলামী শাসনের সূচনা হয়। সিরিয়া, ইরাক্ব, ফিলিস্তীন, জর্ডানসহ মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ এলাকা ইসলামী খিলাফতের অধীনস্ত হয়ে যায়। পরবর্তীতে এই সমস্ত এলাকার সকল নাগরিক ইসলামী সাম্য ও ন্যায়বিচারে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম ক্ববুল করে। অদ্যাবধি এতদঞ্চলের সবাই মুসলিম। অতঃপর আগমন করে প্যালেস্টাইন উদ্ধারের জন্য খ্রিষ্টানদের ধর্মযুদ্ধ বা ক্রুসেড। মিশরের দমইয়াত শহরে, সিরিয়ার আলেপ্পো নগরী ও হোমস শহরে বাইতুল মাক্বদিসে এর প্রভাব পড়েছিল। অতঃপর তারা মুসলিম আন্দালুসে (আধুনিক স্পেন, পর্তুগাল ও ফ্রান্সে) অভিযান চালায়। উন্মুক্ত তরবারী নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। অতঃপর আসে তাতারীদের আক্রমণ। ক্রুসেড যুদ্ধ অব্যাহত ছিল। তারা ৪৯৩ খ্রিষ্টাব্দে বাইতুল মাক্বদিস বা জেরুজালেম দখল করেছিল। এরপর দ্বিতীয় ক্রুসেড সংঘটিত হয়। অতঃপর ধারাবাহিকভাবে ৫৮৬ খ্রি. তৃতীয় ক্রুসেড, ৬০০ খ্রি. চতুর্থ ক্রুসেড, ৬১৫ খ্রি. পঞ্চম ক্রুসেড, ৬২৬ খ্রি. ষষ্ঠ ক্রুসেড, ৬৪৭ খ্রি. সপ্তম ক্রুসেড, ৮৯৭ খ্রি. গ্রানাডা শহর বিধ্বংস হয়। এইভাবে সমগ্র মুসলিম বিশ্বে ক্রুসেড আক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। অতঃপর ২১৯ হিজরীতে শুরু হয় নেপোলিয়ান বোনাপার্টের আক্রমণ। অতঃপর আসে তৎকালীন ইউরোপের দু’টি শক্তিশালী দেশ ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের আক্রমণ। এরাই ইয়াহুদীদের জন্য স্বাধীন দেশের নামে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে এবং মুসলিম শহরগুলোকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খণ্ডে বিভক্ত করেছে।

অতএব বুঝা যাচ্ছে যে, আমাদের সঙ্গে খ্রিষ্টানদের যুদ্ধ অতি পরিচিত এবং অনেক দিনের পুরানো। তবে এই যুদ্ধ একটি মহাযুদ্ধের মাধ্যমে সমাপ্ত হবে, যে সম্পর্কে নবী (ﷺ) আমাদের সংবাদ দিয়েছেন।

ছহীহ হাদীছের আলোকে বিধ্বংসী মালহামাহ বা মহাযুদ্ধ

এ সম্পর্কে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। যেমন (১) আউফ ইবনে মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ‘আমি তাবুক যুদ্ধে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)-এর নিকট এলাম। এবং তাঁকে সালাম দিলাম। তিনি বললেন, ‘আউফ না-কি’? আমি বললাম, ‘জি’। তিনি বললেন, ‘এসো প্রবেশ করো’। তখন তিনি চামড়ার তৈরি একটি তাঁবুতে ছিলেন। তিনি বললেন, হে আউফ! ক্বিয়ামতের আগের ছয়টি নিদর্শন গণনা করে রাখো। আমার মৃত্যু, অতঃপর বাইতুল মাক্বদিস বিজয়, অতঃপর তোমাদের মধ্যে ঘটবে মহামারী, বকরীর পালের মহামারীর মত, সম্পদের প্রাচুর্য, এমনকি এক ব্যক্তিকে একশ’ দ্বীনার দেয়ার পরেও সে অসন্তুষ্ট থাকবে। অতঃপর এমন এক ফিতনাহ আসবে যা আরবের প্রতিটি ঘরে প্রবেশ করবে। অতঃপর যুদ্ধ বিরতির চুক্তি-যা তোমাদের ও বানী আছফার বা রোমীয় খ্রিষ্টানদের মধ্যে সম্পাদিত হবে। অতঃপর তারা বিশ্বাসঘাতকতা করবে এবং আশিটি পতাকা উড়িয়ে তোমাদের বিপক্ষে আসবে, প্রত্যেক পতাকার নিচে থাকবে বারো হাজার সৈন্য। সেদিন মুসলিম যোদ্ধাদের শিবির স্থাপন করা হবে ‘গূতা’ নামক শহরে, যা সিরিয়ার সর্বোত্তম শহর দামিশক্বের পাশে অবস্থিত।[৪]

