উত্তর : এই হিল্লা প্রথা ব্যভিচার সমতুল্য। এটা নোংরা ও বিকৃত রুচির কাজ। পেটপূজারী কিছু মোল্লার কারণে ইসলামের বদনাম হচ্ছে। অথচ ইসলামে এর অস্তিত্ব নেই। (১) আলী ইবনু আবী ত্বালিব, ইবনে আব্বাস, ইবনে মাসঊদ ও আবূ হুরাইরা (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) বলেছেন, রাসূল (ﷺ) হিল্লাকারী এবং যার জন্য হিল্লা করা হয় উভয়কে অভিসম্পাত বা লা‘নত করেছেন (তিরমিযী, হা/১১১৯, ১১২০; আবূ দাঊদ, হা/২০৭৬, সনদ ছহীহ; ইরওয়াউল গালীল, ৬/৩০৮-৩০৯ পৃ.)। (২) ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, ‘রাসূল (ﷺ) অভিসম্পাত বা লা‘নত করেছেন সে সব লোককে, আর যে হিল্লা করে এবং যার জন্য হিল্লা করা হয়’ (নাসাঈ, হা/৩৪১৬, ৩৪২০, সনদ ছহীহ)। (৩) উক্ববাহ ইবনু আমির (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘আমি কি তোমাদের ভাড়াটে পাঠা সম্পর্কে অবহিত করব না? তাঁরা বললেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! তিনি বলেন, সে হল হিল্লাকারী। আল্লাহ হিল্লাকারী এবং যার জন্য হিল্লা করা হয় তাদের উভয়কে অভিসম্পাত বা লা‘নত করেছেন (ইবনু মাজাহ, হা/১৯৩৬; মুসতাদরাক আল-হাকিম, হা/২৮৪৩-২৮৪৪; সনদ হাসান, ছহীহুল জামি‘, হা/২৫৯৬)। (৪) ইবনু উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, ‘জনৈক ব্যক্তি ইবনু উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) -এর নিকট আগমন করে এবং এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে, যে তার স্ত্রীকে তিন ত্বালাক্ব দিয়েছে, অতঃপর তার এক ভাই কোন পরামর্শ ছাড়াই ত্বালাক্বপ্রাপ্তা নারীকে বিয়ে করে তার ভাইয়ের জন্য হালালাহ বা হিল্লা করার নিয়তে, এভাবে কি প্রথম স্বামীর জন্য স্ত্রী হালাল হবে? তিনি বললেন, না, পসন্দ ও আগ্রহের বিয়ে ব্যতীত হালাল হবে না, আমরা এটাকে রাসূল (ﷺ)-এর যুগে যিনা বা ব্যভিচার বিবেচনা করতাম’ (মুসতাদরাক আল-হাকিম, হা/২৮৪৫; ঊমদাতুত তাফসীর, ১/২৮৩ পৃ.; ইরওয়াউল গালীল, হা/১৮৯৮)। (৫) উমার ফারুক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হিল্লা সম্পর্কে বলেন, ‘আমার নিকট হিল্লাকারী এবং যার জন্য হিল্লা করা হয় তাদের পেশ করা হলে, আমি তাদেরকে ‘রজম’ বা প্রস্তরাঘাত করব’ (মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক, হা/৩৬১৯১; বায়হাক্বী, আস-সুনানুল কুবরা, হা/১৪১৯১; ইগাছাতুল লাহফান লি ইবনুল ক্বাইয়িম, ১/৪১১ পৃ., সনদ ছহীহ)।
তবে ত্বালাক্বপ্রাপ্তা নারীর ইদ্দত শেষ হওয়ার পর স্বেচ্ছায় আগ্রহ করে কোন পুরুষ যদি তাকে বিয়ে করে, ত্বালাক দেয়ার পরিকল্পনা অথবা প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ করার উদ্দেশ্য অথবা হিল্লার শর্ত বা নিয়ত ছাড়া, অতঃপর দ্বিতীয় স্বামী তার সাথে সহবাসে মিলিত হয় এবং পরবর্তীতে যদি দ্বিতীয় স্বামী তাকে ঘটনাচক্রে ত্বালাক্ব দেয় বা মারা যায়, সেক্ষেত্রে প্রথম স্বামী তাকে পুনরায় বিয়ে করতে পারবে (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৩০)। আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে রাসূল (ﷺ)-কে এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, যে তার স্ত্রীকে তিন ত্বালাক্ব দিয়েছে, ফলে সে অন্য পুরুষকে বিয়ে করে তার সাথে নির্জনবাস করে, অতঃপর সহবাস ব্যতীতই স্বামী তাকে ত্বালাক্ব দেয়, সে কি পূর্বের স্বামীর জন্য হালাল হবে? নবী (ﷺ) বললেন, ‘প্রথম স্বামীর জন্য হালাল হবে না, যতক্ষণ না সে অপরের সহবাসের স্বাদ গ্রহণ করে এবং সে তার সহবাসের স্বাদ গ্রহণ করে’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫২৬১, ৫২৬৫, ৫৭৯২; ছহীহ মুসলিম, হা/১৪৩৩; আবূ দাঊদ, হা/২৩০৯; তিরমিযী, হা/১১১৯; ইবনু মাজাহ, হা/১৯৩২)।
প্রশ্নকারী : আবূ আব্দিল্লাহ, জয়পুরহাট।