উত্তর : ওয়াক্বফকৃত বা দানকৃত জমি বা অন্য কোন কিছু ফিরিয়ে নেয়া জায়েয নয়। কেননা তা ওয়াক্বফ করার সঙ্গে সঙ্গে মালিকের মালিকানা থেকে বেরিয়ে যায় (মারাতিবুল ইজমা‘, পৃ. ৯৭; ফাৎহুল বারী, ৫/২৩৫; ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমা, ৩/২৩ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১২৫১০১)। সুতরাং নিঃসন্দেহে ঐ মসজিদে বাকি মুছাল্লীদের ছালাত আদায় করা জায়েয হবে। ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন, ‘হিবা বা ছাদাকাহ করার পর তা ফিরিয়ে নেয়া কারোর জন্য হালাল নয়’ (অধ্যায় নং-৫১; অনুচ্ছেদ নং-৩০)। অতঃপর তিনি নিম্নোক্ত হাদীছটি বর্ণনা করেন। আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দান করে তা আবার ফিরিয়ে নেয়, তার উদাহরণ ঐ কুকুরের ন্যায়, যে বমি করে এবং পুনরায় তার বমি সে খেয়ে ফেলে’ (ছহীহ বুখারী, হা/২৬২২)।
ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন, ‘নিজের ছাদাক্বাহকৃত বস্তু ক্রয় করা যায় কি?’ (অধ্যায় নং-২৮, অনুচ্ছেদ নং-৫৯)। অতঃপর তিনি বলেন, ‘অন্যের ছাদাক্বাহকৃত বস্তু ক্রয় করতে কোন দোষ নেই। কেননা নবী (ﷺ) বিশেষভাবে ছাদাক্বাহ প্রদানকারীকে তা ক্রয় করতে নিষেধ করেছেন, অন্যকে নিষেধ করেননি’। অতঃপর তিনি নিম্নোক্ত হাদীছটি বর্ণনা করেন। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আমি একটি উত্তম ঘোড়া আল্লাহর পথে দান করি। কিন্তু সে ব্যক্তি (যাকে দেয়া হয়েছিল) ঘোড়াটির সঠিক দেখাশুনা না করে ঘোড়াটিকে দুর্বল করে ফেলে। আমার ধারণা হল, সে তা সস্তা দামে বিক্রি করে দিবে। আমি এ ব্যাপারে রাসূল (ﷺ)-এর নিকট জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, তুমি তা ক্রয় করবে না এবং তোমার দানকে ফিরিয়ে আনবে না। কেননা যে ব্যক্তি আপন দান ফিরিয়ে নেয়, সে সেই কুকুরের মত, যে বমি করে আবার তা খায়’ (ছহীহ বুখারী, হা/২৭৭৫, ২৯৭১, ৩০০২)। লক্ষণীয় বিষয় হল, এখানে রাসূল (ﷺ) যথার্থ কারণ থাকা সত্ত্বেও উমার ফারুক্ব (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে টাকার বিনিময়েও স্বীয় দানকৃত ঘোড়া ক্রয় করতে নিষেধ করলেন। তাহলে একজন মানুষ কিভাবে নিজের দানকৃত জিনিস ফিরিয়ে নিতে পারে?
মসজিদের জন্য যে জায়গা দান করা হয়েছে তাতে মসজিদ নির্মাণ করে ছালাত শুরু করলে তা শারঈ মসজিদে পরিণত হয়। সে জায়গার উপর ওয়াক্বফ্কারীর কোন মালিকানা অবশিষ্ট থাকে না। জায়গাদাতার জন্য উক্ত স্থান নিজের অধিকারে নেয়া বা করায়ত্ত করার কোন অধিকার নেয়। যদি তা জোরপূর্বক পুনর্দখল করে, তাহলে তা কাবীরা গোনাহ হিসাবে সাব্যস্ত হবে। এ সম্পর্কে সতর্ক করে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তার চেয়ে অধিক অত্যাচারী আর কে হতে পারে, যে আল্লাহর মসজিদ গুলোতে তাঁর নাম স্মরণ করতে বাঁধা দেয় এবং এগুলোর ধ্বংস-সাধনে প্রয়াসী হয়। অথচ ভীত-সন্ত্রস্ত না হয়ে তাদের জন্য সেগুলোতে প্রবেশ করা সঙ্গত ছিল না। দুনিয়াতে তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনা ও আখেরাতে রয়েছে মহাশাস্তি’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১১৪)।
প্রশ্নকারী : সবুজ, নীলফামারী।