(২) নবী (ﷺ)-এর ছাহাবী যু-মিখবার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি রাসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, অচিরেই তোমরা রোমানদের সঙ্গে সন্ধি করবে। অতঃপর তোমরা ও তারা একত্র হয়ে তোমাদের পশ্চাৎবর্তী একদল শত্রুর মোকাবিলা করবে। তোমরা তাতে বিজয়ী হবে, গানীমাত অর্জন করবে এবং নিরাপদে ফিরে আসবে। শেষে তোমরা টিলাযুক্ত একটি মাঠে যাত্রাবিরতি করবে। অতঃপর খ্রিষ্টানদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তি ক্রুশ উপরে উত্তোলন করে বলবে, ক্রুশ বিজয়ী হয়েছে। এতে মুসলিমদের মধ্যকার এক ব্যক্তি উত্তেজিত হয়ে তাকে হত্যা করবে। তখন রোমানরা চুক্তি ভঙ্গ করবে এবং মালহামাহ বা মহাযুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিবে।[৫] অর্থাৎ অচিরেই আমাদের ও খ্রিষ্টানদের মধ্যে মালহামাহ বা মহাযুদ্ধ সংঘটিত হবে। এর পূর্বে তাদের সঙ্গে একটি শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করা হবে। তখন আমরাও নিরাপদে থাকব এবং তারাও নিরাপদে থাকবে। আবূ দাঊদে বর্ণিত হাদীছের ভাষা অনুযায়ী ‘তোমরা ও তারা একত্র হয়ে তোমাদের পশ্চাৎবর্তী একদল শত্রুর মোকাবিলা করবে’। প্রশ্ন হল- ঐ শত্রু পক্ষ কারা? ভারত! চীন! না অন্য কেউ? অতঃপর বলা হয়েছে, ‘তোমরা তাতে বিজয়ী হবে, গানীমাত অর্জন করবে এবং নিরাপদে ফিরে আসবে। শেষে তোমরা টিলাযুক্ত একটি মাঠে যাত্রাবিরতি করবে’। এটি এমন একটি স্থান, যা খুবই প্রশস্ত, যেখানে প্রচুর বৃক্ষরাজি হয়েছে, অসংখ্য পশু সেখানে চরে বেড়ায়, (تُلُولٍ) বলতে বুঝায় এমন জায়গাকে যেখানকার ভূমিতে মাটি ও বালু একত্রিত হয়েছে। জায়গাটি হল, সিরিয়া ও তুর্কির সীমান্তবর্তী এলাকা। এখানেই মুসলিম সৈন্যবাহিনী আশ্রয় গ্রহণ করবে। আর এখান থেকেই মুসলিম ও খ্রিষ্টানদের মধ্যে মালহামাহ বা মহাযুদ্ধ সংঘটিত হবে। কেননা তারা এখানে মুসলিমদের সঙ্গে প্রতারণা করবে এবং শান্তিচুক্তি ভঙ্গ করবে এবং আশিটি পতাকা উড়িয়ে তোমাদের বিপক্ষে আসবে, প্রত্যেক পতাকার নীচে থাকবে বারো হাজার সৈন্য। কিভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করবে সেটিও পূর্বের হাদীছে বর্ণিত হয়েছে।[৬]

