উত্তর : প্রথমতঃ ক্ববরের পাশে গিয়ে ৪০ দিন পর্যন্ত সূরা ইয়াসিন তিলাওয়াত করার আমল ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। কারণ ক্ববরের পাশে সূরা ইয়াসিন তিলাওয়াত করা বিদ‘আত, এর কোন বাস্তবতা নেই’ (মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ১৩/২০২-২০৩ পৃ.; মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল ইবনে উছাইমীন, ১৭/২২২ পৃ.)। যা দলীল দ্বারা প্রমাণিত নয় সেটাই পরিত্যাজ্য (ছহীহ বুখারী, হা/২৬৯৭)। এছাড়া মুমূর্ষ ব্যক্তির শিয়রে বসে সূরা ইয়াসীন পাঠ করা সম্পর্কিত হাদীছটিও ‘যঈফ’ (আবূ দাঊদ, হা/৩১২১; ইরওয়াউল গালীল, হা/৬৮৮)।
দ্বিতীয়তঃ সূদ কাবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা বহুগুণ বৃদ্ধি করে চক্রবৃদ্ধি হারে সূদ খাবে না। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফল হও’ (সূরা আলে ইমরান : ১৩০)। নবী (ﷺ) সূদখোর, সূদদাতা, তার সাক্ষীদাতা ও তার লেখককে অভিসম্পাত করেছেন এবং বলেছেন, ‘ওরা সবাই সমান’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১৫৯৭-১৫৯৮; আবূ দাঊদ, হা/৩৩৩৩; তিরমিযী, হা/১২০৬; ইবনু মাজাহ, হা/২২৭৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৪২৬৩)। সূদখোর ব্যক্তি গুনাহগার কিন্তু কাফির নয়, বরং সে ইসলামের উপরই মৃত্যুবরণ করেছে। সেও আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ-দয়া প্রাপ্ত হতে পারে। সুতরাং তার জন্য দু‘আ করা সন্তানদের উপর অপরিহার্য। সে ইসলাম বহির্ভূত নয়। বরং সে আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল’ (ইসলাম ওয়েব, ফৎওয়া নং-৩৮৯৩৬৮; ফিক্বহ বিশ্বকোষ, ৬/২৯১-২৯২ পৃ.)।
মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করার অপরাধ ক্ষমা করেন না। এ ছাড়া অন্যান্য অপরাধ যার জন্য ইচ্ছা ক্ষমা করে দেন। আর যে কেউ আল্লাহর সাথে অংশী স্থাপন (শিরক) করে, সে এক মহাপাপ করে’ (সূরা আন-নিসা : ৪৮)। ইমাম জারীর আত্ব-ত্বাবারী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এ আয়াত প্রমাণ করে যে, কাবীরা গুনাহগারদের বিষয়গুলো আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছাধীন বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত (তাফসীর জারীর, ৫/১২৬ পৃ.)। ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের নিকট কাবীরা গুনাহগাররা কাফির নয়। তারা জাহান্নামে চিরস্থায়ীভাবে থাকবে না। বরং তাদের বিষয়গুলো আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছাধীন বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত’ (শারহুন নববী, ১১/১৬৭ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : ইয়াসিন শেখ, খুলনা।