এর পরপরই ইয়াহুদীরা খ্রিষ্টানদের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হবে। উপরোক্ত হাদীছের অবশিষ্ট অংশ ‘মুসতাদরাকুল হাকীমে’ বর্ণিত হয়েছে। ‘অবশেষে তোমরা টিলাযুক্ত একটি প্রশস্ত ও সুজলা-সুফলা স্থানে অবতরণ করবে। সেখানে খ্রিষ্টানদের এক ব্যক্তি একটি ক্রুশ উঁচু করে বলবে, ক্রুশের বরকতে আমরা বিজয় লাভ করছি। তখন একজন মুসলিম প্রতিনিধি বলবেন, বরং আল্লাহ বিজয়ী করেছেন, বরং আল্লাহ বিজয়ী করেছেন, ক্রুশের কোন অবদান নেই। এইভাবে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা চলতে থাকবে, মুসলিম ও খ্রিষ্টানরা একে অপরের উপর তীক্ষ্ম কথার মাধ্যমে প্রতি উত্তর দিতে থাকবে, ক্রুশ বিজয়ী করেছে, আল্লাহ বিজয়ী করেছেন, ক্রুশ বিজয়ী করেছে, আল্লাহ বিজয়ী করেছেন। তখন তাদের নিকটবর্তী অবস্থান করা একজন মুসলিম ব্যক্তি ক্ষুদ্ধ হয়ে ক্রুশটি ভেঙ্গে ফেলবে। তখন খ্রিষ্টানরা ক্রুশ ভঙ্গকারী ব্যক্তির দিকে ধেয়ে আসবে এবং তাঁকে হত্যা করবে। তখন মুসলিমগণ সাথে সাথে আপন অস্ত্রসমূহ ধারণ করবেন এবং রোমের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে। অবশেষে আল্লাহ তা‘আলা তাঁদের সকলকে শাহাদাত দ্বারা সম্মানিত করবেন। সেদিন সেখানে যারাই উপস্থিত থাকবেন এবং রোমের সঙ্গে যুদ্ধ করবেন তাঁরা সকলেই শাহাদাত বরণ করবেন...। [৭]

(৩) আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত রোমীয় (সিরিয়ার অন্তর্গত) সেনাবাহিনী আ‘মাক অথবা দাবিক নহরের কাছে অবতীর্ণ না হবে। তখন তাদের মুকাবিলায় মদীনা হতে এ দুনিয়ার সর্বোত্তম মানুষের এক দল সৈন্য বের হবে। তারপর উভয় দল সারিবদ্ধভাবে দণ্ডায়মান হবার পর রোমীয়গণ বলবে, তোমরা ঐ সমস্ত লোকদের থেকে পৃথক হয়ে যাও, যারা আমাদের লোকেদেরকে বন্দী করেছে। আমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করব। তখন মুসলিমগণ বলবেন, আল্লাহর শপথ আমরা আমাদের ভাইদের থেকে কক্ষনো সম্পর্কচ্ছেদ করব না। পরিশেষে তাদের পরস্পর যুদ্ধ হবে। এ যুদ্ধে মুসলিমদের এক তৃতীয়াংশ সৈন্য পলায়ন করবে। আল্লাহ তা‘আলা কক্ষনো তাদের তাওবাহ গ্রহণ করবেন না। সৈন্যদের এক তৃতীয়াংশ নিহত হবে এবং তাঁরা হবে আল্লাহর কাছে শহীদদের মাঝে সর্বোত্তম শহীদ। আর সৈন্যদের অপর তৃতীয়াংশ বিজয়ী হবে। জীবনে আর কক্ষনো তাঁরা ফিতনায় আক্রান্ত হবেন না। তাঁরাই কুস্তুন্তুনিয়া বা কনস্টান্টিনোপল বিজয় করবেন।[৮]  এখানে ‘মদীনা’-এর ব্যাখ্যায় ‘মিশকাত’-এর ভাষ্যকার মোল্লা আলী ক্বারী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এ ব্যাপারে কয়েকটি মত পরিলক্ষিত হয়। (১) বলা হয়ে থাকে যে, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল ‘আলেপ্পো নগরী’। (২) বলা হয়ে থাকে যে, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, ‘সিরিয়ার রাজধানী দামিশক্ব’। তবে এর উদ্দেশ্য মদীনা মুনাওয়ারা নয়।[৯] উল্লেখ্য, যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করা কাবীরা গুনাহ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا  اِذَا لَقِیۡتُمُ  الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا  زَحۡفًا  فَلَا  تُوَلُّوۡہُمُ  الۡاَدۡبَارَ- وَ مَنۡ یُّوَلِّہِمۡ یَوۡمَئِذٍ دُبُرَہٗۤ  اِلَّا مُتَحَرِّفًا لِّقِتَالٍ اَوۡ مُتَحَیِّزًا اِلٰی فِئَۃٍ فَقَدۡ بَآءَ بِغَضَبٍ مِّنَ اللّٰہِ وَ مَاۡوٰىہُ جَہَنَّمُ ؕ وَ بِئۡسَ  الۡمَصِیۡرُ

হে মুমিনগণ! তোমরা যখন কাফির বাহিনীর সম্মুখীন হবে পরস্পর নিকটবর্তী অবস্থায়, তখন তোমরা তাদের সামনে পিঠ ফিরাবে না (অর্থাৎ পালিয়ে যাবে না), আর সেদিন যুদ্ধ কৌশল অবলম্বন কিংবা দলে যোগ দেয়া ছাড়া কেউ তাদেরকে পিঠ দেখালে সে তো আল্লাহ্‌র গজব নিয়েই ফিরল এবং তার আশ্রয় জাহান্নাম, আর তা কতই না নিকৃষ্ট ফিরে যাওয়ার স্থান (সূরা আল-আনফাল: ১৫-১৬)।

(৪) মুসতাওরিদ আল-কুরাশী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি আমর ইবনুল ‘আস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-এর নিকট বললেন, আমি রাসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি যে, রোমীয়দের সংখ্যা যখন সবচেয়ে বেশি হবে তখন ক্বিয়ামাত সংঘটিত হবে। এ কথা শোনা মাত্র আমর ইবনুল ‘আস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) তাকে বললেন, তুমি কী বলছো, একটু চিন্তা-ভাবনা করে বল। তিনি বললেন, রাসূল (ﷺ) হতে যা শুনেছি আমি তাই বর্ণনা করছি। তারপর আমর ইবনুল ‘আস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বললেন, তুমি যদি বল, তবে সত্যই বলছো। কেননা তাদের মধ্যে চারটি গুণ আছে। প্রথমতঃ ফিতনার সময় তারা সবচেয়ে বেশি ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে থাকে। দ্বিতীয়তঃ মুসীবাতের পর দ্রুত তাদের মধ্যে স্বাভাবিকতা ফিরে আসে। তৃতীয়তঃ যুদ্ধ থেকে পলায়নের পর সর্বপ্রথম তারা আক্রমণ করতে সক্ষম হয়। চতুর্থতঃ মিসকীন, ইয়াতীম ও দুর্বলের জন্য তারা সবচেয়ে বেশি শুভাকাক্সক্ষী। আর পঞ্চমটি আরো বেশি সুন্দর গুণ, সেটি হল- তারা শাসকবর্গের অত্যাচারকে অধিক প্রতিহত করে।[১০]

(৫) ইউসায়র বা উসায়র ইবনু জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, একবার কুফা নগরীতে লাল (উত্তপ্ত) ঝঞ্ঝা বায়ু প্রবাহিত হল। এ সময় এক ব্যক্তি কুফায় আসল। তার কথার ’মুদ্রাদোষ’ ছিল ’আলা’ হে আব্দুল্লাহ্ ইবনু মাসউদ! ক্বিয়ামত এসে গেছে। তিনি (আব্দুল্লাহ্ ইবনু মাসউদ) যেভাবে বসে ছিলেন সেভাবেই বসে রইলেন এবং বললেন, উত্তরাধিকারীদের সম্পদ বণ্টিত না হওয়া পর্যন্ত ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে না, এবং যতক্ষণ না মানুষেরা গনীমাতের বিষয়ে আনন্দ প্রকাশ না করবে। অতঃপর তিনি তার হস্ত দ্বারা সিরিয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে বললেন, আল্লাহর শত্রুরা সমবেত হবে মুসলিমদের সাথে লড়াই করার জন্য এবং মুসলিমগণও তাদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য সমবেত হবে। (এ কথা শুনে) আমি বললাম, আল্লাহর শত্রুরা বলতে আপনি কি রোমীয় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্য করছেন। তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ’ এবং তখন ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হবে। তখন মুসলিম সম্প্রদায় একটি দল অগ্রে প্রেরণ করবে, তারা মৃত্যুর জন্য সামনে অগ্রসর হবে। জয়লাভ করা ব্যতিরেকে তারা পেছনে ফিরবে না। এরপর পরস্পর তাদের মাঝে যুদ্ধ হবে। যুদ্ধ করতে করতে রাত্রী হয়ে যাবে। অতঃপর উভয় পক্ষের সৈন্য জয়লাভ করা ব্যতিরেকেই ফিরে চলে যাবে। যুদ্ধের জন্য মুসলিমদের যে দলটি অগ্রে এগিয়ে গিয়েছিল তারা সকলেই মৃত্যু বরণ করবে। অতঃপর পরবর্তী দিন মুসলিমগণ মৃত্যুর জন্য অপর একটি দল সামনে পাঠাবে। তারা বিজয়ী না হয়ে ফিরবে না। এদিনও পরস্পরের মধ্যে মারাত্মক যুদ্ধ হবে। পরিশেষে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। উভয় বাহিনী বিজয়লাভ করা ছাড়াই স্বীয় শিবিরে প্রত্যাবর্তন করবে। যে দলটি সামনে ছিল তারা সকলেই মারা যাবে। অতঃপর তৃতীয় দিন আবার মুসলিমগণ মৃত্যু বা বিজয়ের উদ্দেশে অপর একটি বাহিনী পাঠাবে। এ যুদ্ধ সন্ধ্যা পর্যন্ত চলতে থাকবে। পরিশেষে বিজয়লাভ ছাড়াই উভয় বাহিনী প্রত্যাবর্তন করবে। তবে মুসলিম বাহিনীর সামনের সেনাদলটি শাহীদ হয়ে যাবে। তারপর যুদ্ধের চতুর্থ দিনে অবশিষ্ট মুসলিমগণ সকলেই (খ্রিষ্টানদের সঙ্গে) যুদ্ধের জন্য সামনে এগিয়ে যাবে। সেদিন কাফিরদের উপর আল্লাহ তা‘আলা অকল্যাণ চক্র চাপিয়ে দিবেন। তারপর এমন যুদ্ধ হবে যা জীবনে কেউ দেখবে না অথবা যা জীবনে কেউ দেখেনি। পরিশেষে তাদের শরীরের উপর পাখী উড়তে থাকবে। পাখী তাদেরকে অতিক্রম করতে সক্ষম হবে না, এমতাবস্থায় তা (ক্লান্ত হয়ে) মাটিতে পড়ে নিহত হবে। একশ’ মানুষ বিশিষ্ট একটি গোত্রের মাত্র একজন লোক বেঁচে থাকবে। এমন সময় কেমন করে গানীমাতের সম্পদ নিয়ে লোকেরা আনন্দোৎসব করবে এবং কেমন করে উত্তরাধিকার সম্পদ ভাগ করা হবে।

এমতাবস্থায় মুসলিমগণ আরেকটি ভয়ানক বিপদের খবর শুনতে পাবে এবং এ মর্মে একটি শব্দ তাদের কাছে পৌঁছবে যে, দাজ্জাল তাদের পেছনে তাদের পরিবার-পরিজনের মধ্যে চলে এসেছে ...। [১১]

সুধী পাঠক! এখানে খ্রিষ্টানদের ভবিতব্য দুরাবস্থা এবং মুমিনদের আগত বিজয় সম্পর্কে সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। অচিরেই আখিরী যামানায় বিপুল সংখ্যক খ্রিষ্টান মুসলিমদের হাতে নিহত হবে। তাদের লাশে ভূপৃষ্ঠ ভরে যাবে। এমনকি কোন রুচিশীল ও সুগন্ধ প্রিয় পাখী তাদের লাশের দুর্গন্ধের কারণে পৃথিবীতে অবতরণ করতে পারবে না, ফলস্বরূপ আসমানে উড়তে থাকবে, উড়তে উড়তে এক সময় ক্লান্ত হয়ে পড়ে মারা যাবে। ইবনুল মুনযির (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, এখনো পর্যন্ত খ্রিষ্টানরা একত্রিত হতে শুরু করেনি এবং সেই পরিমাণ সৈনিকও ভূপৃষ্ঠে যুদ্ধ করছে না। এটি এমন একটি বিষয় যার সম্পর্ক ভবিষ্যতের সঙ্গে। এখানে সুসংবাদ ও ভীতি প্রদর্শন রয়েছে। এ হাদীছ এটিই প্রমাণিত করে যে, অমুসলিমদের সেনাবাহিনী অধিক সংখ্যক হওয়া সত্ত্বেও শেষ পরিনাম মুমিনদের জন্য সুখময় হবে’।[১২]

(ইনশাআল্লাহ চলবে)


* মুর্শিদাবাদ, ভারত।

তথ্যসূত্র :
[১]. আবূ দাঊদ, হা/৪৩০১; ছহীহুল জামি‘ হা/৫২২১।
[২]. সীরাহ ছহীহাহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৪৭০।
[৩]. ইবনু হিশাম, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩৭৫।
[৪]. ছহীহ বুখারী, হা/ ৩১৭৬; ইবনু মাজাহ, হা/৪০৪২, ৪০৯৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩৯৭১, ২৩৯৮৫, ২৩৯৯৬।
[৫]. আবূ দাঊদ, হা/২৭৬৭, ৪২৯২; ইবনু মাজাহ, হা/৪০৮৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৮২৫, ১৬৮২৬, ২৩১৫৭, ২৩৪৭৭।
[৬]. আবূ দাঊদ, হা/৪২৯২।
[৭]. মুসতাদরাকুল হাকীম, হা/৮৫১৮, ৮২৯৮; ছহীহুল জামি‘, হা/৩৬১২; মিশকাত, হা/৫৪২৮; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৬৭০৯; আল-মু‘জামুল কাবীর লিত্ব তবারানী, হা/৪১১২, ৪২৩১।
[৮]. ছহীহ মুসলিম হা/২৮৯৭; ছহীহুল জামি‘, হা/৭৪৩৩; আল-মুসতাদরাক লিল হাকিম, হা/৮৪৮৬; মিশকাত, হা/৫৪২১।
[৯]. মিরক্বাতুল মাফাতীহ, ১৫শ  খণ্ড, পৃ. ৪০০।
[১০]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৮৯৮।
[১১]. ছহীহ মুসলিম হা/২৮৯৯।
[১২]. ফাৎহুল বারী, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ২৭৮।





প্রসঙ্গসমূহ »: আক্বীদা বা বিশ্বাস
মাযহাবী গোঁড়ামি ও তার কুপ্রভাব (শেষ কিস্তি) - অনুবাদ : রিদওয়ান ওবাইদ
ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
ইসলামী পুনর্জাগরণের মূলনীতি (শেষ কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
ইসরাঈলি বর্বরতায় রক্তাক্ত মানবতা - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
ছয়টি মূলনীতির ব্যাখ্যা (৩য় কিস্তি) - অনুবাদ : আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল ক্বাদির
ফাযায়েলে কুরআন (৬ষ্ঠ কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
ছালাতের সঠিক সময় ও বিভ্রান্তি নিরসন (শেষ কিস্তি) - মাইনুল ইসলাম মঈন
ইমাম মাহদী, দাজ্জাল ও ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর আগমন সংশয় নিরসন (ত্রয়োদশ কিস্তি) - হাসিবুর রহমান বুখারী
কুরবানীর মাসায়েল - আল-ইখলাছ ডেস্ক
মসজিদ: ইসলামী সমাজের প্রাণকেন্দ্র (৩য় কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
মাযহাবী গোঁড়ামি ও তার কুপ্রভাব (৩য় কিস্তি) - অনুবাদ : রিদওয়ান ওবাইদ
সমকামীতার ভয়াবহতা ও তার অপকার - হাসিবুর রহমান বুখারী

ফেসবুক পেজ